জঙ্গল মহলে কিছু দিন
২০১৯ হঠাৎ করেই এক ফোন আসে আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, গবেষণা মূলক যে প্রজেক্ট চালু হয়েছে সেটাতে আমি সিলেক্ট হয়েছি । শুনে তো আমি ভীষন খুশি কিন্তু সেই মাসেই আবার আমার জন্মদিন ছিল, তার জন্য আমার আগে থেকেই একটা প্ল্যান ছিল বন্ধুদের সাথে দীঘায় ঘুরতে যাওয়ার ।
কিন্তু এতো বড় একটা সুযোগ নতুন অভিজ্ঞতা নতুন এডভেঞ্চার আমাকে নেশার মতো টানছিল তাই শেষমেষ সমস্ত প্ল্যান বাতিল করে আমি চলে গেলাম ঝাড়গ্রাম জঙ্গল মহলে উনাদের সাথে ।
এখানে চারিদিকে বন আর বন। লম্বা লম্বা শালগাছ , আহা কি যে শান্তি , প্রতিটা নিশ্বাস যেন সুখ টান । আমরা ২০ দিন থাকার জন্য হোটেল বুক করি ঝাড়গ্রাম পুশিল থানার কাছে , কারণ আমাদের সবার মনে একটা ভয় ছিল 'মাওবাদী' নামক শব্দটির।
চলুন কথা না বাড়িয়ে দেখে আসি সেই সমস্ত দিনের কিছু মূল্যবান ছবি ।
আমার হোটেলের একটু দূরের ছিল ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ী , তাই লোভ সামলাতে না পেরে সবাই একটু বিশ্রাম নিয়েই বেরিয়ে পড়লাম ।
রাজবাড়ীর প্রধান প্রবেশদ্বার
প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করা মাত্রই দেখলাম এক দিদিমনী আশেপাশে থাকা গরীব বাচ্চাদের কে নিয়ে শরীরচর্চা করছে।
তারপর গাড়ি নিয়ে বার হয়েছি পাহাড় দেখবো বলে কিন্তু মাঝ রাস্তায় দেখা পেলাম এক বন্য ময়ুরকে, ব্যস গাড়ি থামিয়ে হাজার রকম ছবি ।
তারপর এলাম অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষায় থাকা সেই গ্রামে , চারিদিকে পাহাড় দিয়ে ঘেরা পাঁচ ঘরের ছোট্ট একটি গ্রাম । এখানে ধান খেতে পোকামাকড় খেতে পাহাড় থেকে নেমে আসে ময়ুর । গ্রামবাসীরা গভীর জঙ্গলে যায় এই ময়ূরের ডিম সংগ্রহ করতে এবং সেই ডিম তারা বিক্রি করে দূরে আধুনিক জীবন যাপন করা মানুষের কাছে ।
সে এক অন্য জীবন আমাদের মতো এতো কিছু নেই তবুও যেন সব কিছু আছে তাদের নিষ্পাপ হাসির মাঝে । অনেক কষ্ট হয়েছিল পৌঁছাতে সেই গ্রামে তারপর এই হাসি যেন সমস্ত কিছুই ভুলিয়ে এক নিমেষে। তারপর আরও অনেকটা দিন কাটিয়েছি সেই সব জঙ্গলের মাঝে আদিবাসী গ্রাম গুলোতে । সেসব স্মৃতি কোনদিন ভুল সম্ভব নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১:৩৩