নবী চরিত্রের এক ঝলক; তিনি ছিলেন উত্তম আদর্শের মূর্ত প্রতীক...
কোনো একদিন। প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা ছিলেন সাহাবিদের মাঝে। হঠাৎ একজন নারী একটি কাপড় নিয়ে এসে বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! (সাঃ) আমি নিজ হাতে এই কাপড়টি বুনেছি। আমি চাই, আপনি এটি পরিধান করবেন।’
নবিজি খুবই আনন্দের সাথে সেটি গ্রহণ করলেন। মূলতঃ তখন তাঁর একটি কাপড় দরকারও ছিল।
তিনি ঘরে গিয়ে সেটি পরিধান করে ফিরে এলেন। উপস্থিত একজন সাহাবি এটা দেখে বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! (সাঃ) কাপড়টি আমাকে দিয়ে দিন।’
প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 'আচ্ছা ঠিক আছে' বলে পুনরায় ঘরে প্রবেশ করলেন। পুরনো কাপড়টি আবার পরিধান করে নতুন কাপড়টি সেই সাহাবিকে দিয়ে দিলেন।
উপস্থিত লোকজন সাহাবিকে বললেন, ‘তুমি কাজটা ঠিক করলে না। তুমি তো জানতেই আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কারো আবদার ফিরিয়ে দেন না।’
তখন ঐ সাহাবি বলেন, ‘আল্লাহর কসম! রাসুলের বরকতময় চাদর মৃত্যুকালে আমার কাফন হবে- এই আশায়ই আমি চাদরটি চেয়েছি।' -সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১১৯৮
সেই সাহাবিকে তাঁর মৃত্যুর পর ঐ চাদর দিয়েই কাফন দেয়া হয়েছিল। সুবহানআল্লাহ, কতই না সৌভাগ্যবান সেই সাহাবি, যার কাফনের কাপড় হয়েছে প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরশধন্য বস্ত্রখন্ড!
আর কতই না উত্তম ছিল প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অপরূপ চরিত্র মাধুর্য্য! কী অসাধারণ ছিল তাঁর ধৈর্য্য! সদ্য উপহার হিসেবে প্রাপ্ত পছন্দের কাপড়টি পরিধান করতে না করতেই একজন সাহাবি সেটি চাইলেন আর তিনি চাওয়ার সাথে সাথে বিনা বাক্য ব্যয়ে তাকে দিয়ে দিলেন সেটি। ভাবা যায়, কতটা দয়াদ্র, কতটা উদারতার চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করা সম্ভব হলে অপরের জন্য নিজেকে কতখানি উৎসর্গিত করতে পারলে এমনটি করা যায়!
সত্যিকারের আদর্শ যে ভোগে নয় বরং ত্যাগের ভেতরেই- প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাস্তব অনুশীলন করে দেখিয়েছেন আমাদেরকে, গোটা বিশ্ববাসীকে!
অসংখ্য অগণিত দরূদের নজরানা শাফিউল মুজনিবীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি- সল্লাল্লাহু আলা নাবিয়্যিল মুসতাফা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫