somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউঃ Grave of Fireflies ( 1988)

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার দেখা এযাবৎ কাল পর্যন্ত সবচেয়ে হৃদয় স্পর্শী এ্যনিমেশন মুভি হলো Grave of Fireflies. যদি আমি আমার পছন্দের মুভি গুলোর তালিকা করি তবে সেখানেও এই মুভিটি তালিকার উপরের দিকে অবস্থান নিবে। শুধু আমার তালিকা নয়, বিশ্বের অনেক দর্শকের বেস্ট মুভি লিস্টে যে এই মুভিটি রয়েছে তা বুঝা যায় IMDB এর রেটিং দেখলে। এই মুভিটির IMDB এর রেটিং ৮.৫




Grave of Fireflies মুভিটি ১৯৮৮ সালের। বর্তমানের মতো তখনকার সময়ের এ্যনিমেশন টেকনলজি এতোটা উন্নত ছিল না, তাই এই মুভিটি কার্টুন এ্যনিমেশনে করা। মুভিটির পরিচালক Isao Takahata. এই মুভিটি নির্মিত হয়েছে জাপানের উপন্যাসিক Akiyuki Nasaka এর Grave of Fireflies উপন্যাস অবলম্বনে। Grave of Fireflies কে লেখকের আংশিক আত্মজিবনী মূলক গ্রন্থ বলা হয়। Grave of Fireflies উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেখক ছিলেন তরুন এবং তার ছোটবোন এই যুদ্ধে ক্ষুধার্ত অবস্থায় মারা যায়। মুলত এই কাহিনীকেই লেখক তার সুন্দর লিখুনির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন Grave of Fireflies উপন্যাসে।

Grave of Fireflies মুভিটিকে মূলত যুদ্ধ বিরোধী মুভি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুভির প্রধান দুইটি চরিত্র হলো - ১৪ বছরের বালক সেইটা (Seita) ও তার ৫ বছর বয়সের ছোট বোন সেটসুকো (Setsuko)।


মুভি শুরুর প্রধম ডায়ালগ হলো- September 21, 1945, That was the night I die. মুভির প্রথম ডায়ালগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে মুভির ঘটনা কাল দ্বিতীয় বিশ্ব যোদ্ধ সময়কার। হ্যাঁ… মুভিতে দ্বিতীয় বিশ্বযোদ্ধ চলাকালীন সময় ও যোদ্ধ পরবর্তী সময়ের জাপানের সাধারণ মানুষের দুঃখ, দূদর্শা ও ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। স্বল্প পরিসরে দুইটি চরিত্রকে উপজীব্য করে লেখক যে কাহীনিকে তুলে ধরেছেন সত্যিই তা অসাধারণ।


মুভির শুরুটা Sannoniya রেল স্টেশন থেকে । ১৪ বছরের বালক সেইটা ক্ষুধার জ্বালায় কতর, কোন মতে ধুকে ধুকে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চললে। মনে হচ্ছে যমদূত তার সমনে দাড়িয়ে আছে, যেকোন মূহুর্তেই তার জীবন অবসান ঘটবে। মধ্যরাতে, রেলস্টেশনের ঝাড়ুদার তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঝাড়ুদার তার মৃত দেহের পাশে একটি Fruit drop ক্যন্ডির এর খালি কন্টিনার পায়। ভিতরে কিছু নেই দেখে ঝাড়ুদার সেই কন্টিনারটিকে পাশের ঝোপ-ঝাড়ের দিকে নিক্ষেপ করে- ঠিক তখনই দেখা যায় সেইটা ও তার ছোট বোন সেটসুকো পাশাপাশি দাড়িয়ে এবং তাদের চারপাশে অসংখ্য জোনাকি পোকা আলোর বান ছড়াচ্ছে।

মুভিটা মূলত স্মৃতিচারণ মূলক- এর পর থেকে দেখা যায়, সেইটা যুদ্ধচলাকালীন সময়ের তার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে বর্ণনা করছে।

সেইটার মা, একজন গৃহীনি তিনি অসুস্থ বাবা জাপানের নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা। যুদ্ধের সময় সেইটার বাবা যুদ্ধ জাহাজে ছিলেন এবং সেইটার মা আমেরিকার বি-২৯ বিমান থেকে ফেলা ক্লাস্টার বোমায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরবর্তীতে তিনি মারা যান। এর পর থেকে সেইটা ও সেটসুকো এই শহরে একা হয়ে যান। নিজেদের জীবন বাচাতে তার দূর গ্রামে এক খালার বাসায় চলে যান। সেইটা সেখানে আশ্রয় নেন। সেইটা তার সকল টাকাপয়সা এবং কাপড়-চোপড় সব কিছুই তার খালার হতে তুলে দেন আশ্রয় ও খাদ্যের জন্য। কিন্তু খালা তাদের খুব একটা ভাল চোখে দেখতেন না। খাবার সংকটের দোহায় দিয়ে সেইটা ও সেটসুকোকে কম খাবর দিতে। মূলত এখান থেকেই এই দুই ভাই-বোনের প্রতি বৈশ্যমের শুরু। এর তারা নানা ভাবে খালার কাছে নিগৃহীত হতে শুরু করে। যখন এই বৈশম্য চরম পর্যায়ে পৌছায় তখন সেইটা এই বাড়ি ত্যগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা বাড়ি ছেড়ে - একটি টিলার পাদদেশে যুদ্ধের সেল্টার হিসেবে বিবেচিত একটি কুঠুরিতে আশ্রয় নেয়। দিনের বেলায়ই এই কুঠুরীতে খুব একটা আলো প্রবেশ করত না। রাতে দেখাগেল এই কুঠুরীটি ঘুটঘুটে অন্ধকার, কিন্তু বাইরে অসংখ্য জোনাকপোকা মিট মিটি করে আলো ছড়াচ্ছে। সেইটা ও সেটসুকো সিদ্ধান্ত নেয় এই জোনাকপোকা গুলো ধরে অন্ধকার কুঠুরীর আলোর ব্যবস্থা করবে। তারা দুই জন মিলে অনেক গুলো জোনাক পোক ধরে আনে, এই জোনাকপোকা গুলো অন্ধকার কুঠুরীর অন্ধকার দুর করে এক উজ্বল আলোর জগতের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু পরবর্তী দিন সেটসুকো অদ্ভুদ ভাবে খেয়াল করল যে সব জোনাকপোকা গুলো মারা গেছে…. সেই এই জোনাকপোকা গুলোকে বাইরে নিয়ে একটি স্থানে কবর দেয়। এই সময় সে তার ভাই সেইটা কে জিজ্ঞাসা করে… এত সুন্দর পোকা গুলোর জীবন এতো ছোট কেন?? তারা কেন মারা গেল??? মা কেন মারা গেল??? এই ভাবে তারা প্রতি রাতেই জোনাক পোক ধরত, এবং সকালে সেগুলোর এক একটা নতুন কবর রচিত হতো…

না , আর বলব না। এখন আপনারই দেখে নিন কি ভাবে সেইটা ও সেটসুকো তাদের জীবন এই কুঠুরীর মধ্যে কাটাল এবং তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল।
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×