somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর খুনিরা কে কোথায়?

১৬ ই আগস্ট, ২০০৮ রাত ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড পাওয়া বিদেশে পলাতক ছয় আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

আসামিদের ব্যাপারে জারি করা রেড নোটিশও বছর দু’য়েক আগে প্রত্যাহার করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এই ছয় আসামি যেসব দেশে পালিয়ে আছে বলে ধারণা করা হয়, তাদের কারো সঙ্গেই বাংলাদেশের ‘অপরাধী প্রত্যর্পণ’ চুক্তি নেই। এ চুক্তি করা ছাড়া তাদের ফেরত আনা সম্ভব নয়।

এই ছয় আসামি হলেন- অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশিদ, রাশেদ চৌধুরী, নূর চৌধুরী, মেজর শরিফুল হক ডালিম, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেহউদ্দীন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (বরখাস্ত) ফারুক রহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর বজলুল হুদা ও মেজর এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ।

আরেক আসামি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজ পাশা ২০০২ সালের আগস্ট মাসে জিম্বাবুয়েতে মারা যান।

পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, পলাতক ছয় আসামি কোথায় আছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে কিছুই জানে না।

পররাষ্ট্র সচিব আরো বলেন, এ সরকারের আমলে এসব আসামিদের বিষয়ে কোনো তপরতার বিষয়েও আমি কিছু জানি না।

এদিকে, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ইন্টারপোলের জারি করা রেড নোটিশও প্রত্যাহার হয়েছে অনেক আগে।

ইন্টারপোলে বাংলাদেশ এনসিবি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) প্রধান এবং পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহা পরিদর্শক শেখ মতিউর রহমান বলেন, সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের সময় ইন্টারপোলকে আসামিদের বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য না দেওয়ায় ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সংস্থাটি ১৮৬টি সদস্য দেশ থেকে নোটিশটি প্রত্যাহার করে নেয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক অতিরিক্ত উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক আবদুল হান্নান খাঁন এ সম্পর্কে বলেন, ১৯৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়ার পরপরই পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। এর পরপরই ইন্টারপোল বিশ্বব্যাপী রেড নোটিশ জারি করে।

তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ জারির পর আসামিদের হালনাগাদ তথ্য ইন্টারপোলকে জানাতে হয়। সে অনুযায়ী সংস্থাটি সদস্য দেশগুলোকে আসামিদের সম্ভাব্য অবস্থানের তথ্য দেয়।

পুলিশ সদরদপ্তরের সহকারী মহা পরিদর্শক শেখ মতিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১২ আসামির মধ্যে ছয়জন এখনো পলাতক। এদের মধ্যে আজিজ পাশা ২০০২ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান।

তিনি জানান, পলাতক আসামিদের মধ্যে খন্দকার আবদুর রশিদ বেলজিয়ামে আছেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। তবে লিবিয়াতেও তিনি পালিয়ে থাকতে পারেন। এছাড়া, রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে, আবদুল মাজেদ ও মোসলেউদ্দিন ভারতে, শরিফুল হক ডালিম পাকিস্তান অথবা হংকংয়ে এবং নূর চৌধুরী কানাডা অবস্থান করছেন।

এসব আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, বর্তমানে কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। এ চুক্তি ছাড়া আসামি ফেরত আনা সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি করা নিয়ে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল সেনা কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ১৯৯৮ সালে ৮ নভেম্বর এ ঘটনায় ঢাকার দায়রা জজ গোলাম রসুল ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
হাইকোর্ট ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর এ মামলায় বিভক্ত রায় দেয়। বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। অন্য বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ১৫ আসামির ফাঁসির আদেশই বহাল রাখেন।
২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চের বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে খালাস দেন।
চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ১২ আসামির মধ্যে ওই সময় কারাবন্দি চার আসামি আপিল বিভাগে আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন।
এছাড়া, গত বছর ১৮ জুন দেশে ফেরত আনার পর ২৪ জুন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি মেজর এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ জেল আপিল করেন।

লেখাটি চট্টগ্রামের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকা থেকে নেয়া।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×