কিন্তু পাগলটা ভয়ংকর দর্শন হলেও আচারে ব্যাবহারে মোটেই ভয়ংকর ছিলোনা। আমার দিকে চোখ পড়তেই সে খুবই প্রফুল্ল বদনে এক গাল হাসি দিলো।এত হাসিমুখের পাগল দেখেও আমার মনে বিন্দুমাত্র শান্তি আসলোনা কারন পাগলের হাতে ইয়া বড় এক ইটের টুকরো ছিলো।
সে আমার দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বল্ল "নাচ দেখবি?"আমি পাগলের কথায় উত্তর দেবো কি? আমি তো একবার ভয়ে ভয়ে ওর হাতের দিকে আর একবার অনতি দূরে রাখা আমার গাড়ীর দিকে তাকাচ্ছি।কি করে ছুট লাগাবো ভাবছি আরও সাথে সাথে মনে মনে ভাবছি হায় খোদা এই পাগলে জানলো কি করে যে নাচ আমার হবি???
পাগল আমার সন্মতির অপেক্ষা না করেই শুরু করলো তার নাচ। আমি তো অবাক কোনো নাচের স্কুল ছাড়া এই পাগল নাচ শিখলো কিভাবে। সে একটা জনপ্রিয় বাংলা গানের সাথে নাচ করছিলো। গানটা ছিলো "ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু"।আমি তার নাচের সুযোগে একটু করে পিছু হটছিলাম।পুণরায় হটকেক দোকান টাতে ঢুকে যাবার অভিপ্রায়ে।
সে মগ্ন হয়ে নাচ করতেই লাগলো আর আশে পাশে কতগুলো কৌতুহলী লোকজন জড়ো হয়ে গেলো।আমি সুযোগ বুঝে ফুড়ুৎ করে ঢুকে গেলাম হটকেকে আবারো। সাথে সাথেই কানে আসলো হইচই।
ফিরে দেখি শিল্পরসিক এই পাগলের নাচ না দেখায় উনি খুবই নাখোস হয়েছেন আর হাতের বেশ বড় সড় ইটের টুকরোটি সজোরে ছুড়ে মেরেছেন রাগে দিগ্বিদিগ গিয়ান শুন্য হয়ে।ছুড়বার আগে যেহেতু পাগলেরা কোনোদিকে তাকায়না।কারো কেয়ার ও করেনা সেইহেতু সেই ইটের টুকরোটি গিয়ে লেগেছে এক গাড়ীর কাঁচে।
হই চই রাগের মাথায় সেই গাড়ীর ড্রাইভার গাড়ী থামিয়ে নেমে আসলো ভাবখানা আজ পাগলের পাগলামি ছুটিয়ে ছাড়বেন। কিন্তু ততক্ষণে পাগলের হাতে দ্বিতী্য় ইটের টুকরোটি। তার ও ভাবখানা এমন যে কাছে আসলে ড্রাইভারের বেটা তোরও ডকটর সাজার সাধ আজ মিটিয়ে দেবো।
ড্রাইভার পাগলের উগ্র মূর্তি দেখে ডক্টর সাজার সাধ অপূর্ণ রেখেই পুনরায় গাড়ীতে ফিরে গেলেন।আর পাগল ও কি মনে করে পাগলামি দেখায় জড়ো হওয়া উপস্থিত দর্শকদের কে ছেড়ে উদ্দেশ্যহীন গন্তব্যে পা বাড়ালো।আমি কিছু পরে পাগলের অন্তর্ধান সম্পকে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গাড়িতে এসে উঠলাম।
(মনে পড়ে গেলো গত বছর কামাল আর্তাতুক রোডের এক দোকানের সামনে সাপওয়ালীর সাপ দেখিয়ে ভয় দেখানোর কথা। সে আরেক কাহিনী । আরেকদিন লিখবো।)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৪৫