somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

রোজা, অটোফেজি এবং মানব শরীরের প্রাকৃতিক সুস্থতাঃ

১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ অন্তর্জাল।

রোজা, অটোফেজি এবং মানব শরীরের প্রাকৃতিক সুস্থতাঃ

২০১৬ ইং সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন জাপানের অটোফেজি গবেষক ইয়োশিনোরি ওহশোমি। অটোফেজি প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা জিনটিকে শনাক্ত করেছিলেন টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গুণী এ অধ্যাপক।

অটোফেজি কি?

জীবদেহ কেমন করে ত্রুটিপূর্ণ কোষ ধ্বংস করে নিজের সুরক্ষা করে এবং কোষ কীভাবে নিজের আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে সুস্থ থাকে, সেই রহস্য বের করার কারণে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন এ বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানের ভাষায় এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় অটোফেজি।

রোজা পালনে অটোমেটিক হয়ে যায় অটোফেজির অনুশীলনঃ

প্রত্যেক রোজাদার রোজা রাখেন মহান আল্লাহ তাআ'লার নির্দেশ পালন করার জন্য। তাকে খুশি করার উদ্দেশ্যে। কোনো রোজাদারই অটোফেজি করার জন্য রোজা রাখেন না। হয়তো বলা অত্যুক্তি হবে না যে, অটোফেজি জিনিষটা যে কি, এখনও শতকরা পাঁচ বা দশভাগ মানুষ জানেও না। অন্ততঃ আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের চিত্র যে এমনই, তাতে বোধ করি কেউ সন্দেহ করবেন না। কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন? মজার বিষয় হচ্ছে, রোজা পালনের দ্বারা অটোমেটিক্যালি হয়ে যায় অটোফেজির সঠিক অনুশীলন। রোজাদার জানুক অথবা না-ই জানুক, রোজা পালনের মাধ্যমে তার হয়ে যায় সঠিক অটোফেজি। আর অটোফেজি শরীরকে ভাঙে না বরং গড়ে তোলে। আর অটোফেজির এই পদ্ধতিকে চালু করতে প্রয়োজন কিছুটা দীর্ঘ তবে সবিরাম উপবাস। যা রোজা রাখার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি করতে পারেন। তবে, আমাদের মনে রাখতে হবে, রোজা যেমন সুস্থ ব্যক্তির উপরে ফরজ বা বাধ্যতামূলক, অটোফেজির প্রয়োগও করা হয়ে থাকে কেবলমাত্র সুস্থ ব্যক্তির উপরে এবং এসব কিছুর পেছনে একটিই উদ্দেশ্য, আর তা হচ্ছে, সুস্থ ব্যক্তির সুস্থতাকে কিভাবে ধরে রাখা যায়। তো, নোবেলজয়ী অটোফেজি গবেষক ইয়োশিনোরি ওহশোমিসহ অন্যান্য যারা অটোফেজি নিয়ে কাজ করছেন, গবেষনা করে করে এতটা পথ মানবজাতির জন্য খোলাসা করেছেন তাদের প্রতি অভিনন্দন জানাতেই হয়। সঙ্গত কারণে বিগত দেড় হাজার বছর পূর্বে যখন আধুনিক পরীক্ষণ যন্ত্র, পরীক্ষাগার কিংবা চিকিৎসা বিজ্ঞান বলতে তেমন কিছুই ছিল না, সেই সময়ে প্রতি বছরে একটি মাস বা ত্রিশ দিন উপবাস থাকার যে বিধান ইসলাম ধর্মের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীবাসী লাভ করেছি, তাকে বিজ্ঞানসম্মত অথবা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে তুলনীয় না হয় না-ই বললাম।

শরীরে প্রাকৃতিক নিরাময়ের কৌশল খুঁজি যা রয়েছে রোজায়ঃ

আমরা সুস্থ থাকতে চাই। বেশি থেকে বেশি দিন সুস্থাবস্থায় বেঁচে থাকতে চাই। আর যারা নিতান্ত হতাশাবাদী বলে মনে করেন নিজেদেরকে, বেশি দিন বাঁচতে চান না, পৃথিবীর রঙ রস কোনো কিছুই যাদের ভালো লাগে না, তারাও চান যে, যত দিন বেঁচে থাকেন যেন সুস্থ থাকতে পারেন। আমরা শরীরে প্রাকৃতিক নিরাময়ের কৌশল খুঁজি যা রয়েছে রোজায়। জগতের অনেক জ্ঞানী, গুণী এবং বিখ্যাত ব্যক্তিই শরীরে প্রাকৃতিক নিরাময়ের ক্ষেত্রে একটিমাত্র অভিন্ন সমাধান দিয়েছেন। কী সেই সমাধান? উত্তর শুনলে হয়তো অনেকেই চোখ কপালে তুলবেন। সমাধানটি হচ্ছে ইন্টারমিটেন্ট ফ্যাস্টিং বা সবিরাম উপবাস। একাধারে দীর্ঘ সময় অনাহারী থাকা। খাদ্য পানীয় ইত্যাদি সকল কিছু থেকে বিরত থাকা। দূরে থাকা।

শরীরের মধ্যেই বসবাস করে প্রাকৃতিক ডাক্তারঃ

গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিসকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক বলা হয়ে থাকে। উপবাস নিয়ে চমৎকার একটি কথা বলেছেন তিনি। তার ভাষায়, 'আমাদের প্রত্যেকের শরীরের মধ্যেই বসবাস করে একজন ডাক্তার। আমাদের উচিত সেই ডাক্তারকে কাজ করতে দেয়া। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।'

তিনি আরও বলেছেন, 'খাবারই হওয়া উচিত আমাদের ওষুধ, ওষুধই হওয়া উচিত আমাদের খাবার। কিন্তু আমরা যখন অসুস্থ হই তখন যদি আমরা খাবার গ্রহণ করি তখন তা কিন্তু প্রকারান্তরে সেই অসুস্থতাকেই খাবার জোগান দেয়া হয়। শরীরের ডাক্তারকে কাজ করতে দেয়ার জন্য প্রয়োজন উপবাস, উপবাস করলেই শরীরের সেই ডাক্তার কাজ করতে পারে।'

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ, বহু বিদ্যাবিশারদ, গ্রন্থকার, রাজনীতিক, বিজ্ঞানী এবং কূটনীতিক বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের একটি বিখ্যাত উক্তি রয়েছে। তিনি বলেছেন, 'সবচেয়ে ভালো ওষুধ হচ্ছে উপবাস এবং বিশ্রাম।'

শরীরকে নিরোগ রাখার প্রাকৃতিক সমাধান সবিরাম উপবাস, যা রয়েছে রোজায়ঃ

সবিরাম উপবাস বা ইন্টারমিটেন্ট ফ্যাস্টিং প্রসঙ্গে আলোকপাত করার আগে আরও একটা বিষয়ে জেনে নেয়া ভালো, সেটি হচ্ছে ফ্যাস্টিং এবং স্টারভেশন কিন্তু এক নয়। স্টারভেশন মানে অপরিকল্পিত অনাহার যাতে অপুষ্টির ঝুঁঁকি থাকে। সবিরাম উপবাস বা ইন্টারমিটেন্ট ফ্যাস্টিং একটি পরিকল্পিত উপবাস, এর একটা নির্দিষ্ট ডিজাইন থাকে, নিয়ম থাকে তা সে যেমনই হোক। রোজা তেমন এক ধরনের উপবাস যা ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে মুসলমানরা পালন করে থাকেন। বলা বাহুল্য, শরীরকে নিরোগ রাখার প্রাকৃতিক সমাধান হচ্ছে, সবিরাম উপবাস। মানুষের শরীরটা এমনভাবে তৈরি যে, প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য শরীর খাবার সঞ্চিত রাখতে পারে। কেউ যদি টানা ১০-১২ ঘণ্টা উপোস থাকেন তখন লিভারে সঞ্চিত খাবার গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরে খাবারের চাহিদা পূরণ করে শক্তির জোগান দেয়। এছাড়া উপবাসে শরীরের বাড়তি চর্বি ব্যবহৃত হয়, কমে যায় ক্ষতিকর কোলেস্টেরল মাত্রা, হ্রাস পায় হৃদরোগের ঝুঁঁকি, সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে উচ্চ রক্তচাপ, একইসাথে কমে যায় ওজনও। তাছাড়া মানসিক প্রশান্তি তো রয়েছেই। এগুলোর প্রায় সবই আমাদের জানা আছে। আর রোজা রাখার মাধ্যমে পূর্ণমাত্রায় লাভ করা যায় এর প্রতিটি উপকার।

অটোফেজি যেভাবে কাজ করেঃ

অটোফেজি বা দীর্ঘ উপবাসের বিষয়টি আলোচনায় আসায় আমরা জানতে পারি, আরেকটি ব্যাপার ঘটে থাকে আমাদের শরীরের মধ্যে। সেটি হচ্ছে, প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরের বিভিন্ন কোষ মরে যায়, মৃত এই কোষগুলো কোষের অভ্যন্তরে লাইসোজোম নামের একটি বিশেষ কোষাঙ্গে জমা হতে থাকে। একইভাবে শরীরের মধ্যে মৃত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসও জমা থাকে লাইসোজোমে। বলা যেতে পারে লাইসোজোম হচ্ছে কোষের রিসাইকেল গার্বেজ বিন। কিন্তু শরীর যখন কোন চাপের মুখে পড়ে তখন রিসাইকেল গার্বেজ বিনে সঞ্চিত মৃতকোষগুলো থেকে শরীর শক্তি এবং নতুন কোষ তৈরি করে। যার ফলে শরীরের বর্জ্য ব্যবহৃত হয়ে শরীরকে করে দূষণমুক্ত। শরীরের এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় অটোফেজি, যার অর্থ হলো সেল্ফ ইটিং বা আত্মভক্ষণ। অটোফেজি হচ্ছে শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে দূষণমুক্ত করার পদ্ধতি। কোনো কারণে এই অটোফেজি প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে তা টাইপ-টু ডায়াবেটিস ও ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। কারণ হয়ে উঠতে পারে অন্যান্য রোগ ও উপসর্গের।

রোজা রাখার মাধ্যমে খুব সহজেই হয়ে যায় অটোফেজিঃ

এছাড়াও অটোফেজি প্রক্রিয়ায় শরীরে তৈরি হয় নাইট্রিক অক্সাইড। এই নাইট্রিক অক্সাইড দেহকোষকে পুনরুজ্জীবিত করে বাড়িয়ে দেয় কোষের আয়ু যা এন্টি এজিং বা বার্ধক্যরোধক হিসেবে কাজ করে। কোষ পুনরুজ্জীবনের ইতিবাচক প্রভাব পুরো শরীরের ওপরই পড়ে যা অন্য অঙ্গের উপকারে আসে। তার মানে হচ্ছে, অটোফেজি শরীরকে ভাঙে না বরং গড়ে তোলে। আর অটোফেজির এই পদ্ধতিকে চালু করতে প্রয়োজন কিছুটা দীর্ঘ তবে সবিরাম উপবাস। যা রোজা রাখার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি করতে পারেন। তবে এসবকিছুই সুস্থ ব্যক্তির সুস্থতাকে ধরে রাখার জন্য। অসুস্থ ব্যক্তির জন্য অটোফেজি কিংবা রোজা কোনোটাই স্বাস্থ্যগত সুফল প্রদানের কারণ হওয়ার কথা নয়। এমনকি কিছু কিছু অসুস্থতায় সবিরাম উপবাস এবং অনাহার দুটোই বরং ক্ষতিকর। অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগের ক্ষেত্রে সবিরাম উপবাস উপকারে আসে। তবে যাদের রোগ নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের উচিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক পদক্ষেপ নেয়া।

রোজার শারীরিক আরও কিছু উপকারিতাঃ

পবিত্র মাহে রমজান। মোবারক মাস। বরকতময় মাস। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই মাস। এই মাসে খাওয়া-দাওয়া এবং পানি পান করার সময়সূচী পুরোপুরিভাবে বদলে যায়। এর ফলে শরীরের উপর একটা পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য করা যায়। খাদ্যাভ্যাসের হঠাৎ এই পরিবর্তনের কারণে রোজার সময় শরীরে বিভিন্নরকম ছোটখাট সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন - গ্যাস্ট্রিক, পানিশূন্যতা, শারীরিক অস্বস্তি ইত্যাদি, যা একটু সচেতনভাবে চললেই এড়িয়ে যাওয়া কিংবা নিরাময় করা সম্ভব। এর বিপরীতে দীর্ঘ একটি মাসের এই ফরজ রোজাগুলো পালন করে শরীরে লাভ করা সম্ভব অনেক অনেক উপকারিতা। সেসব উপকারিতার সামান্য কয়েকটি তুলে ধরছি সম্মানিত পাঠকের খেদমতে-

রোজা ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ

শরীরে যাদের বাড়তি ওজন, তারা এই সময়ে বিশেষভাবে উপকৃত হয়ে থাকেন। যেহেতু রমজানুল মোবারকের পুরো মাসজুড়ে রোজাদার ব্যক্তিগণ খাদ্যাভ্যাসে নির্দিষ্ট নিয়ম এবং রুটিন মেনে চলেন, সকাল-সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করেন, যেমন- স্যুপ, রুটি, খেজুর এবং অন্যান্য ফল ফ্রুট, যা দ্রুত ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। এসময়ে সাধারণতঃ চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে দেখা যায়। এর পরিবর্তে তাজা ফল, তাজা শাকসবজি এবং পানি গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ওজন হ্রাসপ্রাপ্ত হয়।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে রোজাঃ

রমজানে রোজা রাখার অন্যতম সুবিধা হলো এটি আপনার রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। রোজা আপনার গ্লুকোজকে ভেঙে দেয়, যাতে শরীর শক্তি পেতে পারে যা ইনসুলিনের উৎপাদন হ্রাস করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে রোজাঃ

রোজা এথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। দেহ খাদ্য এবং পানি থেকে বঞ্চিত হওয়ার পরেও শরীরে সঞ্চিত ফ্যাট শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রোজার সময় বিপাকের হারও হ্রাস পায়। অ্যাড্রিনালিন এবং ননঅ্যাড্রিনালিন হরমোনগুলির ক্ষরণও হ্রাস পায়; এটি বিপাকের হারকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে, যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

পেশীশক্তি সংরক্ষণ করেঃ

আপনার পেশীগুলিতে সঞ্চিত ফ্যাট ব্যবহৃত হবে। আপনি যখনই কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করেন, তখন গ্লাইকোজেন (ফ্যাট সেল) যুক্ত হয়, যা ওজন বাড়িয়ে তোলে। তবে রমজানের রোজার সময় ফ্যাট কোষগুলি শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করেঃ

রোজার সময় মানুষ সাধারণত সেহরি ও ইফতারে মাঝে স্বাস্থ্যকর খাবার খায়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, টক্সিন নির্মূল করতে এবং চর্বি হ্রাস করতে সহায়তা করে। রোজা ভাঙার জন্য যখন খেজুর এবং ফল খাওয়া হয় তখন এগুলি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজগুলির সঞ্চয় বাড়ায়। ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই সমস্ত ফলের মধ্যে উপস্থিত, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

প্রদাহ দূর করেঃ

রমজানে রোজা রাখার আরেকটি শারীরিক সুবিধা হলো এটি প্রদাহজনিত রোগ এবং অ্যালার্জির সারাতে সহায়তা করে। প্রদাহজনিত রোগের কয়েকটি উদাহরণ হলো- আর্থারাইটিস এবং ত্বকের রোগ যেমন সোরিয়াসিস। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, রোজার ফলে আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো প্রদাহজনক পেটের রোগ নিরাময়ের উন্নতি হতে পারে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করেঃ

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে, রোজা কিছু নির্দিষ্ট প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপের জন্য উপকারী। এই প্রোটিনগুলো মস্তিষ্কের স্টেমসেলগুলো সক্রিয় করতে সহায়তা করে, যাতে তারা ভালোভাবে কাজ করতে পারে। এই কারণেই আপনি যখন রোজা রাখেন তখন আপনার মস্তিষ্ক সজাগ হয়ে যায়।

আত্মনিয়ন্ত্রনের মানসিকতা তৈরি করেঃ

নিজেকে নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দেয় পবিত্র মাহে রমজান। রমজানের সময় রোজার এটি অন্যতম বিশেষ একটি শিক্ষা- আপনার শরীরের চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষা থাকা সত্বেও খাদ্য এবং পানীয় না দিয়ে কীভাবে মনের এই চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করবেন তা শেখার জন্য প্রস্তুত করে। এই প্রক্রিয়াতে, মস্তিষ্ক সেই অবস্থার সাথে মানিয়ে নেয় এবং কীভাবে আরও ধৈর্যশীল হতে হয় তা শেখায়।

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা পবিত্র মাহে রমজানের রহমত, বরকত এবং মাগফিরাতকে আমাদের জন্য অবধারিত করে দিন। তিনি আমাদের প্রত্যেককে সঠিক নিয়মে রোজা পালনের মাধ্যমে তাঁর পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জনের তাওফিক দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২৮
৪৫৬ বার পঠিত
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাদের অভিবাদন হে বিপ্লবী!

লিখেছেন বিদ্রোহী ভৃগু, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৫


তোমাদের অভিবাদন হে বিপ্লবী!

বিপন্ন সময়ে, ইতিহাসের ক্রান্তিকালে
চাটুকারিতা আর মোসাহেবির আবশ্যিকতাকে দলে
স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে-
ছররা গুলি, টিয়ার শেল, গুপ্ত আক্রমন
সব কিছু ছাপিয়ে দৃঢ় চেতনায় অবিচল- বিজয়ের স্বপ্নে।

তোমাদের অভিবাদন হে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে সুবাসে তুমি গোলাপ

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫০



তরঙ্গে মন উচাটন,কাঁপছে দুরুদুরু বুক,
তোমায় দেখবো বহুদিন বাদে,
একগুচ্ছ রজনীগন্ধা
স্বইচ্ছায় গোলাপকে আলাদা করে ফেললো,
গোলাপ হেসে কুটি কুটি,
লাল থেকে আরো লাল হয়ে গেলো,
সে যেন লজ্জায়।
চেনা সুর আরো চেনা হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবশেষে রিক্সালীগ সফল!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২২


অবশেষে আবারো সরকার হার মানলো। হার মানলো রিক্সালীগের কাছে। এটা শুরু মাত্র। এখন সবকিছুতেই হার দিয়েই চলতে হবে হয়তো। যেটা কারোরই কাম্য ছিলনা। কাম্য ছিল তাদেরই যারা অন্যায়ভাবে শত শত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেগা মানডে: সংঘর্ষ, বিক্ষোভ ও অহিংস প্রতিবিপ্লবের ভূত চেপে বসেছে ঢাকাবাসীর ঘাড়ে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬



ঢাকায় নৈরাজ্য বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। আজকে তার সাথে ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো অহিংস অভ্যুত্থান কর্মসূচীর! বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হল কোন উদ্দেশ্যে?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৯

আমার ধারণা চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য। ভালো উদ্দেশ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয় নাই। চিন্ময় ব্রহ্মচারীর কথা বার্তা আমার ভালো লাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×