স্থান : মিসৌরি ইউ এস কলাম্বিয়া
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস পলাশ এর।সকাল এর এই সময় টা ও কাটে তার সারাদিন এর মত ই ব্যস্ততায় ।লেকচার শিট তৈরি করা থিসিস লিখা একই সঙ্গে মেয়ে আরমিলা কে ঘুম থেকে উঠানো তার ব্রেকফাস্ট করানো চুল আচড়ে রেডি করানো তারপর মেয়ে কে স্কুল এ নামিয়ে দৌড়ে তার ক্লাস এ আসা ল্যাব তার পি এইচ ডি পড়া তার প্রফেসর এর সাথে ক্লাস নেওয়া ।
পলাশ অসাধারন মেধাবী ছাত্র। সে ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স এ M S ইঞ্জিনিয়ারিং করেছে বুয়েট থেকে। বর্তমানে সে সমাপ্ত করেছে তার পিএইচডি।
তাকে নিয়ে মজার মজার ঘটনা আছে বন্ধু মহলে পরিবার
সে ছিল অনেক টা ভোলা স্বভাব এর ম্যাথ পরীক্ষার দিনে সে ভুলে পড়ে যেত ইংলিশ ।
দেখা যেত সেই ম্যাথ এ তার নম্বর সর্বোচ্ছ একশ তে একশ।
এই সময়ে সে কিছুটা ক্লান্ত বোধ করে ।;ইছে হয় কিছুক্ষণের জন্য চোখ টা বন্ধ করে রাখতে সম্ভব হয়না সে যে ড্রাইভিং সিট্ এ ।
ভার্সিটি তে যেতে যেতে ফোন করে তার দুইবোন কে কথা শেষ হওয়ার পর কিছু ক্ষণের বিষন্নতা।
ভাবে এই জীবনের জন্য কি আসা সপ্নের দেশ আমেরিকা য় ?
-----------------------------------------------------------------------------
স্থান : স্যানফোর্ড ফ্লোরিডা
ফোন এর তীব্র আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায় লাইজুর
কয়টা বাজে ইঅল্লাহ ছয়টা র বেশি বাজে
লাইজু র নাভিশ্বাস উঠে যায় উপর তলা নিথ তলা করতে করতে। জায়ান এর লাঞ্চ বক্স রেডি করা খোকা তার স্বামীর এর লাঞ্চ বক্স রেডি। এর মধ্যে জায়ান আর খোকার ব্রেকফাস্ট বানানো
জায়ান এর পছন্দ পরোটা ঝাল আর খোকা র চাই রুটি সবজি
সব করতে করতে তার নিজের খাওয়ার কথা ভুলে যায় তাড়াতাড়ি সাড়ে ছয়টার মধ্যে ড্রাইভ করে স্কুল এ দিয়ে আসতে হয়।
দৌড়ে গাড়িতে প্রথমে উঠে পড়ে হিজাব ছাড়া আবার ধুড় ধাড় করে উপরে উঠে স্কার্ফ দিয়ে পেচিয়ে নেমে আসে।
জায়ান আর জাইমা চিত্কার নিচে থেকে
আম্মু আমার দেরী হয়ে যাছে
তাড়াতাড়ি নেমে এসে যখন ড্রাইভার এর আসনে বসে তখন তার হাত পা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে আসতে চায়।
যাত্রার দোয়া পড়ে "" বিসমিল্লাহী মাজরেহা ওয়া মুরসাহা ইন্নি রাব্বি লা গাফুরুর রাহিম "
আম্মু আমার গান ছাড়
চলতে সুরু করলো ক্যাসেট এ জায়ান এর প্রিয় গান
স্পিড ছবি র গান
ছিলাম আমি একা রে
প্রেম দিল যে দেখা রে
আকাশ কি বলে গেল কানে কানে
জায়ান এর প্রিয় শিল্পীর হাবিব এর গান।
স্কুল এ জায়ান কে নামিয়ে দিয়ে আসলো গ্রোসারী করতে দুধ ফলমূল শেষ
গ্রসারি শেষ এ বাসায় আসা অবসন্ন হয়ে পনর মিনিট সোফায় এলিয়ে পড়ে থাকা।
আম্মা কে এতো মনে হচ্ছে কেন আজকে।
আজ তাকে দেখে কারো পক্ষে ধারণা করা কি সম্ভব ডি এম সি এর সেই মেধাবী ছাত্রী যার
কিনা ছিল সাহিত্য সংসৃতির সব জায়গায় অবাধ বিচরণ
আজ কে তার পরিচয় হছে গৃহিনী জায়ান আর জাইমা র মা
ফোন এ আম্মার স্বর শুনে তার চোখে পানি চলে আসে ।
টরন্টো অন্টারিও
পলাশ এর চার বোন্ এর মধ্যে যে বোন্ টি তাদের সবার মধ্য মনি বা সবার ভালবাসার জন সে হছে বড় বোন্।
আবার এই বোন্ হচ্ছে তাদের যত টেনসন আর হেডেক এর কারণ
তার মত অবিমৃষ্য কারি মানুষ কম ই আছে। সে প্রচলিত সামাজিক রীতি নীতি ধর্ম কে বৃধ্যান্গুলি
দেখিয়ে সে অনেক টা বিদ্রোহীর মত দাড়িয়ে আছে। সে কার ও আপন হতে পারেনা বা কাওকে সেও আপন করতে পারেনা। আপন জন বন্ধু বান্ধব মা বাবা সবার টেনসন আর হতাশার কারণ সে। বড় জব ষ্টাটাস গাড়ি বাড়ি কোনো কিছু তার গ্রাহ্জ্যে আসেনা
তার বাবা ইস্টার্ন ব্যান্ক এ একজিকিউটিভ পজিসন এ তার জন্য জব সুপারিশ করার পর ও তার যাওয়া হয়না খামখেয়ালী স্বভাব এর কারণে।
এর ভালো জব এ গেলনা এই যুক্তি দেখিয়ে অটোয়া সে যেতে চায়না
তার সঙ্গী সাথীরা মরমন খ্রীষ্টান চার্চ এর ব্রাদার সিস্টার
পবিত্র কোরান এর সাথে তার প্রিয় অন্য ধর্মের বই
Watch tower the awake তার প্রিয় ধর্মীয় পত্রিকা। বাইবেল তার রেগুলার পঠিত গ্রন্থ।
মা কাদে বোন্ রেগে যায়
মা বলে তুই আমার মেয়ে নামাজ কোরান এত বেশি করে পড়া আমি তোর্ কাছে শিখছি মা তুই আমার মেয়ে কিন্তু আমি শিখছি তোর্ কাছে অনেক কিছু। এত পরিবর্তন তোর্ কিভাবে হলো।
বোন্ বলে তোমাকে শ্রধ্বা করতাম তোমার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া আর কোরান পড়া দেখে
সে ও নিজেকে বুঝতে পারেনা আপন জনের কাছে আপন জন রা ও তাকে বুঝতে পারেনা
কাওকে সে বলতে পারেনা কি একটা বুক খালি করা নিঃসন্গতা বোধ তাকে সবসময় তাড়িয়ে বেড়ায়।
এই নিঃসন্গতার জন্ম সম্ভবত এই ভুবনে না অন্যভুবনে।
সংক্ষেপে পলাশ এবং তার বড় দুই বোন্ এর এই প্রাথমিক পরিচয় দেওয়া হলো
আমাদের গল্পের সুরু এখান থেকে
-----------------------------------------------------------------------------
স্থান : ধানমন্ডি তের /দুই ঢাকা বাংলাদেশ
জেসমিন এর ঘুম আজকে ও ভেঙ্গে গেল রাত তিনটায়
পরপর কয়েক দিন ধরে এরকম হচ্ছে তার সে কি খুব টেনশন করছে রামিন কে নিয়ে
গভীর রাতে একবার ঘুম ভাঙলে আর আসতে চায়না তখন জমানো দুখ গুলো হানা দেয় মনের কোনে
তার এই ছোট মনে যে এত কষ্ট জমে ছিল কে জানত ?
পলাশ এর তিন নম্বর বোন্ তার ফামিলি তে জনপ্রিয়তা তার সবচেয়ে কম তার গম্ভীর স্বব্ভাব আর কিছুটা অত্নকেন্রিক স্বভাব এর কারণে যদিও সে সবাইকে আরো বেশি ভালবাসে আর কেয়ার করে
এদিকে মুখ ফিরিয়ে দেখে রামিন ঘুমের মধ্যে ঠোট টা ফুলিয়ে আম্মি আম্মি করছে
কি বাবা কি হইছে ছেলের কপালে চুমু দিয়ে বিছানা থেকে নামতে গিয়ে দেখে খুব আপন মনে দুইটা মশা জহিরের পায়ের পাতায় বসে আপন মনে রক্ত শুষে যাচ্ছে l
ঘুম এর মধ্যে ই জহির ফুটবল এ হিট করার ভঙ্গিতে মশাকে লাথি মেরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলো
জেসমিন খিল খিল করে হেসে ফেলল তাতে তার মনের গুমোট টা কেটে গেল l
মশা মারতে গিয়ে শব্দ হওয়াতে জাহির এর ঘুম ভেঙ্গে গেল
সে ঘুম ঘুম চোখে জেসমিন এর তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো
তুমি বসে বসে কি করতেছ?
বসে বসে আবার কি করব দৌড়ে দৌড়ে মশা মারতেছি বলে আবার সে হাসলো
জাহির হাসলো কয়েল জালাও নি কেন?
দুজনের হাসির শব্দে রাইজার ঘুম ভেঙ্গে গেল
সে ও অনেক আনন্দে মশা মারতে লাগলো l
সব হট্রগোল এ রামিন ও ঘুম থেকে উঠে বসলো তার ও দাবি
আমি মশা মারতে চাই
রামিন এর কথা শুনতে শুনতে জেসমিন জাহির রাইজা তিন জনে জোরে জোরে হাসতে লাগলো l
ওই ঘর থেকে বুয়া দৌড়ে এলো
আপা গো কি হইছে আপনাগো ?
জাহির হাসতে হাসতে কৌতুক করে বলল
কিছু না বুয়া :মশার পিছনে ধাবমান আমরা
ধাবমান দেশ জাতি ।
-----------------------------------------------------------------------------
স্থান : এপোলো হাসপাতাল
ঢাকা বাংলাদেশ
শারমিন নিশু এই হাসপাতাল এর ডক্টর
এম বি বি এস পাশ করার সঙ্গে সঙ্গে বলা যায় পরের সপ্তাহে সে জয়েন করেছে এই হাসপাতাল এ তার স্বামী আরিফুর রহমান সহ ।
তার যেমন নাই বেকার জীবনের অভিজ্ঞতা তেমনি নাই বিশ্রাম বা রেস্ট বলে কোনো কিছু অভিজ্ঞতা সকাল ছয় টা থেকে রাত একটা পর্যন্ত চলে তার কর্ম ব্যস্ত জীবন ।
তার পর ও তার কোনদিন ভুল হয়না মায়ের খবর নেওয়ার সময়ের অভাব হয়না বাবাকে নিয়ে ডাক্তার এর কাছে যাওয়ার ।
কাজের ফাকে কিছু সময়ের জন্য চ্যাট তার প্রিয় বপ্পির সাথে
মেজপি কে ফোন করে পড়াশুনা শুরু র জন্য অনুপ্রেরণা দেওয়া ভাইয়া মুন্নি আপু র সাথে স্কাইপ এ সময় কাটানো কিছু ক্ষণের জন্য।
ছোট আপি রাইজা রামিন কে বাহিরে নিয়ে যাওয়া ।
সে ফ্যামিলি র সবার ছোট বয়স আর অভিজ্ঞতায় কিন্তু রোল বা ভূমিকা য় সবার উপরে
সে অনেকটা ভাই বোন্ দের সবার মাযের মত ।
মাযের ও সে মা
মাযের পায়ে তেল ম্যাসেজ করে দেওয়া ।
ছোটো আপির মাথা ম্যাসেজ করে দেওয়া আম্মাকে চুল আচড়ে দেওয়া আব্বার জন্য পছন্দের খাওয়ার বানিয়ে নিয়ে আসা তার প্রাত্যহিক কাজের মধ্যে পড়ে এবং সে ভাললবাসা আর আন্তরিকতার সঙ্গে করতে থাকে ।
(পরবর্তীতে)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬