somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২৪ বছর ধরে আমি যা ভুল জানতাম..শেখ কামাল কি কারনে মেজর ডালিমের বউকে হাইজ্যাক করেছিল !!!????

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট বেলা থেকেই মেজর ডালিমের প্রতি আমার একটু সহানুভুতি কাজ করতো, মাঝে মাঝে মনে হতো মেজর ডালিম ঠিক কাজটিই করেছে।

(মেজর ডালিম)
দুইটা ব্যাপার তার প্রতি আমার সহানুভুতি তৈরিতে কাজ করেছে

প্রথমত : আমি কাউকে দোষারোপ করার আগে আমি চিন্তা করি তার জায়গায় আমি হলে কি করতাম, আমি মনে করি আমার অল্প কয়েকটা ভালো গুনের মধ্যে এটা অন্যতম।
দ্বিতীয়ত : এটাই মুলত প্রধান কারন সেটা হলো আমি জানতাম বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ কামাল মেজর ডালিমের বউকে হাইজ্যাক করেছে। আমি কল্পনা করতাম প্রবল ক্ষমতাধর শেখ কামালের কাছে মেজর ডালিমের অসহায়ত্ব। সেই সাথে আমি নিজেও কিছুটা অসহায় ফিল করতাম।

এই তথ্যটা যে ভয়াবহ রকমের অপপ্রচার তা আমি বুঝতে পেরেছি কয়েকদিন আগে "আমার ব্লগ" এর একটি ব্লগ পড়ে। তারপর আমার নিজের প্রতি নিজেরই রাগ হয়েছিলো। তারপর আমার মনে হয়েছিলো সবাই মনে হয় এই তথ্যটা এখন জানে। কিন্তু আমার ভুল ভেঙ্গেছে গতকাল। অফিসের গাড়িতে করে আমি আর আমার এক কলিগ বাসায় ফিরছি। মাঝখানে আলোচনা উঠলো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফাসি নিয়ে। ড্রাইভারও আমাদের সাথে অংশগ্রহন করলো। ড্রাইভারের ভাষ্যমতে : বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ফলে সেই সময়ের লোকজনেরা নাকি খুশি হয়েছিলো কারন হিসেবে সে দেখাচ্ছিল বঙ্গবন্ধুর ছেলেদের এবং তার তৈরি রক্ষী বাহিনীর দ্বারা সাধারন মানুষের উপর অত্যাচার এবং বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ কামাল কতৃক মেজর ডালিমের বউকে হাইজ্যাকের প্রসঙ্গও উঠে এসেছিলো। আমি যতই প্রতিবাদ করি তার উত্তর সেই সময়ে সে ছিলো আর আমার জন্মই তার ১৩-১৪ বছর পরে :|:|। সুতরাং সে আসল সত্যটি জানে। ড্রাইভার বলে আমি তেমন গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু আজকে অফিসে এসে কয়েকজন কলিগকেও এই ব্যাপারে ব্লেইম করতে দেখি তখন আমি সত্যি অবাক হলাম যে এত বড় একটা মিথ্যা অপপ্রচার মানুষের মাঝে এইভাবে ছড়াইছে কিভাবে???


(শেখ কামাল)

যাই হোক এবার মূল প্রসঙ্গে আসি, সেই ব্লগে লেখক শুধু প্রশ্ন করেছিলো, মূল তথ্য পাওয়া গেছে মন্তব্যে।আমি মন্তব্যগুলোর মূল অংশ এখানে দিলাম, মূল লেখার লিংক সবশেষে দেয়া হল:

" মেজর ডালিম (পরে লে. কর্নেল) এর লিখিত গ্রন্থ "যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি"( লিংক http://www.majordalimbangla.net/71.html বা http://www.majordalim.com/ ) এর সুত্র মতে, ঘটনার সাথে শেখ কামাল জড়িত নন । এখানে তার বই থেকে ঘটনা তুলে দেয়া হলো :

রেডক্রস চেয়ারম্যান এবং তদানীন্তন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ প্রধান গাজী গোলাম মোস্তফা নিম্মী এবং আমাকে বন্দুকের মুখে লেডিস ক্লাব থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি ঘটে এক বর্বরোচিত অকল্পনীয় ঘটনা। দুস্কৃতিকারী দমন অভিযানে সেনাবাহিনী তখনও সারাদেশে নিয়োজিত। আমার খালাতো বোন তাহ্‌মিনার বিয়ে ঠিক হল কর্নেল রেজার সাথে। দু’পক্ষই আমার বিশেষ ঘনিষ্ট। তাই সব ব্যাপারে মধ্যস্থতা করতে হচ্ছিল আমাকে এবং নিম্মীকেই। বিয়ের দু’দিন আগে ঢাকায় এলাম কুমিল্লা থেকে। ঢাকা লেডিস ক্লাবে বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সেই বিয়েতে অনেক গন্যমান্য সামরিক এবং বেসামরিক লোকজন বিশেষ করে হোমরা-চোমরারা এসেছিলেন অতিথি হিসেবে। পুরো অনুষ্ঠানটাই তদারক করতে হচ্ছিল নিম্মী এবং আমাকেই। আমার শ্যালক বাপ্পি ছুটিতে এসেছে ক্যানাডা থেকে। বিয়েতে সেও উপস্থিত। বিয়ের কাজ সুষ্ঠভাবেই এগিয়ে চলেছে। রেডক্রস চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফার পরিবারও উপস্থিত রয়েছেন অভ্যাগতদের মধ্যে। বাইরের হলে পুরুষদের বসার জায়গায় বাপ্পি বসেছিল। তার ঠিক পেছনের সারিতে বসেছিল গাজীর ছেলেরা। বয়সে ওরা সবাই কমবয়সী ছেলে-ছোকরা। বাপ্পি প্রায় আমার সমবয়সী। হঠাৎ করে গাজীর ছেলেরা পেছন থেকে কৌতুকচ্ছলে বাপ্পির মাথার চুল টানে, বাপ্পি পেছনে তাকালে ওরা নির্বাক বসে থাকে। এভাবে দু’/তিনবার চুলে টান পড়ার পর বাপ্পি রাগান্বিত হয়ে ওদের জিজ্ঞেস করে,

-চুল টানছে কে?

-আমরা পরখ করে দেখছিলাম আপনার চুল আসল না পরচুলা। জবাব দিল একজন। পুচঁকে ছেলেদের রসিকতায় বাপ্পি যুক্তিসঙ্গত কারণেই ভীষণ ক্ষেপে যায়; কিন্তু কিছুই বলে না। মাথা ঘুরিয়ে নিতেই আবার চুলে টান পরে। এবার বাপ্পি যে ছেলেটি চুলে টান দিয়েছিল তাকে ধরে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বলে,

-বেয়াদপ ছেলে মশকারী করার জায়গা পাওনি? খবরদার তুমি আর ঐ জায়গায় বসতে পারবে না। এ কথার পর বাপ্পি আবার তার জায়গায় ফিরে আসে। এ ঘটনার কিছুই আমি জানতাম না। কারণ তখন আমি বিয়ের তদারকি এবং অতিথিদের নিয়ে ভীষণভাবে ব্যস্ত। বিয়ের আনুষ্ঠিকতার প্রায় সবকিছুই সুষ্ঠভাবেই হয়ে যায়। খাওয়া-দাওয়ার পর্বও শেষ। অতিথিরা সব ফিরে যাচ্ছেন। সেদিন আবার টেলিভিশনে সত্যজিৎ রায়ের পুরষ্কার প্রাপ্ত ছবি ‘মহানগর’ ছবিটি দেখানোর কথা; তাই অনেকেই তাড়াতাড়ি ফিরে যাচ্ছেন ছবিটি দেখার জন্য। অল্প সময়ের মধ্যেই লেডিস ক্লাব প্রায় ফাঁকা হয়ে গেল। মাহবুবের আসার কথা। মানে এসপি মাহবুব। আমাদের বিশেষ ঘনিষ্ট বন্ধুদের একজন। আমরা সব একইসাথে যুদ্ধ করেছি স্বাধীনতা সংগ্রামে। কি এক কাজে মানিকগঞ্জ যেতে হয়েছিল তাকে। ওখান থেকে খবর পাঠিয়েছে তার ফিরতে একটু দেরী হবে। ঘনিষ্ট আত্মীয়-স্বজনরা সবেমাত্র তখন খেতে বসেছি। হঠাৎ দু’টো মাইক্রোবাস এবং একটা কার এসে ঢুকল লেডিস ক্লাবে। কার থেকে নামলেন স্বয়ং গাজী গোলাম মোস্তফা আর মাইক্রোবাস দু’টো থেকে নামল প্রায় ১০-১২ জন অস্ত্রধারী বেসামরিক ব্যক্তি। গাড়ি থেকেই প্রায় চিৎকার করতে করতে বেরুলেন গাজী গোলাম মোস্তফা।

-কোথায় মেজর ডালিম? বেশি বার বেড়েছে। তাকে আজ আমি শায়েস্তা করব। কোথায় সে? আমি তখন ভেতরে সবার সাথে খাচ্ছিলাম। কে যেন এসে বলল গাজী এসেছে। আমাকে তিনি খুঁজছেন। হঠাৎ করে গাজী এসেছেন কি ব্যাপার? ভাবলাম বোধ হয় তার পরিবারকে নিয়ে যেতে এসেছেন তিনি। আমি তাকে অর্ভ্যথনা করার জন্য বাইরে এলাম। বারান্দায় আসতেই ৬-৭জন স্টেনগানধারী আমার বুকে-পিঠে-মাথায় তাদের অস্ত্র ঠেকিয়ে ঘিরে দাড়াল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমিতো হতবাক! কিছুটা অপ্রস্তুতও বটে। সামনে এসে দাড়ালেন স্বয়ং গাজী। আমি অত্যন্ত ভদ্রভাবে তাকে জিজ্ঞেস করলাম,
-ব্যাপার কি? এ সমস্ত কিছুর মানেই বা কি?

তিনি তখন ভীষণভাবে ক্ষীপ্ত। একনাগাড়ে শুধু বলে চলেছেন,
-গাজীরে চেন না। আমি বঙ্গবন্ধু না। চল্‌ শালারে লইয়া চল্‌। আইজ আমি তোরে মজা দেখামু। তুই নিজেরে কি মনে করছস?
অশালীনভাবে কথা বলছিলেন তিনি। আমি প্রশ্ন করলাম,
-কোথায় কেন নিয়ে যাবেন আমাকে?

আমার প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে তিনি নির্দেশ দিলেন তার অস্ত্রধারী অনুচরদের। তার ইশারায় অস্ত্রধারীরা সবাই তখন আমাকে টানা-হেচড়া করে মাইক্রোবাসের দিকে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। বিয়ের উপলক্ষ্যে নিরাপত্তার জন্য পুলিশের বন্দোবস্ত করা হয়েছে; গাড়িতে আমার এস্কট সিপাইরাও রয়েছে। ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি করা উচিত। একটা বিয়ের অনুষ্ঠান। কন্যা দান তখনও করা হয়নি। কি কারণে যে এমন অদ্ভুত একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হল সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ দেখলাম বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আলম এবং চুল্লুকে মারতে মারতে একটা মাইক্রোবাসে উঠালো ৩-৪ জন অস্ত্রধারী। ইতিমধ্যে বাইরে হৈ চৈ শুনে নিম্মী এবং খালাম্মা মানে তাহমিনার আম্মা বেরিয়ে এসেছেন অন্দরমহল থেকে।

খালাম্মা ছুটে এসে গাজীকে বললেন,
-ভাই সাহেব একি করছেন আপনি? ওকে কেন অপদস্ত করছেন?
কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন ওকে? কি দোষ করেছে ও?

গাজী তার কোন কথারই জবাব দিলেন না। তার হুকুমের তামিল হল। আমাকে জোর করে ঠেলে উঠান হল মাইক্রোবাসে। বাসে উঠে দেখি আলম ও চুল্লু দু’জনেই গুরুতরভাবে আহত। ওদের মাথা এবং মুখ থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। আমাকে গাড়িতে তুলতেই খালাম্মা এবং নিম্মী দু’জনেই গাজীকে বলল,
-ওদের সাথে আমাদেরকেও নিতে হবে আপনাকে। ওদের একা নিয়ে যেতে দেব না আমরা।

-ঠিক আছে; তবে তাই হবে। বললেন গাজী।

গাজীর ইশারায় ওদেরকেও ধাক্কা দিয়ে উঠান হল মাইক্রোবাসে। বেচারী খালাম্মা! বয়স্কা মহিলা, আচমকা ধাক্কায় হুমড়ি খেয়ে পড়লেন মাইক্রোবাসের ভিতরে। আমার দিকে অস্ত্রতাক করে দাড়িয়ে থাকলো পাঁচজন অস্ত্রধারী; গাজীর সন্ত্রাস বাহিনীর মাস্তান। গাজী গিয়ে উঠল তার কারে। বাকি মাস্তানদের নিয়ে দ্বিতীয় মাইক্রোবাসটা কোথায় যেন চলে গেল। মাইক্রোবাস দুইটি ছিল সাদা রং এর এবং তাদের গায়ে ছিল রেডক্রসের চিহ্ন আঁকা। গাজীর গাড়ি চললো আগে আগে আর আমাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি চললো তার পেছনে। এসমস্ত ঘটনা যখন ঘটছিল তখন আমার ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা কামরুল হক স্বপন বীর বিক্রম ও বাপ্পি লেডিস ক্লাবে উপস্থিত ছিল না। তারা গিয়েছিল কোন এক অতিথিকে ড্রপ করতে। আমাদের কাফেলা লেডিস কা্লব থেকে বেরিয়ে যাবার পর ওরা ফিরে এসে সমস্ত ঘটনা জানতে পারে লিটুর মুখে। সবকিছু জানার পরমুহুর্তেই ওরা যোগাযোগ করল রেসকোর্সে আর্মি কন্ট্রোল রুমে তারপর ক্যান্টনমেন্টের এমপি ইউনিটে। ঢাকা ব্রিগেড মেসেও খবরটা পৌঁছে দিল স্বপন। তারপর সে বেরিয়ে গেল ঢাকা শহরের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের খুঁজে বের করার জন্য। আবুল খায়ের লিটু আমার ছোট বোন মহুয়ার স্বামী এবং আমার বন্ধু। ও ছুটে গেল এসপি মাহবুবের বাসায় বেইলী রোডে। উদ্দেশ্য মাহবুবের সাহায্যে গাজীকে খুঁজে বের করা।

এদিকে আমাদের কাফেলা গিয়ে থামল রমনা থানায়। গাজী তার গাড়ি থেকে নেমে চলে গেল থানার ভিতরে। অল্প কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে নিজের গাড়িতে উঠে বসলেন গাজী। কাফেলা আবার চলতে শুরু করল। কাফেলা এবার চলছে সেকেন্ড ক্যাপিটালের দিকে। ইতিমধ্যে নিম্মী তার শাড়ী ছিড়ে চুল্লু ও আলমের রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য ব্যান্ডেজ বেধে দিয়েছে। সেকেন্ড ক্যাপিটালের দিকে আমাদের নিয়ে যাচ্ছে দেখে আমি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। গাজীর মনে কোন দুরভিসন্ধি নেইতো? রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে নাতো? ওর পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। কিছু একটা করা উচিত। হঠাৎ আমি বলে উঠলাম,
-গাড়ি থামাও!
আমার বলার ধরণে ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিল। আমাদের গাড়িটা থেমে পড়ায় সামনের গাজীর গাড়িটাও থেমে পড়ল। আমি তখন অস্ত্রধারী একজনকে লক্ষ্য করে বললাম গাজী সাহেবকে ডেকে আনতে। সে আমার কথার পর গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে গাজীকে গিয়ে কিছু বলল। দেখলাম গাজী নেমে আসছে। কাছে এলে আমি তাকে বললাম,
-গাজী সাহেব আপনি আমাদের নিয়ে যাই চিন্তা করে থাকেন না কেন; লেডিস ক্লাব থেকে আমাদের উঠিয়ে আনতে কিন্তু সবাই আপনাকে দেখেছে। তাই কোন কিছু করে সেটাকে বেমালুম হজম করে যাওয়া আপনার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হবে না।

আমার কথা শুনে কি যেন ভেবে নিয়ে তিনি আবার তার গাড়িতে গিয়ে উঠলেন। কাফেলা আবার চলা শুরু করল। তবে এবার রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পের দিকে নয়, গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি চললেন ৩২নং ধানমন্ডি প্রধানমন্ত্রীর বাসার দিকে। আমরা হাফ ছেড়ে বাচলাম। কলাবাগান দিয়ে ৩২নং রোডে ঢুকে আমাদের মাইক্রোবাসটা শেখ সাহেবের বাসার গেট থেকে একটু দূরে এলকটা গাছের ছায়ায় থামতে ইশারা করে জনাব গাজী তার গাড়ি নিয়ে সোজা গেট দিয়ে ঢুকে গেলেন ৩২নং এর ভিতরে। সেকেন্ড ফিল্ড রেজিমেন্ট তখন শেখ সাহেবের বাড়ি পাহারা দিচ্ছে। একবার ভাবলাম ওদের ডাকি, আবার ভাবলাম এর ফলে যদি গোলাগুলি শুরু হয়ে যায় তবে ক্রস-ফায়ারে বিপদের ঝুঁকি বেশি। এ সমস্তই চিন্তা করছিলাম হঠাৎ দেখি লিটুর ঢাকা ক-৩১৫ সাদা টয়োটা কারটা পাশ দিয়ে হুস্‌ করে এগিয়ে গিয়ে শেখ সাহেবের বাসার গেটে গিয়ে থামল। লিটুই চালাচ্ছিল গাড়ি। গাড়ি থেকে নামল এসপি মাহবুব। নেমেই প্রায় দৌড়ে ভিতরে চলে গেল সে। লিটু একটু এগিয়ে গিয়ে রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষায় রইলো সম্ভবত মাহ্বুবের ফিরে আসার প্রতীক্ষায়। লিটু এবং মাহ্বুবকে দেখে আমরা সবাই আস্বস্ত হলাম। র্নিঘাত বিপদের হাত থেকে পরম করুণাময় আল্লাহ্‌’তায়ালা আমাদের বাচিঁয়ে দিলেন।
লিটু যখন মাহ্‌বুবের বাসায় গিয়ে পৌঁছে মাহবুব তখন মানিকগঞ্জ থেকে সবেমাত্র ফিরে বিয়েতে আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। হঠাৎ লিটুকে হন্তদন্ত হয়ে উপরে আসতে দেখে তার দিকে চাইতেই লিটু বলে উঠল,
-মাহ্বুব ভাই সর্বনাশ হয়ে গেছে। বিয়ে বাড়ি থেকে গাজী বিনা কারণে ডালিম-নিম্মীকে জবরদস্তি গান পয়েন্টে উঠিয়ে নিয়ে গেছে।
একথা শুনে মাহবুব স্তম্ভিত হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীকেই খবরটা সবচেয়ে আগে দেওয়া দরকার কোন অঘটন ঘটে যাবার আগে। গাজীর কোন বিশ্বাস নাই; ওর দ্বারা সবকিছুই সম্ভব। মাহবুব টেলিফোনের দিকে এগিয়ে যায়। হঠাৎ টেলিফোনটাই বেজে উঠে। রেড টেলিফোন। মাহবুব ত্রস্তে উঠিয়ে নেয় রিসিভার। প্রধানমন্ত্রী অপর প্রান্তে,
-মাহবুব তুই জলদি চলে আয় আমার বাসায়। গাজী এক মেজর আর তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের ধইরা আনছে এক বিয়ার অনুষ্ঠান থ্যাইকা। ঐ মেজর গাজীর বউ-এর সাথে ইয়ার্কি মারার চেষ্টা করছিল। উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। বেশি বাড় বাড়ছে সেনাবাহিনীর অফিসারগুলির।
সব শুনে মাহবুব জানতে চাইলো,
-স্যার গাজী সাহেবকে জিজ্ঞেস করুন মেজর ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের কোথায় রেখেছেন তিনি?
-ওদের সাথে কইরা লইয়া আইছে গাজী। গেইটের বাইরেই গাড়িতে রাখা হইছে বদমাইশগুলারে। জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
-স্যার গাজী সাহেব ডালিম আর নিম্মীকেই তুলে এনেছে লেডিস ক্লাব থেকে। ওখানে ডালিমের খালাতো বোনের বিয়ে হচ্ছিল আজ। জানাল মাহবুব।
-কছ কি তুই! প্রধানমন্ত্রী অবাক হলেন।
-আমি সত্যিই বলছি স্যার। আপনি ওদের খবর নেন আমি এক্ষুণি আসছি।
এই কথোপকথনের পরই মাহবুব লিটুকে সঙ্গে করে চলে আসে ৩২নং ধানমন্ডিতে। মাহ্‌বুবের ভিতরে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই রেহানা, কামাল ছুটে বাইরে এসে আমাদের ভিতরে নিয়ে যায়। আলম ও চুল্লুর রক্তক্ষরণ দেখে শেখ সাহেব ও অন্যান্য সবাই শংকিত হয়ে উঠেন।
-হারামজাদা, এইডা কি করছস তুই?
গাজীকে উদ্দেশ্য করে গর্জে উঠলেন শেখ মুজিব। চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে নিম্মী এবং আমাকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। খালাম্মা ঠিকমত হাটতে পারছিলেন না। কামাল, রেহানা ওরা সবাই ধরাধরি করে ওদের উপরে নিয়ে গেল। শেখ সাহেবের কামরায় তখন আমি, নিম্মী আর গাজী ছাড়া অন্য কেউ ছিল না। নিম্মী দুঃখে-গ্ল্যানিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। শেখ সাহেব ওকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দিতে চেষ্টা করছিলেন। অদূরে গাজী ভেজা বেড়ালের মত কুকড়ে দাড়িয়ে কাঁপছিল। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। রেড ফোন। শেখ সাহেব নিজেই তুলে নিলেন রিসিভার। গাজীর বাসা থেকে ফোন এসেছে। বাসা থেকে খবর দিল আর্মি গাজীর বাসা রেইড করে সবাইকে ধরে নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয় সমস্ত শহরে আর্মি চেকপোষ্ট বসিয়ে প্রতিটি গাড়ি চেক করছে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে কিডন্যাপিং এর খবর পাওয়ার পরপরই ইয়ং-অফিসাররা যে যেখনেই ছিল সবাই বেরিয়ে পড়েছে এবং খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে মেজর ডালিম ও তার স্ত্রী নিম্মীকে। সমস্ত শহরে হৈচৈ পড়ে গেছে। গাজীরও কোন খবর নেই। গাজীকে এবং তার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদেরও খুঁজছে আর্মি তন্নতন্ন করে সম্ভাব্য সব জায়গায়। টেলিফোন পাওয়ার পর শেখ সাহেবের মুখটা কালো হয়ে গেল। ফোন পেয়েই তিনি আমাদের সামনেই আর্মি চীফ শফিউল্লাহকে হটলাইনে বললেন,
-ডালিম, নিম্মী, গাজী সবাই আমার এখানে আছে, তুমি জলদি চলে আসো আমার এখানে।
ফোন রেখে শেখ সাহেব গাজীকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
-মাফ চা নিম্মীর কাছে।
গাজী শেখ সাহেবের হুকুমে নিম্মীর দিকে এক পা এগুতেই সিংহীর মত গর্জে উঠল নিম্মী,
-খবরদার! তোর মত ইতর লোকের মাফ চাইবার কোন অধিকার নাই; বদমাইশ।
এরপর শেখ মুজিবের দিকে ফিরে বলল নিম্মী,
-কাদের রক্তের বদলে আজ আপনি প্রধানমন্ত্রী? আমি জানতে চাই। আপনি নিজেকে জাতির পিতা বলে দাবি করেন। আমি আজ আপনার কাছে বিচার চাই। আজ আমার জায়গায় শেখ হাসিনা কিংবা রেহানার যদি এমন অসম্মান হত তবে যে বিচার আপনি করতেন আমি ঠিক সেই বিচারই চাই। যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আপনারা জাতির কর্ণধার হয়ে ক্ষমতা ভোগ করছেন সেইসব মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ভুলুন্ঠিত করে তাদের গায়ে হাত দেয়ার মত সাহস কম্বলচোর গাজী পায় কি করে? এর উপযুক্ত জবাব আমি আজ চাই আপনার কাছ থেকে। আজ পর্যন্ত আপনি বলতে পারবেন না ব্যক্তিগতভাবে কোন কিছু চেয়েছি আপনার কাছে কিন্তু আজ দাবি করছি ন্যায্য বিচার। আপনি যদি এর বিচার না করেন তবে আমি আল্লাহ্‌র কাছে এই অন্যায়ের বিচার দিয়ে রাখলাম। তিনি নিশ্চয়ই এর বিচার করবেন।

আমি অনেক চেষ্টা করেও সেদিন নিম্মীকে শান্ত করতে পারিনি। ঠান্ডা মেজাজের কোমল প্রকৃতির নিম্মীর মধ্যেও যে এধরণের আগুন লুকিয়ে থাকতে পারে সেটা আমার কাছেও আশ্চর্য লেগেছিল সেদিন। শেখ সাহেব নিম্মীর কথা শুনে ওকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বলেছিলেন,
-মা তুই শান্ত ’হ। হাসিনা-রেহানার মত তুইও আমার মেয়েই। আমি নিশ্চয়ই এর উপযুক্ত বিচার করব। অন্যায়! ভীষণ অন্যায় করছে গাজী কিন্তু তুই মা শান্ত ’হ। বলেই রেহানাকে ডেকে তিনি নিম্মীকে উপরে নিয়ে যেতে বললেন।

রেহানা এসে নিম্মীকে উপরে নিয়ে গেল। ইতিমধ্যে জেনারেল শফিউল্লাহ এবং ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডার সাফায়াত জামিল এসে পৌঁছেছে। শেখ সাহেব তাদের সবকিছু খুলে বলে জেনারেল শফিউল্লাকে অনুরোধ করলেন গাজীর পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে দেবার বন্দোবস্ত করতে। জেনারেল শফিউল্লাহ রেসকোর্স কন্ট্রোল রুমে অপারেশন কমান্ডার মেজর মোমেনের সাথে কথা বলার জন্য টেলিফোন তুলে নিলেন,
-হ্যালো মোমেন, আমি শফিউল্লাহ বলছি প্রাইম মিনিষ্টারের বাসা থেকে। ডালিম, নিম্মী, গাজী ওরা সবাই এখানেই আছে। প্রাইম মিনিষ্টারও এখানেই উপস্থিত আছেন। Everything is going to be all right. Order your troops to stand down এবং গাজী সাহেবের পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে দাও। অপরপ্রান্ত থেকে মেজর মোমেন জেনারেল শফিউল্লাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিলেন কিডন্যাপ করে নিয়ে যাওয়া অফিসার এবং তার স্ত্রীকে না দেখা পর্যন্ত এবং গাজী ও তার ১৭জন অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তার হাতে সমর্পন না করা পর্যন্ত তার পক্ষে গাজীর পরিবারের কাউকেই ছাড়া সম্ভব নয়। শফিউল্লাহ তাকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করলেন কিন্তু মেজর মোমেন তার অবস্থানে অটল থাকলেন শফিউল্লাহর সব যুক্তিকে অসাড় প্রমাণিত করে। অবশেষে শফিউল্লাহ ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রধানমন্ত্রীকে অপারেশন কমান্ডার এর শর্তগুলো জানালেন। শেখ সাহেবের মুখ শুকিয়ে গেল। তিনি আমাকে অনুরোধ করলেন মেজর মোমেনের সাথে কথা বলতে। আমি অগত্যা টেলিফোন হাতে তুলে নিলাম,
-হ্যালো স্যার। মেজর ডালিম বলছি। Things are under control প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছেন তিনি ন্যায় বিচার করবেন।
- Well Dalim it’s nice to hear from you. But as the Operation Commander I must have my demands met. I got to be loyal to my duty as long as the army is deployed for anti-miscreant’s drive. The identified armed miscreants cannot be allowed to go escort free. As far as I am concerned the law is equal for everyone so there can’t be any exception. Chief has got to understand this.বললেন মেজর মোমেন।
- Please Sir, why don’t you comeover and judge the situation yourself. অনুরোধ জানিয়েছিলাম আমি।
- There is no need for me to come. However, I am sending Capt. Feroz. বলে ফোন ছেড়ে দিলেন মেজর মোমেন। অল্পক্ষণের মধ্যেই ক্যাপ্টেন ফিরোজ এসে পড়ল। ফিরোজ আমার বাল্যবন্ধু। এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরল।
-তুই গাজীরে মাফ কইরা দে। আর গাজী তুই নিজে খোদ উপস্থিত থাকবি কন্যা সম্প্রদানের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত। অনেকটা মোড়লী কায়দায় একটা আপোষরফা করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী।
-আমার বোনের সম্প্রদানের জন্য গাজীর বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবার কোন প্রয়োজন নেই। ওকে মাফ করাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সেটা হবে আমার জন্য নীতি বিরোধিতা। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি রক্তের বিনিময়ে। আমাদের গা থেকে রক্ত ঝরাটা কোন বড় ব্যাপার নয়। ইউনিফর্মের চাকুরি করি টাকা-পয়সার লোভেও নয়। একজন সৈনিক হিসাবে আমার আত্মমর্যাদা এবং গৌরবকে অপমান করেছেন গাজী নেহায়েত অন্যায়ভাবে। আপনিই আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। অবৈধ অস্ত্রধারীদের খুঁজে বের করে আইনানুযায়ী তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে। সেখানে আজ আমাদেরই ইজ্জত হারাতে হল অবৈধ অস্ত্রধারীদের হাতে! আপনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে কথা দিয়েছেন এর উচিত বিচার করবেন। আমরা আপনি কি বিচার করেন সেই অপেক্ষায় থাকব।

ক্যাপ্টেন ফিরোজকে উদ্দেশ্য করে সবার সামনেই বলেছিলাম, দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন বিচারের ওয়াদা করেছেন সেক্ষেত্রে গাজীর পরিবারের সদস্যদের আর আটকে রাখার প্রয়োজন কি? কর্নেল মোমেনকে বুঝিয়ে তাদের ছেড়ে দেবার বন্দোবস্ত করিস।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসছিলাম ঠিক সেই সময় শেখ সাহেব বললেন,
-আমার গাড়ি তোদের পৌঁছে দেবে।
-তার প্রয়োজন হবে না চাচা। বাইরে লিটু-স্বপনরা রয়েছে তাদের সাথেই চলে যেতে পারব।
বাইরে বেরিয়ে দেখি ৩২নং এর সামনের রাস্তায় গাড়ির ভীড়ে তিল ধারণের ঠাই নেই। পুলিশ অবস্থা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বন্ধু-বান্ধবরা যারাই জানতে পেরেছে আমাদের কিডন্যাপিং এর ব্যাপারটা; তাদের অনেকেই এসে জমা হয়েছে স্বতঃস্ফুর্তভাবে। আমাদের দেখে সবাই ঘিরে ধরল। সবাই জানতে চায় কি প্রতিকার করবেন প্রধানমন্ত্রী এই জঘণ্য অপরাধের। সংক্ষেপে যতটুকু বলার ততটুকু বলে ফিরে এলাম লেডিস ক্লাবে। মাহবুবও এল সাথে। মাহবুবের উছিলায় সেদিন রক্ষা পেয়েছিলাম চরম এক বিপদের হাত থেকে আল্লাহ্‌পাকের অসীম করুণায়। বিয়ের আসরে আমরা ফিরে আসায় পরিবেশ আবার আনন্দ-উচ্ছাসে ভরে উঠল। সবাই আবার হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে বিয়ের বাকি আনুষ্ঠিকতা সম্পন্ন করে কন্যা সম্প্রদান করা হল। তাহমিনার বিয়ের রাতটা আওয়ামী দুঃশাসনের একটা ঐতিহাসিক সাক্ষী হয়ে থাকলো। জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকলো আওয়ামী নেতাদের এবং তাদের ব্যক্তিগত বাহিনীর ন্যাক্কারজনক স্বেচ্ছাচার ও নিপীড়নের। কী করে এমন একটা জঘণ্য ঘটনার সাথে গাজী সরাসরি নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে পেরেছিল তার কোন যুক্তিই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনেক পরে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছিলাম আমাদের কুমিল্লা অপারেশনের পর পার্টির তরফ থেকে শেখ মুজিবের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল আমাদের বিশেষ করে আমার ঔদ্ধত্বের উপযুক্ত শিক্ষা দেবার জন্য। কিন্তু শেখ মুজিব ঐ চাপের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন, “আর্মি কোন কাঁচা কাজ করে নাই। তারা আইন অনুযায়ী সবকিছু করছে, প্রত্যেককে ধরেছে হাতেনাতে প্রমাণসহ সে ক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি?” তার ঐ কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ আওয়ামী নেতাদের একাংশ। আইনের মাধ্যমে যদি কোন কিছু করা না যায় তবে অন্য কোনভাবে হলেও শিক্ষা তাদের দিতেই হবে এবং সেই দায়িত্বটাই গ্রহণ করেছিলেন সেই সময়ের Top terror and most powerful leader বলে পরিচিত গাজী গোলাম মোস্তফা। তখন থেকেই নাকি সুযোগ খুঁজছিলেন তিনি জিঘাংসা মিটাতে। বিয়ে বাড়িতে বাপ্পি এবং তার ছেলেদের মাঝে যে সামান্য ঘটনা ঘটে সেটাকেই সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করে গাজী চেয়েছিল আমাকে উচিত শিক্ষা দিতে। এ বিষয়ে মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি তার বই ‘বাংলাদেশ! সামরিক শাসন এবং গণতন্ত্রের সংকট’ এ লিখেছেন, “গাজী সমর্থক লোকদের সম্ভবতঃ মেজর ডালিম ও তার স্ত্রীকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল।”

যে কথাটা প্রচারিত হয়েছে তার দুইটা পয়েন্ট হলো -

১) শেখ কামাল অপহরন করেছে।
২) ডালিমের বৌকে অপহরন করা হয়েছে।

এই দুইটাই তৈরী করা মিথ্যা। শেখ কামালৱের এখানে কোন ভুমিকা ছিলো না । আর ডালিমের বৌকে অপহরন করা হয়নি। তবে সত্যিটা হলো গাজী গোলাম মোস্তফার সাথে মেজর ডালিমের কিছু একটা গন্ডগোল ছিলো - যা শেখ মুজিব পর্যন্ত গড়িয়েছে।

মেজর ডালিমের সবগুলো লেখা/ওয়েবসাইট আতিপাতি করে খুজলেও কোথাও এর বিন্দুমাত্র সত্যতা মেলেনি। অথচ বছরের পর বছর এই মিথ্যাটা জাতির মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছ। ফলে আমার মত অনেকে যারা ভুল তথ্য জেনে মেজর ডালিমের মত কুখ্যাত খুনির প্রতি সহানুভূতি দেখায় !!!! X((X((X(

মূল পোষ্টে আরও অনেক অপপ্রচারের জবাব দেয়া আছে। মূল পোষ্টটি
এইখানে http://hrrh69.amarblog.com/posts/71771





সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১২
১৮৬টি মন্তব্য ১৩৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×