somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দাবি শুধু একটাই, রাজাকারের ফাঁসি চাই।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, এমন অভিযোগে বিরোধীজোট বিএনপি ও জামায়াতরে এক ডজন নেতার বিচার করছে আওয়ামী লীগ সরকার। তারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের কথিত স্বপক্ষ শক্তি দাবি করে এ বিচার করলেও তাদের দলে থাকা রাজাকারদের ব্যাপারে একেবারে নিরব।

এ দলটিতেও রয়েছে, কুখ্যাত রাজাকার, আল বদর, আল শামস, গণহত্যকারী, গণধর্ষণকারী, অগ্নিসংযোগাকরীসহ অসংখ্য স্বাধীনতাবিরোধী। কিন্তু তারা রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময় বক্তৃতায় বলেছেন, আওয়ামী লীগে রাজাকার থাকলে দেখিয়ে দেন-আমরা তাদের বিচার করব। বিভিন্ন মিডিয়ার অনুসন্ধানে নিচে ২৩ আওয়ামী রাজাকারের তালিকা তুলে ধরা হলো।

আওয়ামী লীগের এই ২৩ জন যুদ্ধাপরাধী বা তাদের পরিবার কোন না কোনভাবে ৭১ সালে পাকিস্তান সরকার ও যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন। মক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এসব নেতা ঘৃণিত ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বনে গিয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ নানা ধরনের মানবতবিরোধী অপরাধের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিলেন তারা।

নিচে আওয়ামী লীগের এসব যুদ্বাপরাধীর নাম ও তাদের কর্মকাণ্ডের কিছু তথ্য দেয়া হলো:

১. অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম: ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম রাজাকার পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম নেজামে ইসলামি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের শায়েস্তা করার জন্য তার নেতৃত্বেই ঢাকায় প্রথম শান্তি কমিটি গঠন হয়। একই সঙ্গে তিনি রাজাকার, আল বদর ও আল শাসম বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি মু্ক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রাজাকার ভাইয়ের মালিকাধীন প্রিন্টিং প্রেসে তিনি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৬৯ সালে এ দেশে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন জোরদার হলে নেজামের ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার প্রচারণা চালানোর জন্য ‘নেজামে ইসলাম’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। হাকিম অজিজুল ইসলাম এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। শেখ মজিবুর রহামনসহ পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে তিনি এ পত্রিকায় ‘ইবলিশের দিনলিপি’ নামে প্রতি সপ্তাহে বিশেষ সম্পাদকীয় লিখেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় হন। এর মধ্যে দিয়ে রাজাকার পরিবারের গন্ধ হতে মুক্ত হতে চান তিনি। তার ব্যাপারে ‌‌'মুক্তিযুদ্ধে ইসলামী দল' শীর্ষক বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

২. লে.কর্ণেল (অব) ফারুক খান: পর্যটন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহীনীর পক্ষে প্রথম অপারেশন চালান এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সুত্র: “দিনাজপুরের মক্তিযুদ্ধ” বই।

৩. ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন: ফরিদপুর– ৩ আসনের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি শান্তি বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যার জন্য হানাদার বাহিনীদের প্ররোচিত করেন। “দৃশ্যপট একাত্তর: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।

৪. অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন: ময়মনসিংহ ৬ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে গত বছরের ৪ এপ্রিল ট্রাইবুনাল ওয়ার ক্রাইম ফাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা, এম এ হাসানের দেয়া যুদ্ধাপরাধের তালিকায় (ক্রমিক নং-৭৩) উল্লেখ করা হয়েছে। যা গত ২২ এপ্রিল দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ দিকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্বে গত ৬ এপ্রিল ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও জোড়বাড়িয়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ময়মনসিংয়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিট্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

৫. সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী: আওয়মী লীগের সেকেন্ড ইন কমান্ড সংসদ উপনেতা ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর কাছে একজন আস্থাভাজন নেত্রী ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে ৮৮ জনকে পাকিস্তানের সামরিক সরকার আস্থাভাজন এন এন এ মেম্বার অব ন্যাশনাল এজেন্সী হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭১ সালে ৭ আগষ্ট পাকিস্তানের তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত ওই তালিকায় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নাম ছিল ৮৪ নম্বরে।

জেনারেল রোয়াদেদ খান ওই দিন ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের পক্ষে সমর্থন জানানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করার সুবাদে তিনি এ খ্যাতি অর্জন করেন বলে জানা গেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে এ তথ্য উল্লেখ আছে।

৬. সৈয়দ জাফরউল্লাহ: আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন। মাসিক “সহজকথা” আয়োজিত যুদ্ধাপরাধের বিচার:বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরঊল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। জাফর উল্লাহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পূর্ণ সমর্থন দেন। “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান” বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

৭. মুসা বিন শমসের: গত বছরের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশ করে ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেন, শেখ সেলিম যে তার ছেলেকে ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসেরর মেয়ে বিয়ে করিয়েছেন তার কথা কেউ বলছেন না কেন? এ খবর ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মুসা বিন শমসের গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের বেয়াই। ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসান যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৩০৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখানে ফরিদপুর জেলায় গণহত্যাকারী হিসেবে মুসা বিন শমসের নাম রয়েছে। তিনি নিরীহ বাঙ্গালীদের গণহত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযোদ্দ্ধাদের হত্যাসহ নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে জানা গেছে।

৮. মির্জা গোলাম কাশেম: জামালপুর–৩ আসনের সংসদ সদস্য, যুবলীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকার দলীয় হুইপ মির্জা গোলাম আযমের বাবা। ১৯৭১ সালে মির্জা কাশেম জামালপুরের মাদারগঞ্জে শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তিনি রাজাকার, আল-বদরদের গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। তার বিরুদ্ধে নারী ধর্ষণ ও লুটপাটের একাধিক অভিযোগ আছে। যা “জামালপুরের মুক্তিযুদ্ধ ( “১৯৮১ সালের সংস্বকরণ” বইয়ে উল্লেখ আছে। মির্জা কাশেম জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। প্রিয় নেতার নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন মির্জা গোলাম আযাম।

৯. এইচ এন আশিকুর রহমান: রংপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এইচ এন আশিকুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তার সরকারের অধীনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে টাঙ্গাইলে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি পাকিস্তান সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেন। এস এস এম শামছুল আরেফিন রচিত ‘মুক্তিযুদ্বের প্রেক্ষাপট ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ের ৩৫০ পৃষ্টায় পূর্ব পাকিস্তানে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকায় তার নাম প্রকাশিত হয়েছে। ৯ জানুয়ারি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাজাকার আশিকুর রহমান আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বলে তার বিচার করবেন না তা হয় না। আমরা সব রাজাকারের বিচার চাই। মন্ত্রীসভায় রাজাকার রেখে রাজাকারের বিচার করা যায় না।

১০. মহিউদ্দিন খান আলমগীর: চাদপুর-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ময়মনসিংহে অতিরিক্তি জেলা প্রশারক পদে কর্মরত ছিলেন।

তিনি পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছেন। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ সময় আরেফিন রচিত “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান'' বইয়ের ৩৫০ পৃষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে চিহ্নিত রাজাকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তার বিচার দাবি করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

১১. মাওলানা নুরুল ইসলাম: জামালপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে জামালপুর সরিষা বাড়ী এলাকার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকাররা ঐ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। “ দৃশ্যপট এক্ত্তার: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” গ্রন্থের ৪৫ পৃষ্ঠায় এর বিবরণ দেয়া আছে। এ ছাড়া গত ২৮ এগ্রিল দৈনিক আমাদের সময় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মাওলানা নুরুল ইসলামকে সরিষাবাড়ি এলাকার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

১২. মজিবর রহামান হাওলাদার: কুটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান হাওলাদার সশস্ত্র রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় বসতবাড়ীতে অগ্নিকাণ্ড ঘটানোসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১ নম্বরে । এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকায়ও যুদ্বাপরাধী হিসেব তার নাম আছে।

১৩. আবদুল বারেক হাওলাদার: গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের পিতা আবদুল বারেক হাওলাদার ৭১ এ দালাল ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪১ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট । দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকাতেও তার নাম আছে। বারেক হাওলাদার মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন।

১৪. আজিজুল হক: গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের ভাই আজিজুল হক কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪৯ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানেও তার নাম রয়েছে।

১৫. মালেক দাড়িয়া: আওয়ামী লীগ নেতা ও গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়ার বাবা মালেক দাড়িয়া কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি ছিলেন আল বদরের একনিষ্ঠ সহযোগী। গণহত্যায় নেতৃত্ব দেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১৪০ নম্বরে। তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট।

১৬. মোহন মিয়া: গোপালগঞ্জ কোটারিপাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি আমির হোসেনের পিতা মোহন মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালাল ও রাজাকার ছিলেন। স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করেছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় তার নাম ছিল ১৫৭ নম্বরে।

১৭. মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া: উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়ার বাবা মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া রাজাকার ছিলেন। যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম আছে। তিনি পাকিস্তানীদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের গোপন খবর পাকবাহিনীকে পৌঁছে দিতেন।

১৮. রেজাউল হাওলাদারঃ কোটালিপাড়া পৌর মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম অহেদুল ইসলামের ভগ্নিপতি রেজাউল হাওলাদের নাম ২০৩ জন রাজাকার, আল বদর, আলশামসসহ গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি আল বদর সদস্য হিসেব স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

১৯. বাহাদুর হাজরাঃ কোটালিপাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলামের পিতা বাহাদুর হাজরার নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন সক্রিয় রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন।

২০. আ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারঃ গোপালগঞ্জের এ পি পি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি পাকিস্তানীদের দোসর ও আল বদর বাহিনীর সহযোগী ছিলেন। আল বদর বাহিনীর সকল ধরনের কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করতেন তিনি।

২১. হাসেম সরদার: অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের পিতা হাসেম সরদারের নাম কোটালীপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন রাজাকার ছিলেন। ৭১ সালে তার নেতৃত্বে অনেক সাধারণ বাঙালির বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল।

২২. আবদুল কাইয়ুম মুন্সি: জামালপুর বকশিগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতি অবুল কালাম আজাদের পিতা আবদুল কাইয়ুম মুন্সীর বিরুদ্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীকে সহয়তা ও মুক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ অগ্নিসংযোগের অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল জামালপুর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মালিচর নয়াপাড়া গ্রামের সিদ্দিক আলী এ মামলা দায়ের করেন। আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত বলে জানা গেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাক হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য বকশিগঞ্জে আল বদর বাহিনী গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পাক বাহিনীর সাথে থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেন।

২৩. নুরুল ইসলাম-নুরু মিয়া: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম নূরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গত ২১ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন। এ সময় তারা মন্ত্রী ও তার ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, তার বাবা নূরু মিয়া মু্ক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকর ছিলেন। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুরের রাজাকারের তালিকায় ১৪ নম্বরে নুরু মিয়ার নাম থাকলেও তিনি যুদ্বাপরাধী ছিলেন না। পরের দিন ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় এ খবরটি প্রকাশিত হয়। নুরু মিয়ার অপকর্মের বিষয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ে বিস্তারিত বলা আছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জন প্রতিনিধি হয়েও আওয়ামী লীগের ২৭ নেতা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন। তারা কেউ ছিলেন (এম এন এ) জাতীয় পরিষদ সদস্য, আবার কেউ ছিলেন (এম পি এ) প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। মুক্তিযুদ্ধে তারা হানাদার বাহিনীকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। দেশের মুক্তিযোদ্বাদের হত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটতরাজ এবং বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ সহ নানা ধনের মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথেও তারা যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুজিবনগরের সরকারের মন্ত্রী পরিষদ, যুদ্ধাপরাধের সংক্রান্ত কিছু বই থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ সব নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এবার দেখা যাক মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গাহীন-চেতনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত আমাদের সরকার কি ব্যবস্থা নেয়! নিশ্চয়ই নিজের ঘর আওয়ামী লীগকে রাজাকার মুক্ত করতে বাআলের মধ্যে থাকা রাজাকারগুলোর বিচার করবে তারা। তো আর দেরি কেন-প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই মোশাররফকে দিয়েই শুরু হোক...
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×