somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একুশ, কালের ইতিহাস এবং আমার কষ্টের দায়

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

।। নাসীমুল বারী।।

একুশ এলেই মনটা অন্যরকম হয়ে যায়। একুশের ঔরস 'ভাষা আন্দোলন'এর সুতিকাগার আজিমপুর। আমার জন্ম, বেড়ে উঠাও আজিমপুরে। ভাষা আন্দোলনের জনক 'প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাসেম' চল্লিশের দশক থেকেই আজিমপুরেই ছিলেন। নিভৃতচারী এ মানুষটির অন্তরাত্মা ছিল মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে বাঙালির নব জাগরণ। সে বোধ আর চেতনা থেকেই ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭ তিনি গড়ে তোলেন ভাষা আন্দোলনের জনক সংগঠন 'তমদ্দুন মজলিশ'। কার্যালয়টিও ছিল আজিমপুরে- ১৯ আজিমপুর রোড। তমদ্দুন মজলিশের অন্যতম সদস্য স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ছাত্র-শিক্ষকদের সে আন্দোলন এত গণআন্দোলনে রূপ নেয় যে, তৎকালীন প্রাদেশিক সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার অঙ্গিকার করতে বাধ্য হয়। সে জন্য চুক্তিবদ্ধও হয়। চুক্তিটি করে ১১ মার্চ, ১৯৪৮। তখন পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনটি অরাজনৈতিক ছিল।

তারপরই রাজনৈতিক থাবায় এ আন্দোলনটি জর্জরিত হয়। ক্ষতবিক্ষত এ আন্দোলন আজ ইতিহাস বিকৃত। কিন্তু আবুল কাসেম?

না, তিনি বিচ্যুত হন নি তাঁর চেতনা থেকে ন্যূনতমও। নিভৃতে চলে এসে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলাকে কার্যকরি উদ্যোগ নিয়ে স্বপ্ন গড়তে থাকেন উচ্চশিক্ষা প্রদানের জন্য। উচ্চমাধ্যমিক পর্যাযের পদার্থ, রসায়ন আর গণিত বই বাংলা ভাষায় রচনা করেন। উচ্চশিক্ষার বাংলাভাষায় রচিত বই এগুলোই প্রথম। নিজের সে বই বিক্রির টাকা এবং ড. শহীদুল্লাহ ড. এনামুল হক প্রমুখের মাধ্যমে প্রাপ্ত অনুদানে গড়ে তোলেন ঢাকা শহরের উপকণ্ঠে (বর্তমানে ঢাকা শহরে) বাংলা ভাষায় উচ্চশিক্ষার প্রদানের বিশাল সম্পত্তির প্রতিষ্ঠান 'বাঙলা কলেজ'।

আজকের প্রজন্ম জানে কি এ ইতিহাস? আছে এ ইতিহাস জানার কোনো সুযোগ? আজকের আমাদের গর্বের বাংলার অস্তিত্বের মৌলিক সত্ত্বাটি হারিয়ে যাচ্ছে কালের বিকৃত হাসিতে। তখনই কষ্ট মনের দরজায় এসে জোরে কড়া নেড়ে বলে 'অকৃজ্ঞ কোথাকার'!

আসলেও জাতি হিসেবে মনে হয় অকৃতজ্ঞই। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনটা কষ্টে মুচড়ে উঠল। পুরো মাসটাই আমার এমন কষ্টে কাটে প্রতি বছর।

অনুভব করছি কষ্টটা। তখনই দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। চোখ মুছতে মুছতে বললাম, স্যার আপনার জন্য কিছুই করতে পারলাম না। ক্ষমা করে দেবেন আমাদের। আপনি নাম চান নি। নামের প্রচারের পিছনে ছুটেন নি, কিন্তু বাংলা প্রতিষ্ঠা চেয়েছেন মন থেকে। তা হচ্ছে হয়ত। অন্তত এটুকুর জন্যও আমাদের দায় দিবেন না।
#
১২ ফ্রেব্রুয়ারি, ২০১৭
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×