হঠাৎ আমার নেট পরিচয়ের আরেক বন্ধু আমাকে বললো তারা নাকি নিজ গাড়ী নিয়ে ওমরা করতে যাচ্ছে। আমি বললাম আমিও যাব। এই বলে আমরা ৫ জন ২৩/০৮/১০ সোমবার বিকালে আছরের নামাজ পরে মক্কার উদ্দশ্যে রওয়ানা হলাম।
রাত প্রায় ২ টায় আমরা মক্কায় পৌছলাম। সেখানে ওমরা করলাম। পরের দিন সন্ধায় দেখি শারফু অনলাইনে আছে। আমি বললাম আমি তো মক্কাতে আছি। কোন জবাব পাইলাম না।
ভোরে সেহরী খেলাম অনেক পুরনো বন্ধু শহীদুল্লাহ কায়সার এর বাসায়। ওর আন্টি ফাটাফাটি তরকারী বানিয়েছিল। ৫/৬ আইটেমের তরকারী বহুদিন যাবত খাওয়া হয়নি। সেই যে কবে বাড়ি থেকে এলাম তার পর থেকে এত আইটেমের তরকারী কখনোও খাওয়া হয়নি। খাওয়ার পরে আংকেল আমাদের সাথে কিছুক্ষন গল্প করেছে। আমার সাথে ৫ জনের ৩ জন ই চট্টগ্রামের। তাই আংকেল নিজের এলাকার মানুষ পেয়ে ভালই গল্প জমালেন। শুধু আমি ও ইদরিস ভাই ছিলেন অন্য জেলার।
আংকেল এখানে ব্যাবসার সূবাদে আন্টিকে নিয়েই থাকেন।
যাইহোক সেহরী শেষে কায়সার থেকে বিদায় নিয়ে মদীনা যাওয়ার পথে শারুফু কল দিল। বললো আপনি যে সময় লাইনে ছিলেন সে সময় আমি রান্না করতে ছিলেন। বুঝলাম শারফু মাঝে মাঝে রান্না ও করে।
আমাকে বললো কার সাথে দেখা করার জন্য। আমি কথা দিলাম" ইনশাল্লাহ মদীনা থেকে ফেরার পথে দেখা করবো।
যথা ক্রমে আমরা রওযা জিয়ারত করে জেদ্দা চলে এলাম। কারন আমাদের ফেরার পথ জেদ্দা দিয়েই। সুতরাং শারফুর সাথে দেখা করা যাবে বলে আশাবাদী ছিলাম। জেদ্দা ঢুকে তো আমাদের দম বন্ধ হ্ওয়ার অবস্থা। একে তো গরম আবার ঘাম।শরীরের অলরেডি বারটা বাইজা গেছে আর লেবাসের তো তেরটা বাজছে। গাড়ীতে এয়ারকন ছিল না বলে এই সমস্যাটা বেশী হয়েছে।
জেদ্দা শহরে ঢুকার আগেই শারফুকে কল দিলাম। শারফু জায়গার নাম বললো আমরা ওখানে পৌছলাম। আমি কর্নিচ কমার্সিয়াল সেন্টারের ২ নং গেইটে দাড়ালাম। একটু পরেই আমার মোবাইলে কল দিল শারফু। রিসিভ করার আগেই দেখি শারফু পিছন থেকে বলতেছে " পাইছি পাইছি" হাসি মুখে আমার কাছে এল, দোজনে কোলকোলি করলাম।
ওকে দেখে মনে হয়নি যে এই প্রথম আমরা একজন আরেক জনকে দেখছি। মনে হয়েছিল আমরা হয়তো অনেক দিনের পরিচিত মানুষ।
শারফু কথার ফাকে ফাকে আমার দিকে তাকায় আবার আমিও শারুফুকে দেখি। বহুত হ্যান্ডসাম একটা পুলা। চোখে একটা চশমা লাগানো। বুঝা যাচ্ছিল না চশমাটা কি নাম্বার ওয়ালা নাকি জিরো নাম্বারের।
যাই হোক চশমাটা ওকে মানিয়েছিল। শারফু আমার দিকে তাকিয়ে থাকা দেখে আন্দাজ করতে পারছিলাম ও অল্প বয়সে আমার মাথায় চুল পড়া নিয়ে চিন্তা করতেছে।
আমি ওরে বুঝাইলাম বউ পাওন যাইবো না এই সংকা আমার ভিতরে নাই, কারন বিয়া তো কইরা ফালাইছি। বউ বলে ও নাকি আমার মনটারেই বেশী লাইক করে।
অবশেষে শারফুর কাছ থেকে বিদায় নিতে হলো। ইচ্ছে ছিল ওর সাথে অনেক্ষন গল্প করবো। তার পর শারফু থেকে বিদায় নিয়ে আমরা আমাদের গাড়ী নিয়ে চলে এলাম। ভাবতে লাগলাম আমারদের বন্ধুত্বের মিলনের ক্ষনটাকে। কোথায় ব্লগে পরিচয়, চ্যাটিং, মোবাইল নাম্বার নেয়া, কথা বলা, অবশেষে সরাসরি দেখা।