অস্ত্র উচিয়ে মানুষ খুন করে। তা আবার পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। চ্যানেলে ভিডিও চিত্র দেখে সারা দেশবাসী। এই খুনীরাও আবার রেহাই পায় রাজনৈতিক বিবেচনায়। রাজনৈতিক হয়রানীমূলক মামলা বলে। তাও আবার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই।
হায়রে গণতন্ত্র!
এদিকে আজকের পত্রিকার শিরোনাম, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৪২জন আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।
শোনে বেশ ভালোই লাগলো।
সড়ক ও জনপথের এক কর্মকর্তার সাথে আমার বেশ হৃদ্যতা হয়েছিল কয়েক বছর আগে। তিনি একটু সহজ-সরল প্রকৃতির লোক। অফিসের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী তাকে নিয়ে একটু হাসি-তামাশাই করতো, বোকাপ্রকৃতির লোক বলেই।
কিন্তু আমার জানা মতে, ঐ কর্মকর্তার জায়গা কিনা থেকে শুরু করে শহরে বাড়ি করা হয়েছে খুব অল্পদিনেই।
এই কর্মকর্তা খুব আক্ষেপ করে বলেছিলেন, একটি সমস্যার কথা।
থানা থেকে তিনি একটি মামলা তুলেছিলেন, চল্লিশ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে।
তারই গাড়ির ড্রাইভার একদিন এসে বলে-স্যার আমাকে ১০ লিটার পেট্রোলের একটি স্লিপ দেন তো। এই কথা শুনে তিনি খুব রেগে গিয়ে বলেছিলেন-কাল তোমাকে ১০ লিটার তেলের স্লিপ দেওয়া হয়েছে, আজ আবার চাচ্ছ। যাও, বেরিয়ে যাও অফিস থেকে।
এরপর ড্রাইভার গাড়ির বেটারী বিক্রি করে দেয়। তিনি ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করতেই ড্রাইভার স্বাভাবিকভাবেই বলে আমি গাড়ির বেটারী বিক্রি করেছি।
ড্রাইভারকে সায়েস্তা করতে ঐ কর্মকর্তা থানায় মামলা করেন তার বিরুদ্ধে।
রাতে ড্রাইভার ঐ কর্মকর্তার বাসায় যায়। তিনি বলেন, মামলা হয়েছে। এবার তোমাকে আমি জেলের ভাত খাওয়াবো।
ড্রাইভার স্বাভাবিক বলে।স্যার, রাতে যদি আমার বাসায় পুলিশ আসে তাহলে আমার সাথে কিন্তু আপনাকে জেলে যেতে হবে। আমি তো একটি গাড়ির ব্যাটারী বিক্রি করেছি কিন্তু আপনারা...
আমি সব বলে দেবো।
তারপর...
ঐ বোকা কর্মকর্তা এখন কোটিপতি। সোনাপতি।
মাটির মানুষের সাথে তার আর কোন হৃদ্যতা নেই।
সড়ক-জনপথের বুদ্ধিমান কর্মকর্তাদের আজ পদোন্নতি হচ্ছে। যারা স্বীকার করেছে তারা দুর্নীতিবাজ।
শাবাশ বাংলাদেশ, শাবাশ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:৩২