somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মডারেটরগণ

০১ লা মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(১)
বৃহস্পতিবার রাতটা রক্সির জন্যে অনেক আকাঙ্খিত, এবং পয়া। সপ্তাহে একদিন ছুটির চাকুরিতে অফিসের এত্ত এত্ত কাজ করে একমাত্র বৃহস্পতিবার রাতটাতেই সে লেখালেখি করার জন্যে কিছু সময় পায়। অন্যান্যদিন সে ১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লেও এদিন সে রাত জাগে আর দুপুরবেলায় ঘুম থেকে ওঠে। রাতভর লিখে এক ধরণের প্রশান্তি নিয়ে সে ঘুমিয়ে যায় আর নানারকম লোভনীয় স্বপ্ন দেখে। যেমন, তার নতুন লেখা উপন্যাসটা বিনা খরচে প্রকাশ করার দায়িত্ব নিয়েছে কোন একটা প্রকাশনা সংস্থা, এবং বইমেলায় সেটার দুই-তিনটি সংস্করণ বের হয়ে গেছে। ললনাকুল আকূল হয়ে তার কাছে অটোগ্রাফের জন্যে আসছে। সেও গম্ভীর মুখে, কখনও বা মৃদুহাস্যে তাদের আবদার মেটাচ্ছে। স্বপ্ন নামক জিনিসটার আসলে কোনো মাথামুন্ডু নেই। এ পর্যন্ত তার বই বের করার আগ্রহ কোন প্রকাশনী দেখায় নি। আর টাকা দিয়ে বই প্রকাশ করাটাও তার সামর্থ্যের বাইরে। তাই বিমর্ষ পান্ডুলিপিগুলা একটা প্রাচীন রঙ ক্ষয়ে যাওয়া ব্যাগের ভেতর হাঁসফাঁস করতে থাকে। অধিকাংশ ব্যর্থ লেখকের মতো তার স্ত্রীই তার বইয়ের মূল সমঝদার, শুভাকাঙ্খী এবং সমালোচকও বটে। কী লিখলে আরো ভালো হতো, অথবা কি না লেখার ফলে লেখায় তাড়াহুড়োর ভাব চলে এসেছে, এসব সে বেশ নিখুঁত ভাবে দেখিয়ে দেয়। রক্সির স্ত্রী জেনিও একসময় ডাকসাইটে লেখিকা ছিলো। বিয়ের পর সব বাদ দিয়েছে। রক্সি জানে মেধা, মনন, এবং সৃজনশীলতায় জেনি তার চেয়ে অনেক এগিয়ে। লেখালেখি চালিয়ে গেলে সে এতদিনে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে পারতো সাহিত্যের মহাসড়কে। তাই জেনির কাছ থেকে পরামর্শ নিতে তার মাঝমধ্যে বেশ কুণ্ঠাই লাগে। ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্সে ভোগে সে। জেনির অবশ্য এদিক দিয়ে কোন সমস্যা নেই। সে নিজেকে রক্সির চেয়ে ভালো লেখক, সমালোচক ভাবলেও কিচেনে তরিতরকারি আর আর মাছ মাংস কেটে ভালো ভালো খাবার বানিয়ে রক্সিকে আপ্যায়িত করতেই সে বেশি ভালোবাসে। পুরোনো দিনগুলি তাকে নস্টালজিক করে তুললেও সে আর লেখার কথা ভাবে না, বা ভাবতে চায় না। এই যে তেল-নুনে আঁটকে পড়া সংসার, এসব নিয়ে তারা বেশ আছে বলেই তার অনুধাবন।

যেমন আজকে বৃহস্পতিবার, রক্সি নতুন একটা গল্পের থিম পেয়ে গেছে নাকি। এখন সারারাত ধরে লিখবে। রাত জাগার সুবিধার্থে তার জন্যে কড়া এক্সপ্রেসো কফি বানিয়ে দিয়ে সে শুয়ে শুয়ে এরিখ মারিয়া রেমার্ক পড়ছে। লেখা শুরু করার আগে রক্সি বেশ উত্তেজিত থাকে। বারবার থিমটা বলে জেনিকে। থিমের মধ্যে কোন খামতি আছে কী না, তার আগের লেখাগুলোর সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে কী না এসব বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করে তবেই রক্সি লেখাতে হাত দেয়। এ কথা বলা বাহুল্য যে জেনির মাথার ধূসর পদার্থের পরিমাণ রক্সির চেয়ে বেশিই। তার মগজের গলি ঘুঁপচিতে জড়িয়ে আছে ইতিহাস, বিজ্ঞান , সাহিত্য খেলাধুলা ইত্যাদি নানারকমের ব্যাপার। রক্সি অত কিছু জানে না। তাই কোন বিষয় নিয়ে তর্ক করতে থাকলে অল্পতেই কিছু গঁৎবাধা বুলি আউড়ে সে পরাজয় শিকার করে নেয়। রক্সি তার বর্তমান গল্পের থিম সম্পর্কে এখনও জেনিকে জানায় নি। ব্রেইনি জেনি! কত খুঁত যে সে বের করে ফেলবে! তবে এটাও ঠিক, যে রক্সির লেখালেখির জন্যে সে সবসময়ই অনেক উৎসাহ দিয়ে এসেছে। রক্সি কখনও তার গল্পে, সে ব্লগে বা খবরের কাগজ যেখানেই হোক না কেন জেনির অবদান সযতনে এড়িয়ে গেছে। জেনির অবশ্য সে নিয়ে কোন ক্ষোভ নেই। অন্যান্য বাঙালি মেয়ের মতো সেও রসুঁইঘরে বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে নিজের পূর্বজনমের কথা নিশ্চিত ভুলে গেছে। এখন জেনি উদীয়মান লেখক হিসেবে শিল্পকলা বা বাংলা একাডেমির শর্টলিস্টে নেই। এখন তার কাজ, তার মোটামুটি মেধার, তবে লেখার ব্যাপারে প্যাশিওনেট স্বামী রক্সির দেখভাল করা। রক্সি তাকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করে "তুমি এখন আর লেখো না কেন? আগে ব্লগে তোমার লেখায় ১০০ কমেন্ট থাকতো। যে দুটি বই বের করেছো সেগুলোরও সেকেন্ড সংস্করণ বেড়িয়ে গেছে। তুমি তো ঐসব মেয়েদের মধ্যে ছিলে না, যারা বিয়ের পর সকলরকম এক্সট্রা কারিকুলাম ওয়ার্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে?" জেনি কোন উত্তর দেয় না, অথবা মিষ্টি হাসি দিয়ে ব্যাপারটা লঘু করার চেষ্টা করে। রক্সি হাল ছেঁড়ে দেয়, এমন মেয়ের কাছ থেকে কোন কথা বের করাই কঠিন, অসম্ভবও বলা চলে।

(২)
আজ বৃহস্পতিবার রাত। রক্সি তার গল্প লেখার থিম জেনিকে বোঝাতে শুরু করলো, "বুঝলে, গল্পটা অনেকটা আমাদের মতই, চরিত্র দুটি, ধরে নাও আমি আর তুমি, স্বামী হলেন লেখক, তিনি তার স্ত্রীকে গল্পের থিম শোনাচ্ছেন; একজন লেখক, রাতের বেলায় লিখতে বসবেন, কিন্তু কোনরকম থিম আসছে না তার মাথায়। তখন তার একটা মজার কথা মনে হলো। সে তার স্ত্রীকে বললো, "ধরো আমি আজকে রাতে একটি গল্প লিখবো, থিমটা বলবোনা তোমায়। আমি সারারাত জেগে লিখবো আর সকালে ঘুম থেকে উঠে তুমি সম্পূর্ণ নতুন একটা গল্প পাবে। এর আগে সব গল্পের থিম তোমাকে বলে দিয়েছিলাম। এবার আর বলবো না। তুমি সম্পূর্ণ নতুন একটা গল্প পাবে।"
-কিরকম গল্প হবে এটা? মানে Genre কী?
-এই ধরে নাও রোমান্টিক কমেডি টাইপ।
-ভালো। তুমি অনেকদিন রোমান্টিক কমেডি লেখো না। লিখে ফেলো। আমি শুতে গেলাম। তোমার চা-কফি কিছু লাগবে? রাত জাগবে কী না তাই জিজ্ঞেস করছিলাম।
-একটা বড় মগে কফি দাও।
-আচ্ছা।

কফি পান করার পর বেশ চনমনে অনুভব করলো রক্সি। এবার গল্পটাতে হাত দেয়া যায়।
-তুমি তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ো। আমি তোমার জন্যে একটা সারপ্রাইজিং গল্প লিখবো। আশা করি এতে তোমার আর সম্পাদনার ছুরি-চাকু ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে না।
-তোমার সেল্ফ কনফিডেন্সটা ভালো লাগছে। চালিয়ে যাও। গুডনাইট।


(৩) গল্পের ভেতরের গল্প
"গল্পটা মূলত আমার স্ত্রীকে নিয়েই। আমি গল্প লেখি, আর সে এগুলোর সম্পাদনা করে। তার কাছ থেকে আমি নানাভাবে ঋণী। গল্প লেখার ব্যাপারে তার উৎসাহ এবং বিশ্লেষণ সবসময়ই আমাকে সামনে এগিয়ে যাবার প্রেরণা দিয়েছে। এই যে গল্পটা লিখছি, তার আগে তার সাথে এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। অল্পবিস্তর আলোচনা থেকেও মহান সব লেখা তৈরি হয়েছে এই শতাব্দীতে। আমি তাকে বলেছিলাম একটা রোমান্টিক কমেডি গল্প হবে এটা। সে রোমান্টিক কমেডির বেশ মনোযোগী পাঠক। আমাকে লেখার ব্যাপারে সবসময় সহযোগিতা করে এসেছে। সে আমার থেকে সব দিক দিয়েই চৌকস। কোনো ইংরেজি থ্রিলার সিনেমা দেখার পর অনেকসময় দেখা যায় যে আমি অনেককিছুর মানে বুঝিনি। কিন্তু জেনি ঠিকই সব বোঝে, আমাকে বোঝায়। আমিও বুঝে আপ্লুত হই। আমার বই প্রকাশিত হবার ব্যাপারে কোন প্রকাশক কেন এখনও তাগাদা দিচ্ছে না তা নিয়ে আমি খুব বিমর্ষ। জেনি আমাকে বলে সারা শহর ঘুরে প্রকাশনীগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে। কিন্তু আমি বড্ড অলস আর ঘরকুনো। জেনির ঠিক বিপরীত। মাঝেমাঝে একটু শঙ্কাও জাগে, জেনি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো? সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সে উচ্চ বুদ্ধিমত্তার অফুরান প্রানশক্তির একজন নারী। আমার সাথে এভাবে ঘর-রান্না-ঘুম এসব নিয়ে আর কতো?"

-লেখা এগুচ্ছে কেমন?
জেনি তন্দ্রালু চোখে জিজ্ঞেস করে।
-ভালোই এগুচ্ছে জেনি। তুমি ঘুমাও।


"জেনিকে যেদিন প্রথম দেখি, সেদিন ওকে বড্ড অনাকর্ষনীয় লাগছিলো। শুকনো খটখটে শরীর। চোয়াল ভাঙা। কিন্তু গলার জোর অনেক। ছাত্র ইউনিয়ন বা এরকম কোনো সংস্থার আহুত এক মিছিলে তাকে শ্লোগান দিতে দেখেই আমি তার প্রেমে পড়ে গেলাম। এত পলকা একটা মেয়ে, অথচ কী ভীষণ শক্তি তার ভেতরে! যেচে পড়ে তার সাথে কথা বললাম। সে গল্প লেখে জেনে আরো উৎসাহিত হলাম। এরপর টিএসসিতে আড্ডা চললো দিনকতক। তারপর সেই গতানুগতিক কাহিনী। প্রেম, বিয়ে, সংসার। নতুন সংসারে আসার কিছুদিনের ভেতর তার স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটলো। আর সেই সাথে আমিও ধীরে ধীরে জেনির অন্য একটা রূপ আবিষ্কার করলাম। জেনির অনেক ছেলেবন্ধু। এবং সে বিভিন্ন সময়ে তাদের সাথে দেখা করে। এটুকু পড়ে আবার আমাকে মৌলবাদী বা হেফাজতি ভেবে বসবেন না। আমি একজন মডারেট মুসলিম ।সমস্যাটা হলো, তার বন্ধু বান্ধবের সংখ্যা অনেক বেশি। এবং বিয়ের পরেও সে বন্ধুদের সাথে সমানতালে চলতে চায়। এ নিয়ে আমাদের পরিবার থেকে বেশ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়েছিলো। কিন্তু জেনি বলে কথা! তার অসাধ্য কিছু নেই। ছবির হাটে গিয়ে সিগারেট টানতে টানতে বন্ধুদের সাথে আড্ডায়ও যেমন স্বতুস্ফর্ত, বাসায় এসে নানাপদের রান্না করে সে ওখানেও একটা প্রিয়মুখ হিসেবে গণ্য হলো।

জেনিকে প্রমিজ করেছি সকালে ঘুম থেকে উঠলেই সে একটা তরতাজা নতুন গল্প পাবে। সে ভাবনা নিশ্চয়ই তাকে বেশ আপ্লুত করেছিলো। খুব আরাম করে ঘুমুচ্ছে সে। কিন্তু আমি ঠিক যেন স্বস্তি পাচ্ছি না। জেনির সম্পর্কে বলতে গেলে শুধু ভালোবাসার কথাই বলা যায়। মুঠো মুঠো ভালোবাসা উড়িয়ে দেই আমরা হাওয়াই মিঠাই এর মত করে। তারপর আর কিছু বলার থাকে না। আমি বরঙ আমার গল্প করি। আমার সবসময়ই মনে হয়েছে জেনি আমার চেয়ে অনেক ধারালো আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধির অধিকারী। এরকম একটা মেয়ে কেন যে আমার সাথে জুটে গেলো এ এক অপার রহস্যময় ব্যাপার আমার কাছে।"
-কতদূর লিখলে?
ঘুমজড়িত কণ্ঠে জেনির জিজ্ঞাসা।
-লেখা কেবল শুরুর দিকে। আজ মনে হয় সারারাতই জাগতে হবে। তুমি ঘুমাও জেনি।

"কিছুক্ষণ আগে জেনি আমাকে আমার লেখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো। ওর ঘুম খুব ঘন। তবুও বারবার জেগে উঠছে আর আমার গল্পের খোঁজ নিচ্ছে , কী কেয়ারিং একটা মেয়ে! জেনিকে ভালো না বেসে পারা যায় না।

গল্পটা মোটেও এগুচ্ছে না ঠিকভাবে। আমি জেনিকে কথা দিয়েছিলাম একটি রোমান্টিক কমেডি লিখবো, তা আর হচ্ছে কোথায়!"

(রোমান্টিক)
"নিস্তব্ধ রাতে তারাদের আলোকশয্যা থেকে কিছু আলো এনে তোমায় সাজিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। তুমি পরবে জোনাকির ঝিকমিকে দুল, পায়ে পড়বে শুকনো পাতার নুপুর। তোমার হাসিতে উদ্ভাসিত হবে গোলাপের সুঘ্রাণ। আর পেলব হাতের বন্ধনীতে আমাকে নিয়ে তুমি চলে যাবে দিকশূন্যপুর, যেখানে ইউটোপিয়ান ঈশ্বর তার বান্দাদের জন্যে তৈরি করে রেখেছেন সবুজ মখমল বিছানো জৌলুসপূর্ণ কারুকাজের পাটি। সেখানে আমরা দুজনে একত্রিত হবো। স্বর্গের সুধারস পান করে, ফেরেশতাদের আপ্যায়নে তুষ্ট হয়ে আমরা মিলিত হব অনন্তমৈথুনে।"
(৪) গল্প নয়
এখানে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেনি স্বর্গ-নরক-স্রষ্টা, এসব বিশ্বাস করে না। মোদ্দাকথায় সে একজন নাস্তিক। আমি বিশ্বাসী মানুষ। নাস্তিকরা আমার শত্রু। নসিম হিজাজীর লেখা মুসলমানদের গৌরবমণ্ডিত লেখাগুলো পড়ে আমি রীতিমত চনমনে অনুভাব করতাম। জিহাদী জোশ চলে আসতো। ইচ্ছে হতো ইসলামবিদ্বেষীদের ধরে ধরে জবাই করতে। জেনি অবশ্য ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক নয়। সে হলো মডারেট নাস্তিক। বিয়ের আগে এসব ব্যাপার আমি কিছুই জানি নি। এখন, এই মাঝরাতে ঘুটঘুটে অমাবস্যায় আঁধারে অবগাহন করতে করতে আমার ভেতরের "ঈমানদার" অংশটা জেগে উঠছে। নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে থাকা জেনিকে দেখে আমার রীতিমত ইচ্ছে করছে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার সমস্ত কাপড়-চোপড় খুলে ফেলে ধর্ষণ করি, আর গলা টিপে ওকে মেরে ফেলি। আমার ভেতরের ক্রোধ পুঞ্জীভুত হয়ে উদগীরণের ব্যবস্থা প্রায় করে ফেলেছে, ঠিক তখনই আমার মানসপটে ভেসে উঠলো জেনির সাথে আনন্দের দিনগুলো। একসাথে রিকশায় করে সারা ঢাকা শহরে ঘোরা, পুরান ঢাকায় গিয়ে নানারকম ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ নেয়া , বসন্ত এবং বৈশাখের প্রারম্ভে চারুকলায় গিয়ে পুতুল নাচ দেখা, চড়কিতে উঠে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করা- এতসব স্মৃতি কি ভোলা যায়? নাহ, আমার দ্বারা ওকে খুন করা সম্ভব না। আমি একজন মডারেট মুসলমান। যারা খোদাকে বিশ্বাস করে না তাদেরকে যদি কেউ কুপিয়ে মেরে ফেলে, আমি মোটেও দুঃখিত হবো না। নাস্তিক নিধনে আমি খুশি হই। তবে অনেকসময় সেটা চেপে ধরে আহা উহু করি মাঝে মাঝে বটে, করবো না কেন? আমি মডারেট মুসলিম। জেনির শরীরটার দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাই। ওকে খুন করলে আল্লাহ কি আমাকে অনেক সোয়াব দেবেন? দেবেন তো বটেই, দেখা যাবে এই একটা সুকর্মের খাতিরেই আমি তরতরিয়ে পুলসিরাত পার হয়ে বেহেশতে চলে যাবো। এত প্রলোভন, তবুও জেনিকে হত্যা করতে আমার হাত উঠছে না। পাপের ব্যাপার হচ্ছে আমি তার প্রতি এখনও ভালোবাসা অনুভব করছি। মাঝরাত বড়ই বিভ্রান্তিকর একটা সময়। এসময় অনুভূতিগুলো প্রচণ্ড ফ্ল্যাকচুয়েট করতে শুরু করে। এই মনে হয় ভালোবেসে সব ছাড়খাড় করে দিই তো পরের মুহূর্তেই জন্ম নেয় ঘৃণা।

কোথা থেকে কোথায় চলে এলাম! লিখছিলাম জেনির জন্যে একটা ভালোবাসার গল্প, সেখান থেকে একটা শব্দের দৌরাত্মেই বেশামাল হয়ে গিয়ে মধ্যরাতের জিহাদী জোশ চলে এলো। আজ রাতে সত্যিই আমার গল্পটা লেখা খুব প্রয়োজন। জেনির তো আর কোন খারাপ দিক নেই এই নাস্তিকতা ছাড়া। তাহলে ওকে নিয়ে ভালোবাসার গল্পটা শুরু করে দেয়া যাক আবার!

(ভালোবাসা)
"জেনি, মনে পড়ে তোমার সেই প্রথম হাত ধরার দিনের কথা? কী সংকোচ! কী সংকট! মনে পড়ে? প্রথম চুমুর কথা? প্রায় পনের মিনিট ধরে আমরা ফ্রেঞ্চকিস করেছিলাম। কি পাগল ছিলাম আমরা তাই না? এখন আর কতটুকু বাকি আছে আমাদের মধ্যে বলোতো? সংসার করতে গিয়ে কত উদ্দমতা হারিয়ে ফেলেছি তাই না? চলো না আগের দিনগুলিতে ফিরে যাই? কাঁধে বোচকা আর পকেটে একটিও টাকা না নিয়ে শহর পরিভ্রমণ কেমন হবে বলোতো? মনে আছে আমার সেই কবিতাটার কথা?
নেই প্রয়োজন
টাকার থলে
পারলে হতে বসন্তজন।
চারিদিকে বসন্তের সুবাস, ফুলে ফুলে শোভিত এই শহর, কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় বসে আমরা জিরিয়ে নেবো, তারপর আবার হন্টন! বসন্তের রঙে রাঙাবো নিজেদের, ভুলে যাবো নিজেদের মতদ্বৈরথ এর কথা। হুডতোলা রিকশায় চড়ে তোমাকে জোর করে চুমু খাবো। তুমি আমার মাথায় গাট্টা মারবে রাস্তাঘাটে এসব অসভ্যতার জন্যে। আমি খুব মনমরা হয়ে পাশে সরে বসলে তুমিই আবার আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেবে।"
(৫) গল্প নয়
জেনি বিছানা ছেড়ে উঠলো। বাথরুমে যাবে মনে হয়। আমার খুব ইচ্ছে করছে ওকে আমার এ পর্যন্ত লেখা গল্পটা দেখাতে। তবে ওর সাথে তো চুক্তি হয়েছেই যে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেই কেবল গল্পটা দেখানো হবে। বাথরুম থেকে ফিরে স্বাভাবিকভাবেই জেনি জিজ্ঞেস করলো গল্প কেমন এগুচ্ছে। আমি উত্তর দিলাম যে এগুচ্ছে ভালোই, তবে একটু ধীরগতিতে। ধীরগতি হবার কারণটা আর ওকে বললাম না। লিখেছি যতটা তার চেয়ে বেশি ভেবেছি জেনির নাস্তিকতা সম্পর্কিত জটিলতা।

জেনির ফোনটা বাজছে। কে ফোন করলো এত রাতে? জেনিও দেখছি দিব্যি ঘুমজড়ানো কণ্ঠ আস্তাকূড়ে ফেলে দিয়ে বেশ চনমনে গলায় কথা বলছে। বেশিক্ষণ অবশ্য তারা কথা বলে নি। তবে তার কণ্ঠের প্রগলভতা আমাকে যেন অন্যকিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। ফোনটা রেখে জেনি আবার ঘুমিয়ে গেলো।

এমন না যে জেনির কাছে তার ছেলেবন্ধুরা ফোন করে না। আমি ওটাতে কিছু মনে করি না। কিন্তু আজ রাতটা খারাপ। আমি ক্রমশ যেন জেনির ভুলগুলিকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দ্বারা বিবর্ধিত হতে দেখছি। জেনিকে ভালো লাগছে না আমার। ভালো লাগবেই বা কেন? তার নাস্তিকতা, ছেলে বন্ধুদের সাথে অবাধ বিচরণ এসব কেন আমি সহ্য করবো? তবে আসল কারণটা মনে হয় অন্য। তার উচ্চবুদ্ধিবৃত্তি। সবসময় আমার থেকে কয়েকধাপ এগিয়ে থাকে সে সব ব্যাপারেই। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এই গল্পে জেনির কাছ থেকে কোন পরামর্শ নেবো না। কিন্তু আমার মনের বিক্ষিপ্ততা কিছুতেই গল্পটার মাঝে থিতু হতে দিচ্ছে না। আমি শেষ চেষ্টা করে দেখি, ভালোবাসার গল্পটা শেষ করা যায় কী না। সকালে উঠে জেনি পড়বে।


(ভালোবাসা)

"দেখ জেনি, বসন্তবাদ্য শ্রবণ আর রঙিন পোষাক পরে উৎসব অনেক হয়েছে। এবার একটু ক্ষান্ত দাও দেখি! চলো নির্জন কোনো জায়গায় গিয়ে বসি। ঘাসফুল ছিঁড়ি, বাদাম খাই, লেকের ধারে বসে থাকলে চমৎকার বাতাস পাওয়া যায়। আমার মনটা এখন কিছুটা বিক্ষিপ্ত। ভালোবাসার কথা মুখে আসছে না। আর তুমিও এখানে রয়েছো ঘুমে। দুটি সমান্তরাল জগতে তোমার বিচরণ, আমার গল্পে আর বাস্তবিক তোমাতে। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, কার সাথে এই নিশিডাকা রাতের একাকীত্ব ভাগ করে নেবো, কাকে জীবন্ত করে তুলবো। আমার কলমের আছে ঐশ্বরিক ক্ষমতা। এখানে আমি যা খুশি তাই লিখতে পারি। এই ঈশ্বুরেপনাটা বেশ লাগছে আমার। বাস্তবের জেনি ঘুমাক, আমি বরং আমার কলমের তৈরি জেনির সাথে কথা বলি।
-জেনি, সকালের আজান প্রায় দিয়ে দিয়েছে। ওঠো নামাজ পড়ো সোনা।
-উঠি, তোমার গল্প লেখা শেষ হয়েছে?
-না এখনও হয় নি। তবে প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছি।"

(কলমের বিদ্রোহ)
এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ লেখার পরে কলমটাকে একটু জিরোনোর জন্যে লেখার পাতার ওপর শুইয়ে রেখে দি। কী আশ্চর্য কাণ্ড! কলমটা একা একাই কী যেন লেখা শুরু করেছে। আমি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখা শুরু করলাম। জেনি আমাকে লিখছে,
-তুমি আমাকে ফজরের নামাজ পড়ার জন্যে ডেকেছো কেন? জানো না, আমি নাস্তিক?
-আমাদের ফ্যামিলিতে থেকে ওসব নাস্তিকতা চলবে না।
-তাহলে বিয়ে করেছিলে কেন?
-তুমি গোপন করেছিলে কেন?
-আমি মোটেও গোপন করি নি। আমার এমন অনেক আচরণ ছিলো, যা তুমি একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারতে। কিন্তু তুমি তা করবে কেন ? মাথায় ঘিলু বলতে কিছু আছে তোমার? নেই। কিচ্ছু নেই। তুমি অসাড়, অমৌলিক আর মিডিওকার একজন লেখক। আমি সাহায্য করেছি বলেই না কিছুটা পরিচিতি পেয়েছো। তোমার আগের লেখাগুলোর কথা ভাবো। ছ্যা ছ্যা ছ্যা! ওগুলো কী মানুষকে দেখানো যায়?
কলমরূপী জেনির এহেন আচরণ দেখে রক্সি রীতিমত থতমত খেয়ে যায়। ওদিকে আবার বাস্তবের জেনিও উঠে আসছে বিছানা থেকে। বিছানা থেকে উঠে সে কলমের আশ্চর্য কাজকারবার দেখতে লাগলো মহা আগ্রহে। ততক্ষণে দুই পক্ষের দুটো কলমের মাঝে ভালো বচসা শুরু হয়েছে।

-জেনি, তুমি নাস্তিক। তওবা করে ভালো হয়ে যাও। নইলে কখন কি হয়ে যায় বলা মুশকিল। এইতো গত পরশুই টিএসসিতে এক নাস্তিক দম্পতিকে কুপিয়ে মেরে ফেললো।

এবার জেনির কলমটি কোনো উত্তর না দিয়ে পাতা উল্টিয়ে ঘ্যাষ ঘ্যাষ করে লিখতে শুরু করলো,

-আপনি যদি সাধারণ মানুষ হন তাইলে আপনার জন্যে অপেক্ষা করছে পেট্রল বোমার অনল। অসাধারণ হবেন? না, সেটা হতে দেয়া যাবে না। ধর্ম ও স্রষ্টা নিয়ে নানারকম প্রশ্ন আসে মনে? তাহলে আপনি এই দেশে থাকার যোগ্য না। চাপাতি-রামদা নিয়ে আমরা প্রস্তুত। আপনি সাধারণ আর অসাধারণের মাঝের শূন্য জায়গাটায় বসে ভাবছেন কোন দিকে যাওয়া যায়? কোথাও যাওয়া হবে না আপনার। আপ্নি যদি শূন্য মস্তিষ্কের ভেড়ার পালের গোদা হন, প্রশ্ন না করে দিনে কয়েক বেলা সোয়াব কামানোর বাসনায় অদৃশ্য শক্তির দিকে তাকিয়ে ম্যাৎকার করেন, তবে জেনে রাখুন, আপনার মধ্যে একটি হিংস্র নেকড়ে তার ধারালো নখর সহ আক্রমনে প্রস্তুত। ভেড়াদের এই হঠাৎ হঠাৎ নেকড়ে হওয়ার অলৌকিক ক্ষমতা নিশ্চয়ই ঈশ্বরের কৃপাধন্য। তাহলে ভেড়া এবং নেকড়েরাই জয়ী হোক। আপনার নখের যত্ন নিন। কখন যে আমাদের সাথে আপনাদের দেখা হয়ে যায়! আমাকে ক্ষতবিক্ষত করুন। এই দেশটার মতো।

-এনাফ ইজ এনাফ!
রক্সি বিরক্ত হয়ে কলম দুটোকে পকেটে পুরে নেয়।
-কথাগুলো খুবই কর্কশ শোনায় তাই না? কিন্তু এসবই সত্যি। বাদ দাও না এসব এখন। রোমান্টিক গল্পটা লেখা শেষ হয়েছে? দাও না পড়ি।
-রাখো তোমার রোমান্টিক গল্প! রাখো তোমার সারপ্রাইজ! তোমার মতো ছেলেঘুরানো, নাস্তিক, অহংকারী মেয়ের সাথে আমার কিছুতেই বনবে না। আর আমি তোমাকে হত্যা করবো এখন।
রান্নাঘর থেকে একটা ধারালো বটি নিয়ে আসে রক্সি।
-ছিহ, এসব কী করছো? তুমি না মডারেট মুসলমান? নিজেকে জঙ্গি বানিয়ে ফেললে চলবে?
-ওহ স্যরি, ভুলেই গিয়েছিলাম। আমি তো মডারেট মুসলিম। খুন খারাপি করা পাপ।
-কিন্তু নাস্তিকদের মৃত্যুতে উল্লাস করাটা খুব সওয়াবের তাই না?
-এই প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো না। তোমার তো অনেক বুদ্ধি, বুঝে নিও যা হোক একটা।
-বটিটা রেখে আসো। আজকে চল আমরা একটি গান গাই, যে গানে রয়েছে মানবতার সুর, হীনমন্যতার দূর, দুজন মিলে একসাথে গাই চলো, তারপর তোমার ভালোবাসার গল্পটা আবার নতুন করে লেখা শুরু করবে, আমাকে দেখাবে। ভালোবাসা আর মানবতা যদি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায়, কত ভালো হয়, তাই না?

রক্সি ভাবছে, এই কাফির, নাফরমান,মুরতাদ মেয়েটির সাথে আর সম্পর্ক রাখা উচিত কি না। এতকাল যে কেন মনে হয় নি! আসলে হুইস্কির প্রভাব। বিকেলে পুরো এক বোতল জ্যাক ড্যানিয়েলস সাবাড় করে দিয়েছে সে। নেশাটা কাটুক, তারপর সিদ্ধান্ত নেবে, ভাবে সে।

সে ধীরপায়ে হাঁটতে হাঁটতে বটিটা রান্নাঘরে রেখে আসে এমন একটা জায়গায়, যেখানে অন্যদের খুঁজে পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব!



সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬
৬২টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×