শিরোনামে কারো আপত্তি থেকে থাকলে দয়া করে লেখাটি না পড়ার অনুরোধ রইলো।
ইসলামের কতবড় স্পর্ধা ইসলাম পুরুষকে পর নারীর দিকে তাকাতে নিষেধ করে, পর নারীর দিকে তাকানোকে পাপ হিসেবে বিবেচনা করে! পুরুষেরা নারীর দিকে তাকাবে, নারীর রূপ দেখবে, এটাইতো প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হওয়ার কথা। কিন্তু একি বলছে ইসলাম? কিসের বাণী শোনাচ্ছে? ইসলাম ধর্মে নারীকে বোরখা পড়তে বলা হচ্ছে, হিজাব পড়তে বলা হচ্ছে, নিজের স্ত্রীকে পর পুরুষের সামনে ঘোমটা দিয়ে যেতে বলা হচ্ছে, এগুলো পালন করলে কি নারীর হাত, পা, উরু, পেট, উপরন্তু নারীর রূপ দেখা সম্ভব?
নারীর প্রতি দুর্বল কতিপয় লুল পুরুষ এটা নিয়ে গবেষণা শুরু করলো এবং গবেষণার ফল থেকে তারা উপলব্ধি করলো যেহেতু কোনো ধর্মই মানুষকে সরাসরি পাপ করতে বলেনি, আর ধর্ম যেহেতু নারীকে ভোগ করার ব্যাপারে নিয়ম কানুন বেধে দিয়েছে সুতরাং ধর্মের অনুসারী হয়ে এই পাপ করা অসম্ভব।
কৌশলে এইসব লুল পুরুষেরা ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওরাতে শুরু করলো। নারীর অধিকার আদায়ের ব্যাপারটি নিয়ে লুল পুরুষেরা নারীর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করলো। কতিপয় নারীকে তারা বোঝাতেও সমর্থ হলো, ’কোনো ধর্মই নারীকে সম্মান দেয়নি, অধিকার দেয়নি!’ নারীকে বোঝানো হলো বোরখা অথবা হিজাব পড়লে নারীর অধিকার রক্ষিত হয় না। নারীকে বলা হলো তোমরা যদি আধুনিক হতে চাও তবে এইসব শৃঙ্খল খুলে ফেলো। সমান সমান অধিকার আদায়ে নারীদেরকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করা হলো। লুল পুরুষ পুরোপুরি স্বার্থকও হলো, কেনোনা প্রথমত তারা নারীদের কাছ থেকে সমর্থন পেল এবং দ্বিতীয়ত তারা নারীর সঙ্গও পেল।
প্রিয় নারীগন, আপনাদেরকে বলি, অধিকার দেয়ার নাম করে এইসমস্ত লুল পুরুষ আপনাকে বিবস্ত্র করা ছাড়া কিছুই করতে পারবে না। উন্নত বিশ্ব যেভাবে নারীকে পন্য বানিয়েছে এরা আপনাদেরকে সেভাবেই পন্য বানিয়ে ছাড়বে। অধিকার আদায়ের নাম করে রাত বারোটার পর আপনাদেরকে মোস্তফা সারোয়ার ফারুকীর লিটনের ফ্লাটে নিয়ে যাবে এইসব লুল পুরুষ।
এইসব লুল পুরুষেরা আধুনিক সমাজের কথা বলে, অথচ তাদের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয় এই আধুনিক সমাজের মডেলটা কেমন হবে, কি কি বৈশিষ্ট হবে, আদৌ কি পৃথিবীতে এই আধুনিক সমাজটা আছে কিনা, তখন তারা নিরব থাকে।
একটি মজার ব্যাপার হলো এইসব লুলরা বোরখা এবং হিজাব পড়াকে শৃঙ্খল বলছে অথচ হাতের চুড়ি, কানের দুল, নাকের নোলক অথবা পায়ের নুপুরকে এরা শৃঙ্খল বলছে না। আরও একটি মজার ব্যাপার হলো এইসব লুলরা বলছে নারীকে পিছিয়ে রেখে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়, আমিও এই কথার সাথে একমত, কিন্তু যেদেশে ৫০ হাজার এ+ পাওয়া শিক্ষার্থীকে ভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ করে দিতে আমরা পারছি না, যেদেশে শিক্ষিতরা ঘরে ঘরে বেকার হয়ে বসে আছে, সে দেশের জন্য কতখানি যুক্তিসঙ্গত এই যুক্তিটি?
আমি নারীদেরকে বলছি না ইসলামের দেয়া নির্দেশিতো পথে চলতে, আমি বলছি না বোরখা অথবা হিজাব পড়তে, আমি শুধুমাত্র লুল পুরুষদের প্রতারণা সম্পর্কে আপনাদের সচেতন করতে চাইছি। অধিকারের নাম করে লুল পুরুষেরা আপনাকে শুধু বিবস্ত্রই করবে, যেমনটা করেছে উন্নত বিশ্ব। আপনাকে পণ্য বানাবে, লুল পুরুষের ভোগ্যসামগ্রীতে পরিনত করবে, একসময় আপনাদেরকে ব্যবহার করে পর্ণ বানানো হবে। এখানে ছোট্ট একটা তথ্য দেই, ইউএসএ তে প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি করে পর্ণ তৈরী হয়, প্রতিবছর কয়েকশ মিলিয়ন ডলার আয় হয় এই পর্ণ ইন্ড্রাস্ট্রি থেকে। দেশের উন্নয়নে কি এভাবে অবদান রাখতে চান আপনারা? যে ইউএসএ নিজেদেরকে আধুনিক ও সভ্য দাবি করে সেই ইউএসএ তে ১৬ বছরের আগেই কিশোর কিশোরীরা ভার্জিনিটি হারায়!! বাকিটা ইন্টারনেট ঘাটলেই পাবেন।
ধর্ম আর্ভিভাবের পূর্বে নারীদের অবস্থানটা কিরকম ছিলো সেটাও জেনে নেওয়ার অনুরোধ রইলো সবার কাছে। এটা মনে রাখবেন, জোর করে যেমন ভালোবাসা হয়না, তেমনি জোর করে কাউকে ধর্মের প্রতিও আকৃষ্ট করা যায় না। আপনার কাজের দ্বারা মুগ্ধ হয়ে কেউ হয়তো আপনার ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে।
শেষে এটুকুই বলবো, সম-অধিকার বলতে পৃথিবীতে কিছুই নেই। অধিকারকে দাড়িপাল্লায় মেপে সমানভাবে ভাগ করে দেয়াও অসম্ভব। কোথাও নারীরা সুযোগ-সুবিধা বেশী পাবে, কোথাও পুরুষেরা সুযোগ-সুবিধা বেশী পাবে, এটাই স্বাভাবিক। সম-অধিকার নয়, বরং সুষম অধিকার আদায়ে আপনারা আন্দোলন করুন, লুল পুরুষদেরকে বর্জন করুন এবং কোনটা অধিকারের মধ্যে পড়ে তা নির্দিষ্ট করুন।
ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:১৭