বিশ্বকাপ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বুধবার মাঠে নামছে জার্মানি ও স্পেন। দেশ দু'টি সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ভিয়েনায় ইউরো ২০০৮ এর ফাইনালে। জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিয়ে আসে স্পেন। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আবারো মুখোমুখি এই দুই দল। ডারবানের মোজেস ম্যাভিদা স্টেডিয়ামে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কি সেই হারের বদলা নিতে পারবে জার্মানি ?
সাধারণত মাঠের লড়াইয়ের আগে কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে প্রতিপক্ষ দু'দল। এখানে ঘটছে ঠিক উল্টো ঘটনা। রীতিমতো বিস্ময়কর। স্পেনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্বয়ং জার্মান কোচ জোয়াকিম লো। বলেছেন, ''ওরা আর্জেন্টিনার চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক দল। এক ঝাঁক দুর্দান্ত খেলোয়াড় আছে ওদের। কিন্তু তারকা নির্ভর নয়। ওরা যেন এক সুতায় গাঁথা একটি দল। এমন দলকে সমীহ না করে উপায় নেই।''
কোয়ার্টার ফাইনালে ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার মেসিকে কড়া পাহারায় রেখে আর্জেন্টিনাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় জার্মানি। সে প্রসঙ্গ লো বলেন, ''মেসির মতো কয়েকজন খেলোয়াড় আছে স্পেনের। বিশেষ করে, আক্রমণভাগে। ফলে ওরা যখন - তখন গোল করার ক্ষমতা রাখে। ইংল্যান্ড কিংবা আর্জেন্টিনার মতো ভুল ওরা করে না।''
জার্মান কোচের মতে, গত দুই-তিন বছর ধরে স্পেন অসাধারণ ফুটবল খেলছে। খুব বেশি ভুল তারা করে না। সেমিফাইনালে স্পেনকে ভুল করতে বাধ্য করাই হবে তার কাজ। মাঝ-মাঠে ইনিয়েস্তা এবং জাভিকেই স্পেনের আসল চালিকাশক্তি বলে মনে করছেন লো। তাই তিনি চাইছেন মাঝ-মাঠ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। সেই দায়িত্ব দিয়েছেন সামি খেদিরা ও বাস্টেইন সোয়াইনস্টিগারকে।
লোর চিন্তা একটাই। ম্যাচে তিনি পাচ্ছেন না এই বিশ্বকাপের নতুন তারকা ২১ বছর বয়সী টমাস মুলারকে। এরই মধ্যে চার গোল করেছেন তিনি। কিন্তু দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখায় স্পেনের বিপক্ষে মাঠে দেখা যাবে না তাকে। তার জায়গায় ব্রাজিল বংশোদ্ভূত কাকাওকে খেলাতে পারেন লো। এছাড়া ৪-৫-১ পদ্ধতিতে বেছে নিতে পারেন জার্মান কোচ।
এদিকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে স্পেন। তবে কোচ ভিসেন্ত দেল বস্কের দৃষ্টি অবশ্য আরো ওপরে। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আক্রমণাত্মক ফুটবলের পাশাপাশি গতির ঝলক দেখাতে চান তিনি। যেমনটা স্পেন দেখিয়েছিল ইউরো ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে। বস্কের ধারণা, জার্মানিও একই কৌশল নেবে। তাই খেলাটি যে জমজমাট হবে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
মাঠে নামের প্রতি সুবিচার করে খেলতে না পারলেও আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ফার্নান্দো তোরেসের ওপর আস্থা রাখছেন কোচ বস্কে। সামনে ডেভিড ভিয়ার সঙ্গে থাকছেন তিনিই। প্রয়োজনে ব্যথা-নাশক ইনজেকশন নিয়ে মাঝ-মাঠে খেলবেন সিসে ফ্যাব্রেগাস। সঙ্গে জাভি এবং ইনিয়েস্তা তো আছেনই। বস্কের পছন্দ ৪-৪-২ পদ্ধতি।
অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস চাইছেন আর দু'টো ম্যাচ জিতে স্বপ্ন-পূরণ করতে । তবে সেজন্য জার্মান 'ডায়নামোকে' অকেজো করে দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
বিঃ দ্রঃ ফটোগুলো UEFA EURO 2008 Final খেলা থেকে নেওয়া হয়েছে। উক্ত খেলাটিতে জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিয়ে আসে স্পেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:৩৭