আমরা প্রথম যেদিন সুইডেনে আসি, সেটাছিল ডিসেম্বরের একত্রিশ তারিখ জিয়া আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর দুইটায় ফ্লাই করে জানুয়ারীর এক তারিখ সকাল দশটায় ষ্টকহোমের অরল্যান্দা এয়ার পোর্টে ল্যান্ড করি ( মাঝখানে অবশ্য ব্যাংককে আট ঘন্টার ট্রানজিট ছিল) এয়ারপোর্টের দরজা ঠেলতেই এমন ঠান্ডা এসে গায়ে লাগলো ( অবশ্য শীতের পোষাক গায়ে জরানো ছিল) ওমা বলে চিৎকার করে উঠলাম। এরপর যেদিকেই তাকাই শুধু সাদা আর সাদা। আসার আগে এদেশের শীত আর স্নো সম্পর্কে বড়দের কাছে শুনেছি কিন্ত শীত যে এতটা ভয়াবহ হতে পারে আর স্নো যে কেমন তাতো ধারনা করতে পারি নাই এত ছোট বয়সে । স্নো যে এত সাদা আর এরকম জরো হয়ে আছে কি ভাবে ভেবে যেমন অবাক হচ্ছিলাম তেমনি এত সাদা দেখে মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়েও ছিলাম।
২ : স্নোতে ঢাকা রাস্তা
স্নো দেখে তো মুগ্ধ হলাম কিন্ত বাসায় আসতে না আসতেই কেমন অন্ধকার হয়ে গেল ,ফ্রেশ ট্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুমাইলাম , সেই রাত কি আর শেষ হয়!! কখন রাত আর কখন দিন বুঝতেই পারি না ।এমনিতেই আব্বু আম্মুকে ছেড়ে এসেছি কিছু ভালো লাগে না তার উপর এরকম অন্ধকার কি ভালো লাগে ।
৩ : মধ্য দুপুর
দুপুর দুইটার যদি এই অবস্থা হয় তাহলে সকাল আর বিকালের অবস্থা কেমন হতে পারে ।
সুখে আর দুখে সময় বয়ে যায় তার গতিতে , আস্তে আস্তে দিনগুলো বড় হল আর এপ্রিল মাস আসতেই চারিদিক সবুজ হতে লাগলো আর মে মাসে নানা রংগের ফুলে , ফলে আর ঘন সবুজে সেজে উঠলো সুইডেন সাথে সূর্যমামা এত আলো দিতে লাগলো অন্ধকার আমাদের কাছেই আসতে চায় না।
৪ : আলো ঝলমল
এই ছবিটা দুই রাত সারে আটটায় তোলা ।
৫ : কখন রাত হবে!!
এটা ব্লাটিক সমুদ্র পারে গত কালকে ঠিক দশটায় তোলা।
৬ : এখনো হয়নি সকাল
এই ছবিটা ভোর পাচটায় গত সপ্তাহে তোলা । সবার উপরের ছবিটা আর ছবিটা একই জায়গা পার্থক্য শুধু সময়ের । এটা আমাদের বাসার পিছনে।
৭ : পাকনা পোলা
টা একটা ট্রাফিক সিগনালের ছবি । সবাই ভাবতে পারেন এটার ছবি দেওয়ার আবার কি মানে ! আছে, আছে তা এবার বলছি , মাত্র কয়েকদিন আগে আমি হেঁটে যখন এই সিগন্যালটা পার হবো আমার সামনেই ছিল এক ভদ্রমহিলা সাথে তার পাচঁ ছয় বছরের ছেলে ট্রাফিক লাইট লাল ছিলো, কিন্তু কোন গাড়ী ছিল না , মা এক পা আগাতেই ছেলে তাকে পিছন থেকে টেনে ধরে বল্ল মাম্মা তুমি দেখছ না লাল লাইট জ্বলে আছে?
মা, কিন্ত কোন গাড়ি তো নেই !!
ছেলেটা বলে , গাড়ি নেই তবু তুমি যাওয়া যাবে না , এখন তুমি যদিও এটা করো তোমার পিছনে যে আছে সেও করবে — তাহলে কি হল শুধু তুমি আইন অমান্য করছ না আরেক জনকে শিখাচ্ছো।
- ভদ্র মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিল এরপর ছেলের হাত ধরে হয়েছে,হয়েছে পন্ডিতি ,এবার চল লাল লাইট এবার সবুজ হয়েছে । এত ছোট ছেলের কখাগুলো ভাবতে ভাবতে আমিও বাসায় এলাম । ( এই ঘটনা নিয়ে ব্লগে পোষ্ট দিব নিয়ত করেই এই ছবিটা তুলেছিলাম কিন্ত দেওয়া হয়নি , তাই এখন দিয়ে দিলাম)
সুইডেন পাহাড়ের দেশ , পাথরের এই পাহাড় সবুজ অরণ্যে ভরা । শক্ত পাথরের বুক ফুরে বের হয়ে একেকটা বড় বড় গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে । এই শক্ত পাহাড়ের বুকে গাছ ফুল লতা পাতা দেখে অবাক যেমন হতাম তেমনি উৎসাহিত হতাম । একটা শক্ত পাহাড়ের বুক চিরে যদি গাছ তার লক্ষে পৌছতে পারে, তাহলে আমি কেন পারবো না। আমার প্রয়োজন শুধুলক্ষ স্থির করা সেই অনুযায়ী চেষ্টা করা।
৮ : পাথরের বুকেফুরে গাছ ছুঁতে চায় আকাশ
মানুষ যেমন জোড়া বেধেঁ থাকতে চায় , পশু, পাখি , গাছ গাছালিরাও তেমনি জোড়ায় চলতে চায় আর আমার জোড়া সবকিছু দেখতেও ভালো লাগে । তিন বছর আগে সামারে আমরা মুরগী এনেছিলাম তিন মাসের জন্য এগুলো হল সেই মুরগী, অনেকগুলো ডিমও পেরেছিলাম । মুরগীদুটো বেশী সময় এরকম একসাথে থাকতো ।
৯ : ভালোবাসায় জরিয়ে রাখবো
১০ : লাইনে সোজা করে দাড়াও
১১ : কি রে বন্ধু কেমন আছিস ?
সামারে সুইডেনের রাস্থা ঘাটে সব খানেই নানা র্ংগের ফুলের সমাহার দেখে চোখ মন দুটোই ভরে যায় । আমি প্রতি বছর এই সময়ে সময় পেলেই ফুল কুড়িয়ে আনি ঘর সাজানোর জন্য ।
নিচের এই ছবিটাই শুধু আমার নিজের তোলা নয় এই ফুলের বুকেটাও আমি নিজ হাতে বানিয়েছি কুড়ানো ফুল দিয়ে ।আর এটা আমি আমার অত্যান্ত প্রিয় একজন মানুষ যে আমাকে এই পোষ্ট দিতে উৎসাহিত করেছেন আমার ভাপু মলাসইলমুইনার জন্য।
১২ : উপহার
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১২