somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বার্মার পর এবার আসামে মুসলমান নিধনযজ্ঞ....আমাদের কি কিছুই করার নেই?

২৫ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে আসামের কোঁকড়াঝারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসাম সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আরো সেনা এবং আধাসেনা চেয়ে পাঠিয়েছে। এ পর্যন্ত ৩২ জন নিহত হয়েছে। ১০ জেলায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কারফিউ জারির সাথে সাথে অশান্তি ছড়াতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশও দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নতুন করে দুটি মৃতদেহ নদীর চর থেকে উদ্ধার করা হয়। আসামস বোরোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেটেড ডিস্ট্রিক্ট (বিটিএডি) জুড়ে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন বাংলাভাষী সংখ্যালঘু মুসলিমরা। অল আসাম মাইনোরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এএমএসইউ) ডাকা গতকালের হরতালে ধুবড়িতে আটকে পড়ে রাজধানী এক্সপ্রেস।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টানা সংঘর্ষের জেরে উত্তর-পূর্ব ভারতজুড়ে ট্রেন চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এমনকি ত্রাণশিবিরে যাওয়ার পথেও সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘুদের দাবি, অবিলম্বে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।
বেসরকারি সূত্রে জানা গেছে, নিহতের সংখ্যা ৩২ ছাড়িয়েছে। প্রাণভয়ে বা অগ্নিসংযোগের ফলে যারা ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন তাদের সংখ্যা ৭৫ হাজারের ওপর। বেশ কিছু মুসলিম পরিবার আশ্রয়ের সন্ধানে আসাম সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে প্রবেশ করেছে।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন ধরে সশস্ত্র বোড়ো উপজাতি জঙ্গিরা সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।
এদিকে আসামের সাথে উত্তর প্রদেশের বেরিলি জেলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বেসরকারি সূত্র মতে দু’জন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ, মাগরিবের আজানের পর মুসল্লিরা যখন ইফতারিতে ব্যস্ত তখন সাহাবাদ এলাকার এক মসজিদের পাশ দিয়ে হরিদ্বার ফেরত কানওয়ারী শিবভক্তরা তারস্বরে গান গাইতে গাইতে সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। রোজাদার মুসলমানরা তাদের গানবাজনা ও শোরগোল না করতে অনুরোধ করলে ক্রুদ্ধ শিবভক্তরা ভাঙচুর ও হিংসাত্মক সংঘর্ষ শুরু করে। সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শিবভক্ত কানওয়ারীদের গুলি চালনায় দুই মুসলিম যুবক নিহত হন। মুখ্যমন্ত্রী অখিল যাদব কড়া হাতে দাঙ্গা দমনের জন্য পুলিশকে তৎপর হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসাম পুলিশ প্রধান জে এন চৌধুরী জানান, কুপিয়ে হত্যা করা ২২টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যা করার পর তাদের নদী, জঙ্গল, রাস্তার পাশে ফেলে যাওয়া হয়।
শুক্রবার কোঁকড়াঝার এলাকায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের হামলায় চার বোড়ো যুবক নিহত হলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। হামলার ঘটনায় মুসলিমরা জড়িতÑ এই সন্দেহে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা চালায় সশস্ত্র বোড়োরা। সংঘর্ষে প্রায় ৫০০ ুদ্র গ্রাম আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
কোঁকড়াঝার জেলা ও পাশের এলাকায় গতকাল নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলিবর্ষণ করা হয়। সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে বঙ্গাইগাঁও জেলা থেকেও। অশান্তির রেশ এসে পৌঁছেছে আসাম-পশ্চিমবঙ্গের সঙ্কোশ নদীর সীমান্তে।
স্থানীয় পুলিশ পরিদর্শক এস এন সিং মঙ্গলবার জানিয়েছেন, দাঙ্গা থামাতে পাঁচ হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারি সূত্র জানায়, অন্তত ১৮ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে।
কোঁকড়াঝার জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। দাঙ্গায় এই জেলাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ ঠাঁই নিয়েছে। সব মিলিয়ে ৭৫টি উদ্বাস্তু শিবির স্থাপন করা হয়েছে। এগুলোতে অন্তত ৫০ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে।
পিটিআই জানায়, ৪০০ সশস্ত্র বোড়ো উপজাতীয় সদস্য হামলার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আরেক ঘটনায় বোড়োল্যান্ড লিবারেশন টাইগার্স আশ্রয় শিবিরে হামলা চালানোর চেষ্টা করলে তাদেরকেও তাড়িয়ে দেয় পুলিশ।
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আশপাশের নতুন এলাকায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর আরো সদস্য মোতায়েন করা প্রয়োজন। স্থানীয় রাজনীতিক উরখাও গাওরা বর্মণ বলেন, ‘গ্রামের পর গ্রাম যখন পুড়ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।’ ‘আজ সকালে আমি ভেবেছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু কোথায় কী? সংঘর্ষ আবার শুরু হলো। কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই’ বলেন তিনি।
আসামের দুই জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী রকিবুল হোসেন ও নজরুল ইসলাম গোলযোগপূর্ণ এলাকা সফর করেছেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

Click This Link

Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:০৭
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×