ক্লাস ফোরে যখন শাহিন স্কুলে পড়ি তখন একটা মেয়েকে খুব পছন্দ করতাম। মেয়েটা আর আমি সেম ক্লাসে পড়তাম কিন্তু আমাদের সেকশন ভিন্ন ছিল। টিফিন টাইমে যখন প্রতিদিন খেলাধুলা হতো তখন আমার অনেক বন্ধুবান্ধব মেয়েদের সাথে বউচি খেলতে যেত। আমিও যেতাম কিন্তু কি এক অদৃশ্য কারনে মেয়েটা আমাকে কোনদিন খেলায় নিতো না। যাহোক তার পরেও মেয়েটাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতাম এবং ভালোবাসতাম। ছোটবেলার স্বপ্ন আর কি হতে পারে। যাহোক এই চ্যাপ্টার শেষ কারন স্কুল বদলে ফেলেছি। মেয়েটাও মন থেকে হাওয়া হয়ে গেছে।
নতুন স্কুলে ভর্তি হলাম ক্লাস ফাইভে। এই স্কুলেও ছেলেমেয়েরা কম্বাইন্ড। তা আমাদের ম্যাডাম ক্লাসে দুষ্টামি করলে অন্য ধরনের শাস্তি দিতো। শাস্তি ছিল মেয়েদের সাথে এক মাস বসে ক্লাস করা। যাহোক একবার দুস্টামির কারনে আমারও এই শাস্তি হল। আমাকে মেয়েদের সাইডে পাঠানো হল। প্রতি ব্যাঞ্চে ৫ জন করে মেয়ে বসতো একটা মেয়েকে উঠিয়ে দিয়ে আমাকে মাজখানে বসানো হল। চিন্তা করেন আমার ছেলে বন্ধুরা সব অন্য সাইডে আর আমি মেয়েদের সাইডে বসে আছি তাও আমার বাম পাশে দুইটা মেয়ে ডান পাশে দুইটা মেয়ে আরে মাজে আমি। অন্যান্য ক্লাসের সবাই দেখে হাসাহাসি করতো টিটকারি মারতো। কি আর করা ? আমি মনে করলাম মাত্র একটি মাস দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমার আর মাস শেষ হলনা পুরো ৭টি মাস মেয়েদের মাজে বসে ক্লাস করতে হল। কি কারনে জানিনা।
যাহোক এবার মহল্লাতে আসি এটাও ক্লাস ফাইভের ঘটনা। মহল্লাতে একটা মেয়ে ছিল অসম্ভব সুন্দরী। আমাদের আবার এক ব্যাচ সিনিয়র। কিন্তু ওনিয়ে মাথা ঘামায় কে। মেয়েটা নানা রকমের ফ্রক পড়তো যখন সাদা ফ্রক পড়তো তা দেখে আমি কি আর বলবো, আমারতো বাচ্চা মন কিযে ভালোবাসা তৈরি হতো রাত্রে ঠিকমতো পরতেও পারতাম না। বিকালে মেয়েটা আমাদের সাথে আবার ফুল টোক্কা নামে একটি খেলা খেলতো, এখানে আমার চোখ একজন দু হাত দিয়ে আটকিয়ে রাখতো অন্য আর একজন আমার কপালে এসে টোক্কা দিয়ে যেত। আমার বের করতে হতো কে আমার কপালে টোক্কা দিয়েছে। তা মাজে মাজে আমার পছন্দের মেয়ে আমার চোখ এসে আটকিয়ে রাখতো আহা সেই মুহূর্ত আমার জিবনেও ভুলবোনা। সে যখন আমার পিছনে দারাতো তার গায়ের ঘ্রান তার দু হাতের ছোঁয়া এখনো যেন তার স্পর্শ আমার শরীরে লেগে আছে। যাহোক এখানেও আমি ব্যার্থ। আমারি এক বড়লোক বন্ধু মেয়েটাকে পটিয়ে ফেলে। কষ্ট কাকে বলে।
ক্লাস টেনের কথা একটা মেয়েকে ভালো লেগে গেলো এখানে ব্যাড লাক আমি সাহস করে এগুতে পারিনি তাই কিছু হয়নি। সাহস করলে কিছু একটা হতো। অন্তত একটা থাপ্পর জুটতো কপালে।
এবার কলেজের প্রথম বর্ষের কথা। আমরা যে বাসাতে ভাড়া থাকতাম। আমরা থাকতাম তিন তলায় আর দ্বিতীয় তলায় একটা মেয়ে থাকতো ক্লাস নাইনে পরে। টানা ৬ মাস লেগে রইলাম তারপরে সফলতার মুখ দেখলাম। কিন্তু একই বিল্ডিং এ বাসা হওয়াতে আমাদের উভয় পরিবার ঘটনা জেনে ফেললো, কি আর করা প্রেম শেষ আমিও শেষ।
এই প্রেমে ব্যার্থ হওয়ার পর অনেক কষ্টে আছি মনও ভালো নেই। কি করি করি এরি মধ্যে কপাল খুলে গেলো অন্য কলেজের একটা মেয়েকে পছন্দ হয়ে গেলো এতো ঘুরলাম এতো কানলাম। ফলাফল শুন্য হাতে ফেরত।
আমাদের এলাকার একটা ব্যাচ ছিলো আমরা প্রতিদিন এক বন্ধুর ছাঁদে আড্ডা দিতাম তা পাশেই আমাদের এলাকার এক স্থানীয় পরিবারের বাসা। তা পাশের বাসার মেয়েগুলোকে ছোট থেকে দেখে এসেছি কোনদিন নজর দেওয়ার প্রয়োজন পরে নাই। ওরা আমাদের বাসায় এসে খেলতো। কি কপাল একদিন আমাদের এক বন্ধুর নজরে পড়লো আমরাও অবাক আরে এরা এতো বড় হয়ে গেছে। শুরু হল আমাদের মিশন। ওরা তিনজন কাজিন ছিল দুইজনকে দুই বন্ধু পছন্দ করা শুরু করলো আর বাকি একজনের পিছনে আমরা সবাই। ওদের বাসা থেকে আমাদের ছাঁদের দূরত্ব বেশী না বড়োজোর দুই হাত। আমরা যাকে পছন্দ করি একদিন দেখি ও বারান্দাতে একা দাড়িয়ে ওর কাজিনরাও নেই। আর আমার বন্ধুরাও অন্য মহল্লাতে গেছে। আমি আসলে ঐ মেয়েটার জন্য সহজে কোথায় যেতে চাইতাম না।
আমি হাঠতে হাঠতে ছাঁদের কিনারাতে চলে গেলাম ঠিক পাশে ওদের বারান্দা আমি তাকে সরাসরি প্রপোজ করলাম। মেয়েটার উত্তর আপনি তো আমার মামা হন। আমি পুরাই টাসকি খেয়ে গেলাম, আমার বন্ধু বান্ধবরা এই ঘটনা কেমনে জানি জেনে ফেলছিলো। এখনো আমাকে মামা ডাক শুনতে হয়।
যাহোক শেষ প্রেম হল অন্য এক জনের সাথে আমাদের বন্ধুর এক আত্মীয়। দীর্ঘ এক বছর পিছনে গাধার মতন ঘোরার পর আমাকে সে হ্যা বললো। প্রেমের ৬ মাসের মাথায় আমার সন্দেহ বেড়ে গেলো মনে হল প্রেমে কিছুটা ঘাপলা আছে। আমার সন্দেহ অবশেষে সঠিক প্রমান হল। আমার সাথে প্রেম শেষ হওয়ার পর যে বন্ধুকে আমি সন্দেহ করতাম তার সাথে আমার প্রাক্তন প্রেমিকার প্রেম শুরু।
এই ঘটনার শেষ ২০০০ এ এরপর আর কোন প্রেম নেই আমার জীবনে ২০১৪ চলে যাচ্ছে আমি একা খুব একা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:৫৩