পৃথিবীর ভূত্বক কম্পিত হলে আমরা তাকে বলি ভূমিকম্প। ভূপ্ল্যাটগুলো স্বাভাবিক অবস্থান থেকে চ্যুত এবং পরস্পরের স্থান পরিবর্তন হওয়াকে ভূকম্পন সৃষ্টির প্রধান কারন হিসেবে ধরা হয়। তবে ভূমিকম্পের অন্যান্য কারনের মধ্যে রয়েছে অগ্নেয়গিরির লাভা উদগীরন, আকাশ থেকে উল্কা বর্ষন, ভারি কোন বস্তু ভূপৃষ্ঠে পতন ইত্যাদি।
ভূমিকম্প যেকোন জায়গায় যেকোন সময় ঘটতে পারে। মানুষ ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন থাকা এ কারনে অত্যান্ত জরুরী।
আসুন ভূমিকম্প সম্পর্কে বিরল কিছু তথ্য জেনে নেই
১। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা অনুযায়ী প্রতি বছর পৃথিবীব্যাপী ৩ মিলিয়নের অধিক মৃদু ভূমিকম্প সংঘটিত হয় যা অনেক সময় আমাদের কাছে অনুভূত হয় না। তবে ভূমিকম্পের মাত্রা বেশি হলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয় এবং মিডিয়া শুধুমাত্র তাই কভারেজ করে। এ থেকে বুঝা যায় যে প্রতিদিন পৃথিবীজুড়ে গড়ে প্রায় ৮০০০ ভূমিকম্প সংঘটিত হয় এবং প্রতি সেকেন্ডে ১১ টি।
২। ভূপ্ল্যাটগুলোর মৃদু নাড়াচাড়ায় ছোট মাত্রার ভূমিকম্প তৈরি হয়ে কয়েকমাস একটানা হতে হতে বড়মাত্রার ভূমিকম্পে রুপ নিতে পারে।
৩। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয় চিলিতে। রিকটার স্কেলে এর পরিমাপ ছিল ৯.৫। প্রায় ৬০০০ মানুষ এ ভূমিকম্পে নিহত হয় এবং অসংখ্য লোক আহত হয়। এ ভূমিকম্প একটি বড় সুনামি তৈরি করে হাওয়াই, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের সমুদ্র উপকূল ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৪। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল চিনে ১৫৫৬ সালে। যদিও এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ কিন্তু এ বিপর্যয় প্রায় ৮৩০,০০০ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়।
৫। প্রতিবছর পৃথিবীর ৮০% ভূমিকম্প সংঘটিত হয় ‘রিং অফ ফায়ার’ নামক অঞ্চলে যা প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় দেশসমূহ নিয়ে চিহ্নিত স্থান। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, চিলি, মেক্সিকো, কানাডা, পেরু, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা এই দেশগুলো ‘রিং অব ফায়ার’ এর অনর্ভুক্ত। এই অঞ্চলে সুপ্ত এবং সক্রিয় মিলিয়ে প্রায় ৪৫২ টি অগ্নেয়গিরি রয়েছে এ কারনে এই অঞ্চলের নাম দেওয়া হয়েছে “রিং অব ফায়ার’।
৬। প্রকৃতপক্ষে ভূমিকম্পে সরাসরি কোন ক্ষয়ক্ষতি হয় না। ভূমিকম্পের কারনে ভূমিধ্বস, ভবনধ্বস, হিম্বাহের পতন ইত্যাদি মানুষের মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রধানত দায়ী।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৫