রাজনৈতিক চাল বোঝা বেশ কঠিন|কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের সার্বিক প্রক্রিয়া অনেক আগেই শেষ হয়েছে|বাকি ছিল রায় ঘোষণা|আওয়ামী সরকারের আমলে জামায়েতে ইসলামীর নেতাদের কি রায় হতে পারে ,তা সবার জানা ছিল|তারপরও রায় ঘোষণা বলে কথা|সবাই অধির আগ্রহের সাথে অপেক্ষায় ছিল|কে জানতো শেষ মেশ ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময় রায় ঘোষণা হবে!টানা এক বছর পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিয়ে চুড়ান্ত ভাবে প্রস্তুত হয়েছে হলে যাবার জন্য|প্রবেশ পত্র,নিবন্ধন পত্র,কলম-সবই হয়তো গোছানো ছিল|কিন্তু হঠাৎ হরতাল!হরতাল আহ্বানকারী বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী|যাঁরা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে,রমযানে সিয়াম পালন করে,আল কোরআনের বাণী প্রচার করে-তাঁরা আবার হরতালেরও ডাক দেয়!আসলে জিহাদের ময়দানে জিহাদের ডাক আসবে,এটাই স্বাভাবিক|শিক্ষামন্ত্রী ক্যামেরার সামনে পরীক্ষার মধ্যে হরতালের ডাক দিতে নিষেধ করেন|অন্য মন্ত্রীরা জামায়েতের বিরুদ্ধে ডাহা মিথ্যা বক্তব্য দেন|মন্ত্রীদের কথা শুনে মাঝে মাঝে মনে হয় মাছ বোধ হয় জল ছেড়ে এখন আকাশে উড়ছে|আওয়ামী সরকার আর কিছু পারুক আর না পারুক,লতিফ সিদ্দিকীর মত কিছু মন্ত্রীর জন্ম দিতে পেরেছে|
আগে পরীক্ষার রাতে দুর্বল ছাত্রদের বইয়ের পাতায় মুখ গুজে থাকতে দেখা যেত|এখন তারা প্রশ্নের পেছনে ছুটছে|কিছুদিন আগে কিছু কিছু কলেজেও ছাত্রলীগের কমিটি খুঁজে পাওয়া যেত না|এখন হাইস্কুল গুলোতেও ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহরা চলছে|কোনো কোনো স্কুলে পানির কল না থাকলেও গাঁজা,ফেনসিডিল,ইয়াবার কোনো অভাব নেই|আর চাপাতি,দা,রিভলবারের কথা তো বাদই দিলাম|
যাহোক মূল বিষয়ে ফিরে আসি|তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম জামায়াতে ইসলামী হরতালের ডাক দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় ফেলেছে|কিন্তু দোষটা কি শুধু জামায়াতে ইসলামীর?নাকি এটা আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক চালের একটা অংশ!কি প্রয়োজন ছিল পরীক্ষার মধ্যে রায় ঘোষণার!রায় তো পরীক্ষার পরেও দেওয়া যেত!আসলে ঠান্ডা মাথায় ভাবলে এর কারণ একটাই|সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ানো,পাশাপাশি কয়েক লাখ ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মগজে জামায়াত বিরোধী ধারণা প্রবেশ করানো|অবশ্য এ কাজটা বামপন্থী মিডিয়া গুলো অনেক আগে থেকেই শুরু করেছে|সরকার সেই জামায়াত বিরোধী গরুর গাড়িতে আবারও গরুর ভূমিকা পালন করল|
সচেতন দৃষ্টি দিয়ে তাকালে হরতালে পিকেটারদের চেয়ে পুলিশই সবচেয়ে বড় আতঙ্ক|পুলিশের সামনে দিয়ে হেটে গেলেই এখন পিকেটার|পকেট ভর্তি টাকা থাকলে মুক্তি মিলে|তা সে পিকেটার হোক,আর আমপাবলিক হোক|কোনো মাথা ব্যথা নেই|পকেট খালি থাকলেই তুই জঙ্গি,তুই ভারপ্রাপ্ত রাজাকার,তুই জে.এম.বি,তুই বোমাবাজ|ব্যাস সাংবাদিক হাজির|কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এলাকার সবচেয়ে ভাল ছেলেটা হয়ে উঠে কুখ্যাত বোমাবাজ|চ্যানেলে চ্যানেলে ছবি দেখায়|ছেলের বাবা-মা হাট এটাক্ট করে|এদিকে কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই|সবাই এখন ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত|আর এভাবেই আওয়ামীদের চক্রান্তে প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে শত শত পরিবার|এর শেষ কোথায়??
লেখকঃ
মোহাম্মদ রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ
কেন্দ্রীয় সভাপতি
বাংলাদেশ কবি সংসদ
e-mail:[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৪