পবিত্র রামাদান মাস চলছে। রহমত বরকত আর নাজাতের মাস রামাদান।ল রামাদান কুরআনের মাস। এই মাসেই মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়েছে। তাই রামাদান Especial মাস, শ্রেষ্ঠতম মাস।
রামাদানে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম বেশি বেশি কুরআন পড়েন। তারাবিহ'র বাইরেও প্রায় প্রতিটি মুসলিম ঘরে কুরআন পড়া হয়। করোনার কারণে বেশিরভাগ স্থানে তারাবিহ বন্ধ থাকলেও ঘরে ঘরে কুরআন পড়া বন্ধ নেই।
কুরআন বিস্ময়কর গ্রন্থ। এর প্রতিটি অক্ষর আল্লাহর কথা। ভাবে ভাষায় গভীরতায় এটি অতুলনীয়। এর প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি অক্ষর অনুপ্রেরণা জাগায়। কুরআনের ছন্দ ও তার অলংকার, তার ধ্বনির উত্থান পতন, এর দ্রুতগতি অনন্যসাধারণ। এর প্রতিটি আয়াত মর্মভেদী, অনলবর্ষী, আবেগময় এবং দিব্য প্রেরণায় পরিপূর্ণ। দুনিয়ার কোন বইয়ের সাথে এর তূলনা চলে না।
কেউ গভীর মনোযোগ সহকারে কুরআন পড়লে তার মনে অদ্ভুত অনুভূতি খেলা করবে। কোন কোন আয়াত পড়ে সে বিস্ময়াভিভূত হয়ে যাবে ; কোন আয়াত পড়ে ভয়ে গা শিউরে উঠবে; কোন আয়াত পড়ে খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে উঠবে; কোন আয়াত পড়ে চিন্তার দ্বার খুলে যাবে; আবার কোন আয়াত পড়ে অনেক দিনের খুঁজে ফেরা সমস্যার সমাধান মিলে যাবে। আরও কত কি।
প্রতিটি মানুষের কাছে কুরআন এক বিস্ময়কর গ্রন্থ। বিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাজনীতি, ইতিহাস, আইন, সমাজনীতি, সমরনীতি, কিংবা ধর্মীয় যাইহোক না সবকিছুর জন্যই কুরআন অপরিহার্য। কুরআনের আরেকটা বিস্ময়কর গুণ হলো এটি যেই পড়বে তার কাছেই মনে হবে "আরে! এটা তো আমার জন্যই!" সব বইয়ের নির্দিষ্ট পাঠক আছে। কিন্তু কুরআন সবার জন্য।
কুরআন সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব। ধর্মে বলা আছে যে, প্রতিটি হরফ তেলাওয়াতের জন্য দশটা কিংবা আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নেকি পাওয়া যায়। রামাদানে সুযোগ আরও বেশি। তাই কুরআনের মাসে সুযোগ অবশ্যই নেয়া উচিত। আমরা যদি আজ থেকেই নিয়ত করি যে, দিনে কমপক্ষে দশ আয়াত তেলাওয়াত করব তাহলে খুব ভাল হয়। রামাদানের এই চৰ্চা বাকি এগারো মাস বজায় থাকুক।
অনেকে কুরআন পড়তে পারেন না। হাতে অফুরন্ত অবসর। এই সুযোগে শিখে নিতে পারেন। নিদেনপক্ষে আরবির বাংলা উচ্চারণসহ কুরআন বাজারে পাওয়া যায়। সেগুলো কিনতে পারেন। অথবা স্মার্টফোনে কুরআনের অ্যাপস ডাউনলোড করে নিতে পারেন। সময় নাই, ব্যস্ত এসব বলার অবকাশ নেই। প্রতিদিন অফিসে বা কাজে যাওয়ার সময় গাড়িতে জাস্ট পনের মিনিটে দশ আয়াত পড়ে ফেলা সম্ভব। যারা বেশি পড়তে চান তাদের বলার কিছু নেই। কিন্তু যারা শুরু করতে ইচ্ছুক তারা দিনে দশটি আয়াত অন্তত পড়ুন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বংগানুবাদসহ কুরআন পড়তে পরামর্শ দিব। তাহলে কুরআনের আসল স্বাদ আপনি পাবেন। অন্যথায় পড়া হবে, নেকিও হবে কিন্তু আল্লাহর বক্তব্য অজানাই থেকে যাবে।
হাদিসে আছে "কেউ রাতে নামাজে দশ আয়াত তেলাওয়াত করলে তাকে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না ; কেউ একশো আয়াত পড়লে আল্লাহর অনুগত বান্দা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়; আর কেউ এক হাজার আয়াত তেলাওয়াত করলে তার জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।"
কাজেই আজ থেকেই আমাদের প্রোগ্রাম "দিনে দশ আয়াত" শুরু হয়ে যাক! অন্তত গাফেলের খাতায় নাম না থাকুক। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমিন
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:০৫