somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ম্যানবুকার ২০১০ জয়ী হাওয়ার্ড জ্যাকবসন : সৃষ্টিতে যার হাস্যরসের মায়া

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাসিক ধারার লেখকরা কমিক ধারার লেখাকে সাধারণত শিল্পের অভিজাত পরিধিতে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে চান না। কিন্তু কালে কালে এই ধারাটি সমাজ-রাষ্ট্রের ভেতরকার অন্ধকার আর পঙ্কিলতাকে মামুলি ঢঙে হাজির করেছে শিল্পপিপাসুবৃন্দের সম্মুখে। হেসেছে মানুষ, আর ভেতরে নিবিড় অন্দরে গেঁথে নিয়ে গেছে কতিপয় প্রশ্ন কিংবা সমাধান অথবা কিছুই না। এ কথা আর আমাদের অজানা নয়, গ্রিক নগররাষ্ট্রের কালে কমিক ধারার রচনার প্রতাপে রাজনৈতিক অনেক বিষয়-আশয়ের প্রতি জনমত গড়ে উঠেছিল। গ্রিসের কমেডি নাট্যগুলো সেই ধারারই উজ্জ্বল প্রতিনিধি।

১৯৬৯ সাল থেকে কমনওয়েলথভুক্ত এবং আয়ারল্যান্ডের অধিবাসীদের মধ্যে ইংরেজি ভাষায় রচিত উপন্যাসের জন্য প্রবর্তিত হয় বুকার পুরস্কার। বিশ্বসাহিত্যে মর্যাদার দিক দিয়ে নোবেল পুরস্কারের পরই এটির স্থান। সাহিত্যের অভিজাত এই পুরস্কার কমেডি কিংবা হাস্যরসাত্মক সৃষ্টিকে স্বীকৃতি দিয়েছে দীর্ঘ ৪২ বছর পর। আর যার হাত ধরে এই কুলীন প্রথার সমাধি রচিত হলো তিনি হাওয়ার্ড জ্যাকবসন। ২০১০ সালের ম্যানবুকার পুরস্কার তার হাতে অর্পিত হয় হাস্যরসাত্মক উপন্যাস ‘দ্য ফিঙ্কলার কোয়েশ্চেন’র স্রষ্টা বলে।

হাওয়ার্ড জ্যাকবসন ১৯৪২ সালের ২৫ আগস্ট ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে জন্মগ্রহণ করেন। হাস্যরসাত্মক উপন্যাসের জন্য খ্যাতিমান। তিনি হোয়াইটফিল্ডের স্ট্যান্ড গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরবর্তী সময়ে ক্যামব্রিজের ডাউনিং কলেজে ইংরেজি ভাষার ওপর পড়াশোনা করেন। ইউনিভার্সিটি অব সিডনিতে প্রভাষক হিসেবে বেশ কিছু সময় অতিবাহিত করেন। এরপর ইংল্যান্ডে ফিরে ক্যামব্রিজের সেলউইন কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭০ এর দশকে তিনি উইলবারহ্যাম্পটনে একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিক্ষকতা করেছেন।

জ্যাকবসনকে প্রখ্যাত আমেরিকান ইহুদি ঔপন্যাসিক ফিলিপ রথ এর সঙ্গে তুলনা করেন কেউ কেউ। তবে নিজেকে তিনি ইহুদি জেন অস্টিন বলে বর্ণনা করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তিনি অবশ্য এ দাবিও জোরে সঙ্গেই করে থাকেন, ‘আমি প্রচলিত অর্থে কোনোভাবেই ইহুদি নই। আমি ইহুদিদের কমিউনিটি সেন্টারেও যাই না। তবে আমি যা অনুভব করি তা হচ্ছে, আমার ভেতরের মনটি ইহুদি। আমার মধ্যে ইহুদি বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। আমি অনুভব করি, সুদূর অতীতের ইহুদি মানসিকতার সঙ্গে আমার একটি সংযোগ রয়েছে। আমি ঠিক জানি না, কারো ভেতরে এ ধরনের চিন্তা কী ধরনের সমস্যা তৈরি করে। ইহুদি সেই মানসিকতা তাদের রসবোধ তো পাঁচ হাজার বছর ধরে তৈরি হয়েছে। জ্যাকবসন যে বিষয়টি খুব দৃঢ়ভাবে মেনে চলেন তা হচ্ছে, ‘আমি যা করতে চাই, হাস্যরস তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

জ্যাকবসনের প্রথম উপন্যাস ‘কামিং ফ্রম বিহাইন্ড’। ওলভারহাম্পটন এ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার সময় তিনি এটি লেখেন। ওই প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসকে উপজীব্য করে তিনি এই কমেডি ধাঁচের উপন্যাসটি লেখেন। ১৯৮৫ সালে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ওই উপন্যাসটি ফুটবল প্রশিক্ষণের একটি সত্য ঘটনাকেই তিনি উপন্যাসের বিস্তারে সাজিয়েছেন।

১৯৮৭ সালে ‘ইন দ্য ল্যান্ড অব ওজ’ নামে একটি ভ্রমণকাহিনী লেখেন। সিডনিতে থাকাকালীন সময় ঘিরে এটি আবর্তিত হয়েছে। ১৯৯৮ সাল থেকে প্রকাশিত জ্যাকবের পাঁচটি ফিকশনই রসবোধের মিশেলে নির্মিত। নারী-পুরুষের সম্পর্ক আর মধ্যযুগ থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ইংল্যান্ডে ইহুদিদের অভিজ্ঞতা এসব ফিকশনের বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে হাজির হয়েছে।

১৯৯৯ সালে এক টিনএজ টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নকে নিয়ে লিখেন ‘দ্য মাইটি ওয়ালজার’। হাস্যরসাত্মক লেখার স্বীকৃতি হিসেবে এটি বলিঙ্কার এভরিম্যান ওডহাউজ পুরস্কার অর্জন করে। ১৯৫০ এর দশকের ম্যানচেস্টার এ কাহিনীর পটভূমি। জ্যাকবসন নিজেও পিংপং এর একজন ভক্ত। কিন্তু তারপরও তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন এতে আত্মজৈবনিক অভিজ্ঞতার চেয়েও আরো অনেক উপাদান রয়েছে।

২০০২ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘হুজ সরি নাউ?’ ২০০৬ সালে প্রকাশিত তার উপন্যাস ‘কালোকি নাইটস’ ম্যানবুকার পুরস্কারের দীর্ঘ তালিকায় স্থান পায়। জ্যাকবসন দাবি করেন, এ যাবৎকালে যেকোনো স্থানে, যে কালো লেখার চেয়ে ‘কালোকি নাইটস’ পূর্ণাঙ্গ অর্থে ইহুদি উপন্যাস।

জ্যাকবসন ‘দ্য ইনডিপেনডেন্ট’ সংবাদপত্রে মুক্ত লেখক হিসেবে সাপ্তাহিক কলামও লিখেন। জ্যাকবসনের নাম প্রায়ই সাহিত্যের বড় বড় পুরস্কারের তালিকায় উঠলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি তা পেতেন না। বুকার পুরস্কারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। দু’বার এই পুরস্কারের জন্য দীর্ঘ তালিকায় মনোনয়ন পেয়েছেন কিন্তু কখনোই পাওয়া তো দূরে থাকুক সংক্ষিপ্ত তালিকা পর্যন্তই আসতে পারেননি। অবশেষে ২০১০ সালে ৬৮ বছর বয়সী হাওয়ার্ড জ্যাকবসন বুকার পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় উঠে আসেন। তালিকায় স্থান পাওয়া অপর পাঁচ লেখক, টম ম্যাকার্থি, পিটার ক্যারি, ডেমন গ্যালগাটস এবং এমা ডনাঘিউয়েরকে পেছনে ফেলে তার ‘দ্য ফিঙ্কলার কোয়েশ্চেন’ বুকার জয় করে।

‘দ্য ফিঙ্কলার কোয়েশ্চেন’ কমিকছায়ার আশ্রয়ে বিকশিত হলেও তাই একমাত্র নয়। মানুষের জীবনের নানা প্রশ্ন ও বাঁকের খোঁজও একে বিশিষ্ট করে তুলেছে। এই উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র জুলিয়ান ট্রেসলাভ একজন হতাশাগ্রস্ত বিবিসির সাবেক আর্টস প্রডিউসার। সে ইহুদি নয়, ধার্মিক কোনো ব্যক্তিও নয়। অথচ তারপরও মনে মনে সে একজন ইহুদি হওয়ার চেষ্টা করে। ট্রেসলাভের জীবন প্রায় একই ঘটনার অনুবর্তনে ঘেরা। এই যেমন, দুঃখ যখন আসে তখন তা একের পর এক আসতেই থাকে, এমন তরো কিংবা এর কাছাকাছি একটি প্রবাদ রয়েছে। তার জীবনেও যেনবা সেই প্রবাদের ধারা অনুসারে দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছিল একের পর এক। ট্রেসলাভের জীবন টালমাতাল নারী এবং পেশা এই দুই বস্তু এবং অবস্তুর প্রভাবে। কেন যেন ক্রমশই সে বিশ্বাস করতে লাগলো নারীই সবচেয়ে খারাপ। এই জীবনে অনেক নারী তার কাছে এসেছে কিংবা এভাবেও বলা যায়, সেও নারীর কাছে গিয়েছে। নারী তার শরীরকে যতোটা না উত্তেজিত করতো তারচেয়ে ঢেড় বিচলিত হতো তার মন। প্রতিবার সম্পর্কে যাওয়ার ক্ষণে বর্তমান নয় ভবিষ্যৎই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতো। কেননা আগাম কোনোকিছু বোঝার যে পদ্ধতি তা ভুল। আর তাই প্রতিবার নারীর সঙ্গে সে বন্ধনে জড়িয়েছে এবং প্রতিবার নারীই তাকে ছেড়ে গেছে। কোনো সম্পর্কই বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। তবে তাতে করে শরীরের বন্ধন কখনো রহিত হয়নি। কিন্তু সে স্থির হতে চেয়েছিল, আর তাই ভবিষ্যৎ ভাবনা।

ট্রেসলাভ যখন স্কুলে পড়তো তখন তার বাবার এক বন্ধুর মেয়েকে সে ভালোবেসেছিলো। অপরূপা ছিল সেই মেয়েটি। গোলাপের পাপড়ির মতোই ছিলো সেই মেয়ের গায়ের রঙ। মেয়েটির চোখ দেখে মনে হতো, যেন বা ভেজা। মেয়েটি মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে মারা যায়। তখন ট্রেসলাভ বার্সেলোনাতে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ট্রেসলাভের পরিবার মেয়েটির শেষকৃত্যনুষ্ঠাতে তাকে আসতে দেয়নি। কেননা তাতে সে কষ্ট পাবে।

প্রেমের ট্র্যাজিক পরিণতির আভায় অথবা সেই আগুনে ঝলসে ট্রেসলাভ পেয়েছে এক চিরতরুণের অবয়ব। এই ঊনপঞ্চাশ বছর বয়সেও সে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। নারীরা হয়তোবা তাদের সম্পর্ককে অমর করে রাখার প্রয়াসে তাকে ছেড়ে গেছে।

পেশাগত জীবনে বিখ্যাত সংবাদমাধ্যম বিবিসি ছেড়েছে ট্রেসলাভ। যখন সেখানে কাজ করতো নিজের আদর্শ বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু এখন, বিবিসিকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে সে। প্রতিনিঃশ্বাসে অভিসম্পাত উচ্চারণ করে। বিবিসি সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা ভীষণ তিক্ত। তার কেবলই মনে হয় প্রতিষ্ঠানটি তাকে শুধু ব্যবহারই করেছে। শ্রোতা-দর্শকদের কেমন যেন নেশাগ্রস্ত করে তোলে বিবিসি। এটির ক্যারিশমায় মানুষের চিন্তাশক্তি কমে যায়। যেনবা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় অথবা তাদের মতো করে ভাবতে বাধ্য করে। সেখানে যার কর্মরত তাদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি কমবেশি একই রকম। অর্থ, পদোন্নতি আর আভিজাত্যের ঘেরাটোপ চাকরিরতদের ক্ষতির সোপান গড়ে দেয়। সেখানেও চলে বৈষম্য। শিক্ষানবিশরাও বিবিসিতে আসার কিছুদিনের মাথায় ট্রেসলাভের চেয়ে বড় পদের অধিকারী হয়ে যেত। কিন্তু নির্বিরোধী চুপচাপ স্বভাবের কারণে তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটতো না কোনো। এই প্রতিষ্ঠান কেউ ছেড়ে যেতো না। এখান থেকে চাকরিচ্যুতও করা হতো না কাউকে। যেন বা এটি কর্মরতদের পারিবারিক সদস্যের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখতো। আর এ কারণে এখানকার সবাই সবাইকে খুব ভালোভাবে জানতো। কেবল প্রদীপের নিচে যে অন্ধকার তার খোঁজ রাখতো না কেউ।

একদিন ট্রেসলাভ পদত্যাগ করে। পদত্যাগপত্রে সে লিখে- আজ যদি আমি কাজ বন্ধ করে দেই, তবে কেউ কি আমার অভাব অনুভব করবে, আমার শূন্যতা কারো মনে রেখাপাত করবে? বিবিসি কর্তৃপক্ষ এ চিঠির কোনো উত্তর দেয়নি। হয়তো বা তারা তার কথা শোনেইনি।

বিবিসি ছাড়ার পর ট্রেসলাভ বেশ কয়েকটি চাকরি নেয়। প্রতিটি চাকরিস্থলেই নতুন নারী, নতুন সম্পর্ক। এক শিল্পোৎসব আয়োজনের জন্য সহকারি পরিচালক পদে কাজ করতে গিয়ে পরিচালক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় তার। তারা একসঙ্গে ঘুমাতো। সবকিছুই হতো তাদের মধ্যে। কিন্তু সেই নারী যখন তাকে ছেড়ে যায় তখনই সে বুঝতে পারে তাকে সে ভালোবেসেছিল।

এরপর সে আরো কয়েক ধরনের পেশায় নিয়োজিত হয়েছিল। আরো আরো নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ক হলো। কিন্তু দীর্ঘ বন্ধনে আবদ্ধ হলো না কেউ। অথবা কোনো কোনো সময় সে নিজেই হয়তো বা বন্ধন থেকে মুক্তি খুঁজেছিল।

একবার ইতালিয়ান এক কার্পেন্টারের সহকারী হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে তার প্রেমে পড়লো ট্রেসলাভ। ওই নারীও তাকে প্রেমের বন্ধনে জড়ালো এবং ছেড়েও দিল। প্রেমে পড়া এবং পরিণতিতে সেই প্রেম শোকে পরিণত হওয়া যেন ট্রেসলাভের নিয়তি।

ট্রেসলাভের ঘনিষ্ঠতম বন্ধুদের মধ্যে দু’জন স্যাম ফিঙ্কলার ও লিবর সেভিচ। দুজনই ইহুদি। স্যাম তার স্কুল জীবনের বন্ধু। আর তাদের প্রাক্তন শিক্ষক হচ্ছেন লিবর সেভিচ। কালে ফিঙ্কলার একজন প্রখ্যাত দার্শনিক ও ব্রডকাস্টারে পরিণত হন। আর লিবর হচ্ছেন সাবেক শোবিজ বা বিনোদন সাংবাদিক। নিজেদের পেশাগত জীবনের বাইরেও তাদের বুদ্ধিমত্তার প্রায়োগিক অর্জন রয়েছে। দুঃখজনক ভাবে দু’জনেরই সম্প্রতি পতœী বিয়োগ ঘটেছে।
লিবর যিনি কিনা একজন চেক বংশোদ্ভূত দীর্ঘদিন স্ত্রী মালকির সঙ্গে সংসার করেছেন। তারা সুখে আর শান্তিতেই ছিলেন বলা যায়। মালকি ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন। আশি বছর বয়সে মারা যান তিনি। কিন্তু দেহগতভাবে অদৃশ্য হলেও লিবরের মানস হতে মালকির অবয়ব মিলিয়ে যায়নি। স্ত্রীর স্মৃতিসব ফ্লাটে এমনভাবে সাজিয়ে রেখেছেন লিবর তাতে মনে হতে পারে, মালকি ওই পাশের ঘরেই আছেন, এক্ষুণি হয়তো সামনে এসে দাঁড়াবেন। লিবর একজন ভাবাবেগে পরিপূর্ণ, স্মার্ট ইউরোপিয়ান।

পাশাপাশি, পত্নী বিয়োগের পর থেকেই কষ্ট-শোক চেপে রেখেছেন ফিঙ্কলার। অল্প বয়সেই ক্যান্সারে মারা যান তিনি। ফিঙ্কলারের ভেতর কামনাবোধ তীব্র। এক্ষেত্রে তাকে কামুকই বলা যায়। সেই সঙ্গে রয়েছে অহঙ্কার। সবমিলিয়ে জটিলস্বভাবের ব্রিটিশ। এই দু’জনের মধ্যে ট্রেসলাভের প্রাতিষ্ঠানিক সংসারের অভিজ্ঞতা নেই। তাই তাকে অপর দুই বন্ধু ‘অনারারি বিপত্নীক’ বলে থাকে। এই তিনবন্ধু একদিন রাতে লন্ডনে লিবরের ফ্লাটে খাওয়া-দাওয়া আর অতীতচারিতায় মেতে ওঠেন। অপর দুই বন্ধুর বেদনাজাগানিয়া কাহিনী শুনে ট্রেসলাভ খানিকটা দুঃখভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন। তার জীবনের ব্যর্থতা আর কষ্টের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন হয়তো। এরপর বেশ রাত করে ঘরে ফেরার পথে ঠিক সাড়ে এগারোটায় হামলাকারীর আক্রমণের শিকার হন ট্রেসলাভ। তাকে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে একটি ভায়োলিনের দোকানে ঢোকানো হয়। এসব কিছুতেই তার কিছু এসে যেতো না, যদি না হামলাকারী একজন নারী না হতো। এরপরই ট্রেসলাভের ভেতরে নানা আত্মানুসন্ধান কিংবা হয়তো খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। অবশেষে এই অনুসন্ধানই আমূল পাল্টে দেয় তার জীবন।

এতোসব দুঃসহ জীবনের কাহিনীবয়ান ‘দ্য ফিঙ্কলার কোয়েশ্চেন’। হাস্যরসের আবরণে এ উপন্যাসের পরতে পরতে রয়েছে বন্ধুত্ব, প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির পরিসংখ্যান এবং পড়ন্ত বয়সের মানবিক কম্পাস।

৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×