"আমি ছাত্র রাজনীতি করি না" এটি গত দু'দশকের তথাকথিত ভাল ছাত্রদের ঠোটের আগায় আগায়। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জিকিরে তাল দিতে পারা যেন মধ্যবিত্ত মানসিকতার একধরণের আলগা সুখ।কিন্তু স্বাধীনতার পর আওয়ামী, সামরিক ও বি, এন, পি কেউই ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে নিজেদের সার্বক্ষনিক গ্রহনযোগ্য আধাসামরিক বাহিনী হিসেবে কাজে লাগিয়ে জনগণকে দৌঁড়ের উপর রাখতে ছাড়েনি। ফলে জাতীয় রাজনীতিতে যেমন লুটেরা অথবা অব-সামরিক বা বেসামরিক আমলা যারা ইদানিং 'সুশীল সমাজ' নামে পরিচিত রাজনীতিবিলাসী (যারা বেনিয়া লুটেরাদের চাটুকার) গোষ্ঠীরা নিয়ণ্ত্রন করে ছাত্র রাজনীতিও তেমনি নিয়ণ্ত্রন করে বখে যাওয়া, আলগা হিরোইজমে ভুগা ঔদ্ধত মাস্তান ছাত্ররা।আর 'ভাল ছাত্ররা' এদের করুণায় হলে মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজে অথবা ছাত্রত্ব শেষে চাকরীর জন্য ধরণা দেয়।ক্যাম্পাস জীবনে মেরুদণ্ড বাঁকা করে 'সাধারণ ছাত্র' পরিচয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগে।ঠিক যেন সুকুমার রায়ের বাবু রাম সাপুড়ের দু'টি সাপের মত।
অরাজনৈতিক চেতনায় মোহাচ্ছন্ন মধ্যবিত্ত একই প্রতিষ্ঠানে পড়া রাজনৈতিক পরিচয়ে খুন হওয়ার বৈধতা দেয় কিন্তু মায়া কান্নার রোল তুলে অরাজনৈতিক সাধারণ ছাত্রের খুনে।রাজনীতি নিয়ে এমন উন্নাসিক থেকে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনপদে নিরাপদে বাস করার আকাঙ্খা নিতান্তই বালসুলভ।
দুনিয়ার সব জায়গায় কোন না কোন ফর্মে ছাত্র রাজনীতি আছে।ঐতিহাসিকভাবেই তার গড়নের ভিন্নতাও আছে ।বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্র রাজনীতিই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে রচনা করেছিল উজ্বল অধ্যায়।সেই ছাত্র রাজনীতির এই পরিণতি !!! সমগ্র জাতির রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে বিকাশের পথকে করেছে অন্ধকারাচ্ছন্ন।