আমি বেসরকারী কলেজের একজন শিক্ষক। নিতান্তই শখের বশে এই পেশায় আগমন। স্বল্প বেতনে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন যাপন করি। অনেক টাকার লোভ আমার নেই, হয়তো পাবার সম্ভাবনা নেই বলে আঙুর ফল টক। আমার সতীর্থ বন্ধুরা বেশী বেতনে অন্যত্র চাকুরী করে। গ্রামে থাকি বলে শহরে জীবনের প্রতি এটা ঘৃণা সব সময় কাজ করে। এটা আমার হীনমন্যতাও হতে পারে।
গতমাসের বেতন এখনও আমরা পাইনি। এরই মাঝে আজকের খবরের কাগজে দেখলাম জুলাই মাসের বেতন হতে একদিনের বেতন কাটা হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য। হয়তো ভাবছেন, একদিনের বেতন এ আর এমনকি। আমাদের মতো স্বল্পবেতন ভুক ব্যক্তির জন্য ১দিনের বেতন অনেক কিছু। রোজার মাস চলে এসেছে। অথচ গতমাসের বেতনের কোন খবর নেই। কিভাবে যে বাজার করছি তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। আমাদের এই কষ্টের জীবন থেকে অনেকগুলো টাকা চলে যাবে পদ্মা সেতুতে। সেই পদ্মা সেতু নির্মাণ হবে কি না, নাকি মেয়াদ শেষ করার আগেই সরকার পরিত্যক্ত ঘোষণা করবে তার ঠিক নেই।
আশংকা করছি এজন্য যে, এই পদ্মা সেতু নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক কান্ড ঘটেছে। আমার প্রিয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সে কোন দলের সেটা আমার জানার বিষয় না। একজন মেধাবী ছাত্র অকালে চলে গেল এটাই কষ্ট। এজন্য সরকার তেমন কোন ব্যবস্থাই নিল না সেই সব হত্যাকারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে।
আবুল আবুলের জায়গাতেই থাকলো, সুরঞ্জিত চুরি করেও পার পেয়ে গেল। দপ্তর ছাড়াই মন্ত্রীর সকল সুবিধা ভোগ করছে। কাজ না করেই জনগণের টাকায় আরাম আয়েশ করছে। অথচ রোজার মাসে এসে আমাদের কৃচ্ছতা সাধন করতে হচ্ছে বেতন না পাওয়ায়।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সাহেব, আমার এই স্বল্প আয়ের সংসার থেকে একদিন কেন এক ঘন্টার বেতনও এই চোরদের হাতে তুলে দিতে চাই না। দরকার নেই আমার পদ্মা সেতুর।