“A movie that gets closer to the life's reality of the society finds always more words of mouth publicity in entirety.”
সিনেমা বা মুভি...কাল্পনিক জগতের ছান্দিক চিত্রায়নের বিকল্প নাম। কিন্তু এই কল্প পৃথিবীর গল্প বাস্তবতাকেও সুনিপুনভাবে তাদের নিজস্ব ধরণে তুলে ধরে কখনও কখনও সেটাকে অন্য একটা পর্যায়ে নিয়ে যায়। প্রথম পর্বে আলোচনা করেছিলাম, পাঁচজন অভিনেতার সব থেকে ভালো লাগা কিছু সিনেমা নিয়ে, যেখানে দ্বিতীয় পর্বে ছিল অভিনেত্রী। পর্বে যেগুলো চলচ্চিত্র থাকছে সেগুলোতে বিভিন্ন ঘরানার অন্ততপক্ষে একটা করে আলোচনা করার চেষ্টা করছি। প্রথম পর্বে ছিল, জেমস স্টুয়ার্টের Vertigo, জ্যাক নিকোলসনের The Shining, শ্যেন কনেরির Entrapment,টম হ্যাঙ্কসের Cast Away এবং ব্রাড পিটের The Curious case of Benjamin Button. দ্বিতীয় পর্বটি সেখানে ছিল পাঁচজন অভিনেত্রী নিয়ে, অড্রে হেপবার্নের My Fair Lady, মেরিল স্ট্রিপের Sophie’s Choice, জোডি ফস্টারের The Silence of the Lambs, হিলারি সোয়াঙ্কের Million Dollar Baby এবং ক্যামেরন ডায়াজের My Sister’s Keeper. তৃতীয় এই পর্বে আবারও পছন্দের পাঁচজন অভিনেতার অত্যন্ত ভালো লাগা পাঁচটি বিভিন্ন ঘরানার সিনেমালোচনা থাকছে। প্রথম জন, গ্রেগরী পেক...Roman Holiday >> দ্বিতীয় জন, ড্যানিয়েল ডে লুইস...My Left Foot >> তৃতীয় জন, জেফ ব্রিজেস...Arlington Road >> চতুর্থ জন, শ্যেন পেন…I am Sam >> এবং পঞ্চম জন, রাসেল ক্রো...A Beautiful Mind.
প্রথম মুভি:
“There are no coincidences in life. What person that wandered in and out of your life was there for some purpose.”
রাজকুমারী অ্যান তার প্রতিদিনের রুটিন মাফিক জীবনের উপর বিরক্ত... এই সময়ে খেতে হবে, এই সময়ে উঠতে হবে, এই সময়ে সভায় গিয়ে বসতে হবে। সে বেড়াতে আসে ইউরোপের এক ক্যাপিটাল-- রোমে। সেখানেও তার জীবনের বিরক্তিকর রুটিনগুলোর কোন পরিবর্তন ঘটে না, রাজকুমারী হওয়ার পরেও নিজের ইচ্ছামত সে কোন কাজ করতে পারে না। তার মধ্যে অস্থিরতা কাজ করলে ডাক্তার তাকে সিডেটিভ দিয়ে যায়, যাতে সে ঘুমিয়ে প্রশান্তি লাভ করে। কিন্তু অ্যান সিদ্ধান্ত নেয় সে তার আবদ্ধ জীবন হতে কয়েকদিনের জন্য হলেও পালাবে, দূরে কোথাও... নিজের মত থাকবে। সিডেটিভ খাওয়ার পর সে আম্ব্যাসি থেকে পালায়, কিন্তু রাস্তায় এসে সে বুঝতে পারে...তার রাজমহলের ভিতরের পরিবেশ জানা থাকলেও, এই পরিবেশ অজ্ঞাত...বিভ্রম হয়ে সে একটি বেঞ্চে শুয়ে পড়ে। সিডেটিভের কারণে সে ঘুমিয়েও পড়ে সেখানে। এদিকে জো ব্রাডলি একজন অ্যামেরিকান রিপোর্টার তাকে সে অবস্থায় খুঁজে পায়, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে চিনতে পারে না... যে সে রাজকুমারী। সে তাকে ট্যাক্সিতে উঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় কিন্তু অ্যান সেই প্রস্তাব নাকচ করে। সে নিজেকে পরিচয় দেয় ‘আন্যা স্মিথ’ নামে। জো সিদ্ধান্ত নেয়, আন্যার এরকম তন্দ্রালু অবস্থায় তাকে সেখানে ফেলে রেখে যাওয়া ঠিক হবে না, সে নিজের এপার্টমেন্টে সেই রাতের জন্য তাকে নিয়ে যায়...পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলে তাকে ঠিকানা জিজ্ঞাসা করে যাতে সে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসতে পারে। পরের দিন সকালে জো আন্যা কে না জাগিয়েই কাজের জন্য বেড়িয়ে পরে এবং দেরিতে পৌঁছানোর কারণ হিসেবে তার সম্পাদককে বলে সে রাজকুমারী অ্যানের প্রেস কনফারেন্সে গিয়েছিল বিধায় তার দেরি হয়েছে। সম্পাদক মি. হেনেসি তার মিথ্যাটি ধরে ফেলে সহজেই এবং বলে, প্রেস কনফারেন্স বাতিল হয়েছে রাজকুমারীর আকস্মিক অসুস্থতার দরুণ এবং সে জো কে রাজকুমারী অ্যানের একটি ছবি দেখায়। জো সহজেই বুঝে নেয় তার সাথে দেখা হওয়া গত রাতের অপরিচিত মেয়েটি আর কেউ নয়... রাজকুমারী স্বয়ং তার দ্বারে প্রকট হয়েছে। জো তার সম্পাদককে বলে সে যদি অ্যানের সাথে সাক্ষাতকারের ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে হেনেসিকে ৫০০০ ডলার দিতে হবে তাকে আর হেনেসি তাকে কোন কিছু না ভেবেই বলে যে জো সেটা পারবে না এবং এই কথায় ৫০০ ডলার আরও বাজি ধরে সে। এপার্টমেন্টে ফিরে এসে জো অ্যান কে বলে সে তাকে রোম দেখাতে নিয়ে বেরোবে। অ্যান খুশিতে আপ্লুত হয়ে যায়, অনেকদিন পর বদ্ধ জীবন থেকে মুক্ত পরিবেশের আস্বাদ লাভের আশায়। অ্যান কি বুঝতে পারে জো এর উদ্দেশ্য? ভিন্ন দুই অঙ্গনের এই অপরিচিত মানুষ দুইটির হঠাৎ দেখা হওয়ার মুহূর্তগুলো কি দীর্ঘস্থায়ী হয়? এক বাক্যে ‘অসাধারণ একটা মুভি’। সিনেমা তখনও হত, এখনও হয়... এখনকার সিনেমার রেশ দুই মাস থাকে কিনা সন্দেহ আছে, কিন্তু ৬০ দশকের এই সিনেমার মধ্যে একটা এভারগ্রীন ভাব রয়েছে...... ভালো সিনেমার বিকল্প নেই। উইলিয়াম ওয়াইলারের প্রযোজনায় এবং পরিচালনায় এই সিনেমাটিতে গ্রেগরি পেকের জায়গায় ক্যারি গ্রান্টের অভিনয় করার কথা ছিল, কিন্তু সে এই রোলটি করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন দুইটি কারণে--প্রথমত, সিনেমাটিতে যতটা রাজকুমারী চরিত্রটিতে ফোকাস করা হবে ‘জো’ চরিত্রটি সেই তুলনায় পাত্তা পাবে না, দ্বিতীয় হেপবার্নের ভালবাসার মানুষের তুলনায় তাকে কিছুটা বয়স্ক মনে হতে পারে। এরপর সিনেমা চলে যায় পেকের কাছে... বাকিটা স্বর্ণালী ইতিহাস। অড্রে হেপবার্ন ‘প্রিন্সেস অ্যান’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অস্কারটা জিতে নিয়েছিলেন... সাথে চিত্রনাট্য এবং অঙ্গসজ্জা বিভাগেও এটি অস্কার জিতে নিয়েছিল। কিছু কিছু সিনেমা অমর হয়... এটা তাই। The most beautiful movie with evergreen enchantment.
Roman Holiday (1953)
IMDB rating: 8.1/10
Genre: Romance/ Comedy
Cast: Gregory Peck, Audrey Hepburn, Eddie Albert
Country of Origin: USA
দ্বিতীয় মুভি :
“If you have a dream, don’t just sit there. Gather courage to believe that you can succeed and leave no stone unturned to make it a reality.”
ক্রিস্টি ব্রাউন সেরেব্রাল পালসি অর্থাৎ কঠিন পর্যায়ের একটা নিউরোলোজিক্যাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত জন্মের পর থেকেই। এই ডিসঅর্ডারের দরুণ বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ছাড়া দেহের অন্যান্য অংশ বিকল ছিল তার। সে হাঁটতে কিংবা কথা বলতে পর্যন্ত অক্ষম ছিল। সিনেমা শুরু হয়, এই মানুষটির অটোবায়োগ্রাফি পড়ার মধ্যে দিয়ে। অনেক বেশি দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়ার পরেও ক্রিস্টি কখনও তার পরিবারের কাছে বোঝাস্বরূপ ছিল না, বিশেষত তার মায়ের কাছে। তার মায়ের একদিন প্রসব যন্ত্রণা উঠলে, সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে পড়ে যায়। সেই সময় ক্রিস্টি ব্যতীত বাসায় কেউ না থাকায়, ক্রিস্টি তার মায়ের এই অবস্থা দেখে মেঝেতে হামাগুড়ি দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে এসে প্রতিবেশীদের ডাক দেয়। সেই যাত্রায় তার মাকে বাঁচায় সে এভাবেই। শ্রমিক হতদরিদ্র বাবা ক্রিস্টির এরকম অথর্ব অবস্থার কারণে তাকে প্রথম দিকে কিছুটা অপছন্দ করত, আর কিছু হলেও তার এই ছেলেটি কোনদিন কিছু করতে পারবে না, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে না এই ভেবে...বদ্ধ ধারণা ছিল তার। সে ধারণাটিও ক্রিস্টি পাল্টে ফেলে ১০ বছর বয়সে, একদিন বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে সে হলুদ রঙের একটি চকের সাহায্যে মেঝেতে লিখে তার জীবনের সব থেকে প্রিয় মানুষটির নাম ‘MOTHER’...সেদিন থেকে তার বাবার ধারণাও পাল্টে যায় ছেলের প্রতি। দিন যেতে থাকে ক্রিস্টির নিজস্ব জগত গড়ে উঠতে থাকে...দেহের একমাত্র কার্যক্ষম অংশটি ব্যবহার করে সে আঁকতে শুরু করে। প্রথমে তার আঁকাআঁকির জিনিসের মধ্যে থাকে সাধারণ জিনিসপত্র, পরে সে তাতে আশেপাশের মানুষের জীবনযাত্রা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে... বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ক্রিস্টি সৃষ্টি করে অবিশ্বাস্য সব শিল্পকর্মের। সাধারণ আর দশটা মানুষের মত ভালবাসার মানুষটিকে নিয়ে স্বপ্নও বুনতে থাকে সে... কিন্তু বাধ সাধে তার ভিন্ন ভাব, তার শারীরিক বৈকল্য। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয় সে, যে তার এই দুর্বল দিককেই সে তার শক্তিশালী অংশ হিসেবে গড়ে তুলবে, হীনমন্য জীবন নয়...বাঁচবে আর দশটা সাধারণ মানুষের মত, তুলে ধরবে নিজের অনন্য পরিচয়। এই উদ্যোগে সাথী হয় তার মা। ক্রিস্টি কি পারে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে? একজন সাধারণ মানুষের অসাধারণ হয়ে উঠার গল্প এটি। এই সিনেমা না দেখলে বোঝা সম্ভব না, বড় হওয়ার জন্য পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ একটা ব্যক্তিসত্ত্বার অনেক বেশি দরকার। Will power is the best power. এই সিনেমা সত্যি গল্পের উপর নির্মিত, বানোয়াট কিছুই নাই। ক্রিস্টি ব্রাউন তার জীবনে এত কিছু প্রতিবন্ধকতার পরেও কি কি করেছিল, উইকিপিডিয়া দেখার অনুরোধ রইল... বলে দিলে তো সিনেমা ফাঁস হয়ে যাবে! ক্রিস্টি ব্রাউন চরিত্রে আছে ড্যানিয়েল ডে লুইস...চরিত্রের প্রয়োজনে উৎসর্গ করা অভিনেতাদের মধ্যে সে অন্যতম। এই সিনেমা করতে গিয়ে সে ৬ মাস হুইল চেয়ারে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছিল... এবং সিনেমা দেখতে গেলে সত্যি মনে হবে ডে লুইসের সেরেব্রাল পালসি বাস্তব জীবনেও রয়েছে...পুরো সিনেমাতে মুখ বাঁকা করে থাকে, একদিক দিয়ে ক্রমাগত লালা পড়ে... মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে চলা থেকে শুরু করে পুরো সিনেমায় এক দিকে মাথা বেঁকিয়ে থাকা পর্যন্ত---খালি মনে হবে উফফ এই মানুষটা কি দিয়ে তৈরি... কিভাবে সম্ভব!!! আমি যখন প্রথমবার সিনেমাটা দেখেছিলাম ডে লুইসের অভিনয় দেখে হতবাক হয়ে থেকে গিয়েছিলাম। অনেকে বলবে এটা একটা সিনেমাই না, প্রচণ্ড বোরিং...ঘসটিয়ে ঘসটিয়ে হাঁটে মূল চরিত্র, সংলাপ নেই বললেই চলে পুরো সিনেমায়, দরিদ্র পরিবারের হতদরিদ্র গাঁথা...ওয়েস্ট অফ টাইম!!! যদি সত্যি কেউ সিনেমা ভালবেসে দেখে, টাইমপাসের জন্য না... এই মুভি দেখার অনুরোধ রইল। সিনেমা বছরে একশোটার বেশি হয়, কিন্তু অনেক দিন মনে রাখার মত সিনেমা দশকে খুব নগণ্য হয়। এই মুভি সেরকম একটা। বলা বাহুল্য, ড্যানিয়েল ডে লুইস এই সিনেমার জন্য তার জীবনের প্রথম অস্কারটি পেয়েছিলেন মূল অভিনেতা হিসেবে। এ বাদেও ক্রিস্টি ব্রাউনের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যিনি ব্রেন্ডা ফ্রিকার সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার জিতে নেন। A phenomenal movie which depicts the story of an ordinary man with extraordinary qualities.
My Left Foot: The Story of Christy Brown (1989)
IMDB rating: 7.9/10
Genre: Biography/Drama
Cast: Daniel Day-Lewis, Brenda Fricker, Alison Whelan
Country of Origin: Ireland/UK
বাস্তবের ক্রিস্টি ব্রাউন
তৃতীয় মুভি :
“It is only through mystery and madness that the soul is revealed.”
মাইকেল ফ্যারাডে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে হিস্ট্রির প্রফেসর। বিপত্নীক মাইকেল তার একমাত্র ছেলে গ্রান্টের সাথে অভিজাত একটি আবাসিক এলাকায় বসবাস করে। তার সহধর্মিণী লিয়া এফবিআই এজেন্ট থাকাকালীন, একটা আণ্ডারগ্রাউন্ড অপারেশনের সময় নিহত হয়। একদিন মাইকেল বাড়ি ফেরার পথে দেখতে পায়, তার প্রতিবেশীর ছেলে ব্রাডি আগুনের সংস্পর্শে পুড়ে যাওয়া আহত হাত নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। দেরি না করে সে তাকে ঐ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তার বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করে। বাবা অলিভার এবং মা শেরিল আসলে সে তাকে ঘটনাটি খুলে বলে কিভাবে তাদের ছেলেকে মাইকেল আহত অবস্থায় রাস্তায় পেয়েছে। অলিভার তার ছেলেকে বাঁচানোর জন্য মাইকেলের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। এভাবে মাইকেল এবং অলিভার বন্ধু হয়ে পড়ে। অলিভার নিজেকে আর্কিটেক্ট হিসেবে পরিচয় দেয়। কিন্তু দিন গেলে অলিভারের স্বভাব এবং চাল চলনের প্রতি মাইকেলের সন্দেহ জন্মাতে থাকে। অলিভারের আর্কিটেকচার ব্লুপ্রিন্টের একটি কপি তার সামনে আসলে সেই সন্দেহ আরও বেশি ঘনীভূত হয়। সে অলিভারের অলক্ষ্যে তার কার্যক্রম নজরদারি করতে থাকে। বেড়িয়ে আসতে থাকে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। অপরদিকে উর্বর মস্তিষ্কের অলিভারও নেমে পড়ে তার আসল উদ্দেশ্যে। কে এই অলিভার? তার রহস্যময়তার কারণ কি? মাইকেল কি পারে তার আসল চরিত্র উন্মোচন করতে? সিনেমাটি খুব স্পর্শকাতর বিষয়ের উপর নির্মিত এবং এটাই এর রহস্য... তবে এটুকুই বলব কেউ অর্ধেক পর্যন্ত দেখে যদি বলে সিনেমার গল্প বুঝে গেছি, এর পরে এটা হতে চলেছে...ভুল, ভুল, ভুল। এর টুইস্টেড মিস্ট্রি গল্প বুঝে ফেলার সুযোগ দিবে না... দেখতে বসলে শেষ করে উঠা পর্যন্ত মাফ নাই। টান টান থ্রিলার...কি হবে, কি হতে চলেছে, আসল ব্যাপার কি... পুরো সিনেমা জুড়ে এটাই মাথায় আসবে... আর শেষের কয়েক মিনিট দেখে অবাক হতে হবে। এখানে মাইকেল চরিত্রে রয়েছে জেফ ব্রিজেস এবং অলিভার চরিত্রে শশাঙ্ক রিডেম্পশনের সেই ১৭ বছর ধরে টানেল খুঁড়ে মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করা মানুষটি-- অ্যান্ডি অর্থাৎ টিম রবিন্স। । অনবদ্য দুই অভিনেতার সমন্বয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি সেরকম মাপের একটা মিস্ট্রি থ্রিলার। A brilliant mystery thriller with a lot of twist and turn.
Arlington Road (1999)
IMDB rating: 7.2/10
Genre: Crime/Mystery/ Thriller
Cast: Jeff Bridges, Tim Robbins, Joan Cusack
Country of Origin: USA
চতুর্থ মুভি :
“Any man can be a father, but it takes a special person to be a dad”
স্যাম ডওসন আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের থেকে কিছু মাত্রায় ভিন্ন। কিভাবে? পূর্ণবয়স্ক মানুষ হওয়ার পরেও তার বুদ্ধির বিকাশ সীমিত... ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅ্যাবিলিটির কারণে। অর্থাৎ পরিণত বয়সী মানুষ হওয়ার পরেও তার মস্তিষ্কের ক্রমবিকাশ থাকে সাত-আট বছর বয়সী বাচ্চার মত। তার মেয়ে জন্মগ্রহণের পরে তার পার্টনার স্যাম সহ নবজাত মেয়েটিকে রেখে পালিয়ে যায়। কারণ ভবঘুরে হওয়ার দরুণ সে স্যামের সাহচর্যে এসে পড়েছিল, এর বেশি আর কিছু চায়নি সে। তাই সে আবারও ভবঘুরে জীবনেই ফিরে যায়। একা, অসহায় স্যাম নিজের মেয়েটিকে সযত্নে লালিত করার দায়িত্ব নেয় এবং নাম রাখে ‘লুসি’। সে তার মেয়েটিকে তার আরও কয়েকটি বন্ধুর সহযোগিতায় মানুষ করার কাজে নেমে পড়ে যাদের মধ্যে প্রত্যেকেই তার মত ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅ্যাবিলিটিতে আক্রান্ত। স্যাম যখন কাজে বের হত সে মেয়েটিকে রেখে যেত এগোরাফোবিক প্রতিবেশী অ্যানির কাছে। স্যাম নিজের সর্বাত্মক দিয়ে চেষ্টা করত লুসির জীবনযাত্রা সর্বোৎকৃষ্ট রাখতে... সে যেন স্যামের কল্পনার রাজ্যের ছোট্ট পরী স্বরূপ। কিন্তু আস্তে আস্তে লুসি যখন সাত বছর বয়সে পদার্পণ করে সে দেখে তার বাবার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ তার থেকে অনেক পিছিয়ে...... অনেক কিছুই সে বোঝে না, সে আর দশটা স্বাভাবিক বাবার মত না। অন্যান্য বাচ্চারা স্কুলে তার বাবাকে নিয়ে তাকে বিরক্ত করতে থাকে তার বাবা ‘পাগল’ বলে। লুসির জন্মদিনে লুসির একটা ছোট্ট ভুলের কারণেই স্টেট থেকে মানুষ এসে লুসিকে স্যামের কাস্টডি থেকে নিয়ে যায় এই বলে যে ‘সে বাচ্চাটির দেখভাল করার জন্য কোনভাবেই উপযুক্ত নয়, তার থেকে তার বাচ্চার মানসিক বিকাশ বেশি...সুতরাং সামনের দিনগুলোতে সে কিভাবে তার খেয়াল রাখতে সক্ষম হবে’। আদরের মেয়েকে হারিয়ে স্যাম বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে দ্বারস্থ হয় এক নাক উঁচু স্বভাবের আইনজীবীর কাছে... রিটা হ্যারিসন। সাংসারিক ভাবে অসুখী এবং কর্মরত জীবনে চরম ব্যস্ত রিটা কি স্যামের এই কেস শেষ পর্যন্ত লড়ে? স্যাম কি তার প্রাণপ্রিয় মেয়েকে ফিরে পায়? শ্যেন পেনকে অনেকে অনেক চরিত্রে দেখেছেন... বিশেষ করে গাংস্টার বা মারমুখো কোন চরিত্রে। কিন্তু এই সিনেমা তার জীবনের সেরাটার একটা। কম বুদ্ধি সম্পন্ন ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅ্যাবিলিটির রোলটা দেখে শুধু মুগ্ধ হয়ে থাকতে হয়। এই সিনেমাটির বলিউড একটা রিমেক বানিয়েছিল ‘Main Aisa hi Hoon’...অজয় দেবগন ছিল...I am Sam দেখার পর ওটা দেখলে মেজাজ পুরো খিঁচরে যাবে!! গল্পের বারোটা সুন্দরভাবেই বানিয়েছে তাতে! লুসি চরিত্রে যে আছে সে এখন নিজেই অভিনেত্রী হয়ে গেছে...ড্যাকোটা ফ্যানিং। এই মেয়েটা ছোট থেকেই সেই মাপের অভিনয় জানে। এই সিনেমার জন্য ৭৪ তম অস্কারে শ্যেন পেন সেরা মুখ্য অভিনেতাতে মনোনীত হয়েছিল। অসম্ভব সুন্দর এই সিনেমাটি এক ভিন্ন বাবার গল্প, তার মেয়ের গল্প...তাদের মন ছুঁয়ে যাওয়া সম্পর্কের গল্প। An outstanding movie about a mentally retarded father and his divine attachment with his princess daughter.
I am Sam (2001)
IMDB rating: 7.6/ 10
Genre: Drama/ Family
Cast: Sean Penn, Michelle Pfeiffer, Dakota Fanning
Country of Origin: USA
পঞ্চম মুভি :
“Nothing is impossible, the word itself says 'I'm possible'!”
১৯৪৭ সাল... প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র হিসেবে প্রবেশ ঘটেছিল জন ন্যাশের। গণিতে অধ্যয়নের জন্য সে কার্নেগি স্কলারশিপ নিয়ে সেই জায়গায় গিয়েছিল। সম্বর্ধনার দিন তার সাথে পরিচয় হয় অনেক বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের এবং ছাত্রের যাদের মধ্যে ছিল রিচার্ড সল, অ্যাইন্সলে, বেন্ডার। তার হোস্টেলের ঘরে পৌঁছালে তার আরও একজনের সাথে পরিচয় হয় যার নাম চার্লস হার্মান। পড়াশুনার পাশাপাশি ন্যাশ নিজের তত্ত্ব প্রকাশের জন্য উদগ্রীব থাকে সবসময় এবং ডাইন্যামিক্সের উপর একটি আর্টিকেল প্রকাশও করে সে নিজের প্রচেষ্টায় যার ফলে এমআইটিতে সল এবং বেন্ডার সহ সে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। পাশাপাশি ন্যাশের কাছে পেন্টাগনের গুপ্ত কিছু লোক তার কোড ব্রেকিং এর প্রতিভার দরুণ তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দিয়ে যেতে থাকে কোড উদ্ধারের কাজে। সে তার এমআইটির চাকরির পাশাপাশি গুপ্ত এই কাজটিও করে যেতে থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট মেইলবক্সে তার এনক্রিপ্টেড ডকুমেন্টের ডিক্রিপ্ট কপিগুলো দিয়ে আসতে থাকে। ইতিমধ্যে ন্যাশের সাথে প্রণয়বন্ধনে আবদ্ধ হয় তারই ছাত্রী অ্যালিশিয়া লার্ডে। বিয়ে করে ফেলে তারা এবং বিয়ের পরে অ্যালিশিয়া খেয়াল করে ন্যাশ অনেক সময় খামখেয়ালী ভাবে কোথায় যেন বেড়িয়ে যায়, আপনমনে দরজা লাগিয়ে বসে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা... কার্যক্রম দিনকে দিন অস্বাভাবিক হয়ে যায় তার। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে দেয়া এক বক্তব্যের সময় ন্যাশের খামখেয়ালীপনা চরম সীমার বাইরে চলে যায়। তাকে মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয় এবং সেখানেই তার প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া ধরা পড়ে। যার ফলে সে তিনটা এমন মানুষকে দেখতে পায় যাদের বাস্তব পৃথিবীতে কোন অস্তিত্বই পাওয়া যায় না। কি হয় এরপর জন ন্যাশের সাথে? অতি বুদ্ধিসম্পন্ন কিন্তু প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত এই মানুষটির ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে ঠেকে? অসা.........ধারণ বললেও কম হবে জন ন্যাশের জীবন। তার আসল নাম জন ফোবর্স ন্যাশ জুনিয়র। মানুষের জীবনে সব থেকে কঠিনতম সময়ে যারা পাশে থাকে তারাই একান্ত আপন মানুষ হয়, জন ন্যাশ তা পেয়েছিলেন... জন ন্যাশের কল্পনাপ্রসূত রাজ্যের জীবন কল্পনা নয়, বাস্তব... তার থেকেও বাস্তব তার কাজ, তার অবদান। প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া এমন একটি অসুখ যেখানে মানুষ স্বাভাবিক ভাবে চিন্তা করতে পারে খুব কম সময়ের জন্য...অতিলৌকিক জগত তৈরি হয়ে যায় তাদের। একদিকে আক্রমণাত্মক মানসিকতা, অপরদিকে বিক্ষিপ্ত চিন্তা সবকিছু মিলিয়ে সাধারণ জীবনযাপন তাদের জন্য আর দশটা মানুষের মত স্বাভাবিক থাকে না... কিন্তু জন ন্যাশ নিজেই সেটার ‘রোল মডেল’ হয়ে থেকে গেছে...সে অবাস্তব, অকল্পনীয় জিনিস বাস্তব করে দেখিয়েছে। সিনেমার গল্প পুলিৎজার পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখিকা সিলভিয়া ন্যাসারের ‘A beautiful mind’ বইটি অবলম্বনে লেখা। সেরা চলচ্চিত্র সহ চারটি বিভাগে অস্কার জিতে নিয়েছিল সিনেমাটি ৭৪ তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে। যদিও সিনেমার অনেকাংশ আসল জন ন্যাশের জীবনের সাথে মেলে না, বিতর্ক আছে একে ঘিরে... তারপরেও ন্যাশের এক অনন্য মানুষ হওয়ার গল্প আছে এতে... যা একাধারে মুগ্ধ এবং নির্বাক করবে। A beautiful film about a mentally challenged man who took the hardest challenge in life.. “Overcome from Difficulties” .
A Beautiful Mind (2001)
IMDB rating: 8.2/10
Genre: Biography/ Drama
Cast: Russell Crowe, Ed Harris, Jennifer Connelly
Country of Origin: USA
বাস্তবের জন ফোবর্স ন্যাশ জুনিয়র
এই সিরিজের আগের দুই পর্বের লিঙ্ক
ফাইভ গ্রেটেষ্ট স্টার পর্ব ১—যে পাঁচটি ভিন্ন ঘরানার সিনেমা দেখে তাদের উপর ভালো লাগা আরও পাঁচ গুণ বেড়ে গিয়েছিল
http://www.somewhereinblog.net/blog/Ricks007/30057726
ফাইভ গ্রেটেস্ট স্টার পর্ব ২—যে পাঁচটি ভিন্ন ঘরানার সিনেমা দেখে তাদের উপর ভালো লাগা আরও পাঁচ ধাপ বেড়ে গিয়েছিল
http://www.somewhereinblog.net/blog/Ricks007/30062121
**** এই লেখা সম্পূর্ণ রূপে আমার… পূর্বের কোন লেখার সাথে মিলে গেলে তা একান্তই co-incidence….no resemblance. আশা করি পোস্টটি ভালো লাগবে !!!! Happy Movie Watching !!!
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৫