আজকের বর্তমান পৃথিবীর চারদিকে চলছে অশান্তির দাবানল।কোথাও শান্তি নেই । শান্তির খোঁজে পৃথিবীরি মানুষ ক্লন্ত।পৃথিবী জুড়ে চলছে যুদ্ধ,ক্ষুধা, দারিদ্র,বর্ণ বৈষম্য, ক্রসেড, দুর্ভিক্ষ, অর্থনৈতিক মন্দা- আরও কত সমস্যা।এসব সমস্যার প্রতিকার কে করবে?যেখানে ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ, বর্ণে বর্ণে যুদ্ধ, ধর্মে ধর্মে যুদ্ধ । কে সৃষ্টি করবে নতুন বট?দেখাবে কিরণরে আলো?বিদ্রোহী কবি নজরুল বলেছিল, “জরাগ্রস্থ পুরাতন পৃথিবী চেয়ে থাকে যুগে যুগে তোমাদেরই এই কিশোরদের আর তরুণদের মুখের পানে….. কত কাজ তোমাদের- ধরণীর দশ দিক ভরে, কত ধুলি, কত আবর্জনা, কত পাপ,কত বেদনা! তোমারা ছাড়া কে তার প্রতিকার করবে”?কবি নজরুল আমাদের তরুণদের জয় গান গেয়ে গেছেন। বৃদ্ধরা পুরাতন, তারা শুধু বাধা দিতেই জানে।আর যারা এগিয়ে আসেন তারা বৃদ্ধ নয়, তারা আমির হামজার মত সাহসী যোদ্ধা।হতাশা আর গ্লানি ভুলে আমাদের এগিযে যেতে হবে- নতুন একটা পৃথিবী গড়ার লক্ষে। বিখ্যাত দার্শনিক রোমা রোলাঁ বলেছিলেন, “আমি তরুণদের নিকট শক্তি সঞ্চয়ের জন্য অবিশ্রাম আবেদন জানাইতেছি। শক্তির এত প্রয়োজন বোধ হয় আর কোনো যুগে হয়নি।এ এক হিংস্র, নিষ্ঠর ধ্বংসের যুগ।কিন্তু এই ধ্বংসের মধ্যে রহিয়াছে বিপুল সৃষ্টির সম্ভাবনা। এ যুগ প্রলয়ের, এ যুগ নবজীবরেন। গৃহকোণে বসিয়া নিস্ফল ক্রন্দনের সময় ইহা নহে। নতুন যে আলো জগতে নামিতেছে তাহার দিকে মুখ তুলিয়া দাঁড়াইবার সময় আসিয়াছে।.. নতুন উষার অভ্যুদয় পর্যন্ত ইহা চলিবে।” আমাদেরকে এক হতে হবে নতুন শান্তিময় বসুন্দরা সৃষ্টির লক্ষে। শুরু হোক না একজন থেকে। যেখানে সারিবদ্ধ হবে; লক্ষ কোটি নব তরুণ।
আজকে আমরা যে বসুন্দরায় বাস করি, তার বয়স বেড়ে গেছে। সাথে সাথে আমাদেরও বয়স বাড়ছে। আর বয়স বাড়া মানে ‘প্রাণ সংশয়’ থাকা। কিন্তু বরাবর আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা তাদের বুদ্ধিনাশ করছে।আজ আমাদের অক্ষরজ্ঞান সম্পূর্ণ লোকরে অভাব নেই। কিন্তু জ্ঞানীর সংখ্যা নাই বললেই চলে। অপ্রাসংঙ্গিক বিষয় অর্জন করতেছে- তাই আমাদের এই অবস্থা। পৃথিবীতে কয়টি ধর্ম আছে, তা আমার বোধগম্য নয়। তবে চিরসত্য জান, শ্রেষ্ঠ ধর্ম – ইসলাম।আমরা মুসলমানরা আজ-কিংকর্তব্য এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আমরা শুধু অন্যকে খুশি করার নিমিত্তে কন্ঠহাসি দিয়ে থাকি। আর আমাদের আড়ালে লুকিয়ে থাকে বিদ্বেষ। মহাউৎসবের মাধ্যমে আজ মনুষ্যচরিত্র জলাঞ্জলি দিচ্ছি। সত্য প্র্রকাশে আজ আমরা লাজুক। আজ ললনার একটু স্পর্শ পাওয়ার জন্য মুচি থেকে লাট সাহেব, কি শেতাঙ্গ, কি কৃষনাঙ্গ সবাই মনোদলাদলি করছে। আজ নারীকে করা বাজারের পণ্য। হায়!এ নারী সমাজ বুঝতেছেনা। মনে হয় আমরা প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিরে গেছে। আজ বিষয়ান্তর নিয়ে ল-জওয়ার আলোচনা হয়। কিন্তু মনীষীদের জীবনি আলোচনা হয় না । আজ বাধ্য করছে মুখস্ত করে আসতে, কিন্তু বুঝিয়ে দিচ্ছি না। কারণ স্বার্থ্যবাদী আমরা, নিজের সার্টিপিকেট নিজেই দিচ্ছি। আজ আমরা সবাই মানসিকপ্রতিবন্ধী। আজ আমরা ছাত্রদের শিক্ষা দিয় না, যে শিক্ষা হবে ‘অধ্যাত্নচিন্তা’ । আমরা ছাত্রদের শিক্ষা দিতে পারি এভাবে, যা নিজের জন্য কামনা কর, তা অন্যের জন্যও কামনা কর। তুমি কি জানো যা তোমাদের অসন্তুষ্ট করে, তা অন্যকেও অসন্তুষ্ট করে। উচিত অন্যদের মানসিক কষ্ট দেয়া থেকে নিরাপদ থাকা। আমাদের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য এই চরিতের মধ্যে লুকিয়ে আছে। অন্যকে নিজের মত করে নেওয়ার মনোভাব থাকা উচিত । মানুষ তার কৃতকর্মের জন্যে ফল ভোগ করে। কেউ তোমাকে কাঁটা দিলে তার প্রত্যুত্তরে তাকে ফুল দাও। খারাপকে, খারাপ দিয়ে উত্তর দিয়ে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করো না। অন্যের জন্যে উপকারের ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। অন্যের দোষ প্রকাশ করে সবিস্তারে প্রচার করা থেকে বিরত থাকা। আমরা এভাবে বাচ্চাদের শিক্ষা দিতে পারি। ভালো কাজের পরিচয় করিয়ে দিতে পারি। শিখাতে পারি মিথ্যা বলতে কোনো শব্দ নেই।জানাতে পারি তোমাকে কেউ পছন্দ করুক বা না করুক, তুমি সবাইকে ভালোবাস। শিক্ষা দিতে পারি যে বৃদ্ধ মাথায় বোঝা নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে, সে বোঝা তোমার মাথায় নিয়ে বাড়িতে পৌছে দাও। সন্তানহারা মায়ের আর্তনাদে পাশে গিয়ে বল আমি আপনার সন্তান । শিক্ষা দিতে পারি মানবতার সেবাই মুক্তির সোপান। আর এভাবেই শানিতর পথ পাওয়া যায়, আর পাপ্তির পথ। যে পথ ইহকালের ও পরকালের।
আল্লাহ আমাদের সকলকে সচেতন আর ভালো মানুষ হওয়ার তৌফিক দান করুক। আমীন!