অসংখ্য ফুল-ফল আলিঙ্গন করে আছে আমাদের গ্রামকে। কিছু থাকে জানা, হাজারো থাকে অজানা। অজানাকে জানার মধ্যে অনেক আনন্দ , অনেক উতসুক তাহাতে বিরাজমান। এই অজানাকে জানতে গিয়ে নতুন এক সৌন্দর্যের দেখা মেলে।
মানুষ সাত সাগর তের নদী পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর সৌন্দর্য অবলোকন করতে চায়। কিন্তু ক্ষীণ সামর্থ্য আমাদের সেই ইচ্ছাকে সীমা টেনে দেয়। দেখা হয়না পৃথিবীর অপার সৌন্দর্যের লীলা। কিন্তু দেখতে জানলে যে আমাদের খুব কাছেই রয়েছে প্রকৃতির পরম সৌন্দর্য।
রবিন্দ্রনাথের ছোট কবিতাটি সহজেই মনে পড়ে-
‘বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দু পা ফেলিয়া
একটা ধানের শীষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু।’
গ্রামের পথ, আইল, বিল কিংবা জলে অসংখ্য ঘাসফুল তাহাদের মনোহরে আমাদের বরণ করে নেয়। সুবাস ছড়িয়ে মনে পুলক তৈরি করে প্রকৃতিতে হারানোর আকুল আহবান জানায়।
ছোট্র ঘাসের মাথায় ক্ষুদ্রপুষ্প হৃষ্টপৃষ্ট হৃদয়ে যেন চেয়ে তাহকে আমাদের দিকে। নানান রঙ বেরঙের ঠং সে ধারণ করে সৌরভ চাড়িয়ে শ্রীহীনতা ছেড়ে সুন্দর উদার হৃদয়ের দিকে অনুপ্রেরণা জোগায় আমাদের।
এই হাজারো ঘাস্ফুলের হাজারো নাম আমার কাছে এখনো অজানা। গ্রামের গেলে এই অজানা সৌন্দর্যকে খুজতে বের হই। সাথে থাকে তাদের ধারণ করার জন্য মুঠোফোন। এই ঘাস্ফুল্গুলো আমার কাছে বড় সেলিব্রিটি তাহাদের সান্নিধ্যে ফটোগ্রাফ না তুললে অর্থহীন হয়ে যাবে। তাই তাদের কেমরাবন্দী করার অপার সুযোগ মিস করিনা।
এই ঘাসফুলগুলোর মধ্যে কিছু গাছ গ্রামের লোকেরা শাক হিসেবেও খায়। গ্রামের নারীরা এই শাক তুলতে বিলের মধ্যে হন্ন হয়ে খুজে বেড়ায়।
এই ঘাস্ফুল্গুলো গ্রামের বিভিন্ন বগান এবং বিশেষকরে বিলের আঙ্গিনায় দেখা যায়। ধান কাটার পর অসংখ্য ঘাস জন্ম নেয় রোদ্রের উত্তাপ থেকে জমির আদ্রতাকে রক্ষার জন্য। আর এই ঘাসগুলোর মুন্ডে যোগ হয় বাড়তি সেনসেশন, সেটা হল নানান রঙের ফুল।
এই ফুল্গুলোকে দূর থেকে খালি চোখে দেখা যায় না, তাই তাদের সৌন্দর্য ও অনুভব হয় না। কাছেই গেলেই তাদের সৌন্দর্যের মনোহর বুঝা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১২