ছবি: মাওরি তরুণ। মাওরি তরুণ মানেই যোদ্ধা।
আসবার কালে কী জাত ছিলে? এসে তুমি কী জাত নিলে?
কী জাত হবে যাবার কালে? সে কথা ভেবে বলোনা...
জাত নিয়ে কষ্টগাঁথায় স্বাগতম।
সরাসরি লিস্টে ঝাঁপাই আসুন।
১৫. চৈনিক
হাজার বছর ধরেই। এই একটা জাতিতে তেমন কোন মৌলিক পরিবর্তন নেই। মূলত এই কারণেই এর লিস্টে আসা। প্রকৃতিতে চৈনিকরা পুরোপুরি শান্ত, সাঙ্ঘাতিক পরিশ্রমী, প্যাশোনেট। কিন্তু তাদের অতুলনীয় ব্যর্থতা হল, ক্ষমতার কেন্দ্রস্থলে। গত হাজার হাজার বছর ধরে তারা কখনো শান্তির ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।
হাজারো বছর আগে যেমন চৈনিক সম্রাটের ভোগ-আলয়ে তিন হাজার, পাঁচ হাজার নারী থাকত। ছোট ছোট খোপে। মৌমাছির বাসার মত। চারফুট বাই চারফুট/ পাঁচফুট গর্ত, ব্যস। তারপর সমাজতন্ত্রী যুগের শুরু থেকেই অত্যাচার নতুন মাত্রা পায় নারীর উপর। কন্সক্রিপশন। চৈনিক সেনাবাহিনীতে যে কোটি কোটি নারী ট্রেনিঙ নিয়েছে, নিচ্ছে, ভবিষ্যতে নিবে, তারা সবাই নিয়মিত সেনাবাহিনীর ভোগের বস্তুতে পরিণত হয়।
তিব্বতের উপর অত্যাচারের মাত্রা, বৌদ্ধদের সারা চীন থেকে বিলুপ্ত করা ও তাদের- সব ধর্মানুসারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শত্রু ঘোষণা করা, শ্রমিকশ্রেণীকে জোর করে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাজ করিয়ে তাদের প্রাপ্য সম্পর্কে হাজারো বছর ধরেই জানতে না দেয়ার রীতি, বিশাল চীনের শুধু পূর্ব উপকূলকে আলোকিত করে পশ্চিমকে ঘোর অমানিশায় ফেলে রাখা- এরা যে এক জাতি, সেটা দেখেই অবাক লাগে।
১৪. বার্মিজ
বেশি কথায় কাজ কী? একুশ শতকেও যারা শুধু এথনিক জাতিসত্ত্বায় দেশকে বিভাজিত করে, তারা তো সারা পৃথিবীর সর্বকালের সবচে নিকৃষ্ট জাতির তালিকায় থাকবেই। কাচিন বা রোহিঙারা রক্তের দিক দিয়ে বার্মিজ পুরোপুরি নয়, শুধু এ কারণে তাদের অনাগরিক ঘোষণা করা মানুষ না হওয়ার সবচে বড় প্রমাণ।
বার্মিজরা বেশ কয়েকটি জাতিসত্ত্বাকে তাদের অংশ মনে করে না। গত পঞ্চাশ বছর ধরে ওইসব জাতির নারীদের ক্যাম্পে নিয়ে ধর্ষণের পর বন্ধ্যাকরণ করা হচ্ছে। ওইসব জাতির সমস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়েছে। ওইসব জাতির মানুষগুলোকে সরকারি কাজে ধরে নিয়ে গিয়ে পরিশ্রম করিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছিল যুগযুগ ধরে। বিনা বেতনে মাটিকাটার মত কষ্টকর কাজ বারো থেকে ষোল ঘন্টা করিয়েও খাবার না দিয়ে অভুক্ততার ফলে অনেক বছর পর মানুষ মারা যাবে...
এখন সেখানে মাত্রাটা প্রকাশ্য। ভিন্নজাতিকে পুরোপুরি অবলুপ্তকরণ। তাদের দেশের তাদের জাতির মানুষগুলোও গত অর্ধ শতাব্দি ভাল ছিল না। তারা কথা বলে ফিসফিসিয়ে। শুধু কয়েকটি ফ্যামিলির মানুষ ছাড়া তাদের জাতির কেউ আর্মি অফিসার হতে পারত না। মাকড়শার পা বিশাল হলেও পেটে যেমন সব ডিম আর শরীরের ওজন থাকে, বার্মিজ আর্মি ঠিক তেমনি। সম্পদে, ক্ষমতায়, দখলে।
১৩. মাউরি
নিউজিল্যান্ডের এই স্থানীয় জন-জাতিটা নতুন কলোনিয়াল যারা যেত, তাদের ভাল বা মন্দের বিচার না করে শেষ করে দিত। হয়ত কোন বৈজ্ঞানিক অভিযান, হয়ত কোন পাগলা অভিযাত্রি, সবাইকে মেরে কেটে কুটে খেয়ে বিনাশ।
তাদের শত শত মানুষকে মেরে খেয়ে ফেলার রেকর্ড আছে।
এদিকদিয়ে জাভান কিছু জাতি এবঙ অ্যামাজনের কিছু জাতি সমগোত্রীয়।
১২. ভাইকিঙ
বিশালদেহী এই মানুষগুলোর ধর্মই যুদ্ধ। তারা যুদ্ধেই মারা যাবে, যুদ্ধেই জন্মাবে। শরীরের সাথে মানানসই অতিকায় সব কুঠার, দুমুখি কুঠার, ভারি ভারি অস্ত্র নিয়ে নগরের পর নগর আক্রমণ করা, তারপর সেখানে সব শেষ করে দিয়ে কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে আরেক নগর ধ্বংস করা। এর সাথে শুভ কোন কিছুর তুলনা হতে পারে না।
১১.
সেলটিক
সুন্দর করে মাথা বিচ্ছিন্ন করবে সেল্টরা। তারপর সেই মাথাগুলো নিজের নিজের বাড়ির সামনে গৌরবের বস্তু হিসাবে ঝুলিয়ে রাখবে। হোয়াট দ্য হেল!
কতটা গঠনমূলক বর্বর হলে, পুরোপুরি নাঙা হয়ে যুদ্ধে যাওয়াটা ছিল তাদের ঐতিহ্য। বিশাল লম্বা তলোয়ার নিয়ে প্রতিপক্ষের ঘোড়ার মাথা কাটবে প্রথমে, তারপর প্রতিপক্ষের মাথা, তারপর তাদের রক্তে শরীর রঞ্জিত করতে করতে, নিজের নিজের হত্যা করা শত্রুর মাথা কাঁধে ঝুলিয়ে বিজয়ের গান গাইতে গাইতে যাবে নিজের বাড়ি। পুরস্কারটা এবার টাঙিয়ে রাখার পালা।
১০. উত্তর কোরিয়ান
রাষ্ট্রপ্রধানের নাম নেয়া যাবে না, জেল হবে। প্রাধান্য বংশানুক্রমিক। তিনি নির্বাচিত- ইশ্বরিক। পুরো জাতিতে মানুষ খেয়ে না খেয়ে থাকে সেদিকে খেয়াল নেই। পারমাণবিক বোমা বানিয়ে বসে আছে। পুরো জাতির পুরো অর্থবিত্ত খরচ করে বসে আছে শুধু সামরিক বাহিনীর পিছনে। আজগুবি সব তত্ত্ব আর তারচেও আজগুবি ভাবে নিজের জাতিতেই নিপীড়ন। পাশের দেশটা যদি মহড়াও করতে নেয়, কত্তবড় যুদ্ধোন্মত্ত হলে সেক্ষেত্রেও পারমাণবিক হামলার হুমকি দেয়া যায়!
৯. রোমান সাম্রাজ্য
রোমান রাজধানী শুধু নয়, বড় বড় সব নগরে-অঞ্চলে ছিল কলোসিয়াম। গ্ল্যাডিয়েটররা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে মরে যাবে। হাত কেটে ফেলবে। উপড়ে আনবে চোখ। আমার-আপনার মত সাধারণ মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়বে। আজব।
নেকড়ে বা বাঘ এসে ছিড়েখুড়ে খাবে যকৃত, আমরা আমোদিত হব। আজব।
রোমান সাম্রাজ্যে মানবিকতার অবস্থান কতটুকু ছিল তা তাদের বিনোদনেই স্পষ্ট।
৮.
অ্যাজটেক
যত গায়-গতরে বড় হয় সভ্যতাটা, তত বাড়ে তাদের উলঙ্গতা। এত বিশাল সাম্রাজ্য, এত বড় তার আকৃতি, তার পরও, হররোজ টেম্পলগুলোর মাথায় নিয়ে যাওয়া মানুষকে। শত্রুপক্ষের মানুষ হতে পারে, নিজের গোত্রে বিদ্রোহী মানুষ হতে পারে, নিজেদের এখানে ছিচকে চোর হতে পারে এমনকি কোন দোষ ছাড়াই যে কোন জায়গা থেকে যে কোনভাবে ধরে আনা হতে পারে।
তারপর? টেম্পল অভ টিকালের মাথায় নিয়ে যাওয়া, একেবারে উপর থেকে গলাটাকে বিচ্ছিন্ন করে শত শত ধাপ নিচে ফেলে দেয়া।
ওদের বড় বড় স্যাক্রিফাইজিঙ রিচুয়ালগুলোয়, এমনকি এক একটা টেম্পল থেকে একদিনে এভাবে মাথা ও ধড় ফেলা হত কয়েকশ মানুষের। টিকালের পাঁচশ ধাপ নিচে পড়ে গিয়ে স্তুপ হয়ে থাকত শরীর ও মাথা। মানুষের।
৭. পাকিস্তানি
ইনারা খুব ভাল। ইনাদের কথা বলতে নেই। ইনারা যে ন্যায়বিচার, আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন একাত্তরে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিলেন, সেটা এখনো বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী করে যাচ্ছে। ইনারা একাত্তরে বিদ্রোহী দমন করতে আসলে নয়মাস সময়ের মধ্যে কয়েক হাজার বাঙালি নিহত হয়। তা আসলে ছিল ঘটনার ফলশ্রুতি।
ইনাদের দেশে এখনো সারা বছর কয়েকটা অঞ্চলে গরুকাটা করা হয় বিদ্রোহী কয়েকটা জাতির। স্বাভাবিক। পাক-স্থানের অঙ্গহানির চেষ্টা যারা করবে, তাদের বিনাশ করে দেয়া হবে।
ইনারা পাশের দেশ আফগানিস্তানের মানুষকে করদ করে রাখার জন্য যা যা করা লাগে সব করেন। আরেক পাশের দেশের ভিতরে দুইদিন পরপর বোমাহামলায় শিশু-নারী মারান। দূরবর্তী স্বার্থসংশ্লিষ্ট দেশ, সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে স্বার্থরক্ষায় ইনাদের ব্যাপক বিস্তৃতি। ইনারাও মাশাল্লাহ, মাকড়শা। বিশাল দেশের উন্নতির খবর নেই, ভারতের সাথে পা্ল্লা দিতে গিয়ে সবকিছু সামরিকায়ন।
৬.
মোঙ্গল
মোঙ্গলদের রোলেৎ খেলার কথা আর অধিক কী বলার থাকে? ঘোড়ার বাহিনী নিয়ে একদিক থেকে আরেকদিকে যাত্রা শুরু। পথিমধ্যে পুরুষগুলোকে সব দাঁড় করিয়ে গোল করে একজন বাদ দিয়ে একজনকে কাটতে কাটতে শেষতক মাত্র একজন বাকি থাকলে তাকে ছেড়ে দেয়া।
আর পুরুষরা?
পুরুষরা যা করত তা বাদ দিন। কিছুদিন আগে গবেষণা মোটামুটি অবশেষের পর্যায়ে পৌছায় হিউম্যান জেনোম প্রজেক্টের। এরই ধারাবাহিকতায় তৈরি হয় হিউম্যান ডাইভার্সিটি প্রজেক্ট। অর্থাত কে কার বংশধর হয়ে পৃথিবীর কোথা থেকে কোথায় গেল।
সেই হিসাবে, বিশ্বের আট শতাংশ বর্তমান মানুষের পূর্বপুরুষ এক চেঙ্গিস খাঁ।
কতটা পাপ, কতটা নির্যাতন, কত হাজার নারীর দীর্ঘশ্বাস মিশে আছে এই তীব্র পশুত্বে!
৫. ইজরায়েলি
জাতিগতভিত্তিতে দেশের ধারণাটাই একটা বাজে ধারণা। তার পরও, সেমিটিকরা যে পরিমাণ অত্যাচারিত হয়েছে সারা পৃথিবীতে, হাজার হাজার বছর ধরে, সেই ফারাওর সময় থেকে শুরু করে হিটলারের সময় পর্যন্ত, তাদের নিজস্ব একটা আবাস ন্যায্য অধিকারই ছিল।
তারপর, তারা গেল প্যালেস্টাইনে। একে একে থাকা শুরু করল। মার্কিন-ব্রিটিশ অর্থ সহায়তায় ও আন্তর্জাতিক লবিইঙে কেনা শুরু করল। অনেকটা মেহমানের মত থাকা শুরু করে হঠাৎ করেই দখল করে বসল দেশটাকে।
একবার কল্পনা করুন, আপনি কোন নিপীড়িতকে স্থান দিলেন নিজের পাশে, তারপর আপনার পুরো জাতিকে সে বিতাড়িত করল!
এমন অমানবিকতার ইতিহাস প্রাচীণ পৃথিবীতেও খুব একটা পাওয়া যাবে না, বর্তমান তো দূরকথা।
পৃথিবীতে ইন্টেলিজেন্সের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে ইজরায়েল। ইন্টেলিজেন্সের সর্বশেষ ভুক্তাবশিষ্ট সবটুকু নীতিকে শুষে খেয়ে শেষ করে দিয়েছে। সারা বিশ্বে এই ক্ষুদ্র দেশটার আরো ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও লবিইঙ পার্টি নির্যাতনের সবটুকু পদ্ধতি ছড়িয়ে দিচ্ছে দিক থেকে দিকে।
ইজরায়েলি অত্যাচারের মাত্রা, সাধারণ মানুষের উপরে, অথবা ইজরায়েলি ইন্টেলিজেন্স ও লবিইঙের মাত্রা, সারা পৃথিবীর শান্তি ও ভারসাম্য টলানোর ক্ষেত্রে... এর উদাহরণ কোনকালে থাকা সম্ভব নয়।
৪.
সোভিয়েত রাশিয়ান
কত মানুষ হত্যা করাটা সুন্দর হতে পারে?
আসুন, মহান স্ট্যালিনের বাণী শুনি-
'একটা মৃততু হল দু:খজনক দুর্ঘটনা, কিন্তু দশ লক্ষ মৃততু হচ্ছে একটা পরিসংখ্যান।'
না। শুধু নাজি জার্মানি সারা পৃথিবীতে যে পরিমাণ মানুষকে হত্যা করেছে, এক স্ট্যালিনিয় রাশিয়া তারচে বেশি করেছে। স্তালিন শুধু চেচনিয়াকে বিরান করার জন্য চোদ্দ লক্ষ চেচেনকে দু হাজার মাইল বরফের পথ ধরে 'নতুন বসতি'র দিকে মার্চ করায় যাদের একজনও বাঁচেনি।
এরচে বড় দু:খগাঁধা আর কী হতে পারে? নারী, শিশু, সব।
শুধু স্তালিনের কারণে ষা্টলাখ মৃততু ঘটে।
৩.
নাজি জার্মান
একটা জাতিকে পুরোপুরি উধাও করে দেয়া কোন মানুষের পক্ষে কল্পনা করা সম্ভব? তাও আবার কোন দেশ থেকে না, সারা পৃথিবী থেকে? ইহুদি জাতিকে সারা বিশ্ব থেকে অবলুপ্ত করার ইচ্ছা, বা সারা বিশ্বে শুধু নিজেদের আরিয়ানদেরই একমাত্র পূর্ণ মানুষ আর সবাইকে অপূর্ণ মানুষ মনে করা- এগুলো কতটা গর্দভীয় লক্ষণ হতে পারে?
জার্মান রেইস পিওর রাখার জন্য তারা ফ্যাক্টরির মত করে নারী-পুরুষের জৈবিক সম্মিলনের ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে গিয়েছিল।
তাদের লক্ষ্য ছিল, এবার হাজার বছর ধরে প্রকৃত মানবরা পৃথিবী শাসন করবে এবং বাকি সব ভাষা-গোত্র-জাতি'র অপ্রকৃত মানবরা তাদের পদলেহী হবে।
ফলাফল? কোটি কোটি মানুষের সাংঘর্ষিক মৃততু।
২.
ব্রিটিশ
এই কথাও বলবেন না প্লিজ। পৃথিবীর সবচে নিকৃষ্ট জাতির দ্বিতীয় অবস্থানে ব্রিটিশ? অসম্ভব।
হতে পারে, শুধু খাদ্যসঙ্কট তৈরির জন্য বাংলার প্রতি তিনজনের একজনকে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষে মেরেছে তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। হ্যা। জাপানি আসতে পারে, ব্রিটিশরাজের শুধু এই একটা শঙ্কায় এই বাংলার আধ কোটি মানুষ স্রেফ গাছের পাতা খেতে খেতে মারা গেছে।
ব্রিটিশ অবশ্যই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। কারণ, যেই উত্তর আমেরিকায় পক্স ছিল পুরোপুরি অনাগত এক রোগ (আর অনাগত রোগের বিরুদ্ধে বংশগতভাবেই মানুষের শরীরে কোন টি-সেল থাকে না। ফলে, তারা এমনকি অনাগত রোগ হিসাবে যদি ঠান্ডাও আসে, তাতে পূর্ণ জাতি ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ, তাদের জিনে এই বিষয়ে প্রতিরোধের কোন তথ্যই নেই।), সেই উত্তর আমেরিকায়, ব্রিটিশের জাত, জেনেশুনে, উপহার হিসেবে স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে কম্বল পাঠাতো। আহা, তারাও বিনিময়ে উপহার পাঠাতো। তারপর, জাতি ধরে ধরে সাফ হয়ে যেত। কারণ, সেইসব কম্বল ছিল স্পেশাল। সেগুলো ছিল বসন্ত রোগীদের ব্যবহার্য কম্বল।
ব্রিটিশ জাতির অবদান সারা বিশ্বে অনন্য। তাদের মত অবদান আর কেউ রাখতে পারেনি। তারা অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের পুরো আদিবাসী জাতিকে প্রায় সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে দিয়েছিল অসাধারণ যুদ্ধবিদ্যা দিয়ে। চাল দিয়ে। আবার তারা পুরো উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রায় সব আদিবাসীদেরকেও অসাধারণ যুদ্ধবিদ্যা দিয়ে বিলুপ্ত করেছে।
একটা মাত্র গ্রহ আমাদের, সেই গ্রহের দুইটা মহাদেশের অধিবাসীদের যারা প্রায়-বিলুপ্ত করে দিতে পারে, তাদের মত শ্রেষ্ঠ জাতি আর কারা?
তৃতীয় আরেকটা মহাদেশের মানুষকে ধরে নিয়ে গরু ভেড়ার মত বিক্রি করতে পারে, তাদের মত জাতি কারা?
আজ থেকে কোটি বছর পরও পৃথিবী ব্রিটিশ জাতিকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
১.
অ্যামেরিকান
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শেষ প্রায়।
রাশিয়া, ব্রিটেন আর মিত্রশক্তি মিলে জার্মানিকে ঠেসে ফেলেছে। সেখানে আমেরিকার অবদান খুব সামান্য। আটলান্টিকে প্রাধান্য বিস্তার, নরমান্ডি উপকূলে সৈন্য অবতরণ আর সেইসাথে টেকনোলজিক্যাল কিছু আদান প্রদান। এর বাইরে আর কিছু নয়।
সব ঠিকঠাক। ডেজার্ট ফক্স রোমেল আফ্রিকায় দমাদ্দম কিলঘুষি খাচ্ছে। তুবড়ে যাচ্ছে জার্মানি। তুর্কি খলিফা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে না। জাপান ভয়ে ভয়ে অস্থির। পিছু হটতে হচ্ছে চীনের ভিতর থেকে।
না, তা তো হতে দেয়া যায় না।
আর দুদিন যেতে দিলে তো এমনিই আত্মসমর্পণ করবে সবাই।
বোমাটা টেস্ট করা দরকার।
শুধু টেস্টের জন্য, এবং শুধুমাত্র টেস্টেরই জন্য, হিরোশিমায় বোমা পড়ল। নাগাসাকিতে বোমা পড়ল। এমন নয়, যে একটা বোমা দেখে তারা থমকে গিয়েছিল।
পৃথিবীর নৃশংসতম জাতির এই হল পরীক্ষার ধরণ।
তারা পরীক্ষা করল বিকিনি দ্বীপে। পরীক্ষা করল এখান থেকে সেখানে। প্রকাশ্যে। সেইসব রেডিয়েশনের কোন শেষ নেই। সবচে ভয়ানক ক্ষতি তারা যেটা করল পৃথিবীর, এই পরিমাণ ক্ষতি করার সামর্থ্য কোন জাতি আর কোনদিন রাখবে না। এরচে বেশি ক্ষতি করতে হলে পুরো পৃথিবী শেষ করে দিতে হবে। তারা, জেনেশুনে, বিজ্ঞানীদের হাজারো মানার পরও, একের পর এক পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে পারমাণবিক বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায়।
একবার কল্পনা করুন, আপনি যে আকাশটাকে এত ভালবাসেন, সেটায় শুধু তেজষ্ক্রিয় ইউরেনিয়ামের ছড়াছড়ি। শুধু আপনার নীল গ্রহকে ঘিরে পারমাণবিক বোমার ধ্বংসাবশেষের ছড়াছড়ি। বায়ুমন্ডলের এই পরিমাণ ক্ষতি করার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না।
কাল্পনিক অস্ত্রের জন্য ইরাকে পনেরো লাখ, নিজের সেটাপ করা জিনিস আবার উল্টাপাল্টা করার অজুহাতে আফগানে বারো লাখ, ভিয়েতনামে মিলিয়ন... যোগ করতে থাকুন। আমেরিকা আজ পর্যন্ত যতগুলো অন্যায় যুদ্ধ করেছে, স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, তাদের মোট হত্যার সংখ্যা যোগ করতে থাকুন। রাশিয়ার সংখ্যা ছাড়াবে, জার্মানের সংখ্যা ছাড়াবে, যে কোন দেশের সংখ্যা ছাড়াবে।
তবে, ব্রিটিশ জাতির সংখ্যা ছাড়াতেও পারে, আবার নাও ছাড়াতে পারে।
আমরা তাই বিতর্ক করতে পারি, ঠিক কারা সবচে বড় পিশাচ, ব্রিটিশ, নাকি আমেরিকান?
সহব্লগাররা যদি ব্রিটিশ ও আমেরিকানের অবস্থান উল্টাপাল্টা করার কথা বলেন, আমি বলব, ব্রিটিশ সূর্য অস্ত গেছে, তারা আর ওই কাজটা করবে না। আমেরিকান মাত্র উদীয়মান। যাত্রা হল শুরু। আর পারমাণবিক বোমা তো আছেই।
উৎসর্গ:
এই পোস্টটা লেখার কারণ-
কাব্য
ও
তার মা মনিরা চৌধুরী।
পৃথিবীতে অসংখ্য অমানবিক জাতি ছিল। কিন্তু বাঙালির মত সুখি, বাঙালির মত মানবিক, বাঙালির মত মমতাময় ও বাঙালির মত সমমর্মী আর কোন জাত নেই ভূলোকে।
আমরা এতটা বদলে যাইনি। এতটা বদলাতে পারি না। তাই কাব্য ও তার মায়ের জন্য ভালবাসা।
সেরা জাতি নিয়ে কমেন্টে নানা আলোচনার প্রেক্ষিতে:
সবচেয়ে মানবিক ও সুন্দর জাতির পোস্ট ও করেছিলাম। হয়ত শিরোনামের জন্য চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল সেটা।