.......তারপর থেকে দিন বদলের পালায় একটা একটা দিন ঝরে পরে ।প্রচন্ড বৃ্ষ্টির মধ্যেও ঘুমাতে ইচ্ছা করে না সায়েক এর ।সকাল সাড়ে সাতটায় কোচিং ক্লাস কিন্তু এখন তো সাতটা দশ বাজে ।ধরপড় করে ঘুম থেকে উঠে কোনোমতে দাঁত ব্রাশ করেই সে তৈরি হয়ে পরে ।কোন টি শার্টটা পড়বে সেটাতো কালকে রাতেই ঠিক করে রাখা ছিল।এক দৌড়ে সে বের হল রাস্তায় আর পিছনে শুনতে পেল মা বলেই যাচ্ছে -নাস্তা খেয়ে যা বাবা ..।প্রতিদিন নাস্তা খাওয়াটা একটা ব্যপক ঝামেলা মনে হয় সায়েক এর ।কাজের বুয়ার হাতের রুটি সে খায় না ।কেমন জানি ঘিন্না লাগে যদিও সে শুচিবাই নয় তারপরও কিছু কিছু ব্যপারে তার চরম নাক শিটকানি আছে।এই যেমন মা এর হাতে রুটি না বানালে খাবে না ,কাজের লোককে নিজের আলমারি ধরতে দিবে না,গ্লাসে কারো হাতের দাগ লেগে থাকলে সে ঐ গ্লাসে পানি খাবে না ইত্যাদি ।
"মামা ফার্মগেট মোড়ে যামু তাড়াতাড়ি যায়েন"- বলেই একটা লাফ দিয়ে রিক্সাতে উঠল সে।প্রতিদিনের ব্যস্ত নগরী এই ঢাকা শহরের একই চেহারা দেখতে দেখতে একদম ফেড আপ সায়েক।রিক্সায় বসে দোকান গুলোর গ্লাসে সে নিজের চেহারা দেখে নিল বারবার।চুলটাও দেখে নিল পাশে সিগনালে থামা গাড়িটাতে ।একটু দাড়ি দাড়ি ভাবটা ভালোই লাগছে।তখন বাজে সাতটা পঁয়ত্রিশ।নেমেই দৌড়ে ঢুকল ক্লাসে ।গতকাল পড়া শেষ করেছে এই ক্লাসের।ওহ এটা কোন ক্লাস তাতো বলা হয়নি।সায়েক পড়ে ক্লাস নাইনে বিজ্ঞান বিভাগে ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যবরেটরি স্কুলে।এখন সে এসেছে এইমস কোচিং সেন্টারে ।এখানে সব বিষয়ে ক্লাস করানো হয়,নোট দেয়া হয়,পরীক্ষা হয়।সব ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় আর মেডিকেলের ভালো ভালো ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাস নেয় এখানে । ছাত্র হিসাবে সায়েক বেশ ভালো কিন্তু একটু আলসে এই যা সমস্যা।
ক্লাসে ঢুকেই মনটাতে একটা হু হু করা বাতাসের ঝাপটা লাগলো তার। যে মেয়েটার পাশে সে সব সময় বসত আজকে ঐ মেয়েটা আসে নাই ।কিন্তু এটা বাতাসের বইবার কারন নয়।কারনটা হল মাডাম এর চশমা বদল।ভারী ফ্রেমের চশমাটা বাদ দিয়ে একটা সুন্দর রিমলেস চশমা পড়ে এসেছে লাবনি ম্যাডাম।দেখতে খুব অসাধারন সুন্দরী না হলেও লাবনী ম্যাডাম অনেক কিউট।ঠায় দাড়িয়ে চশমা পড়া ম্যাডামকে দেখে একদম কালকে রাতে পড়া শীষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের নায়িকার মত লাগছে.....।
চলবে......।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ১২:৩২