আড়াই বছর আগে যখন MBA শুরু করি তখন অফিস শেষে গুলশান ১ থেকে শাহবাগ যেতে সময় লাগতো মোটামুটি ১ ঘন্টা ২০ মিনিট। এখন লাগে ২ ঘন্টা থেকে ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট। ৩ ঘন্টা ক্লাস করার জন্য যাওয়া আসা মিলিয়ে সাড়ে ৪ ঘন্টা রাস্তায় থাকি! এবং দিন দিন অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে। আমাদের ২ নব নির্বাচিত মেয়র তাদের নির্বাচনি ইশতিহারে যানজট নিরসনের কথা বলেছিলেন, যতদুর মনেপড়ে। আমরা ভুলে গেছি, তারাও নিশ্চই ভুলে গেছেন!
এই সমস্যা সমাধানে স্বল্প মেয়াদী বা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা আছে, এমন কিছুও নজরে পড়ে না। কারন যারা এটার সমাধান করতে পারবেন তারা রাস্তায় নামার আধা ঘন্টা আগে থেকেই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তারা যখন রাস্তায় নামেন তখন ‘জট’ তো দুরের কথা, রাস্তা কোন ‘যান’-ই থাকে না। তারাও সব দেখে শুনে বোঝেন “যানজট বলে কিছু নেই, সব বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র আর পত্রিকা ওয়ালাদের উর্বর মস্তিস্কের ফসল”। সমাধান যাদের হাতে তারা নিজেরা সমস্যায় না পড়লে দুনিয়ার কোন সমস্যারই সমাধান হয় না। সুতরাং আমাদের দেশে যানজট সমস্যার সমাধান অদুর বা সুদুর ভবিষ্যতে হবে বলে মনে হচ্ছে না।
অবস্থা যদি এভাবে খারাপ হতে থাকে তাহলে করনীয় কি? প্রথমে ভেবেছিলাম হেটে চলাফেরা করবো। দেখলাম সম্ভবনা। ফুটপাথ সব ‘বাইক ভাইয়া’দের দখলে!
“--- ঠেকানো না গেলে উপভোগ করাই শ্রেয়” (! !) মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে আমিও ভাবছি এই যানজটকে উপভোগ করা শুরু করবো। তার জন্য প্রথমেই ২ টা জিনিস কেনা দরকার।
১) টিফিন ক্যারিয়ার।
২) ফু-বালিশ [যে বালিশ ফু দিলে ফুলে ওঠে, আবার হাওয়া ছেড়ে দেয়া যায়।]
গাড়ি মোটামুটি ৪০ মিনিট এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকলে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে যায়। পরিকল্পনা হচ্ছে, বাস মোটামুটি ফাকা হয়ে আসলে টিফিন ক্যারিয়ার থেকে রাতের খাবার বের করে খেয়ে নেব। তারপর ফু বালিশ ফুলিয়ে সিটের উপরে শুয়ে আরামে একটা ঘুম দেব!
টিফিন ক্যারিয়ার কোথায় পাওয়া যায় জানি, সমস্যা হয়েছে ফু-বালিশ নিয়ে। কেউ কি জানেন ফু-বালিশ কোথায় কিনতে পাওয়া যায়। ঠিকানা জানতে পারলে কিছু কেনার ইচ্ছা আছে। একটা নিজের জন্য। আর বাকিগুলো এইসব সমস্যা দেখেও যারা না দেখার ভান করে চোখ বন্ধ করে থাকে তাদের জন্য। যাতে তারা চোখ বন্ধ করে না থেকে একবারে ঘুমায় যেতে পারে।
“আহারে কি শান্তি এই সিটি ঢাকাতে,
দায়িত্বজ্ঞানহীন এই বেঁচে থাকাতে!”
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৩