আল্লাহকে পেতে মাধ্যম ধরা বা পীর ধরা
পীর ফার্সি শব্দ যার অর্থ বৃদ্ধ, বুজুর্গ, শিক্ষক। ইসলামে আল্লাহর নৈকট্য ও ভালবাসা পেতে উকিলের মতো মাধ্যম ধরা বা পীর ধরার কোন অস্তিত্ব নাই। আল্লাহর নৈকট্য ও ভালবাসা পেতে এই মাধ্যম ধরত মক্কার পৌত্তলিক মুর্তিপুজারীরা।
আল্লাহ বলেন,
সূরা যুমার-৩> যারা আল্লাহ্ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের (মুর্তিসমূহ) ইবাদাত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহ্র নিকটবর্তী করে দেয়।
মুর্তিপুজারীরা মুশরিক। কারণ তারা আল্লাহর ভালবাসা পাওয়ার জন্য মাধ্যম হিসেবে মুর্তিকে ধরে। ঠিক তেমনি যারা আল্লাহকে পাওয়ার জন্য মাধ্যম হিসেবে কোন ব্যক্তিকে ধরে তারা কি মুশরিক না? মুর্তিপুজারীদের উদ্দেশ্য সৎ ছিল। তারা আল্লাহর ভালবাসা, নৈকট্য পাওয়ার জন্যই এ মাধ্যম ধরেছিল। ঠিক তেমনি বর্তমানেও যারা আল্লাহর ভালবাসা নৈকট্য পাওয়ার জন্য কোন ব্যক্তিকে মাধ্যম ধরে তারাও মুশরিক হবে। তবে কাউকে মুশরিক বলার আগে জানতে হবে তার কাছে সত্যের বাণী পৌছেছে কি না। যদি কেউ জেনে শুনে মুর্তিপুজারীদের মতো আল্লাহকে পাওয়ার জন্য মাধ্যম ধরে তবে সেও মুশরিক হবে।
=============================================
যারা আল্লাহর ভালবাসা, নৈকট্য তথা আল্লাহকে পাওয়ার জন্য মাধ্যম/উসিলা ধরার কথা বলেন তাদের দলিলের খন্ডন?
সূরা মায়িদাহ-৫:৩৫> হে ইমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং উসিলা তালাশ কর এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
=> পৃথিবীর সব পীরের মুরিদরাই এবং পীর নিজেও এই আয়াত দিয়ে পীর ধরার পক্ষে দলিল দেয়। এখানে উসিলা তালাশ মানে কি পীর ধরা? আসুন দেখে নেই নবীর সাহাবারা এ আয়াত পড়ে কি শিক্ষা নিয়েছেন। তারা কি পীর ধরার শিক্ষা নিয়েছেন নাকি অন্য কিছু।
এখানে উসিলা খোজা বলতে আল্লাহভীতি ও সংযমশীলতার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
সাহাবী ইবনে আব্বাস (রাঃ) এই উসিলা বলতে আল্লাহর নৈকট্য বা সন্তুষ্টি অর্জনকে বুঝেছেন।
কাতাদাহ রাঃ বলেন যে, উসিলার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য স্বীকার করে এবং আল্লাহর আদেশ নিষেধ মুতাবেক আমল করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। (তাফসীর ইবনে কাসির, ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম খন্ড এক সাথে, পৃষ্ঠা নং-৮১৫)
তারা কেউই বলেন নাই উসিলা খোজা মানে পীর ধরা, বুজুর্গ ধরা। বরং তারা বুঝেছিলেন উসিলা খুজা মানে নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আল্লাহর আদেশ নিষেধ মোতাবেক আমল করা।
***************************************************
উসিলা কিভাবে ধরতে হয়
প্রথমতঃ আল্লাহর নামের উসিলায় দু’আ
আল্লাহ আমাদের শিখিয়েছেন তার মহান নামসমূহের উসিলায় দু’আ করতে।
সূরা আরাফ-৭:১৮০> আর আল্লাহ্র জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক।
তিনি আমাদের শিখিয়েছেন তার নামের উসিলায় দু’আ করতে।
আমরা মুসলিমরা প্রতিদিনই আল্লাহর নামের উসিলায় আল্লাহর নিকট দু’আ করি। যেমন
সূরা আল ইমরান-৩:৮> হে আমাদের রব! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত করোনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই ওয়াহহাব (সব কিছুর দাতা)।
উপরোক্ত আয়াতে আমরা আল্লাহর দুটি মহান নামের উসিলায় দু’আ করেছি। একটি হলো রব এবং অন্যটি ওয়াহহাব। এ দুটিই আল্লাহর নাম।
সূরা মুমিনুন-১০৯> হে আমাদের রব! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেন্ঠ দয়ালু।
উপরোক্ত আয়াতেও আমরা আল্লাহর নিকট দু’আ করেছি রব ও রাহিম নামক দুটি নামের উসিলা দিয়ে।
রাসূল সাঃ ও আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে উসিলা ধরতে হয়। ইস্তিখারার সময়ের দুআতে তিনি দুআ করেছেন,
হে আল্লাহ, তোমার জ্ঞানের উসিলায় আমি তোমার নিকট কল্যাণ প্রার্থনা করছি এবং তোমার কুদরত বা ক্ষমতার উসিলায় আমি কাজে সক্ষম হতে চাই। আর আমি আপনার মহান অনুগ্রহ প্রার্থনা করি। (বুখারী, ৫ম খন্ড, দু’আ অধ্যায়, হাদিস নং-৫৯৪০, ই:ফা)
অতএব রাসূল সাঃ ও আল্লাহর জ্ঞানের উসিলায় প্রার্থনা করেছেন। অতএব বুঝা গেল উসিলা হিসেবে আমরা আল্লাহর নাম সমূহ ব্যবহার করে থাকি এবং করব।
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর নিকট সৎ আমলের দ্বারা ওয়াসিলাহ ধরা
আমরা আমাদের সৎ আমলের ওয়াসিলা দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের দু’আ করতে পারি।
আল ইমরান-৫৩> হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা সে বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যা তুমি নাযিল করেছ, আমরা রসূলের অনুগত হয়েছি। অতএব, আমাদিগকে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে নাও।
উপরোক্ত আয়াতে আমরা ৩টি ওয়াসিলাহ দিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি।
প্রথমটি হলো নামের ওয়াসিলাহ।
তারপর দুইটি সৎ আমল হিসেবে ঈমান আনার ও
রাসুলের আনুগত্যের ওয়াসিলাহ দিয়ে আল্লাহর নিকট দু’আ করেছি।
সূরা আরাফ-৭:২৩> হে আমাদের রব (পালনকর্তা) আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।
উপরোক্ত আয়াতে আমরা নিজেদের উপর জুলুমের স্বীকারুক্তি দিয়েছি, আল্লাহর ক্ষমার ও অনুগ্রহের ওয়াসিলাহ দিয়ে ক্ষমা ও দয়ার জন্য দু’আ করেছি।
সূরা মায়িদাহ-৮৩> হে আমাদের রব, আমরা ঈমান এনেছি। অতএব, আমাদেরকেও সাক্ষীগণের তালিকাভুক্ত করে নিন।
সূরা ফাতিহাতে আমরা বলি- সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি জগৎসমূহের পালনকর্তা। যিনি বিচার দিনের মালিক। আমরা তোমার ইবাদাত করি, তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি। তুমি আমাদের সহজ সরল পথে পরিচালিত কর।
উপরোক্ত ৪টি আয়াতে আমরা প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করলাম, তারপর পালনকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিলাম, তারপর বিচার দিনের মালিক হিসেবেও স্বীকৃতি দান করলাম। তারপর আল্লাহকে আমরা শুধুমাত্র তারই ইবাদাত করা ও সাহায্য প্রার্থনার করার কথা জানালাম। সর্বশেষে এ সবগুলো বিষয়ের ওয়াসিলাহ দিয়ে সহজ সরল পথ এর জন্য আবেদন করলাম। এটা হলো সৎ আমলের দ্বারা ওয়াসিলাহর নমুনা। আল্লাহ বলেছেন ওয়াসিলাহ তালাশ কর। তাই আমাদের আল্লাহর নাম সমূহের ওয়াসিলা ও সৎ আমলের ওয়াসিলাহ দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য তালাশ করতে হবে।
তৃতীয়তঃ আল্লাহর নিকট সৎ ব্যক্তির দু’আ হিসেবে ওয়াসিলাহ গ্রহণ
সৎ ব্যক্তির দু’আর দ্বারা ওয়াসিলাহ মানে হলো কোন ভাল ব্যক্তিকে দু’আর জন্য বলা। যেমনঃ-
আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত এক পল্লীবাসী নাবী সাঃ এর মিম্বরে খুৎবা দানকালে মসজিদে প্রবেশ করে বলল হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের সম্পদ নষ্ট হয়ে গেল, রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, অতএব আপনি আল্লাহর নিকট দু’আ করুন, তিনি যেন আমাদের বৃষ্টি দান করেন।
এছাড়াও ওমর রাঃ এর সময় বৃষ্টির জন্য সকলে নবীর চাচা আব্বাস বিন আব্দুল মোত্তালিব এর মাধ্যমে দু’আ চাইতেন।
ঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁ
======>>>>> নবীর যুগে, সাহাবাদের যুগে এবং তাবেয়ীদের যুগেও পীরদের কোন অস্তিত্ব ছিল না। অনেক পরে এই প্রথা শুরু হইছে। এটা টাকা ইনকামের একধরনের ব্যবসা। যেহেতু নবীর সময় ছিল না, সাহাবাদের সময় ছিল না, তাবেয়ীদের সময় ছিল না। তাই বর্তমানেও মুসলিমরা কোন পীর ধরে না। হ্যা খ্রিষ্টানরা তাদের ধর্মীয় গুরুদের রবের আসনে বসিয়ে ছিল। আল্লাহ কোরআনের সূরা তাওবাহ এর ৩১ নং বলেছেন ইহুদী খ্রিষ্টানরা তাদের ধর্মীয় গুরু তথা আলেমদের রবের আসনে বসিয়েছে। হযরত আদি ইবনে হাতেম রাঃ আল্লাহর রাসুলকে বলেছিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমরা তো আমাদের ধর্মীয় গুরুদের রবের আসনে বসাই নাই। রাসূল সাঃ বললেন, তারা যেটা হালাল/বৈধ বলত, তোমরা কি সেটা মানতে না, তিনি বললেন, জি মানতাম। রাসুল সাঃ আবার বললেন, তারা যেটা হারাম/অবৈধ বলত, তোমরা কি সেটা হারাম মনে করতে না, তিনি বললেন, জি করতাম। রাসূল সাঃ বললেন, কোন দলিল ছাড়া এভাবে কোন ব্যক্তির আনুগত্য করাই হলো রবের আসনে বসানো।
======>>> তাই আজও দেখা যায় পীরদের দরগায় সিজদা জায়েজ, পীরের মুরিদ হলে নামাজ রোজা লাগে না, পীরের কলব এর সাথে কলব মিলানো, পীরের মাজার পরিদর্শণ ইত্যাদি হারাম কাজ মুসলিমরা করে। যেমন সহীহ হাদিসে কবর পাকা করা নিষেধ, কবরে গিলাফ লাগানো নিষেধ, কবরের উপর ঘর নির্মাণ নিষেধ, কবরের নিকট উৎসব করা নিষেধ, কবরে বাতি জ্বালানো নিষেধ ইত্যাদি সহীহ হাদিসের নিষেধ করা কাজগুলোই মুসলমানরা করে থাকে। হাদিসে যতগুলো বিষয় নিষেধ করেছেন নবীজি সাঃ, সেই সবগুলো কাজই পীরদের মাজার ও দরগায় করা হয়ে থাকে। আগে উসিলার বিধান জানতে হবে? নিজে জানা না থাকলে যারা জানে তাদের কাছে দলিল সহকারে জিজ্ঞেস করতে হবে।
সূরা মায়িদাহ-৩৫> হে মুমিনগণ! আল্লাহ্কে ভয় কর, তাঁর নৈকট্য পাওয়ার উসিলা তালাশ কর এবং তাঁর পথে জেহাদ কর যাতে তোমরা সফলকাম হও।
সূরা বানী ইস্রাইল-১৭:৫৭> যাদেরকে তারা আহবান করে (অর্থ্যাৎ কোন ব্যক্তি যেমন ঈসা আঃ, কোন বড় পীর ইত্যাদি), তারা নিজেরাই তো তাদের পালনকর্তার নৈকট্য লাভের জন্য ““উসিলা”” তালাশ করে যে, তাদের মধ্যে কে নৈকট্যশীল। তারা তাঁর রহমতের আশা করে এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় করে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার শাস্তি ভয়াবহ।
***************************************************
আমরা জানি না কে সৎ পথে আছে, আর কে পথভ্রষ্ট
সূরা নাজম-৩০> নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ভাল জানেন, কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে।
নবী সাঃ কি কারো ভাল করার ক্ষমতা রাখতেন যেমনভাবে বর্তমানের পীররা ভাল করার ক্ষমতা রাখে?
সূরা আরাফ-৭:১৮৮> আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের উপকার এবং অপকার করার ক্ষমতা রাখি না, কিন্তূ যা আল্লাহ্্ চান।
সূরা ইব্রাহিম-১২> আমাদের আল্লাহ্র উপর ভরসা না করার কি কারণ থাকতে পারে, অথচ তিনি আমাদেরকে আমাদের পথ বলে দিয়েছেন।
নবী সাঃ যেখানে নিজের ভাল বা মন্দ করার ক্ষমতা রাখেন না সেখানে বর্তমানের পীরগণ মুরিদদের যাবতীয় সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন।
সূরা ইউনুস-১০৬> (হে রাসুল! আপনি বলে দিন) আমার প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নিকট দু’আ/প্রার্থনা করবে না, যে তোমার ভালও করবে না, মšদও করবে না। বস্তূুত: তুমি যদি এমন কাজ কর, তাহলে তখন তুমিও জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
=============================================
নবী সাঃ কি কাউকে হেদায়েত দিতে পারতেন যেভাবে পীরগণ দিয়ে থাকেন?
সূরা ক্বসাস-৫৬> (হে নবী) তুমি যাকে ভালবাসে, তুমি চাইলেই তাকে হেদায়েত দিতে পারবে না, তবে আল্লাহ্ তা'আলাই যাকে ইচছা হেদায়েত দেন। কে সৎপথে আসবে, সে স¤পর্কে তিনিই ভাল জানেন।
নবী সাঃ যেখানে নিজের ভালবাসার পাত্র/প্রিয়জনকে হেদায়েত দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না সেখানে বর্তমানের পীরগণ হেদায়েত দিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়।
নবী সাঃ এর কাজ হলোঃ-
সূরা মায়িদাহ-৫:৬৭> হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে (অর্থ্যাৎ কোরআন ও সহীহ হাদিস)।
সূরা আলা-৯-১২> উপদেশ ফলপ্রসু হলে উপদেশ দান করুন, যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে, আর যে, হতভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে।
তবে বর্তমানের পীরগণ জান্নাতের সুসংবাদও দিয়ে দেয়।
নবী সাঃ জানেন না উনার সাথে কি ব্যবহার করা হবে?
সূরা আহকাফ-৯> (হে নবী, বলুন) আমি জানি না আমার সাথে কি ব্যবহার করা হবে এব ং আমি জানি না তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে। আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয় (অর্থ্যাৎ কোরআন ও সহীহ হাদিস)।
যেভাবে নবী সাঃ নিজেই জানেন না তার সাথে কিরূপ ব্যবহার করা হবে সেখানে বর্তমানের পীরগণ নিজেদের স্বপক্ষে জান্নাতের সুসংবাদ তো দেয়ই বরং মুরীদদের ব্যাপারেও জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে থাকে। আর মুরিদরাও এমন আক্বিদা রাখে যে তাদের পীর জান্নাতি।
আর মুরিদরাও এমন আক্বিদা রাখে যে তাদের পীর জান্নাতি।
আর মুরিদরাও এমন আক্বিদা রাখে যে তাদের পীর জান্নাতি।
আর মুরিদরাও এমন আক্বিদা রাখে যে তাদের পীর জান্নাতি।
**************************************************
যারা বলে নবী সাঃ সর্বত্র বিরাজমান তাদের দলিল হলোঃ-
সূরা আহযাব-৪৫> হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষীরূপে, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।
এ আয়াত দিয়ে বিদআতীরা বলে যে চোখে না দেখলে স্বাক্ষী হয় কিভাবে? নবী সর্বত্র বিরাজমান এবং সবকিছূ দেখেন বলেই তিনি স্বাক্ষীরূপে আমাদের জন্য স্বাক্ষ্য দিবেন।
তাদের এই বক্তব্য যৌক্তিক। তবে এই ব্যাখ্যাটা মিথ্যা ও নিজ মনগড়া। কারণ আল্লাহ কোরআনে শুধু নবী সাঃ কেই স্বাক্ষী বলেন নাই, বরং আমাদেরকেও স্বাক্ষী বলেছেন।
সূরা হাজ্জ-৭৮> রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষী এবং তোমরা সাক্ষী মানবজাতির জন্যে।
রাসূল সাঃ স্বাক্ষী হওয়ার জন্য যদি সর্বত্র বিরাজমান হতে হয়, তবে নিয়মমাফিক আমরাও তো সর্বত্র বিরাজমান হওয়ার কথা। আমরা প্রতিটা ব্যক্তি কি সর্বত্র বিরাজমান। কখনোই না। আমরা এক জায়গায় থাকলে জানি না অন্য জায়গায় কি হচ্ছে।
=============================================
এখন প্রশ্ন জাগে আল্লাহ কেন বললেন যে নবী সাঃ স্বাক্ষী এবং আমরা মুমিনরাও স্বাক্ষী?
এর উত্তর আছে নিচের হাদিসে-
আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, কিয়ামতের দিন নূহ আঃ কে ডাকা হবে। তখন তিনি উত্তর দিবেন এ বলে যে, হে আমাদের রব, আমি আপনার পবিত্র দরবারে উপস্থিত। তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, তুমি কি আমার বাণী লোকদের নিকট পৌছে দিয়েছিলে। নূহ আঃ উত্তর দিবেন, হ্যা। এরপর আল্লাহ তায়ালা নূহ আঃ এর উম্মতদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে, নূহ আঃ কি তোমাদের নিকট আমার বাণী পৌছে দিয়েছে। তারা তখন বলবে, আমাদের কাছে কোন সতর্ককারী আসে নাই। তখন আল্লাহ তায়ালা (নূহ আঃ কে) বলবেন, তোমার দাবীর পক্ষে স্বাক্ষী কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ সাঃ ও তার উম্মত গণ। তখন তারা (অর্থ্যাৎ মুহাম্মদ সাঃ ও তার উম্মত) স্বাক্ষী দিবে যে নূহ আঃ তার উম্মতের নিকট আল্লাহর বাণী প্রচার করেছেন এবং রাসূল সাঃ তোমাদের প্রতি স্বাক্ষী হবেন। (বুখারী-৭ম খন্ড, ইফা, তাফসীর অধ্যায়, হাদিস নং-৪১৩৫)
এ পর্যায়ে বিদআতীরা বলে উঠে যে নবী সাঃ এর জন্ম যদিও পরে, তবে তিনি নূহ আঃ সময় উপস্থিত ছিলেন এবং দেখেছেন? কিন্তু তাদের যুক্তিও বাতিল। কারণ আল্লাহ বলেন-
সূরা আল ইমরান-৪৪> আর আপনি তো তাদের কাছে ছিলেন না, যখন প্রতিযোগিতা করছিল যে, কে প্রতিপালন করবে মারইয়ামকে এবং আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা ঝগড়া করছিলো।
সূরা ক্বসাস-৪৪> মূসাকে যখন আমি নির্দেশনামা দিয়েছিলাম, তখন আপনি পশ্চিম প্রান্তে ছিলেন না এবং আপনি প্রত্যক্ষদর্শীও ছিলেন না।
সূরা ক্বসাস-৪৫> আপনি মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে ছিলেন না যে, তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করতেন।
সূরা ক্বসাস-৪৬> আমি যখন মূসাকে আওয়াজ দিয়েছিলাম, তখন আপনি তুর পর্বতের পার্শ্বে ছিলেন না।
মূলত আল্লাহর রাসুল সাঃ আল্লাহর থেকে প্রাপ্ত ওয়াহী দ্বারাই এই স্বাক্ষী দিবেন এবং আমরাও যখন নূহ আঃ এর পক্ষে স্বাক্ষী দিব, তখন সেটাও হবে কোরআনের ওয়াহীর দ্বারা প্রাপ্ত বাণী।
আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।