কারও ভালো লাগা না লাগার জন্য না সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম এর দেয়া ৫০ যুদ্ধাপরাধীর তালিকা বেক লিংক করার জন্য এরকম ৪৯ টি পোষ্ট লাগবে, আফটার অল যথাযোগ্য বলে বাংলায় একটা শব্দ আছে।
আপনার টি দিন।
এনজয় রাজাকার ট্যাগক্লাউড
ক) ১৭ জুলাই ১৯৭১-এ ছাত্রনেতা ফারুককে ধরে এনে পাকবাহিনীর সহায়তায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী হত্যা করেন। ২৬ মার্চ থেকে আত্মসমর্পণের পূর্ব পর্যন্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীদের বাসায় পাকবাহিনীর এক প্লাটুন সৈন্য মোতায়েন থাকত। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ফজলুল কাদের চৌধুরীসহ তাদের পরিবার প্রায় দেড় মণ সোনাসহ পালানোর সময় মুক্তিবাহিনীর কাছে ১৮ই ডিসেম্বর ’৭১-এ ধরা পড়েন।’ [সূত্র : দৈনিক বাংলা, ৮ জানুয়ারি ১৯৭২]
খ) গুডসহিল (ছালার বাড়ি) স্বাধীনতার সপক্ষের মানুষের নির্যাতন কেন্দ্রে পরিণত হয়। শোনা যায়, এ কেন্দ্র পরিচালনার সঙ্গে তার পুত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে স্বাধীনতার সপক্ষের মানুষকে এখানে ধরে এনে ঝুলিয়ে পেটানো হতো। উল্লেখ্য যে, এ বাড়িতে প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুককে হত্যা করা হয়েছে। আল-বদর বাহিনীর একটি বিশেষ গ্রুপ এ বাড়ির নির্যাতনের প্রত্যক্ষ সহযোগী ছিল।’[সূত্র : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহর চট্টগ্রামের নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমি : সাখাওয়াত হোসেন মজনু]
গ) নিজামুদ্দীন ১৮ নবেম্বর চট্টগ্রাম জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে। সে বলে আমি ধরা পড়ি ৫ জুলাই। আমাকে ফজলুল কাদেরের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পিছমোড়া করে বেঁধে ফজলুল কাদেরের পুত্র সালাউদ্দিন, অনুচর খোকা, খলিল ও ইউসুফ রড, লাঠি, বেত প্রভৃতি হাতে আমাকে পেটাতে থাকে। পাঁচ ঘণ্টা মারের চোটে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। ৬ জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় আমাকে স্টেডিয়ামে চালান দেয়া হয়।’ [সূত্র : বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ইতিবৃত্ত : মাহবুব-উল-আনোয়ার; পৃষ্ঠা ৬৯]
ঘ) চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, শ্রী কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয় এবং কুণ্ডেশ্বরী বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা দানবীর বাবু নূতন চন্দ্র সিংহের হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সালাউদ্দিন কাদের বলে কথিত আছে। ২৯ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর প্রায় ৪৭ জন অধ্যাপক সস্ত্রীক আশ্রয় নিয়েছিলেন কুণ্ডেশ্বরী ভবনে। এদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ আলী আহসান ড. এ আর মল্লিক, ড. আনিসুজ্জামান প্রমুখ। পাকবাহিনী চট্টগ্রাম দখলের পর এরা সবাই ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। বাবু নূতন সিংহকেও যাওয়ার কথা বলেছিলেন সবাই। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘যদি মরতেই হয় দেশের মাটিতেই মরব। পরিবারের সবাইকে সরিয়ে দিয়ে নিজে কুণ্ডেশ্বরী মন্দিরে অবস্থান করছিলেন। পাকসেনা আসতে পারে অনুমান করে উঠানে চেয়ার-টেবিলও সাজিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল চারটি ট্যাঙ্কসহ দুটি জিপে করে পাকবাহিনী কুণ্ডেশ্বরী ভবনে আসে। এর একটিতে বসে ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র পাক সেনাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে নিজের কাজকর্ম ব্যাখ্যা করেন। সন্তুষ্ট হয়ে পাকসেনারা জিপে চলে আসে, কিন্তু সালাউদ্দিন কাদের তাদের জানান যে, তার বাবার আদেশ আছে ‘মালাউন নূতন চন্দ্র ও তার ছেলেদের মেরে ফেলার জন্য’, এরপর পাকবাহিনীর মেজর তাকে তিনটি গুলি করেন। একটি গুলি তার চোখের নিচে বিদ্ধ হয়, একটা গুলি তার হাতে লাগে এবং তৃতীয় গুলিটি তার বুক ভেদ করে চলে যায়। তিনি চিৎকার করে মায়ের নাম নিয়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে যান।’ [সূত্র : একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় : মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্র]
ঘ) ১৯৭২ সালে নূতন চন্দ্র সিংহ হত্যা মামলা হয়েছিল। নূতন চন্দ্রের ছেলে সত্যরঞ্জন সিংহসহ মোট ১২ জন সাক্ষী ছিলেন মামলায়। মামলার এফআইএর নং ইউ/এস/৩০২/১২০ (১৩)/২৯৮ বিপিসি। ৭২ সালের ২৯ জানুয়ারি বিচার শুরু হয়। আসামিদের মধ্যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ পলাতক ছিল ৫ জন। পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরীসহ ৫ জন ছিল কারাগারে। চট্টগ্রামের একজন শহীদের সন্তান শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর গণতদন্ত কমিশনকে জানান, তার পিতা শহীদ শেখ মুজাফফর আহমদ ও ভাই শহীদ শেখ আলমগীরকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার সহযোগীরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল হাটহাজারী ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং পরে তাদের মেরে ফেলা হয়। স্বাধীনতার পর শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরও বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী গংয়ের বিরুদ্ধে। [সূত্র : একাত্তরের ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় রিপোর্ট]
ফুল তালিকা