প্রিয় বাবা,
এই চিঠিটা যখন তুমি পড়ছ,তখন আমি তোমাদের থেকে দূরে।অনে.......ক দূরে।না,তোমাদের প্রতি কোন রাগ বা অভিমান থেকে আমার এই চলে যাওয়া না। ভয় পেওনা,এটা কোন সুইসাইড নোট না।আমি বেঁচে আছি,এবং থাকব ততদিন,যতদিন আমার জীবনটা উপভোগ করতে পারব।আসলে অনেক ভেবে দেখলাম,আমার নিজস্ব একটা জীবনদর্শন আছে,এবং সেটা বাস্তবায়ন করাই সমিচীন হবে।
আমি জেনীর সাথে চলে যাচ্ছি,তুমি কি জেনী কে চেন?চেনার অবশ্য কথা না।কখনও দেখনি।যাই হোক,ওর সাথে চলে যাওয়া কোন টিন এজ আবেগের বশবর্তী হয়েনা,হ্যাঁ ওকে আমি ভালবাসি,কিন্তু সেটাই এই চলে যাবার একমাত্র কারণ না।ও শুধু আমার বন্ধু বা প্রেমিকা না,আমার কমরেড।আমরা একই মতাদর্শে বিশ্বাসী।আমরা এই দেশে একটা সামাজিক পরিবর্তন আনার জন্যে দৃঢ়প্রতিগ্গ।এর জন্যে হয়তবা অনেক বাঁধা আসবে,অনেক রক্ত ঝরাতে হবে।কিন্তু আমরা আমাদের আদর্শে অটল।আর তাছাড়া,আমাদের নেতারা খুব ভালভাবে আমাদের প্রশিক্ষিত করছেন।
আর একটা ব্যাপার মনে হয় তোমরা মেনে নিতে পারতেনা,জেনী মা হতে চলেছে।আমার কোন উপায় ছিলনা বাবা।
অবশ্য আমার আয়ু আর বেশিদিন নেই,তাই আমাকে আর ফিরে পেলেও,খুব বেশিদিনের জন্যে পেতেনা।জেনী ওর অজান্তে একটা ভয়াবহ অসুখ বয়ে বেড়াচ্ছিল শরীরে।আর সেই রোগটা এখন আমার মধ্যেও সংক্রমিত।যে কটা দিন বাকি আছে জীবনের,আমাদের অনাগত সন্তানের মুখ ,জেনীর ভালবাসা,আর আদর্শের সসস্ত্র লড়াই হবে আমার সম্বল।
আমার আর জেনীর চিকিৎসার জন্যে অনেক টাকা প্রয়োজন।ভয় নেই,বাসা থেকে কিছু নিয়ে যাচ্ছিনা,তোমার কাছেও চাইবনা কখনও।আমরা নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরাই করব।আগে হেরোইন নিতাম(টের পেতে দেইনি কখনও)।এখন থেকে ওটার ব্যাবসাও করব।লোকাল একজন ডিলারের সাথে পরিচিত হয়েছি।কোন সমস্যা হবেনা।
ভাল থেক বাবা।মাকেও ভাল রেখ।
বিদায়........
বিঃদ্র:মাথাটা এইবার একটু ঠান্ডা কর বাবা।প্রেসার তো বেড়ে গেছে বঝতেই পারছি,একটা ট্যাবলেট খেয়ে নাও।ওপরে লেখা সবকিছুই মিথ্যা।জেনী,আদর্শের সংগ্রাম..সব।কিন্তু দেখলেত বাবা, পৃথিবীতে খারাপ কত কিছুই ঘটতে পারে!এর তুলনায় একটা সেমিস্টার পরীক্ষায় ফেল করা তো কিছুই না,তাইনা?রিপোর্ট কার্ড আমার ড্রয়ার এ রাখা আছে।ওটাতে সাইন করে দিও।আর মাথা পুরোপুরি ঠান্ডা হলে আমাকে জানিও,আমি চলে আসব।আমি এখন বড়মামার বাসায়।
(ইন্টারনেট থেকে অনুদিত)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৮