কয়েকদিন আগেই আটলান্টিস নিয়ে আমি অনেক প্যাচাল পেড়ে গিয়েছি। আবার প্যাচাল পারতে হাজির হলাম স্বর্ণ নগরী নিয়ে...... কি করব বলুন আমার ব্লগের নামটাই যে অর্থহীন প্যাচাল। বাদ দিন ও সব কথা মূল কথায় চলে আসি......
আটলান্টিসের মতই ইতিহাসের আরেক আলেয়া স্বর্ণ নগরীগুলো। কিন্তু আপনারা যারা প্রচন্ড বাস্তববাদী তারাও আটলান্টিসের মত এই নগরীর গল্পগুলোকে বোগাস বলে বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে পারবেন না। এখনো প্রচন্ড জোরের সাথেই এদের অস্তিত্বের কথা বলা হচ্ছে...... বলা হচ্ছে আফ্রিকা অথবা আমেরিকা মহাদেশের কোন অজানা জায়গায় আছে বিশাল সোনার মজুত। শত শত বছর ধরে বহু দুঃসাহসিক অভিযাত্রী বেরিয়ে পড়েছেন এল ডোরেডো, সিবোলা, কুইভিরা, অফির, পিরি, পুন্ট এবং আরো নাম না জানা স্বর্ণ নগরীর সন্ধানে। বেশীর ভাগই বরণ করেছেন ব্যর্থতার মালা। তবু থেমে থাকেনি অভিযান।
১ম বেলার গল্প
সময়টা ষোড়শ শতাব্দির প্রথম দিক...... চরম অর্থ কষ্টে পড়েছেন স্পেনের রাজাধিরাজ। রাজভান্ডার প্রায় শূন্যের কোঠায়। প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে ১৪৯২ সালে মরিস রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত গ্রানাডার বিলুপ্তি অথবা শত বছর ধরে যুদ্ধবাজ আরবদের দখলে থাকা ভূ খন্ড উদ্ধারে স্পেনের পরিচালিত যুদ্ধাভিজান। স্পেনরাজ দ্বিতীয় ফার্দিনান্দ অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য মনের সুখে বিতাড়িত করছেন সব নন-ক্যাথলিকদের। কিন্তু তাতে কি লাভ হবে আপনারাই বলুন...... ওদিকে যে পূর্ণোদ্যোমে চালু আছে যুদ্ধ যন্ত্র আর ইতিহাসখ্যাত স্পেনিশ আরমেডো (রণতরী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত)। এসবের পেছনে জলের মত বের হয়ে যাচ্ছে সব সম্পদ। স্বভাবতই সম্পদের নতুন উৎস খুঁজে বের করার ধুম পড়ে গেল। দুশ্চিন্তায় রাজ দম্পতির, ফার্দিনান্দ এবং রাণী ইসাবেলার রাতের ঘুম উধাও। ঠিক এমন সময়ই তাদের জীবনে আশার টিউব লাইট জ্বালিয়ে উপস্থিত হলেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১-১৫০৬) । সদ্য প্রথম সমুদ্রযাত্রা থেকে দেশে ফেরা কলম্বাস রাজদম্পতিকে দিলেন এক স্বর্ণভূমি খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস। তিনি তাঁর কথা কিঞ্চিৎ রাখতে পেরেছিলেন...... তাঁর পরবর্তি সমুদ্র যাত্রা থেকে তিনি সোনা নিয়েই দেশে ফেরত এসেছিলেন কিন্তু তা নৃপতির মনতুষ্টির জন্য যথেষ্ট ছিল না।
ফার্দিনান্দ ২য় এবং রাণী ইসাবেলার সামনে ক্রিস্টোফার কলম্বাস
স্পেনিশ অভিযাত্রী হার্নেন্দো কর্টেজ(১৪৮৫-১৫৪৭) মাত্র কয়েক শত সৈন্য নিয়ে অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই মেক্সিকো জয় করেছিলেন। তাঁর হাতেই পতন ঘটে এজটেক সাম্রাজ্যের।
কলম্বাসের চেয়ে বরঞ্চ আরেক স্পেনিশ অভিযাত্রী হার্নেন্দো কর্টেজ অনেকাংশে সফল ছিলেন। তিনি রাজার জন্য প্রচুর পরিমাণ ধন-সম্পদ পাঠিয়ে স্পেনের জনগণের কাছে কিংবদন্তির নায়ক হয়ে আছেন। তাঁকে ঘিরেই বাতাসে ছড়িয়েছিল সিবোলার সপ্ত স্বর্ণ নগরীর আলেয়ার রেণু। স্পেনের বন্দরে পৌঁছুতে থাকল অজস্র ধন-সম্পদ...শুধু কর্টেজের কাছ থেকেই নয় ফ্রান্সিসকো পিজারোর কাছ থেকেও...... যাঁর হাত ধরে দৃশ্যপটে উপস্থিত হল কুইভিরা।
ফ্রান্সিসকো পিজারো(১৪৭৫-১৫৪১) হার্নেন্দো কর্টেজের সমসাময়িক যার হাতে ধুলিসাৎ হয়েছিল ইনকা সভ্যতা
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৫০