;;
;;
;;
ভাবলাম কিছু অভিজ্ঞতা মনে থাকতে থাকতে লিখে রাখা জরুরী। হঠাৎ দেখা যাবে ভুলে বসে আছি। তাছাড়া আজকে পুস্ট করার মুডে আছি। মুড সব সময় আসে না। মুড থাকতে থাকতে লিখে ফেলা দরকার।
প্রথম শেভ করাঃ
তখন পড়ি ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে।
নাকের নিচে গোফের বেশ লম্বা একটা রেখা। আয়নায় নিজের মুখটাকে একটা অদ্ভুত বস্তু মনে হয়। তাছাড়া আমি মোটামোটি ফর্সা একটা ছেলে(মা বলেন)। ফর্সা হবার কারনে গোফের রেখাটাকে একটু বেশীই চোখে লাগতো।
গোফ নিয়ে অনেক টেনশনেই ছিলাম বলা যায়। বন্ধু মহলে এটা নিয়ে প্রায়ই আলোচনা চলতো। এক বন্ধু একটা উপায় বাতলে দিলো- একটা স্কচট্যাপ গোফের উপর লাগিয়ে তারপর হঠাৎ করে টান দিয়ে খুলে ফেলতে হবে। এভাবে কয়েকবার করলে মুখ পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আমি ঐদিনই বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার সাথে স্কচট্যাপ কিনলাম। পরিকল্পনা অনুযায়ী নাকের নিচে স্কচট্যাপ মারলাম। তারপর টান দিলাম। টান দিয়ে দেখলাম এটা বেশ কষ্টের একটা কাজ। স্কচট্যাপের আঠা ছুটার সময় ব্যাপক টান খায়।
আমি কষ্ট মেনে নিলাম। হোক না একটু কষ্ট! মুখ থেকে গোফ তো সরবে!
অনেক টানাটানি করার পর আয়নার সামনে দাড়ালাম। আয়নায় নিজেকে দেখে চুক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেলো। নাকের নিচটা লাল টকটকে হয়ে গেছে। স্কচট্যাপ দিয়ে অধিক টানাটানির কারনেই এই অবস্থা! পানি দিয়ে অনেক ঘষাঘষি করেও লাল ভাবটা কাটানো গেলো না।
মা এই লাল টুকটুকে গোফ দেখে জিজ্ঞেস করে ফেললেন "ঐ তোর এই অবস্থা ক্যান?" আমি বললাম "মশা কামড়ায়।" মশার কামড়ের সাথে গোফ লাল হওয়ার কি সম্পর্ক সেটা ব্যাক্ষা করার আগেই মায়ের সামনে থেকে কেটে পড়লাম।
একদিন অনেক পরিকল্পনা করে ঠিক করলাম - না। এবার রেজার দিয়েই শেভ করবো। যা হয় হোক।
একদিন রাতে চুপিচুপি বাবার বাথরুমে গিয়ে কোনরকমে শেভ করে ফেললাম। তড়িঘড়ি করে নিজের রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে শরমে কাউরে মুখ দেখাতে পারি না। কোনরকমে মুখ লুকিয়ে হাটাহাটি করছি। এর মাঝে হঠাৎ বাবা এসে বললেন- "ঐ! তুই শেভ করেছিস! সর্বনাশ। করেছিস কি! এখন তো রেগুলার শেভ করতে হবে। তোর তো এখনো বয়সই হয় নি!"
এমনিতেই লজ্জ্বায় মরছি, তার উপর বাবার মুখে এমন কথা! আমি মনে মনে বললাম, "ধরনী দ্বিধা হও। আমি হামাবো"
গোফ শেভ করার প্রায় দু বছর হয়ে গেলো। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এখনো দাড়ি উঠছে না। আজকে সকালে দেখলাম দু একটা দাড়ি উঠছে। আমি আল্লাহর নাম নিয়ে রেজর দিয়ে দিলাম দাড়ির উপর টান। কিন্তু বিধি বাম। রেজরের চাকু ঢুকে গেলো গালে। রক্তারক্তি কান্ড। কোনরকমে ডেটল ট্যাটল মেখে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।( সকালে এই ঘটনার পরেই মূলত এই পোস্ট দেবার পরিকল্পনা করেছি)।
প্রথম প্রেমঃ
প্রেম বয়স মানে না। আমি এর জলন্ত সাক্ষি।
আমি তখন পড়ি ক্লাস সিক্সে। আমাদের পাশের বাসাতেই থাকতেন এক আপু। তিনি পড়তেন ইন্টার সেকন্ড ইয়ারে। আপুর সাথে আমার ব্যাপক প্রেম।
অবশ্য প্রেমটা ছিলো প্রথম দিকে এক তরফা। শুধু আপুই আমার প্রেমে পড়েছিলেন। আমাকে দেখলেই বলতেন- "কিরে! পিচ্চি ডারলিং। কেমন আছিস। এইরকম মুখ ভ্যাচকা মেরে ঘুর ঘুর করিস ক্যান? একটু স্মার্ট হ"।
আপুর সাথে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হতো। আপু দেখা মাত্রই আমার সাথে দুষ্টুমি শুরু করতেন। "ঐ! তুই বড় হস না ক্যানরে পিচ্চি! তোকে তো আমি বিয়ে করবো। বড় না হলে বিয়ে করবো ক্যামনে?"
আপুর মা এক কাঠি বেশি এগিয়ে ছিলেন। তিনি আমাকে প্রায়ই "জামাই" বলে ডাকতেন।
আমি বাচ্চা ছেলে। তখন কি আর বুঝতাম যে আপু আসলে আমার সাথে একটা "প্রেমের খেলা" খেলছেন? আমি বুঝতাম আপু মনে হয় সত্যি সত্যি আমার প্রেমে পড়ে গেছেন। তাই আমিও প্রেমে পড়ে গেলাম।
কিছুদিন পরেই আপুর বিয়ে হয় গেলো। এভাবে আমি প্রথম প্রেমেই ছ্যাকা খেয়ে বসলাম।
প্রথম পর্ন দেখাঃ
তখন ক্লাস নাইনে পড়ি সম্ভবত। বন্ধুরা সব এই লাইনে অনেক এগিয়ে গিয়েছে। কিভাবে পর্ন মুভি শুরু হয়, মুভির মাঝে কি কি হয় সব তাদের মুখস্ত। ক্লাসের ফাকে ফাকে এসব নিয়ে প্রায়ই তারা গোলটেবিল বৈঠক করে। বৈঠকে আমি কেবল শ্রোতা মাত্র। আমি শুনি আর দীর্ঘশ্বাস ফেলি। আহ! আমিও যদি দেখতে পারতাম!
একদিন সুযোগ এসে গেলো।
তখন হঠাৎ ক্যামেরা আর ভিডিও-ওয়ালা মোবাইল বের হয়েছে। হাতে হাতে ভিডিও-ওয়ালা মোবাইল।
আমার চাচারও সখ হলো একটা ভিডিও-ওয়ালা মোবাইল কিনবেন। পাশের বাসায় একজন একটা বিক্রি করবেন। চাচা সেটা কেনার সিদ্ধান্ত নিলেন। মোবাইল-টা কেনার আগে সেটা টেস্ট করার জন্য একবার বাসায় নিয়ে আসলেন। আমি চাচার হাতে ভিডিও-ওয়ালা মোবাইল দেখে মহা খুশি। ওয়াহ! কি দারুন জিনিষ! মোবাইলেই ভিডিও চলে।
আমি মোবাইল হাতে নিয়ে এলোপাথাড়ি টেপা শুরু করলাম। হঠাৎ কি হলো- একটা অদ্ভুৎ ভিডিও চালু হয়ে গেলো। সাথে অদ্ভুত শব্দ। ভিডিও দেখে তো আমার চুক্ষু ছানা বড়া, -এ কি! এতো দেখি সেই জিনিষ!
আমার পাশেই ছিলেন আমার চাচা। তিনিও এই কান্ড দেখে খুবই বিব্রত। তিনি মোবাইল আমার হাত থেকে নিয়ে ইন্ড বাটনে চাপলেন। এতে ভিডিও বন্ধ হলো কিন্তু সাউন্ড ব্যাপক জোরে চলতেই থাকলো। কি আজব! সাউন্ড এতো জোরে হচ্ছে যে রুমের বাইরে পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। কোন উপায় না দেখে চাচা অনেক কষ্ট করে মোবাইলের ব্যাটারী খুলে ফেললেন। তারপর শেষ রক্ষা হলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:২৭