somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রুয়েল এপ্রিল এবং স্বর্গের শিশুরা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সনির মন মেজাজ আজকে বেশ ভালো। মাসের শুরুতেই স্যালারি পেয়ে গেছে। সাধারণত দশ তারিখের আগে স্যালারি দেয়া হয় না। তাই যখন একাউন্টেন্ট দেলোয়ার সাহেব তার ডেস্কে এসে বললো "যাওয়ার সময় স্যালারিটা নিয়ে যায়েন" তখন সে খানিকটা বিস্মিতই হয়েছিলো। বিস্ময়ভাব কাটার পরে বেতন পকেটস্থ করে অফিস থেকে বের হয়ে সে তার ফুলে ওঠা মানিব্যাগটাকে আলতোভাবে আদর করতে লাগলো। সুন্দরী ন্যাকাবোকা মেয়েরা যেমন বিড়ালের সাথে আদিখ্যেতা করে, অনেকটা সেইরকম ব্যাপার। দিনটা আজকে চমৎকার তার জন্যে। বেতন তো পেলোই মাসের শুরুতে, তাও আবার বৃহস্পতিবারে। আগামী দুইদিন ছুটি। টাকা এবং সময়ের এমন মধুর অন্তরঙ্গতা বিরল। তবে টাকা পেলেই মৌজমাস্তি করে উড়িয়ে দেওয়ার মত ছেলে সে না। বড়জোর আজ সে অন্য দিনের মত কাওরানবাজারের সিগন্যাল থেকে বাসায় ফিরতে অধীর মানুষদের ভীড়ে মিশে গিয়ে, দৌড়ঝাঁপ এবং বল প্রয়োগ করে ভীড়ে টইটম্বুর বাসগুলোতে ওঠার সংগ্রামে না নেমে একটা ট্যাক্সি ক্যাব অথবা সিএনজিতে করে বাসায় ফিরবে। সান্ধ্যকালীন স্ন্যাকস খাবে ভালো কোন রেস্টুরেন্টে। এই তো! অপচয় করাটা তার একদম পছন্দ না, তবে সে কৃপণও না। ট্যাক্সিতে ওঠার পর সে সেপ্টেম্বর মাসের কর্মপন্থা ঠিক করে ফেলে। কিছু ধার দেনা আছে। ওসব মিটিয়ে ফেলতে হবে। তার ছোটবোনের জন্মদিন এই মাসে। কিছু একটা কিনে দিতে হবে তাকে। তারপর মোবাইল ফোন সারা, ল্যাপটপটা সার্ভিসিংয়ে নিয়ে যাওয়া। আর কী? কিছু বাদ পড়লো? ওহ, হ্যাঁ চুল কাটাতে হবে। সে সাধারণত পাড়ার সস্তা সেলুনেই চুল কাটায়। কিন্তু আজ যে তার শুভদিন! সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শেষ দিনে বেতন পাওয়ায় খানিকটা বিলাসিতা তো করাই যায়, না কি! তাই সে ঠিক করলো বড় রাস্তার মোড়ে যে সেলুনটা হয়েছে সেখান থেকেই চুল কাটাবে। সেলুনটা বাইরে থেকে দেখতে বেশ মনোহর। ভেতরে অবশ্য যাওয়া হয় নি তার। দেখে নেবে আজ। ওসব বড়লোকি সেলুনে নাকি চুল কাটা ছাড়াও মেহেদী লাগানো, ফেসওয়াশ আরো কী সব হাবিজাবি করে। আজ না হয় কিছুটা অভিজ্ঞতা নিয়েই নেবে সে।

সনির মনটা আজ বড় ভালো। সে তার মানিব্যাগটাকে ধনী কন্যাদের আদুরে বিড়ালের মত আদর করতে থাকে।

সেলুনটার নাম রেক্স। অবশ্য এটাকে সেলুন না বলে জেন্টস পার্লার বলাটাই প্রচলিত। সুসজ্জিত সেলুনটার ভেতরে ঢুকে সনি মুগ্ধ হয়ে গেলো। চমৎকার সাজিয়েছে। সুকেশী সেলিব্রেটিদের পোস্টার, দেয়ালের নীল রঙ, আর স্নিগ্ধ লাল আলোয় বেশ একটা অপরূপ পরিবেশ। আর তাদের সরঞ্জমাদীও দেখার মত। এর আগে সনি যেসব সেলুনে চুল কেটেছিলো সেখানে ক্ষুর আর কাঁচি ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। আর এখানে কত কিছু! সনির মুগ্ধতা বেড়েই চলে। ভাবনায় ছেদ পড়লো একজন কেশবিন্যাসীকারীর প্রশ্নে।
=বস কি চুল কাটবেন?
=হ্যাঁ।
=এখানে বসুন।
চেয়ারটা বেশ আরামদায়ক। সনি বেশ জাঁকিয়ে বসে সেখানে।
=চুল কি রাউন্ড, স্কয়ার, ক্রু কাট, রাহুল কাট...
চুলের এতশত কাটিংয়ের ব্যাপারে সনি অবগত ছিলো না। সেটা আবার এদের সামনে বলাটাও অস্বস্তিকর। তাকে নির্ঘাৎ একটা ক্ষ্যাত হিসেবে ঠাউরে নেবে সে। তাই সনি তার জ্ঞাতসার থেকে অনেক কষ্টে একটি নাম উল্লেখ করে।
=আর্মি কাট দেন।
=ঠিক আছে বস।
তার চুলে দক্ষ হাতে ট্রিমার চালায় নাপিত। অনেকদিন চুল কাটা হয় না সনির। প্রায় ছয় মাস তো হবেই! চুল কাটা শেষ হতে বেশ সময় লাগবে। এই ফাঁকে একটু ঘুমিয়ে নেয়া যায় কি? সকাল আটটায় বের হয়েছে সে, এখন বাজে সন্ধ্যে সাতটা। ক্লান্তি তো কিছুটা গ্রাস করবেই। তবে এই প্রয়াস অকালেই চলে গেলো সেলফোনের আওয়াজে।
=একটা কল ধরে নিই?
=ওকে বস।

মা ফোন করেছেন।
=কী রে সনি, কোথায় তুই? এত দেরি হচ্ছে কেনো?
=আমি চুল কাটাতে এসেছি মা। তাই দেরি হচ্ছে।
=আচ্ছা। বেশি দেরি করিস না আবার। তোর বাবা চিন্তা করবে। হাইপারটেনশনের রোগী তো...
=আমি দেরি করবো না মা। চুল কাটা শেষ হলেই ঘরে ফিরে যাবো।

কথা শেষ হবার পর যখন চুল কাটা পুনরারম্ভ করতে যাবে ঠিক সেই সময়ে কারেন্ট চলে গেলো। সনি ভেবেছিলো এত জমকালো সেলুন যখন তাদের নিশ্চয়ই ব্যাক আপ থাকবে। কিন্তু কই!
=আপনাদের এখানে কারেন্টের ব্যাক আপ নেই?
বিরক্তির স্বরে সুধালো সে।
=স্যরি বস। ছিলো, কিন্তু গত দুই দিন ধরে সমস্যা করছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে আশা করি।
=ধুর! কবে না কবে ঠিক করবেন আমি তার জন্যে বসে থাকবো না কি! চুলও তো অর্ধেক কেটে রেখেছেন। এই অবস্থায় বাইরে যাওয়াও তো সম্ভব না। কারেন্ট তো মনে হয় এক ঘন্টার আগে আসবে না। কী এক মুসিবৎ!
স্পষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ পায় সনির কণ্ঠে।
=স্যরি বস।

সনি কী করবে ভেবে না পেয়ে বিরক্তি আর একঘেয়েমি কাটাতে নরসুন্দরের সাথে সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেয়।
=নাম কী আপনার?
=আমাকে বলছেন বস? আমার নাম সনি।
বাহ! দারুণ মিল তো! মজা পায় সনি। তার বিরক্তির ভাব কেটে যায়। তার 'মিতা'র সাথে কথা বলতে উৎসুক হয়।
=দেশের বাড়ি কোথায়?
=পাবনা।
আরে! এরকম হতচ্ছাড়া কাকতালও হয় না কি! সনির দেশের বাড়িও পাবনা। একে তো দেশী ভাই, তার ওপর আবার নামের মিল। সনি আরো কিছু আলাপ করতে চাইছিলো, কিন্তু সেই সময়ে আবার ফোন বেজে উঠলো। মা।
=কী রে এত দেরি হচ্ছে কেন? তাড়াতাড়ি আয়!
=আর বলো না মা, লোডশেডিং চলছে। তাই চুল কাটা বন্ধ। এই অবস্থায় তো বের হওয়াও মুশকিল।
=তোর বাবার শরীরটা ভালো না। প্রেসার মেপে দেখেছি ১৩০/৯০।
=আরে এই বয়সে প্রেসার একটু বাড়তিই থাকে। এটা কোন ব্যাপার না। তুমি উতলা হয়ো না তো!

কথা বলা শেষ করে সনি আবার তার নাপিত মিতার সাথে কথা বলার প্রয়াস নেয়।
=তো, কী অবস্থা! এই ব্যবসা কতদিন ধরে চালাচ্ছেন?
সে কিছুটা অন্যমনষ্ক ছিলো। খেয়াল করে নি হয়তো কথাটা। তাই কোন প্রত্যুত্তর আসে না। সেলুনটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। মোমবাতির ক্ষীণ আলোয় কষ্টার্জিত দৃষ্টি প্রক্ষেপন করে সনি দেখে সেলুনে আর কোন খদ্দের নেই। তারা হয়তো চা সিগারেট পান করতে বাহিরে গেছে। সনির এসব নেশা নেই। তাই সে সেলুনের আরামদায়ক চেয়ারে বসে থাকাটাই সমীচীন মনে করে। চারজন নাপিত চার জায়গায় বসে আছে নিশ্চুপ। বড়ই বিরস এবং কাঠখোট্টা এখানকার নরসুন্দরেরা।

সনির মনে হয় এখানে আসার সিদ্ধান্তটাই ভুল হয়েছে।

কতক্ষণ হলো কারেন্ট গেছে? দশ পনেরো মিনিটের বেশি হবে না। কিন্তু মনে হচ্ছে যেন কয়েক ঘন্টা পার হয়ে গেছে। এভাবে আর কতক্ষণ বসে থাকা যায়! সনি উঠে দাঁড়ালো বাইরে যাবার জন্যে।
=বসুন স্যার, কোথায় যাচ্ছেন?
অনেকটা তেড়ে এসে চারজন নাপিত তাকে বসিয়ে দিলো চেয়ারে। তাদের এমন ভদ্রতাবৃত রুঢ় আচরণে অবাক হয়ে গেলো সনি। রেগে গেলো সে।
=গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? এসব কী ধরণের ব্যবহার!
=স্যরি স্যার। আমাদের কিছু করার নেই। নিয়ম মেনে চলতে হবে। নিয়মের বাইরে আপনাকে যেতে দেয়া হবে না।
=কিসের নিয়ম! এসব কী বলছেন আপনারা? আমি এখানে চুল কাটাতে এসেছি। আপনাদের এসব ফালতু নিয়ম পালন করতে আমি বাধ্য নই।
=আপনার ফোন বাজছে স্যার। কথা বলা শেষ করুন তারপর আপনাকে বুঝিয়ে বলবো আমাদের ব্যাপারগুলো।
=যত্তসব!
গজগজ করতে করতে ফোন ধরে সে।
=হ্যালো, মা। বলো।
=তোর বাবার শরীরটা খুব একটু ভালো যাচ্ছে না। প্রেসার বেড়ে এখন ১৪০/৯০। কী করবো বল?
=আরে ও কিছু না। একটু লেবুপানি খাওয়াও আর মাথায় পানি ঢালো, ঠিক হয়ে যাবে। আমার চুল কাটা শেষ হতে বেশি সময় লাগবে না।
ফোন রেখে গম্ভীরভাবে বসে থাকলো সে। কারেন্ট যে কখন আসবে! নাহ আর দেরি করা যাবে না। চলে যেতে উদ্যত হলে ওরা চারজন আবারো চেপে ধরে চেয়ারে বসিয়ে দেয় তাকে।
=এপ্রিল ইজ দ্যা ক্রুয়েলেস্ট মান্থ। এলিয়টের কবিতায় পড়েন নি? এই এপ্রিল মাসেই দেখবেন যতসব নৃশংস ব্যাপার ঘটে। আপনার ভাগ্যে কী যে আছে কে জানে!
সনি এবার এই প্রথমবারের মত কিছুটা ভীত এবং বিচলিত হলো। এরা কী চাইছে? এদের উদ্দেশ্যটা কী? সামান্য নাপতামি করে যারা জীবন চালায় তারা কেন এলিয়টের কবিতা থেকে কোট করবে? হচ্ছেটা কী এখানে!
=আমাকে প্লিজ ব্যাখ্যা করেন আপনাদের এমনতর আচরণের হেতু। আমি আর নিতে পারছি না এসব!
=ব্যাপার তেমন কিছুই না স্যার। নিষ্ঠুর এপ্রিল মাসে কত অঘটনই না ঘটতে পারে! আর গরমটাও পড়েছে সেইরকম। কার কখন বায়ু চড়ে যায়, কী না কী করে বসে ঠিক নেই কোনো। এই যেমন ধরেন আপনার বাবার প্রেসারটা বাড়ছে। বেড়েই চলেছে। আরো বাড়বে। সেটাও হয়তো বা এই নিষ্ঠুর দাহ্য উত্তপ্ত এপ্রিল মাসের কারণেই। অধৈর্য্য হবেন না, আপনার টেক কেয়ারের জন্যে আমরা তো আছিই।

ওদের এরকম রহস্যময়, ঘোলাটে কথাবার্তায় সনি বেশ ভড়কে যায়। এই বিদঘুটে কুটকুটে অন্ধকারে দিশা খুঁজে পায় না সে। ব্যাকুল হয়ে চারিপাশে তাকায় সাহায্যের প্রত্যাশায়। ঠিক তখনই কারেন্ট চলে আসে। সনি স্বস্তির শ্বাস ফেলে। যাক, ওরা যতই পাগলাটে আচরণ করে ভড়কে দিক না কেন, এখন আলো এসেছে অপার সহায় হয়ে। আর কোন ভয় নেই। চুল কাটা হবে, বিল দিয়ে চলে যাবে, ব্যাস! এক পয়সাও টিপস দেবে না বেয়াদবগুলোকে।

এবার চুল কাটতে আসে অন্য একজন। সে আগের জনের মতো অতটা গম্ভীর না। বেশ কথাবার্তা বলছে। নিজের নাম এবং স্থায়ী নিবাসও বলে দিলো।
=আমার নাম সনি, আমার দেশের বাড়ি পাবনা।
=আপনাদের সবার নামই কি সনি?
=হ্যাঁ অথবা না। পরিষ্কার করে বললে, আপাতত। আপাতত আমরা সবাই সনি। আপনিও সনি। আমরা আপনার চুল কাটবো, দাড়ি শেভ করে দেবো, তারপরেও কিছু বাকি থেকে যায় মনে হয়, তাই না? সময় হলেই বুঝতে পারবেন।
=আবার কী বাকি থাকবে? দেখেন, ঐসব ফেসিয়াল টেসিয়াল করে আমার কাছ থেকে টাকা খসানোর ফন্দি করে কোন লাভ নাই। ঠিকমত চুল কেটে দেন, আমি বাসায় চলে যাই, ব্যাস কেস ডিসমিশ!
=চুল কাটা শেষ স্যার। দেখুন তো কেমন লাগছে।
=হু, বেশ ভালোই হয়েছে। তো আপনাদের বিলটা...।
=বিল নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কী আছে স্যার! আপনার ফোন বাজছে।

=হ্যালো, মা।
=তোর বাবার প্রেসার বাড়ছেই তো বাড়ছেই! এখন ১৭০/১০০। এখনও কি তুই বলবি যে তেমন কিছু ঘটে নি? এখনও তুই তোর চুল কাটা নিয়ে ব্যস্ত থাকবি?
=আমি এক্ষুণি আসছি মা। চুল কাটা শেষ। রিকশায় করে আসবো, দশ মিনিট লাগবে।
সনি তড়িঘড়ি করে ওঠার চেষ্টা করে। কিন্তু আবারও বাধা! এইবারের বাধাটা আগেকার মত মোলায়েম নয়। বেশ জোরেই ধরেছে। ব্যথায় চিৎকার করে ওঠে সনি। আর তা দেখে চারজন 'সনি' আমোদ পেয়ে হেসে ওঠে।
=ডিয়ার স্যার, আপনাকে আমরা এখান থেকে কোথাও যেতে দিতে পারছি না। দুঃখিত। আসলে আমরা ঠিক প্রথাগত নাপিত নই। শুধুমাত্র চুল কেটে আপনার সৌন্দর্যবর্ধন করে আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করি না। উই উইল কাট ইউ টু গিভ ইউ আ গুড শেপ।
সনি এতক্ষণে বুঝে গেছে এদের হাত থেকে তার রেহাই নেই। কী বলবে ভেবে পায় না সে। অপেক্ষা করে থাকে পরবর্তী ক্রিয়াকলাপের জন্যে।

তার দেহ এবং পোষাক থেকে চুল ঝেড়ে মুছে চাদর দিয়ে আবৃত করে আবারও প্রস্তুতি নেয় নতুন কাটাকুটির। এবারে অন্য একজন আসে তার কাছে। তার হাতে একটা ক্ষুর। আর কিছু নেই। সে এসেই কোন ভনিতা না করে সনির ডান কান বরাবর একটা পোঁচ দিয়ে দেয়। কানটা ল্যাগব্যাগ করে ঝুলতে থাকে। ঝুলে থাকা অংশটি বিযুক্ত করতে সে আর অন্যকিছুর সাহায্য নেয় না। হ্যাঁচকা একটা টান দিয়ে ছিড়ে ফেলে। তখন আবার সনির ফোন বেজে ওঠে।
=সনি, আর কত দেরি করবি? তোর বাবার প্রেসার তো বেড়েই চলেছে। এখন দুইশ/একশ বিশ।
=মা, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে বাঁচাও মা! ওরা আমার কান কেটে নিয়েছে। আরো কত কী কাটবে কে জানে! ব্যথায় পাগল হয়ে যাবো মা! আমাকে রক্ষা কর!
=ওরা মানে কারা? কারা তোকে টর্চার করছে?
=সেলুনের লোকেরা। ওদের সবার নাম সনি, আর সবার নিবাস পাবনা। ওরা চারজন, ওদের সাথে আমি পেরে উঠবো না, আমাকে বাঁচাও মা, প্লিজ!
=চারজন? ঠিক ঠিক চারজন?
=হ্যাঁ, মা।
ওপাশ থেকে আর কোন কথা শোনা যায় না। মাকে কেমন যেন চিন্তিত মনে হলো। কিছু একটা ভাবছেন যেন। যেন কোনো একটা হিসেব মেলানোর চেষ্টা করছেন।
=সনি... তুই ওদেরকে নিয়ে আসতে পারবি বাসায়?
=ওদেরকে! বাসায়! তুমি কি পাগল হয়ে গেলে? কী সব যা তা বকছো?
=হ্যাঁ, আসলেই যা তা বলছি যার কোন মানে নেই। আসলে তোর বাবার চিন্তায় আমার মাথা আউলে গেছে। যা হোক, তুই চলে আয় তাড়াতাড়ি।
ফোন রাখার পর চতুর্থজন সনির কাছে এলো। বেশ হাসিখুশি মুখ।
=আপনার কাছে ব্যাপারগুলো খুব উদ্ভট লাগছে, তাই না? দাঁড়ান আপনাকে একটু হিন্টস দেই। আসলে আমাদের নাম সনি না হয়ে "হতে পারতো সনি" বললেই যুৎসই হবে। আর এখন থেকে আমরা আপনাকে স্যার, বস এসব না ডেকে ভাই বলে ডাকবো। কিছু বোঝা গেলো?
বলেই সনির উত্তরের অপেক্ষা না করে সে চাপাতির এক জোর কোপে সনির হাতের অর্ধেক বিচ্ছিন্ন করে ফেললো।
=দেখেছো ভাই, চুল কাটা ছাড়াও আমরা অন্যকিছু কাটাকুটি করতে কতটা পারঙ্গম? তুমি করে বললাম, কিছু মনে করো না যেনো আবার। ভাইয়ের টান বলে কথা!
সে পরবর্তী আঘাতে তার অন্য হাতের আঙ্গুলগুলো বিচ্ছিন্ন করে ফেললো। এভাবে পালাক্রমে চারজন এসে তার পায়ের আঙ্গুল কাটলো, নাক কাটলো, কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেললো, গোড়ালিতে আঘাত হানলো। এসবই তারা করছিলো অত্যন্ত আনন্দের সাথে, এবং বিনীত ও মোলায়েম কণ্ঠস্বরে ভাই সম্বোধন করে।

এর মাঝেই আবার ফোন এলো। মা।

=সনি, তোর বাবা মনে হয় আর বাঁচবে না। প্রেসার ২৪০/১৩০। তুই কখন আসবি?
সনি তখন নির্যাতনের শিকার হয়ে মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর তারস্বরে চিৎকার করছে। তাই ফোনে কথা বলার দায়িত্বটা অন্য একজন সনির ওপর ন্যস্ত হলো। এতক্ষণের পৈশাচিক আচরনে তারা বেশ আমোদে ছিলো। কিন্তু ফোনে কথা বলতে গিয়ে গলায় কী যেন দলা পাকিয়ে উঠতে থাকলো। অনেক সাহস আর শক্তি সঞ্চয় করে কোনমতে একজন "হতে পারতো সনি" কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে উচ্চারণ করে,
=মা!
=তোরা ওখানে কয়জন আছিস বাবা?
=চারজন। সেই চারজন, যাদেরকে তুমি ভ্রুণ অবস্থায় হত্যা করেছিলে।
=এ ছাড়া আর উপায় ছিলো না বাবা। আমাদের টানাটানির সংসার। কী ভীষণ দারিদ্র আর অভাবের মধ্যে দিয়ে পার করেছি দিনগুলি!
=মা, সত্যি করে বলো তো আমরা কার ঔরসজাত ছিলাম?
একটা দীর্ঘশ্বাস। খানিক বিরতি। তারপর যেন সমুদ্র মন্থনে ক্লান্ত একজন রমনী বিদ্ধস্ত কণ্ঠে বললেন সেই কথা, যা কোন সন্তান শুনতে চাইবে না।
=আমাকে পেটের তাগিদে রাস্তায় নামতে হয়েছিলো। আমি জানি না কে কার সন্তান। আর... উনি ছিলেন অক্ষম....
=আমরা স্বর্গের শিশুরা ওখানে বেশ ভালোই ছিলাম। কিন্তু স্বর্গের সেরা উপঢৌকন এবং যাবতীয় সুখের উপকরণও আমাদের সুখী করতে পারে নি। আমরা নিয়ম ভঙ্গ করে এখানে চলে এসেছি। এখানে এসে দেখলাম কত ঘৃণা, হিংসা, আর সহিংসতা লুকিয়ে ছিলো আমাদের মাঝে! আমরা ফিরে যাবো, তার আগে একবার তোমার সাথে কথা বলতে পেরেছি এই আনন্দটুকু আমাদের স্বর্গবাস আরো সাচ্ছ্যন্দময় করবে কি না জানি না। স্বর্গের চেয়েও সুন্দর কিছু, আরো নিভৃত, গোপন সুন্দর অবলোকন করে গেলাম। তুমি ভালো থেকো মা।
সনি অথবা "হতে পারতো সনি" রা ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে থাকে। আর ফোনের ওপাশ থেকে 'বাবা'র আর্তনাদ শোনা যায়। তার প্রেসার আরো বেড়ে গেছে। যেকোন মুহূর্তে স্ট্রোক করতে পারেন। আর এদিকে নির্যাতিত, বিদ্ধস্ত সনি চিৎকার করতে থাকে, "আমার বাবা মারা যাচ্ছে, আমাকে যেতে দাও তার কাছে। প্লিজ!"
তাকে এই অবস্থায় দেখে কান্না স্থগিত করে বৃত্তাবদ্ধ হয়ে তার চারিপাশে দাঁড়ায় "হতে পারতো সনি"রা। হিসহিসিয়ে বলে,

"তুই খুব ভাগ্যবান ভাইয়া! তোকে পৃথিবীতে আনার জন্যে কত সতর্কতা, কত অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, কত পরীক্ষা নিরীক্ষা, কত সাবধানতা! অথচ শুরুতে আমরা সবাই একইরকম ছিলাম। ছোট্ট একটা সরিষাবিন্দুর মত, চুপিচাপি শুয়ে ছিলাম মায়ের এমনিয়োটিক ঝুলির মধ্যে। তারপর... তুই বেঁচে থাকার জন্যে নির্বাচিত হলি, আর আমরা ভেসে গেলাম মায়ের গর্ভস্রাবের সাথে। এমন অনাচার কে সহ্য করতে পারে বল! আবার তোর ফোন আসছে। দেখ আমাদের "বাবা" বুঝি এবার টেঁসেই গেলো! হাহাহা! যা তুই। যদিও তোর হাত নেই, পা নেই, শরীরে অজস্র জখম তারপরেও প্রবল ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে যা না! দাঁড়া দাঁড়া! তোর চুলটা ঠিকমত কাটা হয় নি। মৃত্যুপথযাত্রী বাবার কাছে প্রাক্তন রুপোজীবিনি মায়ের কাছে যেতে হলে একটু স্মার্ট হয়ে যাওয়াটাই ভালো না? এর চেয়ে এক কাজ করি বরং, তোর মাথাটাই কেটে দি। না, না তেমন কষ্ট হবে না তোর, ইতিমধ্যে তো জেনেই গেছিস আমাদের কর্তনশিল্প কতটা নিখুঁত! ব্যাপারটা হচ্ছে সামঞ্জস্যতা। তোর হাত পা কাটা হয়েছে এক নির্ভুল গাণিতিক সমীকরণে। এখন এই বেঢপ মাথাটায় একটু ক্ষুর না চালালে ব্যাপারটা কেমন অপ্রতিসম হয়ে যাবে না! "
ওরা প্রবল বল প্রয়োগ করে সনিকে মাটিতে শুইয়ে ফেলে। তারপর ধারালো ক্ষুর দিয়ে তার গলা কাটতে থাকে। মাথাটা আলাদা হয়ে যাবার পরে ওটার এলোমেলো চুলগুলো সুন্দরভাবে আঁচড়ে দেয়।

"এই নে, ভাইয়া। তোর কাটামুণ্ডুটা তোকেই উপহার দিলাম। পার্সেল করে দেবো? লাগবে না? ঠিক আছে। এমনিই যা। এই দেখ আবার ফোন বাজছে। তাড়াতাড়ি যা। তুই ওদের একমাত্র সন্তান, কত দায়িত্ব তোর ওপর! যা ভাইয়া। টাটা!"

সনি তার কাটা মাথাটা হাতে নিয়ে এগুতে থাকে। ফোনটা তার কানের কাছে ধরে। ওপাশ থেকে মা কথা বলছেন,

"সনি, তোর বাবার স্ট্রোক হয়েছে। খুব ভয়ঙ্কর পর্যায়ের। যেকোন সময় মারা যেতে পারেন। হয়তো বা সে তোর আসল বাবা না, কিন্তু তোর প্রতি তার ছিলো অপরিসীম স্নেহ। তোকে নিয়ে চিন্তা করতে করতেই তো তার হাইপারটেনশন রোগ হলো। তুই কেন আসতে পারলি না আগে আগে। কেন সেই সেলুনটাতে গেলি? অবশ্য ওরা কোথায় থাকে, কোথায় আছে ঘাপটি মেরে সেসব কিছুই আমি জানতাম না। তারপরেও তোর এই দুরবস্থার জন্যে আমি নিজেকেই দোষী ভাবছি। এটা হলো আমার মনের এক অদ্ভুত খেয়াল। সেই ভয়াবহ সময়টাতে আমার পেটে চারটি বাচ্চা এসেছিলো। সেটা ছিলো এপ্রিল মাস। নিষ্ঠুর এপ্রিল। গর্ভপাত করা ছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলো না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করতাম তারা পুরোপুরি হারিয়ে যাবে না কখনও। এই মহাবিশ্বের আনাচে কানাচে, কোন গ্রহ নক্ষত্রের অলিতে গলিতে অথবা আমাদের এই পৃথিবীতেই কোন সাগরতীরে অথবা দুর্গম পাহাড়ে কিংবা দুর্ভেদ্য কোন গুহায় তারা আসবে, একবারের জন্যে হলেও। আমি বিশ্বাস করতাম প্রাণের বিনাশ নেই। ব্যাপারটা যে খুব অযৌক্তিক তা আমি ঠিকই জানতাম। কিন্তু আমি কখনও ভুলতে পারি নি তাদের কথা। আজ ওরা এসেছিলো। এসেছিলো এমন এক জায়গায় যেটা আমি কখনও কল্পনাও করি নি। আমি বিশ্বাস করি আমার ডাকেই তারা এসেছিলো। কিন্তু ভাবি নি ওরা তোর এত অনিষ্ট করবে। ওদের ওপর রাগ রাখিস না। ওরা তো আদতে একটা সরলকোষী ভ্রুণ ছাড়া আর কিছু নয়। ওরা হারিয়ে যাবে, মিলিয়ে যাবে নীল নীলান্তে। হয়তো বা ঈশ্বর তাদের জন্যে আলাদা কোন জায়গা বরাদ্দ রেখেছিলেন। হয়তো বা ঈশ্বরের তৈরি দেবশিশুদের বাগিচায় তারা হেসে খেলে বেড়াতো। কিন্তু স্বর্গের মোহ পরাজিত হয়েছিলো পৃথিবীর ঈশ্বর 'মা'য়ের কাছে আসার, একটু কথা বলার দুর্নিবার আকাঙ্খায়। রাখছি এখন। তোর বাবাকে দেখতে চাইলে হার্ট ফাউন্ডেশনে চলে আসিস যত দ্রুত সম্ভব।"

সনি তার কাটামুণ্ডুটা হাতে নিয়ে হাঁটতে থাকে। হার্ট ফাউন্ডেশন খুব বেশি দূরে নয়। কিন্তু সে কার কাছে যাবে এই বিভৎস রূপ নিয়ে? রক্তের সম্পর্ক বিচ্ছেদকারী জাতিস্মর ভাইয়েরা আজ তাকে শিখিয়েছে মহাপ্রাণেরাই কেবল মহাবিশ্বের অপূর্ব নক্ষত্ররাজির ভেতরে বিচরণ করতে পারে। শিশুদের চেয়ে, বিশেষভাবে বলতে গেলে একটি অপ্রস্ফুটিত ভ্রুণের চেয়ে মহৎপ্রাণ আর কে আছে? দিনে দিনে জমেছে অনেক পাপ, হে ঈশ্বর, তুমি কেন আমাকে মায়ের গর্ভস্রোতের মাধ্যমে ভেসে যেতে দিলে না? বাবা, তুমি কেন এত তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছো? মা, কেন তোমার অতীত অন্ধকার আমাকে জানতে হলো এভাবে? এসব ভাবতে ভাবতে সে রেললাইন ধরে এগুতে থাকে। কাটা মাথাটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে শুয়ে পড়ে ওখানে। দূর থেকে শব্দ শোনা যাচ্ছে একটি ট্রেনের। এই ট্রেনটা কি তাকে নিয়ে যেতে পারবে স্বর্গের শিশুদের কাছে? স্বর্গের শিশুরা কেন মর্ত্যে এলে তেমনতর পাষাণ হয়ে যায়? যদি তাই হয়, তাহলে আর কোন গন্তব্যের কথা তার মাথায় আসে না।

নিরাশ্রয়, নিপীড়িত যুবক সাগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে স্বর্গসুরভিত শিশুদের সাথে গোলাপবাগানে খেলা করার জন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৯
৫৮টি মন্তব্য ৬০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×