ঢেকি ধান ভানা বা শস্য কোটার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রবিশেষ। প্রাচীন কাল থেকে ভারত উপমহাদেশে ঢেঁকি ব্যবহার হয়ে আসছে।এক খণ্ড পাথরের চটান বা কাঠ খণ্ডে গর্ত খুড়ে মুষলের সাহায্যে শস্য কোটা হয়। মুষলটির মাথায় লোহার পাত জড়ানো থাকে। মুষলটি ৪/৫ হাত লম্বা একটি ভারী কাঠের আগায় জোড়া লাগিয়ে গর্ত বরাবর মাপে দুটি শক্ত খুঁটির উপর পুতে রাখা হয়। শস্য কোটার জন্য ঢেঁকির গর্তে শস্য ঢেলে দিয়ে এক জন বা দুইজন ঢেঁকির গোড়ায় ক্রমাগত চাপ দেয়। অন্যদিকে মুষলের আঘাতের ফাকে ফাকে আরেক জন গর্তের কাছে বসে শস্যগুলো নাড়াতে থাকে।
২। পাট বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল এবং সোনালী আশ
শিল্প বিপ্লবের সময় ফ্লাক্স এবং হেম্প এর স্থান দখল করে পাটের যাত্রা শুরু। বস্তা তৈরির ক্ষেত্রে পাট এখনও গুরুত্বপূর্ণ। পাটের আঁশের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অন্য অনেক আঁশের সঙ্গে মিশ্রণ করে ব্যবহার করা যায়। টেক্সটাইলঃ প্রচলিত বয়ন শিল্পে পাটের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে সুতা, পাকানো সুতা, বস্তা, চট, কার্পেট ব্যাকিং ইত্যাদি। পর্দার কাপড়, কুশন কভার, কার্পেট, ইত্যাদি পাট থেকে তৈরি হয়। গরম কাপড় তৈরীর জন্য উলের সঙ্গে মিশ্রণ করা হয়। মোড়কঃ কৃষি পণ্য এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি বস্তাবন্দি ও প্যাকিং করার জন্য ব্যাপকভাবে পাট ব্যবহার করা হয়। পাট খড়ি পাট চাষের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ। পাট আঁশের দ্বিগুণ পরিমাণ খড়ি উৎপাদিত হয়। ঘরের বেড়া, ছাউনী এবং জ্বালানী হিসাবে খড়ির ব্যবহার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। উপজাতঃ পাটের আঁশের বহুমুখী ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে প্রসাধনী, ওষুধ, রং ইত্যাদি। পাট খড়ি জ্বালানী, ঘরের বেড়া, ঘরের চালের ছাউনীতে ব্যবহার হয়। বাঁশ এবং কাঠের বিকল্প হিসাবে পার্টিকেল বোর্ড, কাগজের মন্ড ও কাগজ তৈরিতেও পাট খড়ি ব্যবহৃত হয়।
১৭৭৫ সালে রবার্ট অ্যাডাম অঙ্কিত সিড্যান চেয়ারে ভ্রমণরত রাণী চার্লোত।
দক্ষিণ এশিয়ায় পালকি শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ পালঙ্ক থেকে যার অর্থ বিছানা বা খাঁট। আনুমানিক খ্রীষ্ট-পূর্ব ২৫০ সালে রামায়ণে পালকির কথা তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৩০সালের চাকাচালিত রিকশার প্রচলন ঘটে। এরফলে পালকি তার গুরুত্ব হারাতে শুরু করে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা সম্প্রদায়ে পালকির প্রচলন রয়েছে। দুই খুটিতে গড়া জোলি বেহারারা কাঁধে করে পারাপার করতেন এবং যে কোন যাত্রী অর্থের বিনিময়ে ভ্রমণ করতে পারতেন।
গাইলে চাল গুড়ো করার ছবি দেখে এই মুহূর্তের কোনো শিশু যখন মা কে জিজ্ঞেস করবে এটা কিসের ছবি ? মা কে হয়তো ধান ভানতে শিবের গান গাইতে হবে এটা হচ্ছে আধুনিকতার কষাঘাত।
গরু টানা লাঙ্গলে চাষ, বাংলাদেশ
লাঙল যে এক ধরনের যন্ত্র যা সাধারণত কৃষি কাজে ব্যবহার করা হয়। তা এখনকার দিনেন অনেক ছেলেমেয়ে বিশ্বাস করবে না । অনেক ছেলে মেয়ে এই লাঙ্গল চিনেনও না ।এই লাঙ্গল দিয়ে বীজ বপন অথবা চারা রোপনের জন্য জমির মাটি তৈরি করবার ক্ষেত্রে হালচাষে ব্যবহার করা হয়। কৃষি কাজের জন্য ব্যবহৃত এটি অন্যতম পুরাতন যন্ত্র। এটির প্রধান কাজ হলো মাটিকে ওলট পাল্ট করা এবং মাটির দলাকে ভেঙ্গে দেয়া যাতে করে মাটির নিচের লেয়ারের পুষ্টি গুন গুলো উপরে উঠে আসতে পারে এবং একই সাথে মাটির উপরের আগাছা ও ফসলের অবশিষ্টাংশ নিচে চাপা পরে জৈব সারে পরিনত হতে পারে। এটি মাটিতে বায়ু চলাচলের পরিমাণ বাড়ায় এবং মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখে। হাল আগে সাধারণত বলদ, ষাঁড়, মহিষ অথবা ঘোড়া দ্বারা পরিচালিত হতো। লাঙ্গল দিয়ে হাল-চাষ করতে কমপক্ষে একজন লোক ও একজোড়া গরু অথবা মহিষ প্রয়োজন হয়। গরু টানা লাঙ্গলের দুটি অংশ থাকে । নিছের অংশটিকে সাধারণত হাল বা লাঙ্গল বলা হয় । আর উপরে গরু বা মহিষের ঘাড়ে লাগানো অন্য অংশটিকে জুয়াল বলা হয় ।বর্তমানে আধুনিকতার সাথে সাথে হালের পরিবর্তন এসেছে। ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দ্বারা জমি চাষ বার ক্ষেত্রেও হাল একটি গূরত্ব পূর্ণ অংশ হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে।
বাঁশের ঝুড়ি
বাঁশের ঝুড়ি গোল বেড়যুক্ত অর্ধগোলকাকৃতি বা তার থেকে একটু কম বক্রতার পাত্র যা বেত জাতীয় কাঠি দিয়ে বোনা। ঝুড়ি নানা রকম বুনটের হয়। কম বুনটের চাঁছাড়ি বা চেরা মোটা বেত ইত্যাদি দিয়ে বোনা ঝুড়ি বাগান বা মাটি খোড়া ইত্যাদি স্থূল কাজে ব্যবহার হয়। ঘন বুনটের বড় ঝুড়িকে বলে ধামা যার মধ্যে শস্য ইত্যাদি রাখা যায়। ছোট ঝুড়িকে বলে চুপড়ি।
বেতের তৈরি ঝুড়ি
বেতের তৈরি সোফা
শুকনো বেত দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প জাতীয় জিনিসপত্র তৈরি করা হয় যেমনঃ চেয়ার, টেবিল, মোড়া, ডালা, কুলা, চাঙ্গারী, মুড়া, ঢুষি, হাতপাখা, চালোন, টোকা, গোলা, ডোল, ডুলা, আউড়ি, চাঁচ, ধামা, পাতি, বই রাখার তাক, সোফা, দোলনা, খাট, ঝুড়ি, টেবিলল্যাম্প, ল্যাম্পশেড ইত্যাদি। এটি গৃহনির্মাণ কাজেও ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে রেস্তরাঁ, ঘর বা অফিসের শৌখিন পার্টিশন হিসেবে এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। এছাড়া লম্বা বেত ফালা করে নানা কিছু বাঁধার কাজেও ব্যবহার করা হয়। ফলের জন্য বেতের চাষ করা হয়না; বেতের প্রধান ব্যবহার হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরির কাঁচামাল হিসেবে। তবে ফল খেতে সুস্বাদু এবং অনেকেরই প্রিয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৫৩