somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাজ্জাল কখন আত্মপ্রকাশ করবে?

১৪ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হযরত মু’আয ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“বাইতুল মাকদিসের আবাদ হওয়া মদিনার ক্ষতির কারণ হবে। মদিনার ক্ষতি মহাযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করবে।মহাযুদ্ধ কুস্তুন্তুনিয়ার (ইস্তাম্বুলের) বিজয়ের কারণ হবে। কুস্তুন্তুনিয়ার বিজয় দাজ্জালের আবির্ভাবের কারণ হবে”।

বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই হাদিসের বর্ণনাকারীর (অর্থাৎ - স্বয়ং তাঁর) উরুতে কিংবা কাঁধের উপর চাপড় মেরে বললেন,

“তোমার এই মুহূর্তে এখানে উপবিষ্ট থাকার বিষয়টি যেমন সত্য, আমার এই বিবরণও তেমনই বাস্তব”।

(সুনানে আবী দাউদ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১০; মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৪৫; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা)

‘বাইতুল মুকাদ্দাসের আবাদ হওয়া’ দ্বারা উদ্দেশ্য ওখানে ইহুদীদের শক্তি প্রতিষ্ঠা হওয়া। সেই ঘটনাটি ঘটে গেছে। এখন ইহুদীদের নাপাক দৃষ্টি পবিত্র মদিনার উপর নিবদ্ধ। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাদের আরব দ্বীপে আগমন প্রকৃতপক্ষে সেই পরিকল্পনারই একটি অংশ, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যার ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। কিন্তু প্রকৃত ঈমানদারগণ ইহুদীদের এই ষড়যন্ত্র বঝে ফেলেছে। এভাবে তখন থেকে শুরু হওয়া কুফর ও ইসলামের লড়াই এখন দ্রুতগতিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তমূলক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“মহাযুদ্ধ ও কুস্তুন্তুনিয়া (ইস্তাম্বুল) জয়ের মধ্যখানে সময় যাবে ছয় বছর। সপ্তম বছরে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে”।

(ইবনে মাজা, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৭)

মহাযুদ্ধ ও কুস্তুন্তুনিয়া (ইস্তাম্বুল) জয় সম্পর্কে দুটি বর্ণনা এসেছে। এক বর্ণনায় ছয় মাসের ব্যবধানের কথা বলা হয়েছে। অপর বর্ণনায় ছয় বছর। তবে আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানি ফাতহুল বারীতে মন্তব্য করেছেন, সনদের দিক থেকে ছয় বছর বিষয়ক বর্ণনাটি অধিক বিশুদ্ধ।

(ফাতহুল বারী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৭৮)

তাছাড়া আবু দাউদের ব্যাখ্যাগ্রন্থ আওনুল মা’বুদে মোল্লা আলী কারীর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন যে, ‘মহাযুদ্ধ ও দাজ্জালের আবির্ভাবের মধ্যকার সময়ের ব্যবধান বিষয়ে সাত মাসসংক্রান্ত বর্ণনার তুলনায় সাত বছরবিষয়ক বর্ণনা অধিক বিশুদ্ধ’। অর্থাৎ মহাযুদ্ধ ও দাজ্জালের আবির্ভাবের মধ্যকার সময়ের ব্যবধান ছয় বছর। সপ্তম বছরে দাজ্জাল আবির্ভূত হবে।

(আওনুল মা’বুদ, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা ২৭২)

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

“তোমরা কি এমন কোন নগরীর নাম শুনেছ, যার একদিকে বন আর অন্যদিকে নদী?” সাহাবাগণ বললেন, হ্যাঁ, শুনেছি, হে আল্লাহর রাসুল। আল্লাহর রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “ততক্ষণ পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না ইসহাক বংশের সত্তর হাজার সেনা উক্ত নগরীর সঙ্গে যুদ্ধ করবে। তারা এই নগরীতে এসে আত্মপ্রকাশ করবে। কিন্তু তারা কোন অস্ত্র দ্বারাও যুদ্ধ করবে না এবং একটি তীরও ছুড়বে না। তারা বলবে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ আর অমনি নগরীর দুই দিককার প্রাচীরের একদিক ভেঙ্গে পড়বে। তারপর তারা দ্বিতীয়বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ বলবে আর অমনি অপর দিককার প্রাচীরও খসে পড়বে। তারপর তারা তৃতীয়বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার’ বলবে আর অমনি তাদের জন্য প্রশস্ত পথ তৈরি হয়ে যাবে। তারা সেই পথে নগরীতে প্রবেশ করবে। তারা মালে গনিমত অর্জন করবে। এই মালে গনিমত বণ্টনে তারা আত্মনিয়োগ করবে। হঠাৎ একটি আওয়াজ কানে আসবে যে, কেউ একজন ঘোষণা করবে, দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করেছে। ফলে তারা সবকিছু ফেলে রেখে (দাজ্জালের সঙ্গে যুদ্ধ করতে) ফিরে যাবে”।

(সহিহ মুসলিম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২৩৮)

এই হাদিসে যে নগরীর কথা বলা হয়েছে, সেটি হল কুস্তুন্তুনিয়া বা ইস্তাম্বুল।

দাজ্জাল সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, সে কোন একটি কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। হতে পারে, যখন মহাযুদ্ধের কারণে কুফরি শক্তির পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যাবে, তখন তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে এবং পরাজিত কুফরি শক্তিগুলো তার নেতৃত্বে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৫ সকাল ৯:২৩
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×