somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামু তোমার জন্য........ ♥♥♥

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে নিয়ে এডিট করা)

প্রিয় সামু,
বহুদিন বাদে আবার তোমায় লিখছি। কেমন আছো জানতে চাইবো না, কারণ জানি বিশেষ ভালো নেই। তবে আজ আমার ভীষণ ভালো লাগার কথা ছিলো। কিন্তু আমি নিজেও বিশেষ ভালো নেই। খারাপ থাকতে-থাকতে এখন আর ভালো থাকায় বিশ্বাস হয়না। তাই ভালো থাকাগুলো এখন আর ঠিক সেভাবে স্পর্শ করেনা।

ভালো থাকার প্রসঙ্গে পরে আসি। আগে মনের গহীনের কিছু কথা বলি। একসময় স্বৈরাচার ব্রিটিশদের বিপক্ষে গিয়ে নতুন দেশ পেয়েছিলাম ভালো থাকার আশায়। কিন্তু পেলাম স্বৈরাচার পাকিস্তানি শাসক। তাদের বিপক্ষে যেয়ে আবার মানচিত্র কাটলাম। কিন্তু এবার পেলাম স্বদেশী স্বৈরশাসক যার ধারা চলমান। শুধু সময়ের পরিক্রমায় তাদের নাম পাল্টেছে। যদিও সর্বশেষ স্বৈরশাসক বিদায়ে সম্প্রতি সবাই ভালো থাকার স্বপ্নে বিভোর, কিন্তু সেই স্বপ্ন আমায় ছেয়ে যাচ্ছেনা। এক অজানা, অচেনা আতঙ্ক সবসময় তাড়া করে চলেছে। শুধু শাসক পরিবর্তনই নিশ্চই সমাধান নয়। তবে এর সমাধান কি?

তেমনি তোমার বুকেও বিচরণকারী এক মিথ্যাচারীর নাকি বিদায় ঘন্টা বাজতে চলছে? যদিও সেটা বহু প্রতীক্ষিত আর আকাঙ্খিত, তবে এই চূড়ান্ত ব্যানই কি সমাধান? নিশ্চই নয়। তাই এখন আর ভালো লাগা কিংবা ভালো থাকা মনকে আকৃষ্ট করেনা। যদিও সেমিব্যান, হাফব্যান, কিংবা ফুলব্যান এর পক্ষে আমি কখনোই নই। কিন্তু এছাড়াইবা এই আধুনিক যুগে কি করারইবা আছো তোমার মডুর? তার সাধ্য যে এখানেই সীমাবদ্ধ! গরীব দেশ হলেও যেমনি দেশের কাছে আমাদের চাওয়ার সীমা নেই, তেমনি ধুকেধুকে চলা তোমার কাছেও যে আমব্লগারের চাহিদা অসীম! সন্তান যেমনি মা-বাবার সীমাবদ্ধতা বুঝতে বা বিশ্বাস করতে পারেনা, জনগণ না দেশের, ঠিক তেমনি তোমার ব্লগারেরা পারেনা তোমার। তাইতো তোমায় ঘিরে এতো আবদার আর ক্ষোভ।

কিন্তু আমার বিশ্বাস প্রকৃতি যেমনি স্থান পূরণের খেলা খেলে চলে, তেমনি খেলা তোমার বুকেও চলমান থাকবে। সেই কৌতুকের মতো করে মিয়া ঠিক থেকে বারবার সোনা লাল হবার মতো ঘটনা ঘটিয়ে। যেমনটি হয়ে চলেছে নাম বদলের মধ্যদিয়ে স্বৈরাচার ফিরে আসায়। এর কি কোনো সমাধান আছে? মনে হচ্ছে নেই। তবে যে প্রকৃতির পুরো শৃঙ্খলই ভেঙ্গে যাবে! তাই এখন ভালো লাগা, ভালো থাকার চিন্তা বাদ দিয়েছি।

তবে এটা করতে যেয়ে এটাও বুঝেছি, জীবনের চলার পথে সামঞ্জস্য রেখে খারাপটাও ভালোর সাথে দরকার। নয়তো ভালোর মহত্ব কিভাবে উপলব্ধি করতাম? আজ স্বৈরাচার আছে বলেই মুক্তির নেশা আছে, মুক্ত হবার আনন্দ আছে। মিথ্যা আছে বলেই সত্যের তেজ আছে। তেমনি করে তোমার বুকেও মিথ্যার চলাচল আছে বলেই সত্যের আওয়াজ এতো মধুর আর তেজদীপ্ত। নয়তো ব্লগিং বা জীবন দু'টোই ম্যারম্যারে হয়ে যেতো। শুধু যদি একপাক্ষিক তথা সত্য-ন্যায়ের মধ্যদিয়ে জীবন চলতো তবে কখনো এতো ইতিহাস, ঐতিহ্য, নীতি ইত্যাদির জন্ম হতো না। তাই চলার পথ কখনো মসৃণ হয়না। মসৃণ হলে জীবনের সঠিক স্বাদটা কখনো উপলব্ধি করা যেতো না।

তেমনি করে যদিও আশা করি তোমার বুকে নিয়ম-শৃঙ্খলা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হবে, তবে বাস্তবে তা প্রকৃতির নিয়মেই
সম্ভব না। আর সম্ভব হলে তখন ব্লগিংটাও নিঃসন্দেহে ম্যারম্যারে হয়ে যাবে। তাই বলে এই নয় যে, আমি নিয়ম-নীতির বিরোধী। আমি শুধু সেটার বিরোধী যেটার কারণে সম্প্রতি এতো প্রাণ ঝড়লো। আমি সেটার বিরোধী যার সুরের মূর্ছনায় মোহাবদ্ধ হয়ে উন্মাদীয় ক্ষমতা দেখিয়ে অনেককেই আজ নিজের মাতৃভূমি ছাড়া হতে হয়েছে জীবন বাঁচাতে। তাই তোমার সেই নীতিমালা তথা ব্যান-আনব্যান খেলার দরকার আছে ব্যালেন্সিং-এর জন্য। যখন খারাপ ভালোকে ছাপিয়ে যেতে চায় তখন সেটা ব্যালেন্স করা আবশ্যক। তাই বলে আগছা চিরতরে নির্মূল করা সম্ভব নয় বা উচিৎ নয়। কেননা, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায়ে গরু যেমনি আবশ্যক, শুকুনও তেমনি আবশ্যক বলে প্রমাণিত।

কিন্তু দ্বন্দ হয় যখন মহামানবদের দেখে কিছু উন্মাদও শর্ট-কাটে মহামানব হতে চায়। রসুল (সাঃ)-এর সুভিত্তিতে, “অপ্রতিষ্ঠিত পৌত্তলিকতার” বিরুদ্ধাচরণ বা গ্যালিলিও-এর ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলা “পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে” মতো সেসব উন্মাদও ভিত্তিহীণভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত সত্যের বিরুদ্ধাচরণ করেই মনে করে মহামানব হয়ে যাচ্ছে। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো করে বেশি না হলেও যদিও তাদের কিছু অন্ধঅনুসারী জুটে যায়, কিন্তু বাস্তবিক সেসব উন্মাদ বা অনুসারীরা আমৃত্যু মূর্খই থেকে যায়। মৃত্যু বা স্থান বদলের সঙ্গে সঙ্গেই তাদের ইতিহাস আস্তাকুড়ে পতিত হয়। কারণ, সত্যের অনুসন্ধান আর সত্যকে পাশ কাটানো কখনোই এক জিনিস নয়।

তাই যতোই প্রত্যাশা করিনা কেনো যে, তোমার মাঝে নিয়ম-শৃঙ্খলার এক অবাধ প্রতিষ্ঠা ঘটবে, কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হলে তোমার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে। যদিও তোমার যৌবন আর বর্তমানের ফাঁরাকটা অনেকটাই স্পষ্ট। তখন তোমার বুকে হনু, ভাদা, পাদাসহ সবারই অবাধ বিচরণ থাকায় তুমিও যৌবনের তেজে তেজদীপ্ত ছিলে। কিন্তু যখন হতে মতাদর্শের খড়গ তোমার মাথায় পরেছে, তখন হতেই তোমার যৌবনসূর্য অস্তমিত প্রায়। এখনও যখন ক্যাঁচাল চলে, তখনই মনে হয় তোমার বুকে মরা নদীর মতো নতুন পানির সঞ্চার ঘটেছে। আবার তুমি জেগে উঠছো। কিন্তু এই জেগে উঠার প্রত্যাশা যেনো তোমার যৌবন ফিরিয়ে আনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। তোমার ধ্বংসের কারণ যেনো না হয়ে উঠে। আর তাকে লক্ষ্যে রেখেই না চাইলেও তোমার বুকে ব্যান-আনব্যানের খেলার প্রয়োজন। কারণ, মনে হয়না এর কোনো সুষ্ঠ বিকল্প রয়েছে।

তবে এই ব্যান-আনব্যানের খেলা যেনো আমাদের উদ্দেশ্য বা কাম্য না হয়ে শিক্ষামূলক হয়। এ দেখে যেনো আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি, তাই যেনো আকাঙ্খা হয়। দিনের পর দিন এই ব্যান-আনব্যান খেলা খেলে বড় খেলোয়ার হবার নেশা যেনো কাউকে পেয়ে না বসে। ভিন্নমত অবশ্যই ততক্ষণ শ্রদ্ধেয় যতোক্ষণ না তা সীমা লঙ্ঘন করে। ভিন্নমত পোষণ করা দোষের নয়, বরং ভিন্নমত চাপিয়ে দেওয়া দূষণীয়। আগেও বলেছি, এখানে কেউ কারো শিক্ষক বা শত্রু নয়। বরং সকলেই সতীর্থ। তাই নিশ্চই সবার প্রতি সবার সতীর্থরূপ ভালোবাসা বিদ্যমান রয়েছে। তেমনি রয়েছে সতীর্থরূপ বিয়োগ বেদনা। তাই কেউ কাউকে হারাতে চায় এমন নয়। সকলেই চায় সবাই সঠিক পথের অভিযাত্রী হোক। শুধু গোলাপের বাগানের চাইতে হাজারো জাতের ফুলে পরিপূর্ণ বাগানের গন্ধ বেশি মন হরন করে। তাই, বাগানে যাই জন্মাক তা যেনো আগাছা না হয়ে কমপক্ষে একটি ফুলের গাছ হয়।

অনেক উদ্ভট কথা বলে তোমার সময় নষ্ট করার জন্যে ক্ষমা করে দিও। জানিনা কোনদিন তোমার এই ব্যান-আনব্যানের খেলায় নিজেই ভোঁ-কাট্টা হয়ে যাই! সেইদিনও আজকের মতো করে বুকে ঠাঁই দিও। তুমি দীর্ঘজীবী হও এই প্রত্যাশায় বিদায় নিচ্ছি।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবশেষে মায়ের বাড়ি ফেরা ও তুরিনের ভুয়া ডিগ্রি কাহিনী—এক আলোচিত আইনজীবীর পতনের গল্প

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ৯:৪৭

অবশেষে মায়ের বাড়ি ফেরা ও তুরিনের ভুয়া ডিগ্রি কাহিনী—এক আলোচিত আইনজীবীর পতনের গল্প

ছবি যুগান্তর অনলাইন থেকে সংগৃহিত।

আলোচিত আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বিতর্ক বর্তমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রহস্যঃ কী হলেছিলো মেরি সেলেস্ট জাহাজটির সাথে?

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:৫০



১৮৭২ সালের নভেম্বর মাসের এক শীতের সকালবেলা। সমুদ্রপথে যাত্রা পথে ব্রিটিশ ব্রিগেন্টিন জাহাজ ‘দেই গ্রাটিয়া’র নাবিকরা একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করল। তারা তাদের সামনে একটা জাহাজকে এলোমেলো ভাবে চলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।।খালেদা জিয়া এখন ঢাকায়

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৪৫









দীর্ঘ চার মাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে দেশে আছেন দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবিক করিডোর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১

মানবিক করিডোর: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

ছবি, এআই দ্বারা তৈরিকৃত।

রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একটি নিরাপদ ত্রাণপথ বা "মানবিক করিডোর" স্থাপন নিয়ে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনা নতুন মাত্রা... ...বাকিটুকু পড়ুন

গেলো বসন্ত এলো বৈশাখ এলো নতুন বাংলা বছর ১৪৩২

লিখেছেন শায়মা, ০৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২০


রঙে রঙে রঙিন বসন্ত ফুরোতে না ফুরোতেই চলে এলো বাঙ্গালীর প্রানের উৎসব নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া পহেলা বৈশাখ। সেই উৎসব ঘিরে কেটে গেলো বেশ কিছুদিন। ব্যস্ততায় কাটলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×