বাগানে হরেক রকমের ফুলগাছ কিন্তু ছেলেবেলায় ঠিক ঠিক যেভাবে বাগানের কোথায় কোন ফুলের গাছ আছে , কোথায় কোন কোনে পিপড়ের ঢিপি আছে কিছুই অজানা ছিলোনা, এখন এই আমি খেয়াল করে দেখলাম কোথায় কি কি আছে আমার প্রতিদিনের এ বাগানে আমি নিজেও ভালো করে জানিনা।
বাগানের এক কোনে দেখলাম ছোট্ট একটা কৃষ্নচুড়া গাছ।ছোট্ট গাছটাতে ফুল ধরেছে।কিছুটা বনসাই বনসাই লাগছে। মজা লাগলো দেখতে । আর সাথে সাথেই মনে পড়ে গেলো একজনকে একদিন শোনানো একটি গানের কলি।"জানালা খুলে দেখি দাড়িয়ে আছো কৃষ্নচুড়া বনে......."
বাগানের এক ধারে সার করে লাগানো কয়েকটা দোলন চাঁপা।মনে পড়ে আমি যখন ক্লাস থ্রী/ফোরে পড়ি একদিন স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখেছিলাম মা কেটে ফেলতে বলেছিলেন সব দোলন চাঁপা গাছগুলি কারণ দোলন চাপা নাকি আগাছার মত বেড়ে ওঠে। কি ভিষন কেদেছিলাম সেদিন। আগাছার মত দোলন চাঁপার সাথে কোথায় যেন ছিলো এক দারুন সখ্যতা আমার।
চোখে পড়লো থানকুনি পাতা ।কাশী হলে রক্ষে নেই এই থানকুনি পাতার রস আমাকে খাওয়ানো হত জোর করে ধরে। বরই গাছ দেখে মনে পড়লো একসময় বেনী দুলিয়ে স্কুল যাবার বয়সে হঠাৎ বরই লবন মরিচ মেখে নয়তো পাটায় ভর্তা করে খাওয়া আমার এক প্রিয় সখ হয়ে উঠেছিলো।
হঠাৎ রাজামশাই এর কথা মনে পড়ে গেলো। চিন্তায় পড়লাম রাজামশায়ের এত ফুলপ্রীতি এর রহস্য কি? উনি ও কি আমার মত ছেলেবেলার ভোর বা ফুল বাগান কে মিস করেন?
আরো মনে পড়ে গেলো উনি কিছুদিন আগে এখানে হলুদ হলুদ একটি বড় বড় ফুলের ছবি দিয়েছিলেন। কি নাম লিখেছিলেন মনে নেই তবে ঐ ফুলটিকে আমি মুনিয়া ফুল বলে জানি। আমার স্পস্ট মনে আছে ছোট্ট বেলায় মালী চাচা আমাকে বলেছিলো এটা মুনিয়া ফুল আমি কিছুতেই মানিনি বলেছিলাম মুনিয়া তো পাখীর নাম ফুল হবে কি করে? তবুও আজো ফুলটা দেখলেই আমার ওই মালী চাচাকেই মনে পড়ে যার নাম ছিলো রঘু।
থোকা থোকা লাল লাল রন্জন ফুল দেখে আরো ভাবছিলাম রাজামশাই কি এই ফুলটার কথা লিখেছিলেন?এমনি কত শত ভাবনা যে মাথায় আসছিলো।
যাই হোক বাগান থেকে ফিরে এসে কম্পিউটারে বসলাম। ব্লগে এসে দেখি জটিল ঢাকার ভোরের কিছু অদ্ভুত সুন্দর ছবি দিয়েছে। তাই আজ সকালে আমার দেখা ভোর নিয়ে লেখার লোভটুকু সামলাতে পারলাম না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ৮:০২