মধ্যরাতে মশারীর ভেতর থেকে ব্রাজিলের খেলা দেখছি। চারতলায় থাকি, ওপরের ফ্ল্যাট থেকে কিছুক্ষণ পর পরই উল্লাস আর হাততালি শোনা যাচ্ছে। হ্যাঁ, মেক্সিকো’র গোলকিপার দারুন দক্ষতায় একের পর এক ব্রাজিলিয় আক্রমণ ঠেকিয়ে দিচ্ছে, আর সাদাশাড়ি-নীলপাড়ের সাপোর্টাররা উন্মত্ত হয়ে উঠছে। আর্জেন্টিনা গোল দিলেও হয়তো এরা এতো খুশি হয়না, যতটা খুশি হয় ব্রাজিল গোল খেলে বা মিস করলে।
সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে এই স্বেচ্ছাচারী দখলদারী আচরণ। একজন মিডিয়াম আর্জেন্টাইন পতাকা লাগালো, তো আরেকজন ম্যক্সি সাইজ ব্রাজিলের পতাকা উঠালো। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকে নয়, প্রতিপক্ষকে কতোটা ভালোবাঁশ দেয়া যায়, নিজের সমর্থনকে আরেক জনের ঘাড়ে কতোটা চাপানো যায়, সেটাই উদ্দেশ্য। সেই পতাকায় আবার সৌজন্যেঃ আবুল-বাবুল-কাবুলের নাম থাকে।
আমাদের দেশে দুইটা দল আছে, যারা সারা বছর নিজের বেডরুমের খবর না রেখে আরেকজনের বেডরুমে পারলে সিসিক্যামেরা লাগায়। সারা বছর না হলেও প্রতি চারবছর অন্তর সেই প্রেতাত্মা আমাদের ওপরও ভর করে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার সমর্থকের ছদ্মবেশে।
সমর্থক যেই দলেরই হই না কেন, সেটা ভেতরেই রাখি। যাদুমন্ত্ররের আসর বসেছে মনকে সম্মোহিত করার জন্য, সঙ্কুচিত করার জন্য না।