কালকে প্রস্তর যুগের একটা সিনেমা দেখলাম। সিনেমাটি দেখে আমি দারুন পুলকিত রোমাঞ্চিত এবং শিহরিত। নায়ক নায়িকার নাম কমু না। ছবির নাম কমু না।
ছবির গল্পটি দারুণ, বৈচিত্র্যময় এবং এক কথায় অসাধারণ। কাহিনীর সার সংক্ষেপ, কাঠুরিয়ার ছেলের সাথে গ্রামের চেয়ারম্যানের মেয়ের অসম ফিল্মি ভালোবাসা নিয়ে এই অমর প্রেমের কাহিনী। আমি কিছু খণ্ড খণ্ড অংশ আপনাদের কাছে তুলে ধরছি।
কাহিনীর প্রথম পার্ট
চেয়ারম্যান সাহেবের মেয়ে ঢাকাতে পড়াশুনা করেন। তিনি গ্রামে বেড়াতে এসেছেন সাথে তার কলেজে পড়ুয়া সইদের নিয়ে। এক বিকেলে মেয়েটি তার সইদের নিয়ে গ্রামের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে পথ ভুলে বনে প্রবেশ করেন। এমন সময় এক রোগা ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বানর এসে নায়িকা আর তার সইদের আক্রমন করে। এই চরম বিপদ থেকে তাকে উদ্ধার করেন কাঠুরিয়ার ছেলে দেশী টারজান।
দ্বিতীয় পার্ট
এবার আবারো সেই বিপদ দিয়ে শুরু, ৫ ফুট উচ্চতার বড়ই গাছ থেকে বড়ই পারতে উঠতে গিয়ে নায়িকার পরে যাওয়া এবারো ত্রাণকর্তা সেই টারজান। টারজানের চোখে ভালবাসার ঝিলিক নায়িকার চোখে টারজানকে পাওয়ার ঝিলিক। এরপর ভালোবাসার একটি গান। অতঃপর ভালোবাসা। টারজানের বাঁশির সূরে নায়িকার রাত্রে গাছতলায় আসা। ভিলেনের চোখে পড়া। অতঃপর চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে বিচার।
তৃতীয় পার্ট
নায়কের বাবাকে হত্যা। গ্রামে শুরু হওয়া মেলাতে নায়কের ভাইকে ১৯ বছর পর আবার ফেরত পাওয়া। পরিচালককে ধন্যবাদ দিতে হবে এই অসাধারণ এবং আবেগময় দৃশ্যটি রাখার জন্য। এরপর দুই ভাইয়ের এক সাথে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।
ছবিটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল, কিছু দারুণ দারুণ ডায়ালগ আছে যা এই ছবিটির কাহিনীকে আরো বিশাল এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যেমন -
- তুই আমার বাবার হত্যাকারী।
- জান দিবো তবু ইজ্জত দিবো না।
- ছেড়ে দে শয়তান।
- আমার দেহ পাবি কিন্তু আমার মন পাবি না।
- ইশ আমার বুঝি লজ্জা করে না।
- মা,আমি তোমার সেই হারিয়ে যাওয়া ছেলে আকাশ,যাকে তুমি ১৯ বৎসর আগে মেলা থেকে হারিয়ে ফেলেছিলে।
- না,না,না,এ আমি হতে দিবো না।
- তুই বামন হয়ে চাঁদের গায়ে হাত দিচ্ছিস,তোর এ হাত আমি ভেঙে দিবো।
- তোকে আমি দেখে নিব ?
- আমরা গরীব তাই বইল্লা কি আমাগো মান ইজ্জত বলতে কিছু নাই চেয়ারম্যান সাহেব।
- বাবা বাবা আমি দেখতে পাচ্ছি।
- মাইয়াডা কার রে,ভালো ডাঙ্গর হইয়া গেছে।
- টাকা যা লাগুক আমি দিমু কিন্তু কমলারে আমার চাই চাই।
শেষ পার্ট
চেয়ারম্যান সাহেবের লাঠিয়াল বাহিনীর আক্রমন। দুই ভাই মিলে ৩০ জন লাঠিয়াল কে কুপোকাত করে দিলেন। অতঃপর চেয়ারম্যান সাহেব ঢাকা থেকে হোন্ডা ওয়ালা গুন্ডা ভাড়া করে আনলেন। গুন্ডা নায়ককে মারার জন্য ৬ রাউন্ডের রিভলভার দিয়ে পরপর ২০ টি গুলি করলেন কিন্তু নায়কের অসম্ভব সার্কাসি দক্ষতায় একটা গুলি তার শরীরে না লাগা কারন প্রতিটি গুলি তিনি কুড়াল দিয়ে ঠেকিয়েছেন। এরপর কৌশলে ভিলেনের হাত থেকে নায়কের হাতে রিভলভার চলে আসে এবং নায়কের এক গুলিতে ঢাকাইয়া গুন্ডার মৃত্যু।
অবশেষে চেয়ারম্যানের ভুল বুজতে পারা। নায়ক নায়িকার মধুর মিলন।
সমাপ্ত
বিদ্রঃ বনের রোগাক্রান্ত বানরকে স্যালাইন দেওয়া উচিৎ ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫৫