২৮ এপ্রিল ২০১০। সকাল সাড়ে ৬টার বিবিসি’র বাংলা অনুষ্ঠান ‘প্রত্যুষা’। রিপোর্টার তির্থঙ্কার বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, বাংলাদেশের বিসিএসআইআর যা সাধারণত ‘সায়েন্স ল্যাবরেটরি’ নামে অধিক পরিচিত, তারা এক গভেষণার ফলাফল জানিয়েছিলো, কালোজিরার তেল মানব স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। এর পরই ‘কনজিমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’- এর প্রেসিডেন্টের ( কাজি ফারুক) সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়।তারা সায়েন্স ল্যাবরেটরিকে দিয়ে ওই পরীক্ষাটি করিয়েছেন। তিনি সুস্পষ্টভাবে বললেন, তারা কালো জিরার মধ্যে ক্ষতিকর কিছু পাননি। কিছু কিছু ব্যবসায়ী যারা কালোজিরা থেকে ভোজ্যতেল প্রস্তত করে থাকে, তারা যথাযথভাবে মান নিয়ন্ত্রণ না করায় ওই তেলে ‘অ্যাসিড ভ্যালু’বেড়ে যায়। ফলে ওই পদ্ধতিতে প্রস্তুতকৃত তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর ।অথচ তির্থঙ্কার বন্দ্যোপাধ্যায় তার রিপোর্ট শেষ করলেন এভাবে যে, কালোজিরার তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর । এখানে বিবিসি’র চাতুরীপনা সুস্পষ্ট। তারা সুক্ষভাবে নবীজি (স). এর- একটি হাদিস মিথ্যা প্রমাণ করতে এ দেশীয় একটি গভেষণা প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। অবশ্য বিবিসির অপসাংবাদিকতা নতুন নয়। ২০০৩-এর পর ইরাক যুদ্ধের সময় তাদের Embedded Journalism বিশ্ববাসী দেখেছে। ব্রিটিশ সেনারা ইরাকের দক্ষিণাÂলীয় শহর বসরা দখলের আটদিন আগেই শহরটি করায়ত্ত করার মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছিল এই বিবিসি । এবং তা করা হয়েছিল দেশের অন্যত্র যুদ্ধরত ইরাকি জনগণের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্য। সাস্রাজ্যবাদের নগ্ন দালালি এর চেয়ে কী হতে পারে ? আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বিবিসি ব্রিটিশ সরকারের স্বার্থরক্ষায় সর্বদা নিয়োজিত ।সুতরাং তারা যখন ইসরাইলি হামলায় পুঙ্গ হয়ে পড়া অসহায় ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন প্রচারে অস্বীকৃতি জানায়, তখন আমরা ক্ষুব্ধ হতে পারি, কিন্ত অবাক হই না। ঠান্ডা যুদ্ধের অবসানের পর ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নতুন নিশানা ইসলাম, মুসলিম ও মুসলিম অধ্যুসিত দেশগুলো। তাই নবীজি (স) এর বাণীকে মিথ্যা প্রমাণ করার কুৎসিত প্রচারণাই হোক আর Embedded সাংবাদিকতাই হোক কিংবা তা হোক না কেন সুদানকে খন্ড বিখন্ড করার লক্ষ্যে মিথ্যা প্রচারণা, এসব এখন আর বিশ্বের শান্তিকামী জনতাকে বিস্মিত করে না। তাই আসুন আমরা আরো সচেতন হ্ই বিবিসি সম্পর্কে।