বইটির নাম ‘নিজেকে জানো’ অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক এ বই বিতরণ করেছে।
বইটিতে ‘শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন’ অধ্যায়ে লেখা হয়েছে, যখন একটি মেয়ে ১০-১২ বছর বয়সে পৌঁছে তখন তার
শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয়। যেমন, উচ্চতা বাড়ে, মাসিক শুরু হয়, স্তন বড় হয়, বগলে ও … চুল বা লোম গজায়। এ বয়সে ছেলেদের শরীরের শুক্রাণুযুক্ত রস মাঝে মাঝে মূত্রনালী দিয়ে বের হয়ে আসে, যাকে …বলা হয়।
বইটির ‘বন্ধুত্ব ও ভালবাসা’ শীর্ষক অধ্যায়ে একটি শিরোনাম হলো ‘প্রেম করলে কেন ছেলেমেয়েরা ধরাধরি করে?’ এখানে লেখা হয়েছে প্রেম এমন একটি সম্পর্ক যেখানে প্রেমিক প্রেমিকা দু’জনের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ অনুভব করে, এ অনুভব হতেই তারা পরস্পরের খুব কাছাকাছি পেতে চায় এবং এ কারণেই অনেক সময় তারা পরস্পরকে স্পর্শ করে।
এ অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো, ‘পরিস্থিতির চাপে যদি দৈহিক মিলনের সম্ভাবনা দেখা দেয় তবে আমি সে অবস্থায় কী করবো?’পরিচয়ের একপর্যায়ে দৈহিন সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। যদি দৈহিক সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে গর্ভধারণ থেকে
নিরাপদ থাকার জন্য কোনো অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করা জরুরি। এরপরও যদি কোনো সমস্যা হয় তবে উপদেশের জন্য তুমি কাছের কোনো ক্লিনিকে যেতে পারো। (বইটির শেষে বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত বেশ কয়েকটি ক্লিনিক/সেবা সংস্থার তালিকা দেয়া রয়েছে এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণের জন্য)।
এ অধ্যায়ে একটি শিরোনাম হলো ‘সতী পর্দা কি জানতে চাই?’ এ বিষয়ে যে বিবরণ বইটিতে দেয়া হয়েছে তা প্রকাশযোগ্য নয়।
এ অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো ‘প্রথম মিলনে কি সব মহিলার রক্ত পড়বে? এ বিষয়ে যে বিবরণ বইটিতে দেয়া হয়েছে তা প্রকাশযোগ্য নয়।
দৈহিক সম্পর্ক অধ্যায়ে আরেকটি শিরোনাম হলো ‘মায়ের পেট থেকে কিভাবে বাচ্চা বের হয়ে আসে ?’
এখানে সন্তান প্রসবের যে বিবরণ দেয়া হয়েছে তাও প্রকাশযোগ্য নয়। ‘বাচ্চা কিভাবে হয়?’ শিরোনামে লেখা হয়েছে কিভাবে মায়ের গর্ভে সন্তান আসে তার বর্ণনা।
দৈহিক মিলন অধ্যায়ের আরেকটি শিরোনাম হলো ‘অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা ক্ষতিকর। এরকম হলে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায়?’ এখানেও লেখা হয়েছে অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক থাকলে কনডম ব্যবহার খুবই জরুরি।
বইটিতে যৌনমিলন অধ্যায় আলোচনার আগে কিভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছেলেমেয়েরা পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, সে আকর্ষণ এবং ভালোলাগা প্রকাশের উপায় কী সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া যৌন অনুভূতি প্রকাশের বিভিন্ন উপায় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। বইটির পেছনে লেখা রয়েছে মহিলা ও শিশুবিষযক মন্ত্রণালয়।
আজ থেকে ৭/৮ বছর আগের কথা একটু ভাবুন, তখন পাঠ্যপুস্তকে এই বইটা ছিল না। আমরা এই বইটি পড়িনি, তাই বলে কি পরিণত বয়সে আমরা ঐ বিষয়ের কিছুই জানি না? কোমলমতি শিশুদের এগুলো শিখানো কি এতটাই জরুরী !! আপনি আপনার সন্তানকে সাইকেল চালানো শিখিয়ে যদি সাইকেল কিনে না দেন তাহলে আপনার সন্তান কি করবে? হয়তো ক্লাসমেট যাদের সাইকেল আছে অথবা পাড়ার মধ্যে যাদের সাইকেল আছে তা কিছু সময়ের জন্য হলেও চালানোর চেষ্টা করবে তাই না? আপনি আপনার সন্তনকে ইভটিজিং থেকে বিরত থাকার জন্য বলবেন কিন্তু আপনার সন্তানকে বিদ্যালয়ে কি শিখাচ্ছে তাও আপনার জানা দরকার। সরকার ইভটিজিং এর জন্য কঠোর আইন করতেছে অথচ কোমলমতি শিশুদের সযত্নে কিভাবে ইভটিজিং করতে হয় তা শিখাচ্ছে !
বিরোধীতা নয়, নিজের ছেলে-মেয়ে অথবা ছোট ভাই-বোনের কথা মাথায় রেখে একটু ভাবুন, আমাদের কে কোনদিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে???
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭