আপনার কোম্পানীর ওয়েব সাইট তো তৈরি করে ফেলেছেন, তারপর কি করবেন ?
এখন আপনি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, কোয়ালিফাইড ট্রাফিক প্রয়োজন আপনার, কারন আপনার সেলস বা বিক্রয় বাড়ানোর জন্য এটাই আপনার জন্য বর্তমানে মুখ্য বিষয় হবে।
কিন্তু ভিজিটর কিভাবে আনবেন আপনার সাইটে ? সেটার জন্য এবার প্রয়োজন হবে আপনার ওয়েবসাইট মার্কেটিংয়ের।
সময়ের সাথে সাথে মার্কেটিংয়ের ধরন বদলে যাচ্ছে তাই বর্তমান সময়ের বিভিন্ন মার্কেটিং পদ্ধতির সর্ম্পকে একটা ধারনা নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিন আপনি কিভাবে এগোবেন।
ওয়েবসাইট মার্কেটিংয়ের কিছু পদ্ধতি নিয়ে নিচে ধারনা দেয়া হলো, ধারনা নিয়ে রাখুন, আপনার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
১. এসইও
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানুষের সার্চ করা কী ওয়ার্ডের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ভাবুন তো আপনি যখন কোন কিছু গুগলে লিখে সার্চ দেন তখন যে পেজ গুলো ওপেন হয় আপনি সাধারনত সামনের কয়েকটি পেজ ছাড়া খুব বেশী দূর কি যান? সম্ভবত না, অতএব আপনার ভিউয়ার অথবা কাষ্টমার ও যাবে না।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে গুগলে প্রথম পেজে নিজের ওয়েবসাইট কে দেখানোর সুযোগ তৈরি হয়।
যদি আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ না করেন, সেক্ষেত্রে হয়তো কয়েক মাস লেগে যেতে পারে আপনার কাঙ্খিত কাষ্টমার এবং ভিউয়ার পেতে। এসইও হয়তো আপনার কাজের ক্ষেত্রে একটু বেশী সময় লাগাবে কিন্তু সহজ ট্রাফিক এবং অনেক বেশী কাষ্টমার কে আপনি অনেক কম সময়ে নিজের কাছে নিয়ে আসতে পারবেন।
২. ব্লগিং এবং অতিথি ব্লগিং
আপনার ওয়েবসাইটের ব্লগে নতুন কোন মৌলিক ব্লগ লিখতে পারেন এবং অন্যকে ও লিখার আমন্ত্রন জানাতে পারেন। বড় বড় ব্লগসাইট গুলোতে আপনার সাইট নিয়ে পোষ্টিং দিতে পারেন, অন্য কেউকে দিয়ে লিখাতে পারেন যারা এই ধরনের ব্লগিং করেন। যে ব্লগগুলো অন্যের সাইটে দিচ্ছেন সেখানে আপনার সাইটের একটি লিংক দিয়ে দিতে পারেন এতে করে আপনি বেশ কিছু ভিজিটর বাড়াতে পারবেন।
৩. পিপিসি (পে পার ক্লিক)
পিপিসি ব্যবহার করে আপনি ইন্টারনেট অ্যাডভারটাইজিং করতে পারেন। আপনি গুগল এডওয়ার্ডসের মাধ্যমে আপনার ভিজিটর বাড়াতে পারেন। আপনি বাজেট ধরতে পারেন প্রতিদিন ৫ ডলার বা ৪০০ টাকা করে খরচ করবেন অথবা ১০ সেন্ট করে প্রতি ক্লিকে খরচ করবেন, সেক্ষেত্রে আপনি কীওয়ার্ড ঠিক করে দিবেন, সার্চ ইঞ্জিন আপনাকে সাহায্য করবে যখন কেউ এই কী ওয়ার্ড ধরে সার্চ করবে আপনার টার্গেট করা ভিউয়ারদের সামনে আপনার এ্যাড প্রকাশ করতে।
৪. রি-টার্গেটিং
আপনার সাইটের প্রত্যেক ভিজিটরের কম্পিউটারে একটি করে ট্র্যাকিং কুকি রেখে দিয়ে, রিটার্গেটিং অ্যাড কাজ করে, এর মাধ্যমে আপনার চলে যাওয়া ভিজিটরদের আবারও আপনার সাইট ভিজিট করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। এতে ৯৮% ভিজিটরের পুনরায় আপনার সাইটে ফিরে আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৫. ফেসবুক এ্যাড
১০ লাখের ও বেশী মানুষ প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহার করে এবং গড়ে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে এখানে সময় ব্যয় করে। সব দেশের সব ধরনের মানুষই এখন নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে অন্যান্য এ্যাড এর চেয়ে ফেসবুকে দেখা এ্যাড মানুষ বেশী মনে রাখতে পারে। ফেসবুক এ্যাডের মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট বয়সের, নির্দিষ্ট লোকেশনের, নির্দিষ্ট মানুষের কাছে এ্যাড দিতে পারবেন। ফেসবুক এ্যাড ও গুগল এ্যাডওয়ার্ডের মতোই। আপনি স্বল্প বাজেটের মধ্যে প্রত্যেক ক্লিকের উপরে পেমেন্ট করতে পারবেন।
৬.ইউটিউব
কিছু ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে পোস্ট দিতে পারেন, যখন কেউ এই কী ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ দিবে, ইউটিউব আপনার ভিডিও নিজে থেকেই দেখাবে ভিউয়ারকে। এর মাধ্যমে আপনি গুগল ইনডেক্সে যেতে পারবেন, আর অন্যরা কেউ যদি তাদের ব্লগে আপনার ভিডিও শেয়ার করে এর মাধ্যমেও আপনি কিছু ভিউয়ার পেতে পারেন। আপনার খেয়াল থাকতে হবে আপনার ভিডিওতে যেন ভিওয়ার কোথায় যাবে (আপনার ওয়েবসাইট), কিভাবে যাবে (লিংক) এবং কেন যাবে (ফ্রি কন্টেন্ট, ফি সার্ভিস ইত্যাদি) এ ধরনের একটা ম্যাসেজ থাকে।
৭.ই-মেইল মার্কেটিং
ই-মেইল মার্কেটিং, মার্কেটিং এর জন্য বেশ ভালো একটি উপায়। কয়েক বছর ধরে ই-মেইল মার্কেটিং বর্তমান এবং ভবিষ্যত কাষ্টমারের কাছে পন্য বিপনন করার বেশ শক্তিশালী এবং কার্যকরী একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ই-মেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট,কনটেষ্ট, নতুন পন্যের তথ্য প্রতিনিয়ত কাষ্টমারের কাছে আকর্ষনীয় রূপে পাঠাতে পারেন, প্রতিনিয়ত এই মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনেক অনিচ্ছুক কাষ্টমারকেই আপনি আপনার সাইটে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন। সেই সাথে চেষ্টা করুন নতুন ব্লগ পোষ্ট, নতুন ভিডিও আপলোড, নতুন কোন কনটেষ্ট রাখতে যেন সে বার বার আপনার সাইটে ফেরত আসতে চায়।
৮. ওয়ার্ড অফ মাউথ (ফোরাম/ফেসবুক ফ্যান পেজ)
ফেসবুক মুখের মাধ্যমে জয়গানের বেশ ভালো একটি স্থান। আপনি যখন কোন নতুন রেষ্টুরেন্টে যেতে চান অথবা নতুন কোন পন্য কিনতে যান অধিকাংশ সময়েই আপনি চেষ্টা করেন অনলাইনের মাধ্যমে বা আপনার পরিচিত কেউ থাকলে তার কাছে জেনে নিতে সেই রেষ্টুরেন্ট অথবা নতুন পন্য সম্পর্কে বিভিন্ন মানুষের মতামত কি, ভালো রেটিং, ভালো কমেন্টস নিশ্চয় আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, বর্তমান সময়ে ফেসবুক ফ্যান পেজ অথবা ফোরাম গুলো পন্যের জয়গানের জন্য বেশ কার্যকর স্থান।
অতএব চেষ্টা করুন ফেসবুক ফ্যান পেজ এ পোষ্টিং এর মাধ্যমে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়াতে, তাদের পজিটিভ রিভিউ পেতে, তাহলে পুরানো কাষ্টমারের আস্থা বাড়ানোর সাথে সাথে নতুন কাষ্টমার পাবার দরজা খুলে যাবে আপনার জন্যে।
৯.পি আর
আপনার প্রতিযোগীদের মাঝখানে নিজেকে আরও বেশী গ্রহন যোগ্য করার জন্য আপনার চেষ্টা থাকবে যতটা আপনার ব্রান্ডের সুনাম বাড়ানো। সাংবাদিকের মাধ্যমে পত্রিকায় আর্টিকেল লেখাতে পারেন যেখানে আপনার পন্য সম্পর্কে প্রশংসা করে, আপনার সাইটের সুবিধাগুলো সম্পর্কে মানুষকে আরো বেশী জানানোর সুযোগ পাচ্ছেন, এক্ষেত্রে আপনি প্রয়োজনীয় কোন বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে লিখাতে চান সেটা সাংবাদিক কে জানিয়ে দিতে পারেন।
এছাড়াও আপনার প্রতিযোগীরা কি ধরনের মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে সেই সর্ম্পকেও ধারনা নিন, তাদের ব্যবহার করা পদ্ধতি এবং আপনার জন্য সহায়ক হবে এবং কাষ্টমারের আরও বেশী দৃষ্টি আকর্ষন করবে এমন পদ্ধতিগুলো নির্ধারন করুন, তারপর মাঠে নেমে যান আপনার ওয়েবসাইট মার্কেটিং করার জন্য
আরো পড়তে চাইলে http://tipsoi.com/blog
ফেসবুক Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৯