জীবণ থেকে চলে গেছে একটি একটি করে ষাটটি বছর।
চোখের কোণে জমে ছিল যে সৃতিকথা
তা যেন আজও বুলেটের মত করে বিধে যায় বুকে।
তোমার মনে আছে হৈমি?
ক্যাম্পাসে সেই কৃষ্ণচূড়ার তলে
পাশাপাশি বসে ছিলাম দুই হৃদয়, এক বিকেলে
আমার হাতে ছিল সেই প্রজাপতির পাঁপড়ি জরানো একটা চিঠি
যা তোমায় আজও দেয়া হয়নি।
মুচকি হেসে তুমি বলেছিলে
তোমার এত ছেলেমানুষি কেন বলত, শুধু শুধু আল্লাদ কর।
আর আমি চোখ কুঁচকিয়ে বলেছিলাম-
তুমি একটা বুড়ি।
তুমি ছিলে নিছক একটা পাগলামি,
তোমার চোখের পলকে ছিল পাগলামি,
তোমার ঠোঁটে, কন্ঠে, এলোমেলো চুলে
এমন কি তোমার মৃত্তিকার মালাটাতেও
জরিয়ে ছিল পাগলামির চিহ্ন।
অথচ সেই পাগলামির ভেতরেও
কেমন যেন একটা উচ্ছাস খুজে পেয়েছিলাম,
কেমন যেন একটা মিল, একটা টান।
আমাকে তুমি বড়ই ভালবাসতে হৈমি।
আর আমিও তোমায় ভিষণ ভালবাসতাম।
অথচ কোত্থেকে হিংস্র এক পাশানের দল
হ্যাচকা টান দিয়ে নিয়ে গেল তোমায়,
গড়ে তুললো তাদের মত করে
তোমাকে বানালো নশ্বর এক জাগতিক লোভী।
সেদিন আমি কতবার কেঁদেছি-
সেই কৃষ্ণচূড়ার তলে বসে
যেখানে আমার পা’দুটো ছুয়ে যেতো তোমার পা’য়ে।
কতবার প্রলাপ বকেছি, সেজেছি পাগল
অথচ তুমি ছিলে নির্বাক, নির্দয় অন্ধ এক ভালবাসার দেবী।
এরপর কত দিন-মাস-বছর কেটে গেল
নিজেকে বুঝতে শিখলাম আমি,
জীবনকে বুঝতে শিখলে তুমিও।
একটা সময় বুঝতে পারলে
জীবণের অর্থ শুধু টাকা কড়ি-
আর সম্মানের মোড়ক দিয়ে আবৃত নয়।
স্বাধীনতার চেয়ে বড় সুখ আর কোথায় মেলে বল।
এখন কত টাকা তোমার -
হীড়ে, মুক্তা মানিক ভড়া ঠিকানা
অথচ সবকিছু যেন বন্দি করে রেখেছে।
যেন এক দ্বাসত্তের খাঁচায় বন্দি তুমি,
যেখানে নেই বাক স্বাধীনতা,
যেখানে নেই চলাফেরার স্বাধীনতা,
যেন হৃদয়টা একাকিত্তের অনলে পুরে
ডুমরে ডুমরে কাঁদছে এক নিরুপায় হতভাগীর।
জানো হৈমি,
আমার অর্ধাঙ্গি আমাকে ভিষণ ভালবাসে,
যে ভালবাসা আমি তোমার চোখে খুজেছিলাম
তার প্রাপ্তি যেন অন্য এক রমনীর আখিকোণে ঠাঁসা।
তবুও
কেন যেন তোমার পাগলামীটা ভিষণ মিস করি
এটাই বুঝি জীবনের খেলা, আরেক জীবনের অর্থ তাই না?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ৩:২৪