somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চোর বাটপারদেরও লজ্জা থাকে এদের তাও নেই..

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ট্রাইব্যুনালে ৬০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট
প্রতারণা ও জালিয়াতির কারণে আবার বিচার দাবি
চার্জ গঠনের আদেশ আসে বেলজিয়াম থেকে; তদন্ত প্রতিবেদন গেছে ঢাকা থেকে
মেহেদী হাসান
তারিখ: ২৩ ডিসেম্বর, ২০১২

স্কাইপি কেলেঙ্কারির জের ধরে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার আবার শুরুর আবেদন করা হয়েছে আসামিপক্ষ থেকে। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচারও আবার শুরুর আবেদন করা হবে আজ রোববার।

আবার বিচারের এ আবেদন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে আইনে পুনর্বিচারের বিধান নেই। ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি পরিবর্তন হলে আবার বিচার শুরু করা যায় না। বিচার যেখানে চলমান ছিল সেখান থেকেই চলবে। তবে আসামিপক্ষ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে আবার বিচারের আবেদন জমা দেয়ার পর থেকে ভিন্ন মাত্রা লাভ করেছে এ বিতর্ক।

আসামিপক্ষ থেকে এর জবাবে বলা হয়েছে বিচারক পরিবর্তনের কারণে তারা আবার বিচার দাবি করেছেন এ অভিযোগ মোটেই সত্য নয়। বরং বিচার নিয়ে জালিয়াতি, প্রতারণা এবং বিচারের নামে আসামিকে ফাঁসিয়ে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র হয়েছে সে কারণেই তারা আবার বিচারের দাবি করেছেন। আসামিপক্ষের দাবি চার্জগঠন আদেশসহ বিচারের বিভিন্ন পর্যায়ের বিভিন্ন আদেশ বেলজিয়াম থেকে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন লিখে পাঠিয়েছেন। বেলজিয়াম থেকে পাঠানো আদেশ বিচারপতি নিজামুল হক শুধু ট্রাইব্যুনালে পড়ে শুনিয়েছেন। প্রসিকিউশন ও ট্রাইব্যুনাল কেউ কারো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। পুরো বিচারকার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে বেলজিয়াম থেকে।

আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের দাবির স্বপক্ষে আমরা ৬০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার আবার শুরুর আবেদনের সাথে। এর মধ্যে রয়েছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের সাথে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপি সংলাপ, এ দু’জনের মধ্যে বিভিন্ন সময় আদান প্রদান করা বেশ কিছু ই-মেইল।

আবার বিচারের আবেদনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলায় চলতি বছর ১৩ মে চার্জগঠনের আদেশ দেয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনাল থেকে। আর ১২ তারিখ আহমেদ জিয়াউদ্দিন বেলজিয়াম থেকে চার্জগঠন আদেশের একটি ড্রাফট পাঠিয়েছেন। ১৩ তারিখ বিচারপতি নিজামুল হক চার্জ গঠন করে যে আদেশ দিলেন তার সাথে হুবহু মিল রয়েছে ১২ তারিখ বেলজিয়াম থেকে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের পাঠানো ড্রাফটের সাথে। শুধু তারিখ এবং কেস নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে।

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা আবেদনের সাথে এ দু’টি ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি। দু’টি ডকুমেন্ট সামনে রেখে তুলনা করলেই যে কেউ বুঝতে পারবেন এর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন ১২ মে ২০১২ চার্জ গঠনবিষয়ক যে ড্রাফট পাঠালেন ই-মেইল করে সেটি ৪৫ পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট। আর বিচারপতি নিজামুল হক ১৩ মে ২০১২ অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যে চার্জগঠনের আদেশ দিলেন সেটি ৪৯ পৃষ্ঠার। ফন্টের কারণে পৃষ্ঠার সংখ্যা কিছু বেশি-কম হয়েছে দু’টির ক্ষেত্রে। বস্তুত ১২ মে বেলজিয়াম থেকে যে ড্রাফট পাঠানো হয়েছে পরদিন ১৩ মে বিচারপতি নিজামুল হক তা শুধু পড়ে শুনিয়েছেন ওপেন কোর্টে।

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, দুনিয়ার কোথাও বিচার বিভাগের ইতিহাসে এমন জালিয়াতির ঘটনা ঘটেনি। অধ্যাপক গোলাম আযমের আবার বিচারের আবেদনের সাথে জমা দেয়া আরেকটি ডকুমেন্ট তুলে ধরে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে বেলজিয়ামের ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের কাছ থেকে তিনটি মেইল আসে। আমরা তার দু’টি মেইল জমা দিয়েছি। এ দু’টি মেইল ফরমাল চার্জ বিষয়ে। যে ফরমাল চার্জ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের তৈরি করার কথা।

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ ছাড়া আমাদের কাছে আরো একটি ই-মেইল ডকুমেন্ট রয়েছে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট প্রতিবেদন বিষয়ে। তদন্ত সংস্থা ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় প্রসিকিউশনের কাছে। প্রসিকিউশন ১২ ডিসেম্বর তা আদালতে দাখিল করে। ওই একই তারিখ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের কাছ থেকে বিচারপতি নিজামুল হকের বরাবর একটি ই-মেইল আসে বেলজিয়াম থেকে। ই-মেইলটি ছিল ফরমাল চার্জ এবং তদন্ত প্রতিবেদন বিষয়ে।

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের প্রশ্ন হলো তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন বেলজিয়ামে গেল কিভাবে এবং সেখান থেকেই বা বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে আসে কী করে? যেখানে আমরা ট্রাইব্যুনালের কাছে অনেক অনুরোধ করেছিলাম তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন পাওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের দেয়া হয়নি। তা বাইরে গেল কী করে? এ থেকে বোঝা যায় তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি, ফরমাল চার্জ গঠনÑ এ সব কিছুর সাথে তাদের সবার যোগসাজশ ছিল।

ব্যারিস্টার আবদুুর রাজ্জাক বলেন, ১৯৯২ সালে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচারের জন্য জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত গণ-আদালতের বিচারের সাথে বিচারপতি নিজামুল হক আগেই জড়িত থাকায় আমরা ট্রাইব্যুনাল থেকে বিচারপতি নিজামুল হকের অপসারণ চেয়ে আবেদন করেছিলাম। সে বিষয়ে তিনি যে আদেশ দিয়ে আমাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সে আদেশটিও ১২ জুন ২০১২ বেলজিয়াম থেকে পাঠানো হয়েছে।

ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এভাবে মাওলানা নিজামী ও সাঈদীর ক্ষেত্রেও আমরা চার্জগঠন আদেশ এবং বেলজিয়াম থেকে পাঠানো চার্জ ফ্রেম আদেশের ড্রাফট জমা দেবো প্রমাণ হিসেবে। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেয়া হয়েছে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। আর বেলজিয়াম থেকে চার্জগঠনের ড্রাফট বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে পাঠানো হয়েছে ২ অক্টোবর। ৩ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে যা পড়ে শোনানো হলো এবং ২ অক্টোবর যে ড্রাফট পাঠানো হলো তা হুবহু এক। এমনিভাবে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেয়া হয়েছে ২০১২ সালের ২৮ মে। আর বেলজিয়াম থেকে ড্রাফট পাঠানো হয়েছে ২৭ মে। এ দু’টিও এক।

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, বিচারকার্যক্রম আসলে পরিচালিত হয়েছে বেলজিয়াম থেকে। তিনি সেখান থেকে যেভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবে পরিচালিত হয়েছে বিচার। ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন আবার দেশের এবং বিদেশের বিভিন্ন মহলের সাথে আলোচনা করে বিচারের গতিবিধি ঠিক করতেন। স্কাইপি সংলাপ এবং দু’জনের ই-মেইল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বিচারপতি, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সাক্ষীর মধ্যে একটা গোপন আঁতাত হয়েছে বিচার নিয়ে। যেমন ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সাথে স্কাইপি সংলাপের সময় বিচারপতি নিজামুল হক বলছেন, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরের ঘটনাটা সাক্ষী জেনারেল (অব:) শফিউল্লাহকে দিয়ে বলাতে পারলে তার জন্য রায় লিখতে সুবিধা হবে। এ ছাড়া সাক্ষী সুলতানা কামাল, মুনতাসির মামুনকে দিয়ে কোন কোন বিষয় বলাতে পারলে সুবিধা হবে তা নিয়েও তারা দু’জন আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম ভূমিকা পালন করেছেন বলেও তাদের আলোচনায় উঠে এসেছে। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, সাক্ষী কী বলবে না বলবে তা কি একজন বিচারপতি ঠিক করতে বা আলোচনা করতে পারেন?

আইনের বিধান নিয়ে বিতর্ক : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৬ (৬) ধারায় বলা আছে, ‘শুধুমাত্র ট্রাইব্যুনালের কোনো সদস্যের পরিবর্তন হলে বা কোনো সদস্য অনুপস্থিত থাকলে ইতঃপূর্বে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এমন কোনো সাক্ষীকে আবার সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তলব করতে বা আবার শুনানি গ্রহণে ট্রাইব্যুনাল বাধ্য থাকবে না।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী টিমের সদস্য মিজানুল ইসলাম বলেন, এর মানে হলো শুধু একটা কারণ অর্থাৎ ট্রাইব্যুনালের কোনো সদস্য পরিবর্তন হলে আবার শুনানি বা সাক্ষ্য গ্রহণ বা আবার বিচার হবে না। কিন্তু অন্য কারণ যদি ঘটে থাকে সেখানে আবার বিচার হবে না এ কথা তো বলা নেই। আর এখানে অন্য কারণ ঘটেছে যে কারণে আবার বিচার দরকার। যেমন এখানে বিচারের নামে জালিয়াতি, প্রতারণা হয়েছে। অন্যের নির্দেশানুযায়ী আদেশ দেয়া হয়েছে। বেলজিয়াম থেকে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের লিখে পাঠানো চার্জ শুধু পড়ে শুনিয়েছেন বিচারক। বিচার পরিচালনা করা হয়েছে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে। একজন বিচারপতি সব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের সাথে গোপন আঁতাত করে প্রকাশ্য কোর্টে নাটক করেছেন বিচারের নামে। প্রতারণা ও জালিয়াতির সুনামি হয়েছে এ বিচারের ক্ষেত্রে। যেখানে বিচারের নামে এ জাতীয় জালিয়াতি প্রতারণা এবং প্রহসন হয়েছে সেখানে আইনের এ স্বাভাবিক ধারা প্রযোজ্য হতে পারে না। এটি বিচারের স্বাভাবিক অবস্থায় প্রযোজ্য। কারণ যেকোনো কারণে একজন বিচারপতি বদলি হতে পারেন, পদোন্নতি পেয়ে চলে যেতে পারেন। তখন এ আইন কার্যকর। কিন্তু বিচারপতি নিজামুল হক সে রকম কোনো স্বাভাবিক কারণে পদত্যাগ করেননি। একটি কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, আবার বিচার বিষয়ে আইনের যে ধারা রয়েছে তার অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে।

ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক আইনের বিধান বিষয়ে বলেন, আইনের ৬(৬) ধারা এখানে কাভার করে না। ওটা বিচারের স্বাভাবিক অবস্থায় প্রযোজ্য। কিন্তু এখানে তো একটি মহা কেলেঙ্কারি ও জালিয়াতির কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। আইন যখন তৈরি করা হয় তখন এ ধরনের জালিয়াতি ঘটবে তা তো তারা জানতেন না। আর জালিয়াতি ঘটতে পারে মাথায় রেখে কোনো বিধানও রাখা হয়নি। কাজেই আইনের স্বাভাবিক ধারা এখানে প্রযোজ্য হবে না। বরং আইনের ৪৬ (এ) বিধিতে বলা আছে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল যেকোনো আদেশ দিতে পারেন। এটা ট্রাইব্যুনালের সহজাত ক্ষমতা। যেদিন ট্রাইব্যুনাল গঠন হয়েছে সেদিন থেকেই এ ক্ষমতা তারা লাভ করেছেন। কাজেই আবার বিচার শুরু করতে আইনে কোনো বাধা নেই। বরং সেটাই ন্যায়বিচারের দাবি। তিনি বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক যদি পদত্যাগ না-ও করতেন তবু আমরা আবার বিচারের আবেদন করতাম। কারণ এটা এখন আর কোনো ব্যক্তির থাকা বা না থাকার বিষয় নয়। বিচারপতি নিজামুল হক বিচারের নামে যা করেছেন তার মাধ্যমে তিনি ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্যক্রমকে কলুষিত করেছেন।

আবেদনের সাথে জমা দেয়া স্কাইপি সংলাপ বিষয়ে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ সংলাপের বিষয়ও বিচারপতি নিজামুল হক ৬ ডিসেম্বর ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে দেয়া রুলে স্বীকার করেছেন। এ সংলাপ থেকেও এটি স্পষ্ট যে, সাক্ষী, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, বেলজিয়ামের ড. আহেমদ জিয়াউদ্দিন, সরকারের দুয়েকজন মাননীয় মন্ত্রী, আরো বিভিন্ন মহলের গোপন আঁতাত এবং যোগসাজশে পরিচালিত হচ্ছিল এ বিচার। বিচারের সব কিছু পেছন থেকে ঠিক করে তারা প্রকাশ্য কোর্টে নাটক করেছেন দিনের পর দিন। আর দেশের এবং বিদেশের মানুষকে দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে এখানে তারা ন্যায়বিচার করছেন। কোন মামলার রায় আগে হবে, কোনটার রায় পরে হবে, কোন ট্রাইব্যুনালে কোন মামলায় কতজন সাক্ষী আসামিপক্ষকে আনতে দেয়া হবে, রায়ের কাঠামো কী হবে সে বিষয়েও বিচারপতি নিজামুল হক এবং বেলজিয়ামের ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সাথে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম এবং বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম তার চেম্বারে বসে ঠিক করেছেন প্রকাশ্য কোর্টে তারা এমন আচরণ করবেন যেন কোনো লোক বুঝতে না পারে তাদের মধ্যে কোনো খাতির আছে। মানুষের জীবন মরণের প্রশ্ন জড়িত যেখানে সেখানে বিচারের নামে এমন অবিচারের নজির আর নেই দুনিয়ার ইতিহাসে।

১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক বেলজিয়ামে অবস্থানরত ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সাথে স্কাইপি সংলাপ বা ভিডিও কথোপকথন করেছেন বিভিন্ন সময়ে। ই-মেইলেও বিচারের বিভিন্ন বিষয় আদান প্রদান করেছেন। তার সব ভিডিও কথোপকথনের রেকর্ড এবং ই-মেইল ডকুমেন্ট বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের কাছে চলে যায়। দৈনিক আমার দেশ গত ৯ ডিসেম্বর থেকে স্কাইপি সংলাপ প্রকাশ শুরু করে। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে তুমুল ঝড় ওঠে। বিচারপতি নিজামুল হকের কথোপকথনের বিষয়বস্তু পড়ে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে গোটা জাতি। ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেন। এরপর ট্রাইব্যুনাল-১ এ নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয় বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরকে। গত বুধবার থেকে আসামিপক্ষ আবার বিচার শুরুর আবেদন জানিয়ে দরখাস্ত প্রদান শুরু করেছে।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×