কিছু দিন দেশে ছিলাম না। মাত্র দশ দিন। এর মধ্যে দেখি অনেক কিছু বদলে গেছে। বাসার অদূরে যে চওড়া রাস্তাটি ছিল সেটি বদল হয়ে, তার মোটাতাজা শরীরটা কমে গিয়ে বেশ স্লীম হয়ে গেছে। কর্পোরেট দুনিয়ায় বাজারী সৌন্দর্য্যরে বিকিকিনি চলে। ওখানে স্লীম ফিগারের অনেক কদর। কিন্তুু রাস্তার সৌন্দর্যতো এ রকম সূচকে নির্ধারিত হয় না বলেই জানি। বরং এ মহানগরীর রাস্তাগুলো পর্যাপ্ত চওড়া নয় বলে আমরা আফসোস করি। যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হয় আমাদের উৎপাদনে বিনিয়োগযোগ্য মেলা মেলা সময়। যে রাস্তাটির দিন এবং রাত বদল হয়েছে, খুব সামান্য সময়ের ব্যবধানে, সে রাস্তার দু’পাশে ছোট ছোট কাঠের চকি বসিয়ে অনেকটা স্থায়ীভাবে কাঁচা বাজার বসেছে। চকির ওপর বসা বাজার, বাজারের ক্রেতা মিলে চওড়া রাস্তার মোটা-তাজা শরীরের প্রায় অর্ধেকটাই দখলে রেখেছে। থানা-পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় রাস্তাটিকে কোন প্রক্রিয়ায় স্লীমিং পিল খাওয়ানো হলো তা জানার আগ্রহটা কোনভাবেই ধরে রাখতে পারলাম না বলে এক বিকেলে ক্রেতা হয়ে সে কাঁচা বাজারে যাই। দু’একটা আইটেম কিনতে কিনতে জিজ্ঞেস করি, রাস্তার ওপর দোকান বসাতে পারার রহস্য ও মাজেজা। দোকানীরা কোন প্রকার রাখঢাক না রেখেই জানান দেন। বলেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য তারা বন্দোবস্ত নিয়েছেন। বড় ভাই বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন। এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ আগামী পাঁচ বছরের হিসাব হচ্ছে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন-ক্ষণের হিসাব। আর বন্দবস্তকারী বড় ভাই হচ্ছেন সরকারী দলের স্থানীয় কোন নেতা বা নেতাগোষ্ঠী। প্রশাসন, সিটি করপোরেশন বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তা দখল করে দোকান বসাতে সক্ষম সরকারী দলের স্থানীয় নেতা বা নেতাগোষ্ঠী কারা সেটি জানার আগ্রহ আর তৈরি হয় না। নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই। তারপরও প্রতিদিন যখন এ রাস্তাটি পেরুতে হয়, অনেক ভীড় সামলে এগুতে হয় তখন সত্যি সত্যি টের পাই এ রাস্তা দিয়ে আমাদের পারহওয়ার দিনগুলো বদলে গেছে। দিন হয়তো কিছুটা বদল হয়েছে চকির ওপর বসা ছোট ছোট ক্ষুদে উদ্যোক্তাদেরও। যারা তরিতরকারি, কাঁচা সব্জি বিক্রি করছে প্রতিদিন। তবে কতখানি, কতটা টেকসই উপায়ে? আওয়ামীলীগ-বিএনপির ক্ষমতা আরোহনের পালবদল ও দিনপুঞ্জির অভিজ্ঞতা থেকে হলফ করে বলা যায়, যেসব দরিদ্র ক্ষুদে উদ্যোক্তারা সব্জি বিক্রি করছেন, তারা রাস্তা দখলের দৃশ্যমান চরিত্র। আসল চরিত্রগুলো আড়ালে-আবডালে। দিন অথবা সপ্তাহের কোন এক সময় তারা প্রকশ্যে আসেন। অল্প সময়ের জন্য। আমরা তাদের চিনি অথবা চিনি না। দরিদ্র সব্জি বিক্রেতার সারা দিনের পরিশ্রমে যে মুনাফা বা উৎবৃত্ত তৈরি হয় অনুমান করি, তার সিংহভাগই যায় তাদের পকেটে। বড় ভাইদের কোষাগারে। অথবা হতে পারে মূল বিনিয়োগও তাদের। সব্জি বিক্রেতারা কেবল শ্রম বিক্রি করে দিনের শেষে সামন্য মজুরি পান। যা দিয়ে কোন মতে দু'বেলা খাবার জোগাড় হয়। ফলে দারিদ্র্য সীমারেখার ওপরে উঠা বা শ্রেণী উত্তরণের মধ্য দিয়ে যে দিনবদল এর সম্ভাবনা সেটি দরিদ্র সব্জি বিক্রেতার কাছে থাকে অধরা। তারা কেবল বড় ভাইদের দিনবদলের প্রক্রিয়ায় উসিলা হয়ে থাকে। মাধ্যম হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। দিনের পর দিন। কখনো নৌকা আবার কখনও ধানের শীষের ব্যনারে। আর প্রকৃত আর্থনীতিক দিনবদলটা ঘটে কথিত বড় ভাইদের। আর দিন বদলের অংশ হিসেবে সংকূচিত হয় জনমানুষের চলার পথ, তাদের স্বপ্ন, তাদের সম্ভাবনা।

আলোচিত ব্লগ
ভারত ও পাকিস্তান উভয় সম্পূর্ণ কাশ্মিরের দখল পেতে মরিয়া
ভারত হয়ত এবার যুদ্ধকরেই পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। পাকিস্তানও হয়ত যুদ্ধকরেই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির দখল করতে চায়। এমতাবস্থায় ভারতের পাশে ইসরাইল এবং পাকিস্তানের পাশে চীন থাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঈশ্বরের ভুল ছায়া – পর্ব ৩ | ভূমিকা-ব্রীজ
"তুমি যদি বাতাসকে ভালোবাসো, তাকে বশ করো না—তার সুর বোঝো। কারণ বাতাস একবার থেমে গেলে, তার কণ্ঠ আর কখনো শোনা যায় না।"
“ঈশ্বরের ভুল ছায়া” সিরিজ... ...বাকিটুকু পড়ুন
সবার কমন শত্রু আওয়ামী লীগ
শেখ হাসিনা সবসময় তেলবাজ সাংবাদিকদের দ্বারা বেষ্টিত থাকতেন। তেলবাজ নেতাকর্মীরাও বোধহয় তার পছন্দ ছিল। দেশে কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সে সম্পর্কে তার ধারণাই ছিল না। সামান্য কোটাবিরোধী আন্দোলন উনার পক্ষে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক কনফ্লিক্ট জোনে পরিণত করলো ড. ইউনুসের অবৈধ দখলদাররা ‼️
শেষ পর্যন্ত ড.ইউন তার আন্তর্জাতিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখালেন! উনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কখনোই কোন কাজ করেননি ।আমাদের কোনো দুর্যোগে কখনো পাশে দাঁড়িয়েছেন তার কোনো দৃষ্টান্ত নেই । যে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারত একটি মানবিক দেশ
যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আমরা ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
ভারতের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। আমরা বাংলাদেশি তোমরা ভারতীয়। আমরা মিলেমিশে থাকতে চাই। ভারতের বাংলাদেশের সাথে সাংস্কৃতিক,... ...বাকিটুকু পড়ুন