"আমি এককভাবে তাঁর (আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তাআলা) নৈকট্য পেয়েছি।
সর্বশক্তিমান তিঁনিই, যিঁনি আমার অবস্থানকে সুউচ্চ করে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন।"
জানবো তাঁকে তাঁরই কথা দিয়ে। জগৎবিখ্যাত নাম তাঁর আবদুল ক্বাদির।
"ওয়া আবদুল ক্বাদিরিল মাশহুরু ইসমি...
ওয়া জাদ্দি সাহিবু আইনিল কামালি"
এবং আমার নাম আবদুল ক্বাদির, বিখ্যাত সেই নাম।
আমার মহাসম্মানিত নানাজান (* রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিপূর্ণ অন্তরদৃষ্টির অধিকারী।
উপাধী তাঁর মুহিউদ্দীন। ধর্মকে পুনরুজ্জীবীতকারী। পারস্যের গিলান বা জিলান থেকে তাঁর উত্থান বলেই বলা হয় গিলানী, জিলানী বা জিঁলী।
"আনাল জিঁলী, মুহিউদ্দিনু ইসমী...
ওয়া আ'লামি আলা রা'সিল জিবালি।"
আমি জিঁলি, নাম আমার মুহিউদ্দিন।
আর পতাকা আমার পর্বতের চূড়ায় চূড়ায়।
পিতার দিক দিয়ে রাসূল দ.'র মহান দৌহিত্র জান্নাতিদের সাইয়্যিদ ইমাম হাসান রাদ্বিআল্লাহু আনহুর বংশধর তিনি। মাতার দিক দিয়ে মহানক্ষত্র ইমাম হুসাইন রাদ্বিআল্লাহু আনহুর।
"আনাল হাসানি ওয়াল মাখদা মাক্বামি।
ওয়া আক্বদামি আ'লা উনুক্বির রিজালি।"
আমি ইমাম হাসান রাদ্বিআল্লাহু আনহুর রক্ত। সুউচ্চ আমার অবস্থান।
আমার দু পা মহান সূফীগণের উপরে।
মহান গাউসিল্লাহিল আ'জম শাইখ সাইয়্যিদ আবু মুহাম্মাদ মুহিউদ্দিন আবদুল ক্বাদির জিলানী শাইয়্যানলিল্লাহ্ রা. সূফীত্বের ক্বাদিরিয়া তরিক্বার ইমাম। তিনি ফিক্বাহ্' তে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রা.'র হাম্বলী মাজহাব অনুসরণ করেছেন।
কিশোর গাউসে পাক রা. জিলান থেকে বাগদাদে রওনা হন। পথে ডাকাত পড়ার ঘটনা কে না জানে! পথে ডাকাত পড়লো। ডাকাতদল এম্নিতেই জিগ্যেস করল,
এই ছেলে, কিছু আছে?
তিনি বললেন, আছে। সুবর্ণমুদ্রা।
কোথায়?
আমার হাতের তলায় সেলাই করা। কাপড়ের ভিতরে।
কেন বললে?
মা মানা করেছেন কোনও পরিস্থিতিতে মিথ্যা বলতে।
মহানায়কদের উত্থান তো এমনি দৃঢ় এমনি চমকপ্রদ হয়। এমনটাই হয়ে এসেছে। সে ঘটনা বর্ণনা-পরম্পরা সহ উদ্ধৃত আছে তাঁর প্রাচীণ বৃহত্তম জীবনী বাহজাতুল আসরার গ্রন্থে। হাদীসের রেওয়ায়েতের মত করে। ইসলামের প্রথম যুগে যে কোন বিষয়ের বিশ্বস্ততা নির্ণয়ের জন্য এভাবেই বর্ণনার পরম্পরা রক্ষা করা হতো। বর্ণিত আছে আরেক বিখ্যাত ঘটনা, তাঁর পিতা-মাতার বিয়ে ও তাঁর নানার সাথে তাঁর পিতা সাইয়্যিদ আবু সালিহ্ মূসা জুনদি-দোস্ত আল হাসানী র.'র ঘটনা। যিঁনি একটা মাত্র আপেল খেয়েছিলেন বহুদিন রোজা রাখার পর তাও আবার নদীতে ভেসে যাওয়া আপেল। সেই আপেলের হক্ব কার? তিনি জানেন না। হায়, তিনি তো জানেন না এ আপেল কার! আমরা তত্ত্বে জানি, যার শরীরে হারাম বস্তু থাকবে তার ইবাদাত কবুল হবে না। ইমাম হাসান ও হুসাইন রা.'র বংশধর, নবীরক্তরা তা বাস্তবে করেন। একটা আপেলের সত্ত্ব তিনি পার্থিব জীবনে পূরণ করার জন্য একযুগ চাকরি করতে রাজি আছেন, কারণ সে বস্তুর দাম তো আগে নির্ধারণ করে খাননি! হায় সততা! হায় সততা! হ্যা, তিনি একযুগ সে আপেল খাওয়ার জন্য দিবানিশি চাকরি করে ক্ষান্ত নন, বরং যদি তার বাকি দামটুকু চুকাতে একজন বোবা, কালা, অন্ধ অসুন্দর মেয়েকে বিয়ে করতে হয় তাও তিনি রাজি আছেন। তিনি যে উচ্চতম নূর থেকে এসেছেন! সে নারী এজন্য বোবা যে তিনি কোন অপরিচিত পুরুষের সাথে কথা বলেননি, এজন্য কালা যে তিনি কোন তাদের কোন কথা শোনেননি, এজন্য অন্ধ যে তিনি তাদের কাউকে দেখেননি, এজন্য অসুন্দর যে তাঁর সৌন্দর্য প্রকাশিত হয়নি।
'সবকিছু তার মূলের দিকে ধাবিত হয়'- রাসূল দ.'র এ মহান হাদীস অনুসারে সে পরিবারের সন্তান সাইয়্যিৗদ আবদুল ক্বাদির রা. তো সেদিকেই ধাবিত হবেন! সেই বাবা-মায়ের সন্তান কী করতে পারেন? ঠিক তেমনি অচিন্ত্য এক্সটেন্টে তিনি করেছেন আধ্যাত্মসাধনা এবং কর্ম। পেয়েছেন সেই অচিন্ত্য পরিমাণেই। আল্লাহর দেয়ার কোন অভাব কোনকালেই ছিল না।
মহান সূফী আল্লাহর মহান ওয়ালী রাসূল দ.'র পবিত্র রক্ত গাউসে পাক জিলানী র. সেই পরম সততারই নিদর্শন।
তিনি বাগদাদে চলে এলেন। বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসা ওই সময়ে সারা পৃথিবীর সবচে বিখ্যাত তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা। এবং বাগদাদ শহর, ওই সময়ে সারা পৃথিবীর সবচে বিখ্যাত তিন নগরীর একটা। জগতের যত ভাষায় সম্ভব জ্ঞান বিজ্ঞানের বই এসে জমা হয় এখানে। অনূদিত হয় এখানে। গবেষণা হয় এখানে। পৃথিবীর মহা মনিষীরা এখানেই তখন পাঠ দেন। শেখান।
রাজনীতি, সমাজতত্ত্ব, সমরনীতি, সাহিত্য, দর্শন এবং বিশেষ করে ফলিত বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে সারা পৃথিবীর ভরকেন্দ্র তখন বাগদাদ। আলোকায়নের মহা উৎসব। আলোকিত হওয়ার মহাকেন্দ্র।
একইসাথে বাগদাদ তখন ফিক্বাহ্ শাস্ত্র বা শরিয়তের প্রয়োগ-বিজ্ঞানেও সবচে বড় এলাকা। এখানেই থাকেন বা কোন না কোন সময়ে আসেন পৃথিবীর সেরা হাদীসের ইমামগণ, এখানে স্থিরভাবে পড়ান বা ভিজিটিং টিচার হন পৃথিবীর সেরা তাফসিরকারীরা।
রইল বাকি সূফিত্ব। বাগদাদ সূফীঘ্রাণে মাতোয়ারা। বাগদাদের অলিগলিতে সূফিত্বের তীব্র ঘ্রান। যাঁরা ভালবাসার শরবিদ্ধ, যাঁরা অনুভবের গভীরে বিরাজ করেন, যাঁরা বিজয় করেন শুধুই অন্তর, আর পৃথিবীর জমিন ফেলে রাখেন কীটদের জন্য- সেই সূফিরা তখন বাগদাদের পথে প্রান্তরে প্রেমোন্মাদবেশে যেমন ঘুরে বেড়ান তেমনি শিখিয়ে ফেরেন খানকাহ্ বারগাহ্ দরগাহ্ শরীফে।
এই প্রতিটা বিষয় অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছেন হুজুর গাউসে পাক। অত্যন্ত কাছ থেকে শিখেছেন, খুবই গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। একজন মহামানব মানব থেকে মহামানবে উত্তরণের জন্য উপরের এই বিষয়গুলো প্রয়োজন। ঠিক তাই তিনি পেয়েছেন। আর সে কথা বলেছেন তাঁর ক্বাসিদায়ে গাউসিয়া সেই বিখ্যাত কবিতায়-
"এবং আমার সময়কে আমি আসার আগে থেকেই প্রস্তুত ও পরিশুদ্ধ করা হয়েছে..."
তিনি এই সকল শিক্ষা থেকে তৃষ্ণার্তের মত পান করেছেন। ক্ষুধার্তের মত গিলে নিয়েছেন বাগদাদের শাস্ত্রগুলোকে। নিজামিয়া মাদ্রাসায় এমন কোনও বিষয় ছিল না, যা তিনি নেননি। এটা একটা অবাস্তব অসম্ভব ব্যাপার। প্রতিটা বিষয় (সাবজেক্ট) তিনি তাঁর পাঠক্রমে নিয়েছেন এবং প্রতিটাতে অবাক করা সাফল্য অর্জন করেছেন। হুজুর গাউসে পাক বাগদাদে নিজামিয়া মাদ্রাসায় আসা প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে নিয়েছেন দরস।
'আমি পড়ালেখার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতে করতে কুতুব বা মেরুনক্ষত্রের মত মহান সূফী অবস্থানে পৌছে যাই।'
পড়ালেখা চালানোর সময়েই হুজুর গাউসিল্লাহিল আ'জম রা. এমন আধ্যাত্ম্য সাধনায় রত হন, যা আমাদের জন্য অনেকটাই অচিন্ত্য।
তিনি শাইয়ানলিল্লাহ্ রা. নিজামিয়া জামেয়ায় পড়ালেখা করার সময়ে সেখানে থাকা খাওয়া এবং পড়ালেখার জন্য ফি ছিল। বাড়ি থেকে তাঁর জন্য স্বর্ণমুদ্রা আসার সাথে সাথে তিনি প্রতিবার সমস্ত সম্পদ পুরোপুরি দান করে দিতেন। এমন অবস্থা হতো যে, ফি বাকি থেকে যেতো এবং যেটুকু ফি বাকি আছে সেটা শোধ করতেন। তারপর সবই দান করে দিতেন।
অনেকবার এমন হয়েছে, কারো মাধ্যমে অর্থ আসার সাথে সাথে হাতে নিয়েই সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি অভাবগ্রস্তদের মধ্যে তা বিলিয়ে দিচ্ছেন। সম্পদ আসার সাথে সাথে তিনি অস্থির হয়ে যেতেন।
কালক্রমে তাঁকে জামেয়া থেকে সাবধান করা হয়। এক সময়ে তাঁকে বেরও করে দেয়া হয়। শুধু অসাধারণ ফলাফলের জন্য পড়তে দেয়া হয়েছিল, থাকা খাওয়া বাদ দিয়ে। তিনি তখন বাগদাদের পাশের জঙ্গলে চলে যান। রাতে ঘুমানোর সময় বরকতপূর্ণ পাগড়ি বইতে জড়িয়ে মাথার নিচে দিয়ে নিতেন। বৃষ্টি এলে সবার আগে বই নিজ পোশাকে আবৃত করে বৃষ্টি থেকে আড়াল করে রাখতেন। তখনো অর্থকড়ি আসছে।
খাদ্যাভাব একটা পর্যায়ে পৌছে যায় তখন। তিনি সুসম্পর্কের কারণে একজনের কাছ থেকে রুটি ধার করে নিতেন। শুধু রুটি। সেটা নিয়ে অন্যদের সাথে ভাগ করে খেতেন। অর্থ আসার সাথে সাথে রুটির দাম চুকিয়ে আবারো সব দিয়ে দিতেন।
এভাবে পাঠপর্ব শেষ হবার পর তিনি গভীর সাধনায় রত হন। হায় গাউসিল্লাহিল আ'জম! যাঁর জিলানে বিশাল বাগান সহ জমিদারি এস্টেট তিনি এবার পঁচিশ বছরের জন্য বনবাসী হলেন।
পঁচিশ বছর জঙ্গলে একা আধ্যাত্ম্যসাধনা করার সময় তাঁর অবস্থা তিনি নিজে বর্ণনা করেছেন বাহজাতুল আসরার জীবণীগ্রন্থ অনুসারে এভাবে, " সে সময়ে না আমি কাউকে চিনতাম না আমাকে কেউ চিনতো। না আমি কারো সাথে কথা বলতাম না কেউ আমার সাথে কথা বলতো। যারা আমাকে বনের ধারের বিভিন্ন লোকালয় থেকে মাঝে মাঝে দেখতো তারা বড়জোর আমাকে এভাবে চিনতো, বনের ওই পাগলটা।
একবার আমি হাঁটতে শুরু করেছি। তারপর যখন থামলাম তখন দেখলাম বারো দিনের দূরত্বে চলে এসেছি।"
এটা ভালবাসার একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থা। এ অবস্থার বাস্তব চিত্রায়ণ হুযুর পুরনূর মাওলা গাউসে পাক রা.'র ক্বাসিদার শুরুর বাক্যগুলোতেই আছে,
" ভালবাসায় মরে মিটে বিলীন হয়ে যাবার পাত্র তুলে দিলেন সাকী,
আমি তখন বললাম, প্রেম-শরাব আমার! এগিয়ে এসো কাছে!
এগিয়ে এল পাত্রে পাত্রে ভরা ভালোবাসা,
প্রেমে মরে মিটে যাবার বিষ আমার! নিজের মাঝে খুঁজে পেলাম সব প্রিয়জন, যত!"
সেই সময়ে গাউসিল্লাহিল আজম রা.'র সামনে খাদ্য এলে সপ্তাহের ক্ষুধাতুর তিনি সরে যেতেন। কাইসারের প্রাসাদে শোয়ার জায়গা ছিল। পরিত্যক্ত প্রাসাদ। তিনি বনেই ফিরে গেলেন। নিজের মনকে, স্নায়ুকে, নিউরনের ভাঁজে ভাঁজে পৌছে দিলেন অচিন্ত্য নিয়ন্ত্রণ। ভাবনায় রত ছিলেন। অষ্টপ্রহর। অবিরত। তাঁর সমস্ত প্রজ্ঞা জ্ঞান বিদ্যাকে একত্র করে এর নির্যাস নিয়ে সবভাবে সাজানোর সময় সেটা। তখনি তিনি সম্পূর্ণ আত্মহারা হন মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের ভালবাসায়।
সে সময়ে রিজালুল গাইবরা আসতেন তার কাছে। রিজালুল গাইব। অদৃশ্যের ব্যক্তিরা। কারা তারা? জ্বিন? ফেরেশতা? শয়তান? মহান ওয়ালী ও নবী-রাসূলগণের রুহ? অন্য কোনও অস্তিত্ব? নাকি এসব কিছুই? এমন অনেক বর্ণনা রয়েছে তাঁর জীবনীগ্রন্থে। চিত্তাকর্ষক, গা শিউরানো।
কিন্তু গা শিউরানো গল্প নয় গাউসে পাকের জীবন। তাঁর মহান জীবন প্রেমের গল্প। ভালবাসায় বিলীন হয়ে গিয়ে ভালবাসায় বিলীন হতে শেখানোর গল্প। গাউসে পাকের জীবন অনুভবের। ঘটনা আমাদের বিষয় নয়, আমাদের বিষয় ঘটনার পেছনের কারণ। তাঁর চলনের মূল উদ্দেশ্য।
সূফি সাধনার উচ্চতর এ বিষয়গুলো আমাদের কাছে রহস্যঘেরা। এগুলো আমাদের কাছে দুর্জ্ঞেয়। দুর্বোধ্য। কিন্তু এর মধ্যে খুবই সরল কিছু রহস্য লুকিয়ে থাকে। আর সূফিত্বের ভিতরে যে সরল রহস্যগুলো লুকিয়ে থাকে, তার মধ্যে স্তরভেদ রয়েছে। হুজুর গাউসিল্লাহিল আ'জমকে আল্লাহ্ একক মহত্ত দান করেছেন। সকল ওয়ালীগণের উপরে অবস্থান দান করেছেন। তাঁর দুর্বোধ্য রহস্য! যে এ রহস্য বুঝে ওঠে বা ধারণ করে, তার অবস্থা কেমন হতে পারে সেকথা তিনি শাইয়ানলিল্লাহ্ রা. বর্ণনা করেছেন এভাবে,
"আমার উপর তিনি সুবহানাহু ওয়া তাআলা উন্মোচিত করেছেন প্রাচীণ রহস্যাবলী।
আমাকে তিনি আপন করে নিজের কাছে টেনে নিয়েছেন! হায়! করেছেন আর্জি পূরণ!
আর তিনি আমাকে করেছেন সকল কুতুব বা মেরু-নক্ষত্রের শাসক!
সর্বাবস্থায় তাদের উপর আমার আদেশ জারি থাকে।
আমার রহস্য যদি সাগরে দিতাম, শুকিয়ে যেত সবটুকুই
যদি এ রহস্য পাহাড়ে দিতাম, ধূলিকণা হতো পর্বতমালা
যদি দিতাম রহস্য ছেড়ে আগুনের উপর, নিভে যেত আগুন আমার আত্মিকতার তাপে
রহস্য আমার যদি ছেড়ে দিতাম মৃতের উপর!
মৃত উঠে দাঁড়াতো সুমহান আল্লাহর ক্ষমতায়।"
এই রহস্য উন্মোচিত হওয়ার কাল পঁচিশ বছর। তিনি গাউসিল্লাহিল আ'জম যে রহস্য পেয়েছেন সেটা এমন কোন বিষয় না যা লিখে রাখলেই অন্যে জানবে। একেই বলা হয় মা-আরিফাহ্। আল্লাহর পরিচয়। এ অনুভবের বিষয়, কখনোই বলার বা লেখার বা প্রকাশ করার বিষয় নয়।
"কোনও মাস নেই, যুগ নেই, যা আমার অজ্ঞাতে প্রবাহিত হয়।"
এ হল আপন করে নেয়ার বিষয়। যখন আমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল দ. এবং তাঁদের জন্য সমস্ত সৃষ্টিকে আপন করে নিব, তখন এ দরজা খুলতে শুরু করবে। আপন হওয়ার দরজা। আপন করার দরজা।
"তিনি রাব্বুল আলামীন আমাকে আলখেল্লা পরিয়েছেন যার গায়ে দৃঢ়চেতনার নকশা খোদাই করা।
আর তিনি আহকামুল হাকীমীন আমাকে পরিয়েছেন তাজ, পূর্ণাঙ্গতার, পরিপূর্ণতার।"
অনুভবের বিষয় লিখলে তা বড়জোর লেখা হয়ে দাঁড়াবে। শুনলে তা বড়জোর শব্দ হয়ে দাঁড়াবে। অনুভব তাকেই বলে যা অর্জন করতে হলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিষয় পড়ালেখা করার পাশাপাশি সমস্ত টাকা দান করে তারপর পঁচিশ বছর জঙ্গলে থেকে উপলব্ধি করার দৃঢ় এবং অবিচল যাত্রায় থাকতে হয়।