অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি করবে না, কিন্তু কোনো একটা রিপোর্ট তৈরির সময় যেভাবে যেখান থেকে পারে, শর্টকার্টে করে দিবে। আমাদের ফ্রেশাররা যেরকমটা ভাবে, শ্মশ্রুমন্ডিত প্রফেসররাও তার বাইরে নয়।
এবার আপনাদের তেমন একজনের সাথেই পরিচিত করিয়ে দেব। নাম তার মাহফুজ পারভেজ। নামের সাথে একটা ডক্টরেট ডিগ্রিও আছে তার। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্সের শিক্ষক। বার্তা-২৪ নামের একটা নিউজ পোর্টালের সহকারী সম্পাদকের পদেও আছেন।
তিনি তার একটা সম্পাদকীয়তে সম্প্রতি হিমাংশু করের লেখা একটি বইয়ের রিভিউ থেকে হুবহু কিছু কয়েকটি প্যারা কপি-পেস্ট করেছেন। এতই লয়াল কপি-পেস্টার তিনি, যে বানান ভুলগুলিও অবিকৃত রেখে দিয়েছেন।
হিমাংশু করের লেখার লিংক- Click This Link
মাহফুজ পারভেজের লেখার লিংক- Click This Link
শুধু তাই না, মাহমুদুল হাসান মাসুম যখন তার এই চুরি নিয়ে পোস্ট দেয়, তখন সে দুঃখিত বা লজ্জিত হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো জঘন্য রকম সাম্প্রদায়িক গালাগালি করে পাল্টা পোস্ট দেন। মানে ভাবখানা এমন, “আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর,আমি চুরি করব না তো তুই করবি?”।
বাংলাদেশে এই ধরণের আচরণ খুবই স্বাভাবিক। এর আগে আমি একজনের মিথোলজি সংক্রান্ত বইয়ের এরকম কপি-পেস্ট ধরে পোস্ট দিয়েছিলাম, তিনি অবশ্য ভদ্রলোক, তিনি গালাগালি করেন নাই, আবার নিজের দোষ স্বীকারও করেন নাই। কয়েকদিন আগে একজন কবি আরেকজনের স্মৃতিকথা চুরি করে নিজেদের সাইটে ছাপিয়েছিলেন, তারও একই বক্তব্য।
শুধু তাই, তাদের আত্মবিশ্বাসে ভরা অনলাইন পদচারণা দেখলে আপনার মনে হবে যে তারাই ঠিক, অন্যরাই ভুল। সুতরাং, বাংলাদেশে সাফল্য পেতে হলে চুরি করুন এবং চুরি করার পর অপরাধবোধে না ভুগে পাল্টা গালাগালি করে আরো চুরি চালিয়ে যেতে থাকুন।
কেউ আপনাকে ঠেকাতে পারবে না!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩